বিশ্বব্যাংক ও সরকারের মধ্যে চলতি সপ্তাহে সমঝোতা!
চলতি সপ্তাহে পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সরকারের সমঝোতার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ কয়েক মাসে চলতে থাকা টানাপোড়েনের সমাপ্তি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে চার দিনের ইরান সফর শেষে শনিবার দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তাঁর নির্দেশনামতো বিশ্বব্যাংকের দেয়া শর্তের বাকি অংশ পূরণ করেই সংস্থাটির প্রেসিডেন্টের কাছে ঋণ বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধপত্র পাঠাবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এমনটিই জানাগেছে সরকারের একাধিক সূত্র থেকে। তাছাড়া নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণে এবং দেশের ভাবমূর্তি রক্ষায় বর্তমানে বিশ্বব্যাংকের যে কোন শর্ত পূরণে সরকার পিছপা হবে না বলেও জানা গেছে। এ প্রেক্ষিতে অর্থ উপদেষ্টা মসিউর রহমানের পতদ্যাগের বিষয়টি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
পদ্মা সেতুতে অন্যতম দুই দাতা সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ঋণ কার্যকারিতার মেয়াদ বৃদ্ধি করায় সমঝোতার বিষয়টি অনেকখানি স্পষ্ট হয়েছে। তাছাড়া বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, যুক্তরাজ্য এবং ভারতের মতো চারটি দেশ বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় সমঝোতার ক্ষেত্রে নতুন করে আর কোন জটিলতার সৃষ্টি হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
সূূত্র জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য ২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল বিশ্বব্যাংকের সাথে ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করে সরকার। এছাড়া অন্যান্য দাতা সংস্থার মধ্যে ওই বছরের ১৮ মে জাপানের জাইকার সাথে, ২৪ মে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের সাথে এবং ৬ জুন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে ঋ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক অর্থ ছাড় স্থগিত করলে অন্য দাতারাও তা স্থগিত করে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল সেতু ও তদারকি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের দরপত্রে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিল বিশ্বব্যাংক। সংস্থার পক্ষ থেকে পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে করা একটি তদন্ত প্রতিবেদন গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে অর্থমন্ত্রীকে দেয়া হয়েছিল। সেখানে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য ঘুষ বা কমিশন চেয়েছিল সৈয়দ আবুল হোসেনের মালিকানাধীন সাকো ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধিরা। যোগাযোগমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে অর্থ চাওয়া হয়েছে। কমিশন পেলে সৈয়দ আবুল হোসেন নিজেই কাজ পাইয়ে দেয়ার বিষয়ে সহায়তা করবেন বলে আশ্বাস দেয়া হয়েছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে অবশেষে সৈয়দ আবুল হোসেনকে সরিয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় ওবায়দুল কাদেরকে। তারপরও তুষ্ট হয়নি বিশ্বব্যাংক। অবশেষে সংস্থাটি গত ২৯ জুন পদ্মা সেতুতে ঋণচুক্তি বাতিল করে দেয়। এর পরবর্তীতে অবশ্য সংস্থাটি এক বিবৃতির মাধ্যমে ঋণ পুনর্বিবেচনার সুযোগ একেবারেই শেষ হয়ে যায়নি বলে জানায়।
পদ্মা সেতুর ঋণচুক্তি পুনর্বিবেচনার বিষয়ে বিশ্বব্যাংক গত জুলাই মাসে দেয়া ওই বিবৃতিতে বলেছিল, পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার খুব সীমিত সুযোগ রয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত চারটি পদক্ষেপের মধ্যে দু’টিতে একমত হলেও অপর দু’টি পদক্ষেপের ব্যাপারে ব্যাপক আলোচনার পরও সরকার ইতিবাচক সাড়া দিতে পারেনি। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অফিসের একাধিক কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই বিশ্বব্যাংক মেইল বার্তা পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছিল।
সরকারকে দেয়া প্রস্তাব এবং সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে সংস্থাটি বলেছে, বিশ্বব্যাংক পরামর্শ দিয়েছিল যে সরকার চারটি পদক্ষেপ নিতে পারে। কিন্তু সরকার চারটির মধ্যে দুটি করতে পারেনি। প্রথমত দুর্নীতি দমন কমিশনকে একটি বিশেষ যৌথ তদন্ত ও বিচারিক টিম গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, যাতে দুদক সম্মতি দিয়েছিল। দ্বিতীয়ত সরকার একটি বিকল্প প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যবস্থায় সম্মত হয়েছিল যেখানে সহযোগী অর্থায়নকারীদের জন্য স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় অধিকতর তদারকির সুযোগ ছিল। তৃতীয়ত দুদককে বিশ্বব্যাংকের তত্ত্বাবধানে একটি বাইরের প্যানেলের কাছে তথ্য দেয়ার এবং প্যানেলকে তদন্ত প্রক্রিয়ার পর্যাপ্ততা মূল্যায়নের সুযোগ দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত দুদক বাইরের প্যানেলের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করার কোন আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক রাখার বিষয়টি মেনে নেয়নি। সবশেষে, সরকার বাংলাদেশী আইনের আওতায় থাকা সত্ত্বেও তদন্ত চলাকালে সরকারী দায়িত্ব পালন থেকে সরকারী ব্যক্তিবর্গ (আমলা ও রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত) ছুটি দিতে রাজি হননি। চারটি ব্যবস্থার মধ্যে দু’টি বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ার ফলে বিশ্বব্যাংকের সেতুর জন্য ঋণ সহায়তা বাতিল করা ছাড়া আর কোন বিকল্প ছিল না। বিশ্বব্যাংকের অনুরোধকৃত সকল পদক্ষেপ এবং দুর্নীতির অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশী আইন ও রীতিনীতির ও বিধিবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
পরবর্তীতে সরকার একে একে বিশ্বব্যাংকের তিন শর্তই পুরোপুরি মেনে নেয়। বাকি শর্তটির ক্ষেত্রে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ এবং সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেনকে ছুটিতে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু উপদেষ্টা মসিউর রহমানের পদত্যাগের শর্তটিই ঝুলে থাকে। ফলে সমঝোতার দ্বারপ্রান্তে এসেও আটকে থাকে সমঝোতার বিষয়টি। এখন সরকারের পক্ষ থেকে সেটি পূরণ করা হলেই এ সপ্তাহের মধ্যেই সবকিছু সমাধান হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পদ্মা সেতুতে অন্যতম দুই দাতা সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ঋণ কার্যকারিতার মেয়াদ বৃদ্ধি করায় সমঝোতার বিষয়টি অনেকখানি স্পষ্ট হয়েছে। তাছাড়া বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, যুক্তরাজ্য এবং ভারতের মতো চারটি দেশ বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় সমঝোতার ক্ষেত্রে নতুন করে আর কোন জটিলতার সৃষ্টি হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
সূূত্র জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য ২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল বিশ্বব্যাংকের সাথে ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করে সরকার। এছাড়া অন্যান্য দাতা সংস্থার মধ্যে ওই বছরের ১৮ মে জাপানের জাইকার সাথে, ২৪ মে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের সাথে এবং ৬ জুন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে ঋ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক অর্থ ছাড় স্থগিত করলে অন্য দাতারাও তা স্থগিত করে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল সেতু ও তদারকি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের দরপত্রে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিল বিশ্বব্যাংক। সংস্থার পক্ষ থেকে পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে করা একটি তদন্ত প্রতিবেদন গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে অর্থমন্ত্রীকে দেয়া হয়েছিল। সেখানে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য ঘুষ বা কমিশন চেয়েছিল সৈয়দ আবুল হোসেনের মালিকানাধীন সাকো ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধিরা। যোগাযোগমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে অর্থ চাওয়া হয়েছে। কমিশন পেলে সৈয়দ আবুল হোসেন নিজেই কাজ পাইয়ে দেয়ার বিষয়ে সহায়তা করবেন বলে আশ্বাস দেয়া হয়েছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে অবশেষে সৈয়দ আবুল হোসেনকে সরিয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় ওবায়দুল কাদেরকে। তারপরও তুষ্ট হয়নি বিশ্বব্যাংক। অবশেষে সংস্থাটি গত ২৯ জুন পদ্মা সেতুতে ঋণচুক্তি বাতিল করে দেয়। এর পরবর্তীতে অবশ্য সংস্থাটি এক বিবৃতির মাধ্যমে ঋণ পুনর্বিবেচনার সুযোগ একেবারেই শেষ হয়ে যায়নি বলে জানায়।
পদ্মা সেতুর ঋণচুক্তি পুনর্বিবেচনার বিষয়ে বিশ্বব্যাংক গত জুলাই মাসে দেয়া ওই বিবৃতিতে বলেছিল, পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার খুব সীমিত সুযোগ রয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত চারটি পদক্ষেপের মধ্যে দু’টিতে একমত হলেও অপর দু’টি পদক্ষেপের ব্যাপারে ব্যাপক আলোচনার পরও সরকার ইতিবাচক সাড়া দিতে পারেনি। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অফিসের একাধিক কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই বিশ্বব্যাংক মেইল বার্তা পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছিল।
সরকারকে দেয়া প্রস্তাব এবং সরকারের কার্যক্রম সম্পর্কে সংস্থাটি বলেছে, বিশ্বব্যাংক পরামর্শ দিয়েছিল যে সরকার চারটি পদক্ষেপ নিতে পারে। কিন্তু সরকার চারটির মধ্যে দুটি করতে পারেনি। প্রথমত দুর্নীতি দমন কমিশনকে একটি বিশেষ যৌথ তদন্ত ও বিচারিক টিম গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, যাতে দুদক সম্মতি দিয়েছিল। দ্বিতীয়ত সরকার একটি বিকল্প প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যবস্থায় সম্মত হয়েছিল যেখানে সহযোগী অর্থায়নকারীদের জন্য স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় অধিকতর তদারকির সুযোগ ছিল। তৃতীয়ত দুদককে বিশ্বব্যাংকের তত্ত্বাবধানে একটি বাইরের প্যানেলের কাছে তথ্য দেয়ার এবং প্যানেলকে তদন্ত প্রক্রিয়ার পর্যাপ্ততা মূল্যায়নের সুযোগ দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত দুদক বাইরের প্যানেলের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করার কোন আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক রাখার বিষয়টি মেনে নেয়নি। সবশেষে, সরকার বাংলাদেশী আইনের আওতায় থাকা সত্ত্বেও তদন্ত চলাকালে সরকারী দায়িত্ব পালন থেকে সরকারী ব্যক্তিবর্গ (আমলা ও রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত) ছুটি দিতে রাজি হননি। চারটি ব্যবস্থার মধ্যে দু’টি বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ার ফলে বিশ্বব্যাংকের সেতুর জন্য ঋণ সহায়তা বাতিল করা ছাড়া আর কোন বিকল্প ছিল না। বিশ্বব্যাংকের অনুরোধকৃত সকল পদক্ষেপ এবং দুর্নীতির অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশী আইন ও রীতিনীতির ও বিধিবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
পরবর্তীতে সরকার একে একে বিশ্বব্যাংকের তিন শর্তই পুরোপুরি মেনে নেয়। বাকি শর্তটির ক্ষেত্রে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ এবং সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেনকে ছুটিতে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু উপদেষ্টা মসিউর রহমানের পদত্যাগের শর্তটিই ঝুলে থাকে। ফলে সমঝোতার দ্বারপ্রান্তে এসেও আটকে থাকে সমঝোতার বিষয়টি। এখন সরকারের পক্ষ থেকে সেটি পূরণ করা হলেই এ সপ্তাহের মধ্যেই সবকিছু সমাধান হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
No comments