ওষুধই যখন রোগের কারণ- গ্যাস-সংযোগে দুর্নীতি
নতুন গ্যাস-সংযোগে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও সিদ্ধান্তহীনতা বিরাট দুর্নীতির সুযোগ করে দিয়েছে। সরকার বন্ধ ঘোষণা করলেও গোপনে বিবিধ কৌশলে সংযোগ দেওয়া-নেওয়া চলছেই। দেওয়া হচ্ছে উৎকোচের বিনিময়ে, নিতে হচ্ছে অবৈধ পথে, গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।
গ্যাস-সংযোগ বন্ধের নিয়ম থেকে গ্যাসের অপচয় ও দুর্নীতিই আরও রমরমা হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, জেনেশুনে সরকার এই বিষপান কেন করবে, আর কত দিনই বা তা চালিয়ে যাবে?
সরকারি হিসাবে শুধু আবাসিক খাতেই দৈনিক পাঁচ কোটি ঘনফুট গ্যাস অবৈধ পথে চলে যাচ্ছে। বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সংযোগ ব্যবসা চালিয়ে লাভবান হচ্ছেন। গ্রাহকেরা যাঁরা এই অবৈধ পথের খোঁজ পেয়েছেন, তাঁদের লাভ এটুকুই যে বেশি টাকা দিয়ে হলেও তাঁদের ঘরে চুলা জ্বলতে পারছে। মূলত নতুন নির্মিত বড় বড় আবাসন প্রকল্পে এই অবৈধ ব্যবস্থা কার্যকর আছে। সম্প্রতি তিতাস গ্যাসের নামে ৪৫০ কোটি টাকা কোম্পানিটির ব্যাংক হিসাবে জমা পড়লেও বিলদাতারা অজ্ঞাত। সুতরাং, অবৈধ বা গোপন সংযোগে গ্যাস ঠিকই যাচ্ছে, কিন্তু বিল অচিহ্নিত রয়ে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে অবৈধ সংযোগদাতারা নিজেরাই গ্যাসের বিল আদায়ও করছেন।
নতুন গ্যাস-সংযোগ দেওয়ায় পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আগ্রহ প্রকাশ করলেও জ্বালানি উপদেষ্টা নারাজ এবং জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নির্বিকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তহীনতায় সংযোগ-দুর্নীতি, গ্যাসের বিলে দুর্নীতি এবং আবাসিক গ্রাহকদের ভোগান্তি—উভয়ই বেড়েছে। ২০১০ সালে আবাসিক খাতে নতুন সংযোগ বন্ধ ঘোষিত হয়। তখন বলা হয়েছিল, গ্যাসের উৎপাদন ২২০ কোটি ঘনফুটে না ওঠা পর্যন্ত এ ব্যবস্থা চলবে। সম্প্রতি পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হোসেন মনসুর রাজধানীর একটি কর্মশালায় বলেন, গ্যাসের উৎপাদন ২২০ কোটি ঘনফুটে পৌঁছানোয় নতুন সংযোগ দেওয়ায় অসুবিধা নেই। ওই সভায়ই প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, এখনো ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি থাকায় নতুন সংযোগ দেওয়া হবে না। উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে গ্যাসের দৈনিক উৎপাদন ২২৪ কোটি ঘনফুট। এ ছাড়া শ্রীকাইলে নতুন একটি গ্যাসকূপ খনন করা হয়েছে, সুনেত্রসহ নতুন গ্যাসক্ষেত্রেও খনন শুরু হওয়ার পথে। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের ভাষ্যমতে, আবাসিক খাতে নতুন সংযোগের জন্য দৈনিক প্রয়োজন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট। এই পরিমাণ গ্যাসের জোগান দেওয়া তাই অসম্ভব কিছু নয়। ঘাটতি যত না বড়, তার চেয়ে ভোগান্তি ও দুর্নীতির মাত্রাটাই বরং বেশি।
অন্যদিকে যাঁরা এ সুযোগ পাচ্ছেন না, তাঁরা বৈদ্যুতিক চুল্লি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ খরচ বাড়াচ্ছেন। বিদ্যুতের জন্য গ্যাস বাঁচাতে চাইলেও চোরাই পথে গ্যাস আর চুল্লিপথে ঠিকই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। গ্যাস-সংযোগ বন্ধ রেখে কার্যত গ্যাস বা বিদ্যুৎ কোনোটারই সাশ্রয় হচ্ছে না, কিন্তু ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বিশেষত, বস্তি ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর জ্বালানি খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় তাদের জীবনযাত্রা হুমকির মুখে। গ্যাস-সংযোগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত যখন ফলপ্রসূ হচ্ছে না, তখন সিদ্ধান্তটি তুলে নেওয়াই ভালো। আরও ভালো হলো, গ্যাস উৎপাদনে গতি আনা এবং বণ্টন ও বিলিং-ব্যবস্থাকে দুর্নীতিমুক্ত করা। তার জন্য অব্যাহত দুর্নীতির হোতাদের তদন্ত করে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতের সমন্বয়ের স্বার্থে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে যুক্তিযুক্ত মতৈক্যও জরুরি।
সরকারি হিসাবে শুধু আবাসিক খাতেই দৈনিক পাঁচ কোটি ঘনফুট গ্যাস অবৈধ পথে চলে যাচ্ছে। বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সংযোগ ব্যবসা চালিয়ে লাভবান হচ্ছেন। গ্রাহকেরা যাঁরা এই অবৈধ পথের খোঁজ পেয়েছেন, তাঁদের লাভ এটুকুই যে বেশি টাকা দিয়ে হলেও তাঁদের ঘরে চুলা জ্বলতে পারছে। মূলত নতুন নির্মিত বড় বড় আবাসন প্রকল্পে এই অবৈধ ব্যবস্থা কার্যকর আছে। সম্প্রতি তিতাস গ্যাসের নামে ৪৫০ কোটি টাকা কোম্পানিটির ব্যাংক হিসাবে জমা পড়লেও বিলদাতারা অজ্ঞাত। সুতরাং, অবৈধ বা গোপন সংযোগে গ্যাস ঠিকই যাচ্ছে, কিন্তু বিল অচিহ্নিত রয়ে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে অবৈধ সংযোগদাতারা নিজেরাই গ্যাসের বিল আদায়ও করছেন।
নতুন গ্যাস-সংযোগ দেওয়ায় পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আগ্রহ প্রকাশ করলেও জ্বালানি উপদেষ্টা নারাজ এবং জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নির্বিকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তহীনতায় সংযোগ-দুর্নীতি, গ্যাসের বিলে দুর্নীতি এবং আবাসিক গ্রাহকদের ভোগান্তি—উভয়ই বেড়েছে। ২০১০ সালে আবাসিক খাতে নতুন সংযোগ বন্ধ ঘোষিত হয়। তখন বলা হয়েছিল, গ্যাসের উৎপাদন ২২০ কোটি ঘনফুটে না ওঠা পর্যন্ত এ ব্যবস্থা চলবে। সম্প্রতি পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হোসেন মনসুর রাজধানীর একটি কর্মশালায় বলেন, গ্যাসের উৎপাদন ২২০ কোটি ঘনফুটে পৌঁছানোয় নতুন সংযোগ দেওয়ায় অসুবিধা নেই। ওই সভায়ই প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, এখনো ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি থাকায় নতুন সংযোগ দেওয়া হবে না। উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে গ্যাসের দৈনিক উৎপাদন ২২৪ কোটি ঘনফুট। এ ছাড়া শ্রীকাইলে নতুন একটি গ্যাসকূপ খনন করা হয়েছে, সুনেত্রসহ নতুন গ্যাসক্ষেত্রেও খনন শুরু হওয়ার পথে। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের ভাষ্যমতে, আবাসিক খাতে নতুন সংযোগের জন্য দৈনিক প্রয়োজন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট। এই পরিমাণ গ্যাসের জোগান দেওয়া তাই অসম্ভব কিছু নয়। ঘাটতি যত না বড়, তার চেয়ে ভোগান্তি ও দুর্নীতির মাত্রাটাই বরং বেশি।
অন্যদিকে যাঁরা এ সুযোগ পাচ্ছেন না, তাঁরা বৈদ্যুতিক চুল্লি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ খরচ বাড়াচ্ছেন। বিদ্যুতের জন্য গ্যাস বাঁচাতে চাইলেও চোরাই পথে গ্যাস আর চুল্লিপথে ঠিকই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। গ্যাস-সংযোগ বন্ধ রেখে কার্যত গ্যাস বা বিদ্যুৎ কোনোটারই সাশ্রয় হচ্ছে না, কিন্তু ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বিশেষত, বস্তি ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর জ্বালানি খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় তাদের জীবনযাত্রা হুমকির মুখে। গ্যাস-সংযোগ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত যখন ফলপ্রসূ হচ্ছে না, তখন সিদ্ধান্তটি তুলে নেওয়াই ভালো। আরও ভালো হলো, গ্যাস উৎপাদনে গতি আনা এবং বণ্টন ও বিলিং-ব্যবস্থাকে দুর্নীতিমুক্ত করা। তার জন্য অব্যাহত দুর্নীতির হোতাদের তদন্ত করে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতের সমন্বয়ের স্বার্থে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে যুক্তিযুক্ত মতৈক্যও জরুরি।
No comments