টাকা উদ্ধারই প্রথম কাজ
কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সন্দেহভাজন কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। হলমার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককেও ইতিমধ্যে তলব করেছে দুদক।
তদারকিতে ব্যর্থতার দায়ে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে লোপাট করা অর্থ উদ্ধারে সচেষ্ট রয়েছে সোনালী ব্যাংক। ব্যাংক ও আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কেবল সাময়িক বরখাস্ত বা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার মতো প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিলে চলবে না। কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে সবার আগে জনগণের আমানতের টাকা উদ্ধারে সর্বাত্মক উদ্যোগ নেওয়া জরুরি বলে মত দিয়েছেন তাঁরা।
সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা (সাবেক শেরাটন) হোটেল, গুলশান ও আগারগাঁও শাখা থেকে ঋণপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে লোপাট করা অর্থের মধ্যে ৫০০ কোটি টাকারও বেশি ইতিমধ্যে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। একাই নামে-বেনামে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা রূপসী বাংলা হোটেল শাখা থেকে সরিয়ে নিয়েছে যে হলমার্ক গ্রুপ, তাদের সাড়ে ৪৬ একর জমির দলিলপত্র ব্যাংকের হাতে এসেছে এবং আরো প্রায় এক হাজার ৩০০ একর জমি বন্ধক নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়া এদের কাছ থেকে প্রায় ৩৭৭ কোটি টাকা উদ্ধার করা গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী।
রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের সর্ববৃহৎ এই ব্যাংকটির একাধিক শাখা থেকে গত দুই বছরে চার হাজার কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছে বেশ কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে এমন ঘটনা আর কখনো ঘটেনি। এ ঘটনায় আমানতকারীদের স্বার্থ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে ব্যাংক ও ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে দেশের সব মহল। বড় ধরনের এই জালিয়াতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তাদের শাস্তির পাশাপাশি আত্মসাৎ করা টাকা উদ্ধারের বিষয়ে আইনি সহায়তা নিতে ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একই সঙ্গে তাগিদ ও পরামর্শ দিয়েছে তারা।
জানা গেছে, একটি গোয়েন্দা সংস্থা থেকেও সরকারকে জানোনো হয়েছে যে, হলমার্কের লোপাট করা অর্থ উদ্ধারে ব্যর্থ হলে ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আত্মসাৎ করা টাকা উদ্ধার একটু কঠিন। কারণ এখানে ফান্ডেড, নন-ফান্ডেড দুই ধরনের দায়ই রয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় পুরো অর্থ পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে সংশয় থেকে যায়। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বন্ধকি জমির অতিরিক্ত মূল্য দেখানো থাকে, যা বিক্রি করে আসল অর্থ ফেরত পাওয়া সম্ভব হয় না। তা ছাড়া আইনি কার্যক্রম শেষ করতেও অনেক সময় লাগে।
তবু এ দায়ের বিপরীতে যত বেশি সম্ভব কোলেটারেল বা বন্ধক জোগাড় করা যায়, ব্যাংকের এখন সেই চেষ্টাই করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। আগে পার্টির কাছ থেকে পর্যাপ্ত কোলেটারেল ও এর সমর্থনে কাগজপত্র জোগাড় করতে হবে। এখনই চূড়ান্ত আইনি পদক্ষেপের দিকে গেলে টাকা উদ্ধারপ্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।
এ ঘটনায় জড়িত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের আইনের আওতায় আনার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেছেন, কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি টাকা উদ্ধারের বিষয়টিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের জালিয়াতিকে অর্থনৈতিক অপরাধ উল্লেখ করে ইব্রাহিম খালেদ বলেছেন, এ বিষয়ে শিথিলতা দেখালে চলবে না। বরং জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার তানজিব উল আলম বলেন, হলমার্ক টাকা কোথায় নিয়েছে তা খোঁজ করা উচিত। যদি দেশের বাইরে নিয়ে গিয়ে থাকে তা নিশ্চয়ই তারা বস্তায় করে নিয়ে যায়নি। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ট্র্যাক করে তা সহজেই বের করা যায়। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা করা যায়।
ব্যবসায়িক লেনদেনের নামে (প্রকৃতপক্ষে পণ্য আদান-প্রদান হয়নি) বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর এই টাকা শোধ দেওয়ার জন্য ব্যবসা করার সুযোগ চাইছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এ ধরনের জালিয়াতির পরও ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়াটা কতটা নৈতিক সে বিষয়টিও প্রশ্নের দাবি রাখে। সে বিষয়টিও উপেক্ষা করে আমানতকারীদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে টাকা উদ্ধারের দিকে জোর দিয়েছে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, সোনালী ব্যাংকের শেরাটন হোটেল শাখা (বর্তমানে রূপসী বাংলা) থেকে হলমার্ক গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি ব্যবসায়ী গ্রুপ মোট তিন হাজার ৬০৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর মধ্যে হলমার্ক গ্রুপ একাই নিয়েছে দুই হাজার ৬৬৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। টি অ্যান্ড ব্রাদার্স গ্রুপ নিয়েছে ৬৮৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, প্যারাগন গ্রুপ নিয়েছে ১৪৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, ডিএন স্পোর্টস নিয়েছে ২৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, নকশী নিট গ্রুপ নিয়েছে ৬৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা এবং অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো যা নিয়েছে, এর মধ্যে এক হাজার ৯৪৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা ফান্ডেড এবং এক হাজার ৬৬০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা টাকা নন-ফান্ডেড। তবে ভুয়া ঋণপত্রের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া নন-ফান্ডেডের প্রায় এক হাজার কোটি টাকা শেষ মুহূর্তে আটকে দেওয়া হয়েছে।
একই ব্যাংকের আগারগাঁও শাখা থেকে গ্রিন প্রিন্টার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান ভুয়া ঋণপত্রের মাধ্যমে ১৪১ কোটি টাকার আর্থিক সুবিধা নিয়েছে। গুলশান শাখা থেকে রোজবার্গ, এলএনএস গ্রুপসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান একইভাবে আরো ২৮১ কোটি টাকা বের করে নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন ও সোনালী ব্যাংকের একাধিক নিরীক্ষায় এসব ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের ২৬ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বরখাস্তদের আটজন প্রধান কার্যালয়ের, তিনজন ঢাকা মহাব্যবস্থাপক দপ্তরের, ৯ জন রূপসী বাংলা শাখার, একজন গুলশান শাখার এবং পাঁচজন আগারগাঁও শাখার কর্মকর্তা।
গত বুধবার প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘটনা গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করেন সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা। ওই দিন সন্ধ্যায় সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে টাকা উদ্ধারের বিষয়ে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দত্ত বলেন, 'এই ঘটনায় জড়িত প্রতিষ্ঠান মালিকদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। তাঁরা তাঁদের ঋণের দায় স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রথমত প্রয়োজন ঋণওয়ারি নথিপত্র সংরক্ষণ করা। এখন সেই নথিপত্র সংগ্রহ করছি। দ্বিতীয়ত জামানত নেই, জামানত সমৃদ্ধ করতে হবে। সাধারণত রপ্তানি ব্যবসায় জামানত থাকে না। এ ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে।'
প্রদীপ কুমার দত্ত বলেন, 'এ বিষয়ে ফৌজদারি মামলা তো করাই যায়। কিন্তু এতে গ্রাহক আর এগিয়ে আসবে না, ঋণগুলো শ্রেণীকৃত হয়ে যাবে। আমানতকারীদের স্বার্থ বিঘ্নিত হবে। তবে এখনই সেদিকে যাওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না। কারণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণের ২৫ শতাংশ টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বলেছি। বাকি অর্থের দেড়গুণ স্থাবর সম্পদ ব্যাংকের কাছে জামানত রাখতে বলেছি। তারা তাতে রাজিও হয়েছে। এরই মধ্যে সাড়ে ৪৬ একর জমির দলিলপত্র ব্যাংকের হাতে এসেছে, যার দাম তাদের ভাষ্যমতে দুই হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া আরো প্রায় ১৩০০ একর জমি বন্ধক দেওয়ার জন্য তারা কাগজপত্র তৈরি করছে। আর এই জমির দলিলপত্র ঠিক আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে আমরা তিনটি কমিটি করেছি। তারা কাজ শুরু করে দিয়েছে। এ ছাড়া কোনো কোনো ব্যবসায়ী গ্রুপ তাদের যতগুলো প্রতিষ্ঠান আছে এর সবগুলোর কাগজপত্র আমাদের কাছে বন্ধক রাখতে রাজি হয়েছে।'
প্রদীপ কুমার আরো বলেন, 'আমরা চাইছি প্রথমে টাকাটা আদায় করতে। এরপর অপরাধ যেটা হয়েছে তার বিচার হবে। এ জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তাড়াহুড়া করে কোনো কাজ করা ঠিক হবে না। এতে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ বিঘ্নিত হতে পারে। আমানতকারীর স্বার্থ বিঘ্নিত হতে পারে।' প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডেও কোনোরূপ বাধা দেওয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে যে কাজগুলো করার জন্য আগে থেকে কাগজপত্র তৈরি রয়েছে সেগুলো এখনো স্বাভাবিকভাবে চালু রাখা হয়েছে বলেও জানান ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী।
জালিয়াতির মাধ্যমে সরিয়ে নেওয়া জনগণের টাকা ফেরত আনার সম্ভাব্য সব চেষ্টাই পর্ষদ করে যাচ্ছে বলে কালের কণ্ঠকে জানালেন একজন পরিচালক। তিনি বলেন, তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকার মধ্যে এক হাজার ৬৫০ কোটি টাকা নন-ফান্ডেড, যা এখনো বিতরণ হয়নি। ইতিমধ্যে রূপসী বাংলা শাখায় আসা হলমার্কের রপ্তানি আয়ের ৩৪৫ কোটি টাকা কেটে রাখা হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের গুলশান শাখায় ২৮৪ কোটি টাকার জালিয়াতি ধরা পড়ার পরপরই পর্ষদ ব্যবস্থা নেওয়ায় ইতিমধ্যে ১৬০ কোটি টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আগারগাঁও শাখায় ৫১ কোটি টাকার এলসি জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়েছে এবং টাকা উদ্ধারের তৎপরতা চলছে।
ওই পরিচালক বলেন, 'চুরি তো হয়েছেই। সে জন্য কারা দায়ী তাঁদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। তাতে যদি আমি নিজেও দায়ী হই তাহলে আমার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে সরকার। তবে যত দিন দায়িত্বে আছি তত দিন টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাব। আমাদের কাছে জনগণের আমানতের টাকা উদ্ধারই প্রধান লক্ষ্য। হলমার্ক গ্রুপকে তাদের আত্মসাৎ করা টাকার ২৫ শতাংশ নগদে পরিশোধ করা ও বাকি ৭৫ শতাংশের দেড়গুণের (১৫০ শতাংশ) সমপরিমাণ সম্পদ বন্ধক রাখতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ব্যাংক ব্যবসা করে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে। ওই কম্পানি সেই বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে। টাকা ফেরত দিয়ে যদি আস্থা পুনঃস্থাপন করতে পারে তবেই ব্যাংক তার সঙ্গে ব্যবসা করার কথা ভাবতে পারে।
গতকাল শনিবার মিরপুরের পশ্চিম কাফরুলে হলমার্ক গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে গেলে প্রতিষ্ঠানটির কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে চাননি। অভ্যর্থনায় থাকা আবদুল কুদ্দুস নামে পরিচয়দানকারী এক ব্যক্তি কালের কণ্ঠের প্রতিবেদককে জানান, তথ্য দেওয়ার মতো কোনো কর্মকর্তা অফিসে নেই। তবে এ বিষয়ে সম্প্রতি একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে হলমার্ক গ্রুপ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি তার দায়-দেনা পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছে। সমুদয় দেনার বিপরীতে জমি বন্ধক দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে। পুনঃ তফসিলিকরণের মাধ্যমে দায়-দেনা পরিশোধের প্রক্রিয়া চালু করার লক্ষ্যে হলমার্ক আন্তরিক ও উদগ্রীব।
পরে ফোনে পাওয়া যায় হলমার্ক গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার তুষার আহমেদকে। দায় পরিশোধের বিষয়ে তিনি বলেন, 'এ ব্যাপারে কম্পানির অবস্থান ব্যাখ্যা করে আমরা সোনালী ব্যাংককে ২৯টি চিঠি দিয়েছি। আমরা চার হাজার ৬৩৫ শতাংশ জমির সাফ-কবলা দলিল বন্ধক দিয়েছি, যার বাজারমূল্য দুই হাজার কোটি টাকা। আমাদের মোট দায় দুই হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা। এ টাকা আমরা পরিশোধে সক্ষম। সোনালী ব্যাংক গত মে মাস থেকে আমাদের বৈদেশিক লেনদেন কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ায় আমাদের রপ্তানি, আমদানি সব বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে আমাদের নন-ফান্ডেড দায়ও ফান্ডেড হয়ে পড়ছে।' ব্যাংক যদি ব্যবসা করার সুযোগ দেয় এবং পরিশোধের একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়ে কিস্তি ধার্য করে দেয়, তবে খুব শিগগির কম্পানি পুরো দায় শোধ করতে পারবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা (সাবেক শেরাটন) হোটেল, গুলশান ও আগারগাঁও শাখা থেকে ঋণপত্র জালিয়াতির মাধ্যমে লোপাট করা অর্থের মধ্যে ৫০০ কোটি টাকারও বেশি ইতিমধ্যে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। একাই নামে-বেনামে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা রূপসী বাংলা হোটেল শাখা থেকে সরিয়ে নিয়েছে যে হলমার্ক গ্রুপ, তাদের সাড়ে ৪৬ একর জমির দলিলপত্র ব্যাংকের হাতে এসেছে এবং আরো প্রায় এক হাজার ৩০০ একর জমি বন্ধক নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এ ছাড়া এদের কাছ থেকে প্রায় ৩৭৭ কোটি টাকা উদ্ধার করা গেছে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী।
রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের সর্ববৃহৎ এই ব্যাংকটির একাধিক শাখা থেকে গত দুই বছরে চার হাজার কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছে বেশ কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে এমন ঘটনা আর কখনো ঘটেনি। এ ঘটনায় আমানতকারীদের স্বার্থ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে ব্যাংক ও ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে দেশের সব মহল। বড় ধরনের এই জালিয়াতির ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তাদের শাস্তির পাশাপাশি আত্মসাৎ করা টাকা উদ্ধারের বিষয়ে আইনি সহায়তা নিতে ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একই সঙ্গে তাগিদ ও পরামর্শ দিয়েছে তারা।
জানা গেছে, একটি গোয়েন্দা সংস্থা থেকেও সরকারকে জানোনো হয়েছে যে, হলমার্কের লোপাট করা অর্থ উদ্ধারে ব্যর্থ হলে ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আত্মসাৎ করা টাকা উদ্ধার একটু কঠিন। কারণ এখানে ফান্ডেড, নন-ফান্ডেড দুই ধরনের দায়ই রয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় পুরো অর্থ পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে সংশয় থেকে যায়। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বন্ধকি জমির অতিরিক্ত মূল্য দেখানো থাকে, যা বিক্রি করে আসল অর্থ ফেরত পাওয়া সম্ভব হয় না। তা ছাড়া আইনি কার্যক্রম শেষ করতেও অনেক সময় লাগে।
তবু এ দায়ের বিপরীতে যত বেশি সম্ভব কোলেটারেল বা বন্ধক জোগাড় করা যায়, ব্যাংকের এখন সেই চেষ্টাই করা উচিত বলে মনে করেন তিনি। আগে পার্টির কাছ থেকে পর্যাপ্ত কোলেটারেল ও এর সমর্থনে কাগজপত্র জোগাড় করতে হবে। এখনই চূড়ান্ত আইনি পদক্ষেপের দিকে গেলে টাকা উদ্ধারপ্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।
এ ঘটনায় জড়িত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের আইনের আওতায় আনার পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেছেন, কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি টাকা উদ্ধারের বিষয়টিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের জালিয়াতিকে অর্থনৈতিক অপরাধ উল্লেখ করে ইব্রাহিম খালেদ বলেছেন, এ বিষয়ে শিথিলতা দেখালে চলবে না। বরং জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার তানজিব উল আলম বলেন, হলমার্ক টাকা কোথায় নিয়েছে তা খোঁজ করা উচিত। যদি দেশের বাইরে নিয়ে গিয়ে থাকে তা নিশ্চয়ই তারা বস্তায় করে নিয়ে যায়নি। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ট্র্যাক করে তা সহজেই বের করা যায়। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা করা যায়।
ব্যবসায়িক লেনদেনের নামে (প্রকৃতপক্ষে পণ্য আদান-প্রদান হয়নি) বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর এই টাকা শোধ দেওয়ার জন্য ব্যবসা করার সুযোগ চাইছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এ ধরনের জালিয়াতির পরও ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়াটা কতটা নৈতিক সে বিষয়টিও প্রশ্নের দাবি রাখে। সে বিষয়টিও উপেক্ষা করে আমানতকারীদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে টাকা উদ্ধারের দিকে জোর দিয়েছে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, সোনালী ব্যাংকের শেরাটন হোটেল শাখা (বর্তমানে রূপসী বাংলা) থেকে হলমার্ক গ্রুপসহ বেশ কয়েকটি ব্যবসায়ী গ্রুপ মোট তিন হাজার ৬০৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর মধ্যে হলমার্ক গ্রুপ একাই নিয়েছে দুই হাজার ৬৬৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। টি অ্যান্ড ব্রাদার্স গ্রুপ নিয়েছে ৬৮৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, প্যারাগন গ্রুপ নিয়েছে ১৪৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, ডিএন স্পোর্টস নিয়েছে ২৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, নকশী নিট গ্রুপ নিয়েছে ৬৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা এবং অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো যা নিয়েছে, এর মধ্যে এক হাজার ৯৪৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা ফান্ডেড এবং এক হাজার ৬৬০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা টাকা নন-ফান্ডেড। তবে ভুয়া ঋণপত্রের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়া নন-ফান্ডেডের প্রায় এক হাজার কোটি টাকা শেষ মুহূর্তে আটকে দেওয়া হয়েছে।
একই ব্যাংকের আগারগাঁও শাখা থেকে গ্রিন প্রিন্টার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান ভুয়া ঋণপত্রের মাধ্যমে ১৪১ কোটি টাকার আর্থিক সুবিধা নিয়েছে। গুলশান শাখা থেকে রোজবার্গ, এলএনএস গ্রুপসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান একইভাবে আরো ২৮১ কোটি টাকা বের করে নিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন ও সোনালী ব্যাংকের একাধিক নিরীক্ষায় এসব ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের ২৬ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বরখাস্তদের আটজন প্রধান কার্যালয়ের, তিনজন ঢাকা মহাব্যবস্থাপক দপ্তরের, ৯ জন রূপসী বাংলা শাখার, একজন গুলশান শাখার এবং পাঁচজন আগারগাঁও শাখার কর্মকর্তা।
গত বুধবার প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘটনা গণমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করেন সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা। ওই দিন সন্ধ্যায় সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে টাকা উদ্ধারের বিষয়ে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দত্ত বলেন, 'এই ঘটনায় জড়িত প্রতিষ্ঠান মালিকদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। তাঁরা তাঁদের ঋণের দায় স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রথমত প্রয়োজন ঋণওয়ারি নথিপত্র সংরক্ষণ করা। এখন সেই নথিপত্র সংগ্রহ করছি। দ্বিতীয়ত জামানত নেই, জামানত সমৃদ্ধ করতে হবে। সাধারণত রপ্তানি ব্যবসায় জামানত থাকে না। এ ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে।'
প্রদীপ কুমার দত্ত বলেন, 'এ বিষয়ে ফৌজদারি মামলা তো করাই যায়। কিন্তু এতে গ্রাহক আর এগিয়ে আসবে না, ঋণগুলো শ্রেণীকৃত হয়ে যাবে। আমানতকারীদের স্বার্থ বিঘ্নিত হবে। তবে এখনই সেদিকে যাওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না। কারণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণের ২৫ শতাংশ টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য বলেছি। বাকি অর্থের দেড়গুণ স্থাবর সম্পদ ব্যাংকের কাছে জামানত রাখতে বলেছি। তারা তাতে রাজিও হয়েছে। এরই মধ্যে সাড়ে ৪৬ একর জমির দলিলপত্র ব্যাংকের হাতে এসেছে, যার দাম তাদের ভাষ্যমতে দুই হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া আরো প্রায় ১৩০০ একর জমি বন্ধক দেওয়ার জন্য তারা কাগজপত্র তৈরি করছে। আর এই জমির দলিলপত্র ঠিক আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে আমরা তিনটি কমিটি করেছি। তারা কাজ শুরু করে দিয়েছে। এ ছাড়া কোনো কোনো ব্যবসায়ী গ্রুপ তাদের যতগুলো প্রতিষ্ঠান আছে এর সবগুলোর কাগজপত্র আমাদের কাছে বন্ধক রাখতে রাজি হয়েছে।'
প্রদীপ কুমার আরো বলেন, 'আমরা চাইছি প্রথমে টাকাটা আদায় করতে। এরপর অপরাধ যেটা হয়েছে তার বিচার হবে। এ জন্য আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। তাড়াহুড়া করে কোনো কাজ করা ঠিক হবে না। এতে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ বিঘ্নিত হতে পারে। আমানতকারীর স্বার্থ বিঘ্নিত হতে পারে।' প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডেও কোনোরূপ বাধা দেওয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে যে কাজগুলো করার জন্য আগে থেকে কাগজপত্র তৈরি রয়েছে সেগুলো এখনো স্বাভাবিকভাবে চালু রাখা হয়েছে বলেও জানান ব্যাংকটির প্রধান নির্বাহী।
জালিয়াতির মাধ্যমে সরিয়ে নেওয়া জনগণের টাকা ফেরত আনার সম্ভাব্য সব চেষ্টাই পর্ষদ করে যাচ্ছে বলে কালের কণ্ঠকে জানালেন একজন পরিচালক। তিনি বলেন, তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকার মধ্যে এক হাজার ৬৫০ কোটি টাকা নন-ফান্ডেড, যা এখনো বিতরণ হয়নি। ইতিমধ্যে রূপসী বাংলা শাখায় আসা হলমার্কের রপ্তানি আয়ের ৩৪৫ কোটি টাকা কেটে রাখা হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের গুলশান শাখায় ২৮৪ কোটি টাকার জালিয়াতি ধরা পড়ার পরপরই পর্ষদ ব্যবস্থা নেওয়ায় ইতিমধ্যে ১৬০ কোটি টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আগারগাঁও শাখায় ৫১ কোটি টাকার এলসি জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়েছে এবং টাকা উদ্ধারের তৎপরতা চলছে।
ওই পরিচালক বলেন, 'চুরি তো হয়েছেই। সে জন্য কারা দায়ী তাঁদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। তাতে যদি আমি নিজেও দায়ী হই তাহলে আমার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে সরকার। তবে যত দিন দায়িত্বে আছি তত দিন টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাব। আমাদের কাছে জনগণের আমানতের টাকা উদ্ধারই প্রধান লক্ষ্য। হলমার্ক গ্রুপকে তাদের আত্মসাৎ করা টাকার ২৫ শতাংশ নগদে পরিশোধ করা ও বাকি ৭৫ শতাংশের দেড়গুণের (১৫০ শতাংশ) সমপরিমাণ সম্পদ বন্ধক রাখতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ব্যাংক ব্যবসা করে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে। ওই কম্পানি সেই বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে। টাকা ফেরত দিয়ে যদি আস্থা পুনঃস্থাপন করতে পারে তবেই ব্যাংক তার সঙ্গে ব্যবসা করার কথা ভাবতে পারে।
গতকাল শনিবার মিরপুরের পশ্চিম কাফরুলে হলমার্ক গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে গেলে প্রতিষ্ঠানটির কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে চাননি। অভ্যর্থনায় থাকা আবদুল কুদ্দুস নামে পরিচয়দানকারী এক ব্যক্তি কালের কণ্ঠের প্রতিবেদককে জানান, তথ্য দেওয়ার মতো কোনো কর্মকর্তা অফিসে নেই। তবে এ বিষয়ে সম্প্রতি একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে হলমার্ক গ্রুপ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি তার দায়-দেনা পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছে। সমুদয় দেনার বিপরীতে জমি বন্ধক দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে। পুনঃ তফসিলিকরণের মাধ্যমে দায়-দেনা পরিশোধের প্রক্রিয়া চালু করার লক্ষ্যে হলমার্ক আন্তরিক ও উদগ্রীব।
পরে ফোনে পাওয়া যায় হলমার্ক গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার তুষার আহমেদকে। দায় পরিশোধের বিষয়ে তিনি বলেন, 'এ ব্যাপারে কম্পানির অবস্থান ব্যাখ্যা করে আমরা সোনালী ব্যাংককে ২৯টি চিঠি দিয়েছি। আমরা চার হাজার ৬৩৫ শতাংশ জমির সাফ-কবলা দলিল বন্ধক দিয়েছি, যার বাজারমূল্য দুই হাজার কোটি টাকা। আমাদের মোট দায় দুই হাজার ৬৮৬ কোটি টাকা। এ টাকা আমরা পরিশোধে সক্ষম। সোনালী ব্যাংক গত মে মাস থেকে আমাদের বৈদেশিক লেনদেন কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ায় আমাদের রপ্তানি, আমদানি সব বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে আমাদের নন-ফান্ডেড দায়ও ফান্ডেড হয়ে পড়ছে।' ব্যাংক যদি ব্যবসা করার সুযোগ দেয় এবং পরিশোধের একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়ে কিস্তি ধার্য করে দেয়, তবে খুব শিগগির কম্পানি পুরো দায় শোধ করতে পারবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
No comments