সর্বশেষ সাক্ষাৎকার- ‘মটরদানা আকৃতির পৃথিবী’ by নিল আর্মস্ট্রং
চন্দ্রপৃষ্ঠের ঢালগুলো ছিল খাড়া প্রকৃতির, আবার ঢালুও। শিলাগুলোর আকার ছিল বড় ধরনের—একেকটা মোটরযানের মতো দেখতে। আসলে আমরা যেখানে নামতে চেয়েছিলাম, সেখানে অটোপাইলট পদ্ধতির জন্য অবতরণ করতে পারিনি। অটোপাইলট আমাদের ধীরে ধীরে বিশাল এক জ্বালামুখের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল।
বিশাল ফুটবলাকৃতির জ্বালামুখ ছিল সেটি। তার পর আমি যান্ত্রিকভাবে অ্যাপোলো মডিউলের নিয়ন্ত্রণ নিই। হেলিকপ্টার চালানোর মতো আমি ধীরে ধীরে পশ্চিম দিক থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলাম এবং তুলনামূলক সমান্তরাল এলাকায় নামার চেষ্টা করি। আমাদের জ্বালানির ঘাটতি দেখা দিয়েছিল, তার পরও আমরা সফলভাবে শান্ত সাগরে অবতরণে সক্ষম হই।
পৃষ্ঠে অবতরণের পরেই মটরশুঁটির মতো দানাকৃতির বস্তুটি হঠাৎই আমার মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। আকৃতিতে কিছুটা গোলাকার এবং দেখতে নীল বর্ণের। দানাকৃতির বস্তুটিই আমাদের পৃথিবী। আমি আমার মুষ্টিবদ্ধ হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল উঁচিয়ে এক চোখের সামনে নিয়ে আরেক চোখ বন্ধ করে দিলাম। আমার আঙুল দিয়ে আমি ঢেকে দিলাম পৃথিবীকে। আমার নিজেকে একটুও দৈত্যাকৃতির মনে হয়নি, আমি ছিলাম ক্ষুদ্রাকার।
চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের পর আমাদের মনে হয়নি আমরা প্রতিদ্বন্দ্বী সোভিয়েতদের পরাজিত করেছি। আমাদের দুই পক্ষের প্রতিযোগিতার কারণেই আমরা সেখানে পৌঁছাতে সক্ষম হই। মানবজাতির ইতিহাসে নতুন অধ্যায় শুরু হয়। আমরা দুপক্ষেরই নিহত নভোচারীদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ফলক রেখে আসি। শান্তির প্রতীক হিসেবে জলপাইগাছের রেপ্লিকা রেখে আসি।
চন্দ্রে অবতরণের এক মাস আগেই আমরা সুনিশ্চিত ছিলাম, আমাদের চেষ্টাতে আমরা চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করতে পারব। অবতরণ করতে না পারলেও চাঁদের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে সক্ষম হব আমরা। আমি মনে করেছিলাম, পৃথিবীতে নিরাপদে ফিরে আসার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ। কিন্তু প্রথম সুযোগেই অবতরণের সম্ভাবনা মনে হয়েছিল ৫০ শতাংশ।
মানুষের চন্দ্রবিজয় নিয়ে অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করে। বিখ্যাত ঘটনার পেছনের গল্প, কাহিনি, ষড়যন্ত্রগাথা মানুষ পছন্দ করে। সেগুলো বেশ আকর্ষণীয় হয়ে থাকে। সেটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। নাসার অ্যাপোলো মিশনে আট লক্ষাধিক লোক অংশ নেয়। তাদের কাছ থেকে এত বড় ঘটনা লুকানো সম্ভব নয়। আমি জানি, একদিন কেউ না কেউ আবার চাঁদে উড়ে যাবে। তখন সে চন্দ্রপৃষ্ঠে আমার রেখে আসা ক্যামেরাটি নিয়ে আসবে।
(প্রচারবিমুখ হওয়ার কারণে আর্মস্ট্রংয়ের রোমাঞ্চকর চন্দ্রবিজয়ের অনুভূতি নিয়ে সাক্ষাৎকারের সংখ্যা কম।
২০১২ সালের মে মাসে সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়াতে একটি সম্মেলনে চন্দ্র বিজয় নিয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন নিল আর্মস্ট্রং।)
ইংরেজি থেকে সংক্ষিপ্ত ভাষান্তর: রায়হান হাসান
পৃষ্ঠে অবতরণের পরেই মটরশুঁটির মতো দানাকৃতির বস্তুটি হঠাৎই আমার মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল। আকৃতিতে কিছুটা গোলাকার এবং দেখতে নীল বর্ণের। দানাকৃতির বস্তুটিই আমাদের পৃথিবী। আমি আমার মুষ্টিবদ্ধ হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল উঁচিয়ে এক চোখের সামনে নিয়ে আরেক চোখ বন্ধ করে দিলাম। আমার আঙুল দিয়ে আমি ঢেকে দিলাম পৃথিবীকে। আমার নিজেকে একটুও দৈত্যাকৃতির মনে হয়নি, আমি ছিলাম ক্ষুদ্রাকার।
চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের পর আমাদের মনে হয়নি আমরা প্রতিদ্বন্দ্বী সোভিয়েতদের পরাজিত করেছি। আমাদের দুই পক্ষের প্রতিযোগিতার কারণেই আমরা সেখানে পৌঁছাতে সক্ষম হই। মানবজাতির ইতিহাসে নতুন অধ্যায় শুরু হয়। আমরা দুপক্ষেরই নিহত নভোচারীদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ফলক রেখে আসি। শান্তির প্রতীক হিসেবে জলপাইগাছের রেপ্লিকা রেখে আসি।
চন্দ্রে অবতরণের এক মাস আগেই আমরা সুনিশ্চিত ছিলাম, আমাদের চেষ্টাতে আমরা চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করতে পারব। অবতরণ করতে না পারলেও চাঁদের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে সক্ষম হব আমরা। আমি মনে করেছিলাম, পৃথিবীতে নিরাপদে ফিরে আসার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ। কিন্তু প্রথম সুযোগেই অবতরণের সম্ভাবনা মনে হয়েছিল ৫০ শতাংশ।
মানুষের চন্দ্রবিজয় নিয়ে অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করে। বিখ্যাত ঘটনার পেছনের গল্প, কাহিনি, ষড়যন্ত্রগাথা মানুষ পছন্দ করে। সেগুলো বেশ আকর্ষণীয় হয়ে থাকে। সেটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। নাসার অ্যাপোলো মিশনে আট লক্ষাধিক লোক অংশ নেয়। তাদের কাছ থেকে এত বড় ঘটনা লুকানো সম্ভব নয়। আমি জানি, একদিন কেউ না কেউ আবার চাঁদে উড়ে যাবে। তখন সে চন্দ্রপৃষ্ঠে আমার রেখে আসা ক্যামেরাটি নিয়ে আসবে।
(প্রচারবিমুখ হওয়ার কারণে আর্মস্ট্রংয়ের রোমাঞ্চকর চন্দ্রবিজয়ের অনুভূতি নিয়ে সাক্ষাৎকারের সংখ্যা কম।
২০১২ সালের মে মাসে সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়াতে একটি সম্মেলনে চন্দ্র বিজয় নিয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন নিল আর্মস্ট্রং।)
ইংরেজি থেকে সংক্ষিপ্ত ভাষান্তর: রায়হান হাসান
No comments