বাংলাদেশ-ইরান জেইসি বৈঠক মার্চে ঢাকায়

আগামী মার্চে বাংলাদেশ-ইরান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠকের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে এবং ব্যবসার আরও নতুন ক্ষেত্র তৈরি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।


শুক্রবার ইরানের তেহরানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আলী আকবর সালেহীর মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা কাজের জন্য দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়। এর আওতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেবে ইরান।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ মিজারুল কায়েস, ইরানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খোন্দকার আব্দুস সাত্তার, অতিরিক্ত সচিব যিষ্ণু রায় চৌধুরী, মহাপরিচালক নজরুল ইসলাম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি ইরানে মেয়াদোত্তীর্ণ বাংলাদেশী কর্মীদের মেয়াদ বাড়ানো, ঢাকা-তেহরান উড়োজাহাজ চলাচল সার্ভিস পুনরায় চালু এবং বাংলাদেশ থেকে ইরানে রফতানিকৃত পাটের ওপর শুল্ক আরও কমিয়ে আনার আহ্বান জানান। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়গুলো বিবেচনার আশ্বাস দেন। দুই দেশের মন্ত্রীই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক আরও বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। তাঁরা আগামী মার্চে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ-ইরান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠককে স্বাগত জানান।
এদিকে বৈঠকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরানের তেহরানে সদ্য সমাপ্ত ১৬তম জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম) সম্মেলনে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। সম্মেলনে ফিলিস্তিনসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ইস্যুতে তিনি বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেন। ন্যাম সম্মেলনে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও ইরানের এ বার্তা পৌঁছে দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জটিল পরিস্থিতির মধ্যে ন্যাম সম্মেলনের গুরুত্ব অনেক বলে মন্তব্য করেন ড. সালেহী। সে সময় ইরানের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন থাকবে বলে তাঁকে আশ্বস্ত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষ করে দুই দেশের মধ্যকার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও বিস্তৃত করার ওপর জোর দেন তাঁরা। সম্মেলনের ঠিক আগে আগে তেহরানে ইরান ও বাংলাদেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রথম পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের পরামর্শক বৈঠক বা ফরেন অফিস কনসালটেশন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা। গত ২৫ আগস্ট ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, গত ৩০ ও ৩১ আগস্ট তেহরানে ১৬তম ন্যাম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলন হওয়ার আগে সেখানে ২৮ ও ২৯ আগস্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ২৬ ও ২৭ আগস্ট পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে ৩০ আগস্ট বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংহ, ইরানের প্রেসিডেন্ট আহমদিনেজাদ এবং শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রাজাপাকশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।

No comments

Powered by Blogger.