ঢাকার বুকে নিলের এক দিন by এফ আর সরকার
১৯৬৯ সালের অক্টোবর মাস। আমি তখন পূর্ব পাকিস্তান পানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি করি আর অডিট ইনসপেকশনের জন্য বরিশালে অবস্থানরত। সেখানে থাকতাম সাগরদীর একটি গেস্ট হাউসে। একদিন খবরের কাগজ খুলে একটি খবর দেখে আমার চোখ উল্টো গেল।
‘অ্যাপোলো ১১’ মহাকাশ অভিযানের তিনজন নভোচারী, যাঁরা গত ২০ জুলাই চাঁদের বুকে পদচারণ করেছিলেন, সেই চন্দ্রজয়ী আর্মস্ট্রং, অলড্রিন ও কলিন্স ২৭ অক্টোবর বিশ্ব শুভেচ্ছা সফরের অংশ হিসেবে এক দিনের জন্য ঢাকা আসছেন। এটি ছিল এক ঐতিহাসিক ঘটনা। সেই চন্দ্র বিজয়ীদের দেখার সুযোগ গ্রহণ করার লক্ষ্যে ঢাকায় আসার মনস্থির করলাম। সেই সময়ে ঢাকা-বরিশাল যাতায়াতের একমাত্র পরিবহনব্যবস্থা ছিল লঞ্চ। লঞ্চে করে বিকেলে রওনা দিয়ে সারা রাত মানুষের গাদাগাদির হইচই আর বৃষ্টি-বাদলের ঝড়-ঝাপটা খেয়ে ২৭ অক্টোবর সকালে সদরঘাটে পৌঁছালাম। লক্ষ্মীবাজারের এক হোটেলে ঢুকে কিছু গলাধকরণ করেই ছুটলাম ঢাকা এয়ারপোর্টের (বর্তমান তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর) দিকে। কারণ, অপরাহেই চন্দ্র বিজয়ীরা ভারতের মুম্বাই থেকে ঢাকা এসে পৌঁছাবেন। চারদিক থেকে মানুষ ছুটে চলছে এয়ারপোর্টের দিকে এই ঐতিহাসিক মানুষগুলোকে এক নজর দেখার জন্য। এয়ারপোর্টে গিয়ে দেখি বিশাল এলাকাটি লোকে লোকারণ্য। এর সঙ্গে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা পুলিশ ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর অনেক সদস্য। অনেক কষ্টে দক্ষিণ দিক দিয়ে রানওয়ের কাছাকাছি ঢুকলাম। সেখানে বিরাট লাইন, মানুষ গিজগিজ করছে। প্লেন এয়ারপোর্টের উত্তর দিকে ল্যান্ড করবে, তারপর দক্ষিণে এসে টার্ন নিয়ে উত্তর দিকে টারমাকে যাবে। আমরা তখন প্লেনটা হয়তো দেখতে পারব কিন্তু ওই স্থান থেকে আর কিছু দেখা যাবে না। কিন্তু আমাকে যে নভোচারীদের দেখতেই হবে, এই প্লেনের দৌড় দেখে লাভ কী? সংবিৎ ফিরে এল, এখানে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখে লাভ নেই। তা হলে কী করা যায়? এ নিয়ে ভাবছি, কিন্তু কোনো কূল-কিনারা করতে পারছি না। কারণ, টারমাকে যাওয়ার জন্য বিশেষ পাস লাগবে, যা আমার কাছে ছিল না এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনী দিয়ে এমনভাবে এয়ারপোর্ট ঘিরে রাখা হয়েছে, তা ভেদ করে ভেতরে যাওয়াও সম্ভব নয়।
তা হলে কীভাবে ভেতরে যাওয়া যায়, এসব প্ল্যান করতে করতে সময় গড়িয়ে গেল। এমন সময়ে হইহুল্লোড় আর করতালির শব্দ শুনতে পেলাম। দেখলাম সাদা একটি প্লেন রানওয়ের উত্তর মাথায় ল্যান্ড করে সোজা এগিয়ে আসছে। আর বেশি সময় নেই, কয়েক মিনিটের মধ্যেই এটি টারমাকে এসে দাঁড়াবে। দক্ষিণ দিক থেকে প্লেন যাওয়ার দৃশ্যটা যদিও দেখা যেত কিন্তু টারমাকে গেলে কিছুই দেখতে পারব না। কারণ, সে জায়গাটি টার্মিনাল ভবনের উত্তর দিকে। তখন হন্যে হয়ে এক চরম উত্তেজনায় এখানে-সেখানে ছোটাছুটি করতে লাগলাম আর মনে হচ্ছিল, সব পরিশ্রম বুঝি ব্যর্থ হলো, চন্দ্রজয়ী মানুষগুলোকে আর দেখতে পারলাম না।
সেই সময় তেজগাঁও এয়ারপোর্টের টার্মিনাল বিল্ডিংয়ের পশ্চিম দিকে ছিল ভিআইপি লাউঞ্জ। এর পশ্চিম পাশেই ছিল একটি ফুলের বাগান। সেই বাগানটি ছিল লোহার গ্রিল দিয়ে ঘেরা, এর উত্তরেই ছিল টারমাক।
গ্রিলের শিকগুলো ওপরের দিকে ফলার মতো ধারালো।
ফলে একে ক্রস করে ওপারে যাওয়ার উপায় ছিল না। তা ছাড়া অনেক পুলিশ ছিল ভিআইপি লাউঞ্জ গেটে পাহারারত। আমিসহ আরও কয়েকজন যুবক সেখানে পায়চারি করতে লাগলাম—কীভাবে এই দুর্গসম লোহার গ্রিল টপকে টারমাকে যাওয়া যায় তার উপায় বের করতে। সে সুযোগও এসে গেল। প্লেন তখন অ্যাপোলো ১১-এর নভোচারীদের নিয়ে এয়ারপোর্টের দক্ষিণ দিকে ঘুরে রানওয়ে দিয়ে উত্তর দিকে টারমাকে যাওয়া শুরু করেছে। হাজার হাজার লোক উল্লাসে ফেটে পড়ছে, সমগ্র এয়ারপোর্ট এলাকাটি তখন মানুষের উচ্চ কণ্ঠস্বরে প্রকম্পিত, সবার দৃষ্টি তখন ওই প্লেনের দিকে। সেই সঙ্গে প্রহরারত পুলিশ ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরাও সাময়িকভাবে ভুলে গেলেন তাঁদের দায়িত্বের কথা, হুমড়ি খেয়ে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলেন ওই প্লেনের দিকে। তখন আমাদের যৌবনকাল। তপ্ত রক্তের শক্তিতে উন্মাদনায় লাথি মেরে গুঁড়িয়ে দেব বিপদের আপদকে, এই মোহমন্ত্রের আবেগে তন্দ্রাচ্ছন্ন। সেই মাহেন্দ্রক্ষণে আমরা কয়েকজন ডানপিটে ছেলে একযোগে লাথি মারলাম বাগানের গ্রিলের বেড়ার ওপর।
আমাদের সেই অসীম শক্তির কাছে নতজানু হলো লোহার বলিষ্ঠ শক্ত বেড়া, তার ওপর তড়িৎ বেগে পদচারণ করে বীরের মতো এগিয়ে গেলাম সম্মুখের দিকে, অনেকটা আলোর গতির কাছাকাছি। উত্তর পাশের বেড়ার গ্রিল ! ফলে ছোট হাইজাম্প করে সহজেই ওটা পার হলাম।
এদিকে পেছনে তাকিয়ে দেখি পুলিশের লোকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ধেয়ে আসছে আমাদের দিকে। ইতিমধ্যে কয়েকজনকে ধরে বেদম প্রহার করল, পাকড়াও করল; কিন্তু আমার এস্কেপ ভেলোসিটি বেশি থাকায় শুধু ক্যামেরার মাথায় একটি আঘাত ছাড়া শরীর অক্ষত থাকল। টারমাকের বিশাল অভ্যাগত জনতার মধ্যে আমি নিখুঁতভাবে মিশে গেলাম। ততক্ষণে নিল আর্মস্ট্রং, এডউইন অলড্রিন ও মাইকেল কলিন্স প্লেন থেকে নেমে খোলা গাড়িতে করে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের দিকে রওনা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু জনতার প্লাবনের মধ্যে গাড়ি নিয়ে এগোতে পারছিলেন না।
যেহেতু আমার হাতে ক্যামেরা ছিল, তাই ওখানে উপস্থিত অনেকেই মনে করলেন আমি হয়তো সাংবাদিক। আর আমি দারুণভাবে ক্যামেরা চালিয়ে এগিয়ে যেতে থাকলাম নভোচারীদের স্ন্যাপ নিতে নিতে। তখন খোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে আছেন আর্মস্ট্রং, অলড্রিন ও কলিন্স। প্রথমে হাত বাড়িয়ে দিলাম আর্মস্ট্রংয়ের দিকে। তিনি হাসিমুখে করমর্দন করলেন এবং খুব সম্ভব বলেছিলেন, ‘হাউ আর ইউ।’ আমার তখন মনে হয়েছিল, আমার এত পরিশ্রম আর পুলিশের লাঠিপেটা খাওয়া সার্থক হলো। এরপর এডউইন অলড্রিনের সঙ্গে করমর্দন করলাম। তিনিও খুব হাসিখুশি মনে গ্রহণ করলেন, কিন্তু যখন মাইকেল কলিন্সের দিকে হাত বাড়ালাম, তাঁর মুখ দেখলাম গম্ভীর। করমর্দন করলেন না। হাত ফিরিয়ে নিলাম। এরপর অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হলো, জনতার ভিড় ঠেলে চন্দ্র বিজয়ীদের বিজয় মিছিলের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিকে রওনা হতে।
সঙ্গে ছিলেন তাঁদের স্ত্রী ও ঢাকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের কর্মকর্তারা আর এক ঝাঁক সাংবাদিক। তুমুল করতালি ও মুহুর্মুহু আনন্দ ধ্বনির মধ্যে মোটর শোভাযাত্রা চলল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিকে, যেটা বর্তমানে রূপসী বাংলা হোটেল নামে পরিচিত। রাস্তায় এসে দেখি কোনো যানবাহন নেই, সব জায়গায় লোকে লোকারণ্য।
একটি বাস দেখলাম শাহবাগের দিকে যাচ্ছে, তাতে ঝট করে উঠে পড়লাম। একটু পরেই লক্ষ করলাম, আলখেল্লা আর বিভিন্ন পোশাক পরা এক ধরনের যাত্রী, পরে বুঝতে পারলাম এরা স্পেশাল ব্রাঞ্চের টিকটিকি। কিন্তু তারা আমার এই অনধিকার প্রবেশে বাধা দিল না। হয়তো ভাবল, আমিও বোধ হয় স্পেশাল ব্রাঞ্চে নতুন চাকরি নিয়ে এসেছি। আমিও চুপচাপ থাকলাম। ভাবটা এমন যেন ডিউটি শেষ করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। অনেকক্ষণ চলার পর রাস্তায় এক জায়গায় এসে নেমে পড়লাম। তখন সন্ধ্যা হতে চলছে, চন্দ ্রবিজয়ীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মনটা দারুণভাবে শিহরিত আর পরিতৃপ্ত।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক,
বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যালসোসাইটি।
তা হলে কীভাবে ভেতরে যাওয়া যায়, এসব প্ল্যান করতে করতে সময় গড়িয়ে গেল। এমন সময়ে হইহুল্লোড় আর করতালির শব্দ শুনতে পেলাম। দেখলাম সাদা একটি প্লেন রানওয়ের উত্তর মাথায় ল্যান্ড করে সোজা এগিয়ে আসছে। আর বেশি সময় নেই, কয়েক মিনিটের মধ্যেই এটি টারমাকে এসে দাঁড়াবে। দক্ষিণ দিক থেকে প্লেন যাওয়ার দৃশ্যটা যদিও দেখা যেত কিন্তু টারমাকে গেলে কিছুই দেখতে পারব না। কারণ, সে জায়গাটি টার্মিনাল ভবনের উত্তর দিকে। তখন হন্যে হয়ে এক চরম উত্তেজনায় এখানে-সেখানে ছোটাছুটি করতে লাগলাম আর মনে হচ্ছিল, সব পরিশ্রম বুঝি ব্যর্থ হলো, চন্দ্রজয়ী মানুষগুলোকে আর দেখতে পারলাম না।
সেই সময় তেজগাঁও এয়ারপোর্টের টার্মিনাল বিল্ডিংয়ের পশ্চিম দিকে ছিল ভিআইপি লাউঞ্জ। এর পশ্চিম পাশেই ছিল একটি ফুলের বাগান। সেই বাগানটি ছিল লোহার গ্রিল দিয়ে ঘেরা, এর উত্তরেই ছিল টারমাক।
গ্রিলের শিকগুলো ওপরের দিকে ফলার মতো ধারালো।
ফলে একে ক্রস করে ওপারে যাওয়ার উপায় ছিল না। তা ছাড়া অনেক পুলিশ ছিল ভিআইপি লাউঞ্জ গেটে পাহারারত। আমিসহ আরও কয়েকজন যুবক সেখানে পায়চারি করতে লাগলাম—কীভাবে এই দুর্গসম লোহার গ্রিল টপকে টারমাকে যাওয়া যায় তার উপায় বের করতে। সে সুযোগও এসে গেল। প্লেন তখন অ্যাপোলো ১১-এর নভোচারীদের নিয়ে এয়ারপোর্টের দক্ষিণ দিকে ঘুরে রানওয়ে দিয়ে উত্তর দিকে টারমাকে যাওয়া শুরু করেছে। হাজার হাজার লোক উল্লাসে ফেটে পড়ছে, সমগ্র এয়ারপোর্ট এলাকাটি তখন মানুষের উচ্চ কণ্ঠস্বরে প্রকম্পিত, সবার দৃষ্টি তখন ওই প্লেনের দিকে। সেই সঙ্গে প্রহরারত পুলিশ ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরাও সাময়িকভাবে ভুলে গেলেন তাঁদের দায়িত্বের কথা, হুমড়ি খেয়ে দৃষ্টি নিবদ্ধ করলেন ওই প্লেনের দিকে। তখন আমাদের যৌবনকাল। তপ্ত রক্তের শক্তিতে উন্মাদনায় লাথি মেরে গুঁড়িয়ে দেব বিপদের আপদকে, এই মোহমন্ত্রের আবেগে তন্দ্রাচ্ছন্ন। সেই মাহেন্দ্রক্ষণে আমরা কয়েকজন ডানপিটে ছেলে একযোগে লাথি মারলাম বাগানের গ্রিলের বেড়ার ওপর।
আমাদের সেই অসীম শক্তির কাছে নতজানু হলো লোহার বলিষ্ঠ শক্ত বেড়া, তার ওপর তড়িৎ বেগে পদচারণ করে বীরের মতো এগিয়ে গেলাম সম্মুখের দিকে, অনেকটা আলোর গতির কাছাকাছি। উত্তর পাশের বেড়ার গ্রিল ! ফলে ছোট হাইজাম্প করে সহজেই ওটা পার হলাম।
এদিকে পেছনে তাকিয়ে দেখি পুলিশের লোকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ধেয়ে আসছে আমাদের দিকে। ইতিমধ্যে কয়েকজনকে ধরে বেদম প্রহার করল, পাকড়াও করল; কিন্তু আমার এস্কেপ ভেলোসিটি বেশি থাকায় শুধু ক্যামেরার মাথায় একটি আঘাত ছাড়া শরীর অক্ষত থাকল। টারমাকের বিশাল অভ্যাগত জনতার মধ্যে আমি নিখুঁতভাবে মিশে গেলাম। ততক্ষণে নিল আর্মস্ট্রং, এডউইন অলড্রিন ও মাইকেল কলিন্স প্লেন থেকে নেমে খোলা গাড়িতে করে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের দিকে রওনা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু জনতার প্লাবনের মধ্যে গাড়ি নিয়ে এগোতে পারছিলেন না।
যেহেতু আমার হাতে ক্যামেরা ছিল, তাই ওখানে উপস্থিত অনেকেই মনে করলেন আমি হয়তো সাংবাদিক। আর আমি দারুণভাবে ক্যামেরা চালিয়ে এগিয়ে যেতে থাকলাম নভোচারীদের স্ন্যাপ নিতে নিতে। তখন খোলা গাড়িতে দাঁড়িয়ে আছেন আর্মস্ট্রং, অলড্রিন ও কলিন্স। প্রথমে হাত বাড়িয়ে দিলাম আর্মস্ট্রংয়ের দিকে। তিনি হাসিমুখে করমর্দন করলেন এবং খুব সম্ভব বলেছিলেন, ‘হাউ আর ইউ।’ আমার তখন মনে হয়েছিল, আমার এত পরিশ্রম আর পুলিশের লাঠিপেটা খাওয়া সার্থক হলো। এরপর এডউইন অলড্রিনের সঙ্গে করমর্দন করলাম। তিনিও খুব হাসিখুশি মনে গ্রহণ করলেন, কিন্তু যখন মাইকেল কলিন্সের দিকে হাত বাড়ালাম, তাঁর মুখ দেখলাম গম্ভীর। করমর্দন করলেন না। হাত ফিরিয়ে নিলাম। এরপর অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হলো, জনতার ভিড় ঠেলে চন্দ্র বিজয়ীদের বিজয় মিছিলের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিকে রওনা হতে।
সঙ্গে ছিলেন তাঁদের স্ত্রী ও ঢাকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের কর্মকর্তারা আর এক ঝাঁক সাংবাদিক। তুমুল করতালি ও মুহুর্মুহু আনন্দ ধ্বনির মধ্যে মোটর শোভাযাত্রা চলল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিকে, যেটা বর্তমানে রূপসী বাংলা হোটেল নামে পরিচিত। রাস্তায় এসে দেখি কোনো যানবাহন নেই, সব জায়গায় লোকে লোকারণ্য।
একটি বাস দেখলাম শাহবাগের দিকে যাচ্ছে, তাতে ঝট করে উঠে পড়লাম। একটু পরেই লক্ষ করলাম, আলখেল্লা আর বিভিন্ন পোশাক পরা এক ধরনের যাত্রী, পরে বুঝতে পারলাম এরা স্পেশাল ব্রাঞ্চের টিকটিকি। কিন্তু তারা আমার এই অনধিকার প্রবেশে বাধা দিল না। হয়তো ভাবল, আমিও বোধ হয় স্পেশাল ব্রাঞ্চে নতুন চাকরি নিয়ে এসেছি। আমিও চুপচাপ থাকলাম। ভাবটা এমন যেন ডিউটি শেষ করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। অনেকক্ষণ চলার পর রাস্তায় এক জায়গায় এসে নেমে পড়লাম। তখন সন্ধ্যা হতে চলছে, চন্দ ্রবিজয়ীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মনটা দারুণভাবে শিহরিত আর পরিতৃপ্ত।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক,
বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যালসোসাইটি।
No comments