ভারতের ১৫, বাংলাদেশের ৮ ছবি বর্ণাঢ্য আয়োজন- বাংলাদেশ-ভারত চলচ্চিত্র উৎসব by মোরসালিন মিজান
যথেষ্ট পরিপাটি আর বর্ণাঢ্য আয়োজন। জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন তো বটেই, বহিরাঙ্গন সাজানো হয়েছে দৃষ্টি নন্দন করে। প্রবেশ পথে বিয়ে বাড়ির গেটের মতো গেট। সবমিলিয়ে বুঝতে একদম অসুবিধা হয় নাÑ উৎসব চলছে। বাছাই করা ২৩টি চলচ্চিত্র। ভারতের ১৫টি। ৮টি বাংলাদেশের।
এই নিয়ে উৎসব। যৌথভাবে এর আয়োজন করেছে ভারত ও বাংলাদেশ। উপলক্ষ ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক শ’ বছর পূর্তি। বিশেষ আকর্ষণÑ সৌমিত্র চ্যাটার্জি ফিল্ম রেট্রোসপেক্টিভ।
শনিবার সকালে উৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভারতীয় হাইকমিশনার পংকজ শরণ। বিশেষ আকর্ষণ ছিলেন ভারতের খ্যাতিমান পরিচালক মোজাফফর আলী ও অভিনেতা ফারুক শেখ। তথ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে আলোচনা করেন সংস্কৃতি সচিব সুরাইয়া বেগম, ভারতের তথ্য ও সম্প্রচারবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র উৎসবের পরিচালক রাজিব কুমার জেইন।
উৎসব উদ্বোধন করে তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ বলেন, কিছুদিন আগে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশত জন্মবর্ষ উদ্যাপন করেছে। কাজী নজরুল ইসলামের অমর সৃষ্টি ‘বিদ্রোহী’ কবিতার ৯০ বছর পূর্তিতেও ছিল বর্ণাঢ্য আয়োজন। আর এবার ভারতীয় চলচ্চিত্রের একশ বছর পূর্তি উপলক্ষে দু’দেশ যৌথভাবে আয়োজন করেছে সপ্তাহব্যাপী চলচ্চিত্র উৎসবের। এর ফলে উভয় দেশের মধ্যকার সাংস্কৃতিক আদান প্রদান আরও জোরদার হবে। মৈত্রী সুদৃঢ় হবে। মন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাতা হীরালাল সেন ছিলেন বাংলাদেশের মানুষ। ১৮৯০ সালে ভারতে পাড়ি জমান তিনি। সেখানে চলচ্চিত্র শিল্পকে এগিয়ে নিতে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন। উৎসব উপলক্ষে ভারত থেকে আসা খ্যাতিমান অভিনেতা ও পরিচালকদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকাই শুধু বাংলাদেশ নয়। এর বাইরে বহু অনিন্দ্যসুন্দর জায়গা আছে। চলচ্চিত্রের শূটিংয়ের কাজে সেগুলো আপনারা ব্যবহার করতে পারেন। এ দেশীয় চলচ্চিত্রের মান উন্নয়নের জন্য ভারতীয়দের সহায়তাও কামনা করেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ওমরাওজান, আঞ্জুমানসহ অনেক দর্শকনন্দিত ছবির খ্যাতিমান নির্মাতা মোজাফফর আলী বলেন, চলচ্চিত্র ব্যবসা নয়। বরং মানুষের হৃদয়ের ভাষা। চলচ্চিত্রকে কী করে হায়ার স্ট্যান্ডার্ডে নিয়ে যাওয়া যায় সে দিকটি নিয়ে ভাবতে হবে। চলচ্চিত্রকে তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছানোর উপরও জোর দেন তিনি। বলেন, এজন্য গ্রাসরুট রেনেসাস দরকার। বাঙালীদের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে এসে সেই প্রথম জীবনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে যখন আমি ছিলাম কলকাতায়। সেখানকার একটি ফার্মে চাকরি করতাম। এর চেয়াম্যান ছিলেন কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়। তখন বাঙালীর সমৃদ্ধ সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার আমার সুযোগ হয়। ওপার বাংলার মতো এপার বাংলার মানুষেরও ট্যালেন্ট, প্যাশন, এনার্জি, কনটেন্ট আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো যথাযথভাবে শিল্পের কাজে ব্যবহার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যাপক পারস্পরিক সহায়তা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মোজাফফর আলীর এটি প্রথম বাংলাদেশ সফর হলেও দ্বিতীয়বারের মতো এ দেশে এসেছেন ভারতের আরেক খ্যাতিমান অভিনেতা ফারুক শেখ। দু’বারই তাঁর অভিজ্ঞতা হয়েছেÑ বাংলাদেশের মানুষ প্রচ- অতিথিপরায়ণ। তাই এ প্রসঙ্গ দিয়েই শুরু করেন তিনি। আতিথেয়তা দেখানোর জন্য বাংলাদেশের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। চলচ্চিত্রের আলোচনায় তিনি বলেন, শিল্পের কোন বাউন্ডারি নেই। একইভাবে পৃথক কোন ভাষা হয় না চলচ্চিত্রের। মানবিক মূল্যবোধগুলো ফুটিয়ে তোলা গেলে যে কোন ভাষার চলচ্চিত্র ভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের মনে দাগ কাটতে সক্ষম। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অনন্য নির্মাণ ‘মাটির ময়না’, ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’সহ কয়েকটি ছবির কথা উল্লেখ করেন তিনি। বাংলাদেশে এমন অনেক মেধাবী নির্মাতা আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁদের বেশি বেশি ছবি নির্মাণ করা উচিত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভাল ছবি আনা এবং সেগুলো দেখানোর ব্যবস্থা করা গেলে এ দেশের চলচ্চিত্র উপকৃত হবে বলেও মত দেন তিনি। এ অভিনেতা চলচ্চিত্রের উন্নয়নে বাংলাদেশের পাশে থেকে কাজ করার ব্যাপারেও আগ্রহ প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে দু’দেশের মধ্যকার সাংস্কৃতিক বিনিময় ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ।
তবে চমৎকার এ ফোরামে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গৌরবের অংশটুকু যথাযথভাবে তুলে ধরার কেউ না থাকায় অনেকেই অবাক হয়েছেন। এ শিল্পের সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভারত কীভাবে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে তাও বলেননি কেউ। চলচ্চিত্রের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট কোন বক্তা বা বিশ্লেষক না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মন্ত্রী আমলারা ভুল শুদ্ধ মিশিয়ে বলেছেন। এলামেলো অনেক কথা বলেছেন। বাংলা ইংরেজীর মিশেলে কেউ কেউ এমন বক্তৃতা করেছেন যা অনেক ক্ষেত্রে হাসির খোড়াক হয়েছে। তথ্য মন্ত্রীর একটি মন্তব্য ছিল এরকম কনভে আমার থ্যাংকস টু সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। সংস্কৃতি সচিব সুরাইয়া বেগম ভারতীয় সিনেমা নিয়ে আলাপ করতে গিয়ে বলেছেন, তাঁরা (ভারতীয় ছবির অভিনেতা অভিনেত্রী ও পরিচালক) আমাদের জীবন শিখিয়েছেন। জীবন সম্পর্কে যে লার্নিং তারা দিয়েছেন তা মনে রাখা উচিত। তাঁর বাংলা ও ইংরেজীর মিশেলটি ছিল এরকম চলচ্চিত্র হচ্ছে হায়ার পার্ট অব সংস্কৃতি। তথ্য সচিব হেদায়েত উল্লাহ আল মামুনও তাত্ত্বিক আলোচনার চেষ্টা করে বিরক্তির উদ্রেক করেছেন। এভাবেই শেষ হয় উদ্বোধনী পর্ব। এর আগে অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে উৎসব প্রদীপ প্রজ্বলন করেন তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ।
উ™ধনী অনুষ্ঠানের পর ভারতের প্রথম ফুল লেন্থ ফিচার ফিল্ম ‘রাজা হরিশচন্দ্র’ দেখানো হয়। নির্বাক চলচ্চিত্রটি কৌতূহল নিয়ে উপভোগ করেন হলভর্তি দর্শক। পরে দেখানো হয় সত্যজিৎ রায় পরিচালিত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অভিনীত বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘অপুর সংসার’। বিকেল সাড়ে তিনটায় প্রদর্শিত হয় বাংলাদেশের ছবি ‘মাটির ময়না’। সবশেষ সন্ধ্যা ছয়টায় দেখানো হয় মোজাফফর আলী পরিচালিত হিন্দি সিনেমা ‘উমরাও জান’।
উৎসবে বাংলাদেশের ছবিগুলোর মধ্যে থাকছে সূর্য দীঘল বাড়ি, আগুনের পরশমণি, অবুঝ মন, সীমানা পেরিয়ে, মাটির ময়না, চাকা ও লাঠিয়াল। ভারতীয় ছবিগুলোর মধ্যে থাকছে রাজা হরিশচন্দ্র, অপুর সংসার, উমরাও জান, অশনি সংকেত, ভালু, ঘটশুদ্ধা, জান ভি দো ইয়ারও, তিসরি কসম, কনি, হীরক রাজার দেশে, দেখা, সোনার কেল্লা, ঘরে বাইরে ও যোধা আকবর। ইন্দো-বাংলা চলচ্চিত্র উৎসবের প্রবেশপত্র বিনামূল্যে সংগ্রহ করা যাবে ইন্দিরা গান্ধী সংস্কৃতি কেন্দ্রের ধানমণ্ডি ও গুলশান শাখা থেকে।
শনিবার সকালে উৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভারতীয় হাইকমিশনার পংকজ শরণ। বিশেষ আকর্ষণ ছিলেন ভারতের খ্যাতিমান পরিচালক মোজাফফর আলী ও অভিনেতা ফারুক শেখ। তথ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে আলোচনা করেন সংস্কৃতি সচিব সুরাইয়া বেগম, ভারতের তথ্য ও সম্প্রচারবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চলচ্চিত্র উৎসবের পরিচালক রাজিব কুমার জেইন।
উৎসব উদ্বোধন করে তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ বলেন, কিছুদিন আগে ভারত ও বাংলাদেশ যৌথভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশত জন্মবর্ষ উদ্যাপন করেছে। কাজী নজরুল ইসলামের অমর সৃষ্টি ‘বিদ্রোহী’ কবিতার ৯০ বছর পূর্তিতেও ছিল বর্ণাঢ্য আয়োজন। আর এবার ভারতীয় চলচ্চিত্রের একশ বছর পূর্তি উপলক্ষে দু’দেশ যৌথভাবে আয়োজন করেছে সপ্তাহব্যাপী চলচ্চিত্র উৎসবের। এর ফলে উভয় দেশের মধ্যকার সাংস্কৃতিক আদান প্রদান আরও জোরদার হবে। মৈত্রী সুদৃঢ় হবে। মন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাতা হীরালাল সেন ছিলেন বাংলাদেশের মানুষ। ১৮৯০ সালে ভারতে পাড়ি জমান তিনি। সেখানে চলচ্চিত্র শিল্পকে এগিয়ে নিতে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন। উৎসব উপলক্ষে ভারত থেকে আসা খ্যাতিমান অভিনেতা ও পরিচালকদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকাই শুধু বাংলাদেশ নয়। এর বাইরে বহু অনিন্দ্যসুন্দর জায়গা আছে। চলচ্চিত্রের শূটিংয়ের কাজে সেগুলো আপনারা ব্যবহার করতে পারেন। এ দেশীয় চলচ্চিত্রের মান উন্নয়নের জন্য ভারতীয়দের সহায়তাও কামনা করেন মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ওমরাওজান, আঞ্জুমানসহ অনেক দর্শকনন্দিত ছবির খ্যাতিমান নির্মাতা মোজাফফর আলী বলেন, চলচ্চিত্র ব্যবসা নয়। বরং মানুষের হৃদয়ের ভাষা। চলচ্চিত্রকে কী করে হায়ার স্ট্যান্ডার্ডে নিয়ে যাওয়া যায় সে দিকটি নিয়ে ভাবতে হবে। চলচ্চিত্রকে তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছানোর উপরও জোর দেন তিনি। বলেন, এজন্য গ্রাসরুট রেনেসাস দরকার। বাঙালীদের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে এসে সেই প্রথম জীবনের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে যখন আমি ছিলাম কলকাতায়। সেখানকার একটি ফার্মে চাকরি করতাম। এর চেয়াম্যান ছিলেন কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়। তখন বাঙালীর সমৃদ্ধ সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার আমার সুযোগ হয়। ওপার বাংলার মতো এপার বাংলার মানুষেরও ট্যালেন্ট, প্যাশন, এনার্জি, কনটেন্ট আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো যথাযথভাবে শিল্পের কাজে ব্যবহার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যাপক পারস্পরিক সহায়তা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মোজাফফর আলীর এটি প্রথম বাংলাদেশ সফর হলেও দ্বিতীয়বারের মতো এ দেশে এসেছেন ভারতের আরেক খ্যাতিমান অভিনেতা ফারুক শেখ। দু’বারই তাঁর অভিজ্ঞতা হয়েছেÑ বাংলাদেশের মানুষ প্রচ- অতিথিপরায়ণ। তাই এ প্রসঙ্গ দিয়েই শুরু করেন তিনি। আতিথেয়তা দেখানোর জন্য বাংলাদেশের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। চলচ্চিত্রের আলোচনায় তিনি বলেন, শিল্পের কোন বাউন্ডারি নেই। একইভাবে পৃথক কোন ভাষা হয় না চলচ্চিত্রের। মানবিক মূল্যবোধগুলো ফুটিয়ে তোলা গেলে যে কোন ভাষার চলচ্চিত্র ভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের মনে দাগ কাটতে সক্ষম। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অনন্য নির্মাণ ‘মাটির ময়না’, ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’সহ কয়েকটি ছবির কথা উল্লেখ করেন তিনি। বাংলাদেশে এমন অনেক মেধাবী নির্মাতা আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁদের বেশি বেশি ছবি নির্মাণ করা উচিত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভাল ছবি আনা এবং সেগুলো দেখানোর ব্যবস্থা করা গেলে এ দেশের চলচ্চিত্র উপকৃত হবে বলেও মত দেন তিনি। এ অভিনেতা চলচ্চিত্রের উন্নয়নে বাংলাদেশের পাশে থেকে কাজ করার ব্যাপারেও আগ্রহ প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে দু’দেশের মধ্যকার সাংস্কৃতিক বিনিময় ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ।
তবে চমৎকার এ ফোরামে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গৌরবের অংশটুকু যথাযথভাবে তুলে ধরার কেউ না থাকায় অনেকেই অবাক হয়েছেন। এ শিল্পের সামনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভারত কীভাবে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পারে তাও বলেননি কেউ। চলচ্চিত্রের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট কোন বক্তা বা বিশ্লেষক না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মন্ত্রী আমলারা ভুল শুদ্ধ মিশিয়ে বলেছেন। এলামেলো অনেক কথা বলেছেন। বাংলা ইংরেজীর মিশেলে কেউ কেউ এমন বক্তৃতা করেছেন যা অনেক ক্ষেত্রে হাসির খোড়াক হয়েছে। তথ্য মন্ত্রীর একটি মন্তব্য ছিল এরকম কনভে আমার থ্যাংকস টু সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। সংস্কৃতি সচিব সুরাইয়া বেগম ভারতীয় সিনেমা নিয়ে আলাপ করতে গিয়ে বলেছেন, তাঁরা (ভারতীয় ছবির অভিনেতা অভিনেত্রী ও পরিচালক) আমাদের জীবন শিখিয়েছেন। জীবন সম্পর্কে যে লার্নিং তারা দিয়েছেন তা মনে রাখা উচিত। তাঁর বাংলা ও ইংরেজীর মিশেলটি ছিল এরকম চলচ্চিত্র হচ্ছে হায়ার পার্ট অব সংস্কৃতি। তথ্য সচিব হেদায়েত উল্লাহ আল মামুনও তাত্ত্বিক আলোচনার চেষ্টা করে বিরক্তির উদ্রেক করেছেন। এভাবেই শেষ হয় উদ্বোধনী পর্ব। এর আগে অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে উৎসব প্রদীপ প্রজ্বলন করেন তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ।
উ™ধনী অনুষ্ঠানের পর ভারতের প্রথম ফুল লেন্থ ফিচার ফিল্ম ‘রাজা হরিশচন্দ্র’ দেখানো হয়। নির্বাক চলচ্চিত্রটি কৌতূহল নিয়ে উপভোগ করেন হলভর্তি দর্শক। পরে দেখানো হয় সত্যজিৎ রায় পরিচালিত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় অভিনীত বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘অপুর সংসার’। বিকেল সাড়ে তিনটায় প্রদর্শিত হয় বাংলাদেশের ছবি ‘মাটির ময়না’। সবশেষ সন্ধ্যা ছয়টায় দেখানো হয় মোজাফফর আলী পরিচালিত হিন্দি সিনেমা ‘উমরাও জান’।
উৎসবে বাংলাদেশের ছবিগুলোর মধ্যে থাকছে সূর্য দীঘল বাড়ি, আগুনের পরশমণি, অবুঝ মন, সীমানা পেরিয়ে, মাটির ময়না, চাকা ও লাঠিয়াল। ভারতীয় ছবিগুলোর মধ্যে থাকছে রাজা হরিশচন্দ্র, অপুর সংসার, উমরাও জান, অশনি সংকেত, ভালু, ঘটশুদ্ধা, জান ভি দো ইয়ারও, তিসরি কসম, কনি, হীরক রাজার দেশে, দেখা, সোনার কেল্লা, ঘরে বাইরে ও যোধা আকবর। ইন্দো-বাংলা চলচ্চিত্র উৎসবের প্রবেশপত্র বিনামূল্যে সংগ্রহ করা যাবে ইন্দিরা গান্ধী সংস্কৃতি কেন্দ্রের ধানমণ্ডি ও গুলশান শাখা থেকে।
No comments