হোল্ডিং নম্বরে জালিয়াতির মাধ্যমে বাড়ি দখলের চেষ্টা!
নগরের দক্ষিণ খুলশী আবাসিক এলাকার ৬২/সি হোল্ডিং নম্বরের একটি বাড়ির মালিকানা নিয়ে দেড় বছর ধরে বিরোধ চলছে। এই বাড়ির বর্তমান বাসিন্দা কুয়েত প্রবাসী মো. ফিরোজ অভিযোগ করেন বাড়িটি দেড় বছর আগে তিনি কিনে নেন। কিন্তু প্রতিবেশী এক ব্যক্তি বাড়ির হোল্ডিং নম্বর নিজের নামে লিপিবদ্ধ করিয়ে দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
বিষয়টি সিটি করপোরেশনকে জানানো হলেও এখনো প্রতিকার পাননি বলে জানান মো. ফিরোজ। তিনি অভিযোগ করেন, বাড়িটি ২০১১ সালের ১০ জানুয়ারি বর্তমানে বেলজিয়াম-প্রবাসী ছিদ্দিক আহম্মদের কাছ থেকে কিনে নেন। কিন্তু চার কাঠার ওপর তৈরি তিনতলা বাড়িটি ওইদিনই প্রতিবেশী মুসা কলিম উল্লাহ দখল করে নেন। তখন মো. ফিরোজ খুলশী থানায় গেলে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিয়ার রহমান এ ব্যাপারে কোনো কথা না বলার জন্য তাঁকে শাসিয়ে দেন এবং গ্রেপ্তারের ভয় দেখান।
কিন্তু পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি জানার পর ওই দিন সন্ধ্যায়ই ব্যবস্থা নেন। তৎকালীন উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আমেনা বেগম উদ্যোগী হয়ে বাড়িটির দখল ফিরোজকে বুঝিয়ে দেন। তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করে নেন ওসি মশিয়ার রহমানকে। এরপর মশিয়ারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।
মো. ফিরোজ আরও অভিযোগ করেন, এর পরও মুসা কলিম উল্লাহ বাড়িটি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এক বছর আগে সিটি করপোরেশন নগরজুড়ে বাসা-বাড়ির কর মূল্যায়নের লক্ষ্যে যে জরিপকাজ চালায়, তখন মুসা কলিম উল্লাহ বাড়ির হোল্ডিং নম্বরটি নিজের দুই ছেলের নামে লিপিবদ্ধ করান। মেয়রের সাবেক একান্ত সহকারী কামরুল ইসলাম এ জরিপকাজ পরিচালনা করেন বলে তিনি জানান।
ফিরোজ আরও অভিযোগ করেন, বিষয়টি প্রায় আট মাস আগে সিটি করপোরেশনকে জানানো হলেও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ প্রসঙ্গে মেয়র মোহাম্মদ মন্জুর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়টি দেখার জন্য প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছ। এ ক্ষেত্রে কারও গাফিলতি কিংবা যোগসাজশ থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
হোল্ডিং নম্বরের মালিকানা পরিবর্তন প্রসঙ্গে কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাড়িটি সম্ভবত পরিত্যক্ত ছিল। তখন যিনি এ জমির মালিক হিসেবে দাবি করেছেন তাঁর নামেই হোল্ডিং নম্বর দেওয়া হয়। এখন তাতে যদি সমস্যা হয়, তাহলে প্রকৃত মালিক সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট বোর্ডে আবেদন করতে পারেন। বোর্ড উভয় পক্ষকে ডেকে সঠিক ব্যবস্থা নেবে।’ সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, মো. ফিরোজ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য গত ২ জানুয়ারি সিটি করপোরেশনে আবেদন করেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর কর্মকর্তা এ কে এম সালাহউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত কাগজপত্র চেয়ে পাঠিয়েছেন প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা। আমরা সব কাগজ তাঁর কাছে পাঠিয়েছি।’
অপরদিকে মো. ফিরোজের প্রতিবেশী মুসা কলিম উল্লাহর কাছে বাড়ি দখলের চেষ্টার অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাড়িটির প্রকৃত মালিক আমি। কিন্তু পুলিশ প্রভাবিত হয়ে আমাকেই বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে। বাড়ির হোল্ডিং নম্বরও আমার নামে। সেটি ভুলবশত আগের মালিক ছিদ্দিক আহম্মদের নামে করা হয়েছিল।’
No comments