নারী নির্যাতন রোধে চাই পুরুষের অঙ্গীকার
নারীর প্রতি পুরুষের ভালোবাসা চিরন্তন। এই ভালোবাসার আড়ালে আবার পুরুষের দ্বারাই নির্যাতিত হচ্ছে নারী। নারী নির্যাতনের হার প্রতিবছরই বাড়ছে। পুরুষরা সে দ্বায় স্বীকারও করছে। আবার অনেক পুরুষই নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করছে।
নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি পুরুষের অঙ্গীকারই মুখ্য বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন আ হ ম ফয়সল
নারী পুরুষের
সম্পদ নয়
ড. ডালিম চন্দ্র বর্মন
প্রফেসর, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
নারীর ওপর নির্যাতন সাধারণত পুরুষরাই করে থাকে। তাই নারী নির্যাতন প্রতিরোধে পুরুষের দায়িত্ব বেশি। পুরুষকে বুঝতে হবে নারী তার সম্পত্তি নয়। সে মানুষ। এ উপলব্ধি সবচেয়ে বেশি জরুরি। পাশাপাশি নারীকেও ভাবতে হবে সে একজন মানুষ এবং তার নিজের অধিকার সম্পর্কে তার অবগত থাকতে হবে। সচেতনতার বিকল্প নেই। আমার-তোমার বলে নয়, 'আমাদের' ভেবে নিজ নিজ দায়িত্বে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করতে হবে। কিছু-কিছু কুসংস্কার নারী নির্যাতনকে প্রভাবিত করে। এ জন্য কুসংস্কার পরিহার করতে হবে। শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পরিবারে ছেলে-মেয়ের মধ্যে বৈষম্য শুরু থেকে দূর করার ক্ষেত্রে বাবাকে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে। গ্রামে সালিশ- বিচার কাজ পুরুষরাই করে থাকে। এখানে মেয়েদেরকে বিচার কাজে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে।
ন্যায্য অবস্থান ও সম্মান দিতে হবে
মোঃ হায়দার আলী খান
সাবেক গণসংযোগ কর্মকর্তা আনসার ভিডিপি
নারী প্রথমত বাবার বাড়িতে বঞ্চনার শিকার হয়। পরবর্তীতে স্বামীর বাড়িতে নির্যাতিত হয়। এ জন্য সব বাবাকে তার মেয়ে শিশুদের সঠিক যত্ন ও পড়ালেখা নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রাপ্ত বয়সে যোগ্য পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দিতে হবে। সব ছেলের বাবাকে মেয়ের বাবার কাছ থেকে কোনো ধরনের যৌতুক না নেয়া, স্বামীকে যথাসময়ে স্ত্রীর মোহরানা পরিশোধ করা, বাবা মা ও স্বামীর সম্পত্তির ন্যায্য অংশ নারীকে প্রদান করতে হবে। নারীকে নারী হিসেবে নয়, একজন মানুষ হিসেবে এবং সংসারের গুরুত্বপূর্ণ একজন সহায়ক শক্তি হিসেবে ভাবতে হবে সব পুরুষকে। তার ন্যায্য অবস্থান ও সম্মান দিতে হবে। বিয়েতে যৌতুক বা আর্থিক সুবিধা চাওয়ার মানসিকতাকে পুরুষদের সম্পূর্ণভাবে ঘৃণা করতে হবে।
পুরুষকে
বিবেকবান
হতে হবে
ওয়াসিক-আল-আজাদ রাকিব
ব্যারিস্টার এট-ল
পুরুষদের এমন ধরনের কাজ কর্ম করতে হবে, যাতে নারী নির্যাতন রোধ হয়। যৌতুক ও বাল্যবিবাহ নারী নির্যাতনের অংশ। এগুলো বন্ধ করতে হলে পুরুষদেরই এগিয়ে আসতে হবে এবং নিজেদেরকে এ থেকে বিরত রাখতে হবে। বাল্যবিবাহ এক পর্যায়ে নারী নির্যাতনে পুরুষকে প্রভাবিত করে। সহপাঠী, সহকর্মী_এককথায় নারীদের প্রতি মানুষ হিসেবে শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। এতে শুধু নারী নির্যাতন নয়, ইভটিজিংও বন্ধ হয়ে যাবে। কোনটি নারী নির্যাতন, কোনটি নারী নির্যাতন নয়_এ ধরনের বিষয়গুলো পুরুষদের জানা থাকতে হবে। কেননা, ২০০৯ সালে প্রণীত নারী ও শিশু নির্যাতন সুরক্ষা আইনে নারীর প্রতি অবজ্ঞা-অবহেলাকেও নির্যাতন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তার জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। সবকিছুর উর্ধে নারী নির্যাতন বন্ধ করতে হলে পুরুষকে বিবেকবান হতে হবে।
পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার
পরিবর্তন করতে হবে
ড. বদিউল আলম মজুমদার
সম্পাদক
সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক
নারী নির্যাতন রোধে পুরুষকেই মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ পুরুষরাই নারী নির্যাতন করে। যদিও কিছু-কিছু অভিযোগ আছে_ নারীর দ্বারাই নারীরা নির্যাতিত হয়। তবে এ ক্ষেত্রেও পুরুষের ভূমিকা যদি না থাকত তাহলে নারী, নির্যাতিত হতো না। যেমন শাশুড়ি দ্বারা বউ নির্যাতনের ক্ষেত্রে ছেলের নিশ্চুপ ভূমিকাই নারী নির্যাতনের জন্য দ্বায়ী। পুরুষরা এ ধরণের নির্যাতনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ ছাড়া পুরুষদের মধ্যে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা বহুদিন থেকেই চলে আসছে। এ ধরনের মানসিকতার লোকই নারী নির্যাতনের সঙ্গে বেশি সম্পৃক্ত। যারা এই মানসিকতাকে লড়াই করে চলে, তারা নির্যাতন করতে পারে না বা করে না। এ জন্য পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।
সম উত্তরাধিকার নিশ্চিত করতে হবে
ড. নারায়ণ চন্দ্র নাথ
রিসার্স ফেলো, বিআইডিএস
নারী নির্যাতন প্রতিরোধের জন্য সবাইকে শিক্ষিত হতে হবে। সমাজে এখনো কিছু কুসংস্কার রয়ে গেছে। এগুলো দূর করতে হবে। পরিবারে বাবা-মায়ের নির্যাতন দেখে সন্তান শিখছে। সাধারণত নির্যাতক পরিবারের কর্তা ব্যক্তিই। কাজেই তাকে শোধরাতে হবে তার সন্তানের স্বার্থেই। এ ছাড়া সরকার নারীকে সঠিক মর্যাদা দিচ্ছে না। সরকার নারী নীতিমালা বাস্তবায়নে মৌলবাদীদের ভয় পাচ্ছে। নারীর সম উত্তরাধিকার নিশ্চিত করতে পারলেই নারী নির্যাতন রোধ হবে। নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সচেতন করতে বর্তমানে আমাদের দেশের মিডিয়াগুলো বিশেষ ভূমিকা রাখছে। যা করা প্রয়োজন পুলিশের, সেটা করছে মিডিয়া। এ ছাড়া দারিদ্র্যও একটি মূল কারণ। এ জন্য বৈষম্যহীন
সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। নারী শিক্ষার ওপর গুরুত্ব
আরও বাড়াতে হবে।
নারী পুরুষের
সম্পদ নয়
ড. ডালিম চন্দ্র বর্মন
প্রফেসর, শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
নারীর ওপর নির্যাতন সাধারণত পুরুষরাই করে থাকে। তাই নারী নির্যাতন প্রতিরোধে পুরুষের দায়িত্ব বেশি। পুরুষকে বুঝতে হবে নারী তার সম্পত্তি নয়। সে মানুষ। এ উপলব্ধি সবচেয়ে বেশি জরুরি। পাশাপাশি নারীকেও ভাবতে হবে সে একজন মানুষ এবং তার নিজের অধিকার সম্পর্কে তার অবগত থাকতে হবে। সচেতনতার বিকল্প নেই। আমার-তোমার বলে নয়, 'আমাদের' ভেবে নিজ নিজ দায়িত্বে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করতে হবে। কিছু-কিছু কুসংস্কার নারী নির্যাতনকে প্রভাবিত করে। এ জন্য কুসংস্কার পরিহার করতে হবে। শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। পরিবারে ছেলে-মেয়ের মধ্যে বৈষম্য শুরু থেকে দূর করার ক্ষেত্রে বাবাকে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে। গ্রামে সালিশ- বিচার কাজ পুরুষরাই করে থাকে। এখানে মেয়েদেরকে বিচার কাজে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে।
ন্যায্য অবস্থান ও সম্মান দিতে হবে
মোঃ হায়দার আলী খান
সাবেক গণসংযোগ কর্মকর্তা আনসার ভিডিপি
নারী প্রথমত বাবার বাড়িতে বঞ্চনার শিকার হয়। পরবর্তীতে স্বামীর বাড়িতে নির্যাতিত হয়। এ জন্য সব বাবাকে তার মেয়ে শিশুদের সঠিক যত্ন ও পড়ালেখা নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রাপ্ত বয়সে যোগ্য পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দিতে হবে। সব ছেলের বাবাকে মেয়ের বাবার কাছ থেকে কোনো ধরনের যৌতুক না নেয়া, স্বামীকে যথাসময়ে স্ত্রীর মোহরানা পরিশোধ করা, বাবা মা ও স্বামীর সম্পত্তির ন্যায্য অংশ নারীকে প্রদান করতে হবে। নারীকে নারী হিসেবে নয়, একজন মানুষ হিসেবে এবং সংসারের গুরুত্বপূর্ণ একজন সহায়ক শক্তি হিসেবে ভাবতে হবে সব পুরুষকে। তার ন্যায্য অবস্থান ও সম্মান দিতে হবে। বিয়েতে যৌতুক বা আর্থিক সুবিধা চাওয়ার মানসিকতাকে পুরুষদের সম্পূর্ণভাবে ঘৃণা করতে হবে।
পুরুষকে
বিবেকবান
হতে হবে
ওয়াসিক-আল-আজাদ রাকিব
ব্যারিস্টার এট-ল
পুরুষদের এমন ধরনের কাজ কর্ম করতে হবে, যাতে নারী নির্যাতন রোধ হয়। যৌতুক ও বাল্যবিবাহ নারী নির্যাতনের অংশ। এগুলো বন্ধ করতে হলে পুরুষদেরই এগিয়ে আসতে হবে এবং নিজেদেরকে এ থেকে বিরত রাখতে হবে। বাল্যবিবাহ এক পর্যায়ে নারী নির্যাতনে পুরুষকে প্রভাবিত করে। সহপাঠী, সহকর্মী_এককথায় নারীদের প্রতি মানুষ হিসেবে শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। এতে শুধু নারী নির্যাতন নয়, ইভটিজিংও বন্ধ হয়ে যাবে। কোনটি নারী নির্যাতন, কোনটি নারী নির্যাতন নয়_এ ধরনের বিষয়গুলো পুরুষদের জানা থাকতে হবে। কেননা, ২০০৯ সালে প্রণীত নারী ও শিশু নির্যাতন সুরক্ষা আইনে নারীর প্রতি অবজ্ঞা-অবহেলাকেও নির্যাতন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তার জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। সবকিছুর উর্ধে নারী নির্যাতন বন্ধ করতে হলে পুরুষকে বিবেকবান হতে হবে।
পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার
পরিবর্তন করতে হবে
ড. বদিউল আলম মজুমদার
সম্পাদক
সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক
নারী নির্যাতন রোধে পুরুষকেই মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। কারণ পুরুষরাই নারী নির্যাতন করে। যদিও কিছু-কিছু অভিযোগ আছে_ নারীর দ্বারাই নারীরা নির্যাতিত হয়। তবে এ ক্ষেত্রেও পুরুষের ভূমিকা যদি না থাকত তাহলে নারী, নির্যাতিত হতো না। যেমন শাশুড়ি দ্বারা বউ নির্যাতনের ক্ষেত্রে ছেলের নিশ্চুপ ভূমিকাই নারী নির্যাতনের জন্য দ্বায়ী। পুরুষরা এ ধরণের নির্যাতনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ ছাড়া পুরুষদের মধ্যে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা বহুদিন থেকেই চলে আসছে। এ ধরনের মানসিকতার লোকই নারী নির্যাতনের সঙ্গে বেশি সম্পৃক্ত। যারা এই মানসিকতাকে লড়াই করে চলে, তারা নির্যাতন করতে পারে না বা করে না। এ জন্য পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।
সম উত্তরাধিকার নিশ্চিত করতে হবে
ড. নারায়ণ চন্দ্র নাথ
রিসার্স ফেলো, বিআইডিএস
নারী নির্যাতন প্রতিরোধের জন্য সবাইকে শিক্ষিত হতে হবে। সমাজে এখনো কিছু কুসংস্কার রয়ে গেছে। এগুলো দূর করতে হবে। পরিবারে বাবা-মায়ের নির্যাতন দেখে সন্তান শিখছে। সাধারণত নির্যাতক পরিবারের কর্তা ব্যক্তিই। কাজেই তাকে শোধরাতে হবে তার সন্তানের স্বার্থেই। এ ছাড়া সরকার নারীকে সঠিক মর্যাদা দিচ্ছে না। সরকার নারী নীতিমালা বাস্তবায়নে মৌলবাদীদের ভয় পাচ্ছে। নারীর সম উত্তরাধিকার নিশ্চিত করতে পারলেই নারী নির্যাতন রোধ হবে। নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সচেতন করতে বর্তমানে আমাদের দেশের মিডিয়াগুলো বিশেষ ভূমিকা রাখছে। যা করা প্রয়োজন পুলিশের, সেটা করছে মিডিয়া। এ ছাড়া দারিদ্র্যও একটি মূল কারণ। এ জন্য বৈষম্যহীন
সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। নারী শিক্ষার ওপর গুরুত্ব
আরও বাড়াতে হবে।
No comments