নীলম নদীর দুই পারের দুঃখ
কাশ্মীরের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকার ছোট্ট পাহাড়ি গ্রামটির নাম কেরান। ঢালু দুই পাহাড়ের মধ্য দিয়ে বইছে মাত্র ১০০ মিটার প্রস্থ নীলম নদীর সরু প্রশাখা। এক পাড়ে দাঁড়িয়ে ৪০ বছর বয়সী নারী আশরাফ জান। তাঁর অশ্রুভেজা দৃষ্টি ওপারে কাঠের তৈরি একটি বাড়ির দিকে। সেখানে থাকেন তাঁর বুড়ো মা-বাবা।
নদীর ওপারটি মাত্র কয়েক মিনিটের পথ হলেও আশরাফ ২২ বছর ধরে নিজের মা-বাবার কাছে যেতে পারেননি। কারণ, বিশ্বের সবচেয়ে বিরোধপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে এটি একটি। এর এক পারে ভারতের, অন্য পারে পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ। ১৯৪৮ সালে ভারত ও পাকিস্তানের বিতর্কিত সীমান্তরেখার (লাইন অব কন্ট্রোল) মাঝামাঝি এলাকাটি পড়ে যায়। এর ধারাবাহিকতায় নব্বইয়ের দশকে আশরাফ জানের মতো বহু মানুষকে স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হয়েছে।
এই সীমান্ত নিয়ে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বর্তমানে কিছুটা কমে এলেও নীলমপারের বাসিন্দাদের বাড়ি ফেরার সম্ভাবনা এখনো ক্ষীণ।
কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কয়েক দফা লড়াই হয়েছে। বিতর্কিত লাইন অব কন্ট্রোলের মাধ্যমে কাশ্মীর বিভাজনের মধ্য দিয়ে ১৯৪৮ সালের লড়াই শেষ হয়েছিল। তবে ওই এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ২০০৩ সালের যুদ্ধবিরতির পর থেকে কেরান গ্রামটি নীলমের দুই পারে বসবাসরত পরিবারগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তারা নদীর দুই পাড়ে দাঁড়িয়ে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করে। ৬৫ বছর বয়সী সিদ্দিক বাট নদীর ওপাড় থেকে নিজের মেয়ের নাম ধরে ডাকেন। বাবাকে দেখতে পেয়ে মেয়ে সাড়া দেন। তিন সন্তান নিয়ে ওপারে তাঁর সংসার।
আশরাফ জান ও সিদ্দিক বাটের মতো প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে ১৯৯০ সালের দিকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল। ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর রাজ্যে তখন বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। স্থানীয় লোকজন তখন সীমানা পেরিয়ে কাশ্মীরের পাকিস্তানি অংশে গিয়ে আশ্রয় নেয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাড়ি ফেরার আশা থাকলেও তা আর পূরণ হয়নি। পাকিস্তানে এখনো রয়ে যাওয়া এ রকম প্রায় তিন থেকে চার হাজার মানুষ জনবিচ্ছিন্ন জীবন যাপন করছে।
নিরাপত্তাবিশ্লেষক হাসান আসকারি রিজভি বলেন, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলমান কাশ্মীর বিদ্রোহ ভারতীয় শাসনের ওপর কোনো ধরনের প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে। বিদ্রোহের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে ধর্মীয় চরমপন্থীদের হাতে।
পাকিস্তানও এখন কাশ্মীরের ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান পাল্টেছে। তারা ভারতের অভ্যন্তরে সক্রিয় জঙ্গিদের তহবিল সরবরাহ ২০০৬ সাল থেকে বন্ধ করে দেয়। এমনকি পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জঙ্গিদের সহায়তাও চলতি বছর থেকে বন্ধ করে দিয়েছে। এ ছাড়া স্বাধীন কাশ্মীরের দাবিতে আন্দোলনরত জাতীয়তাবাদীদের মধ্যেও বিভাজন তৈরি হয়েছে।
কাশ্মীরবিশেষজ্ঞ ইরশাদ মেহমুদ বলেন, ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের আন্দোলন এখন বেসামরিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার প্রভৃতির দিকে ঝুঁকেছে। স্থানীয় জনসমর্থন ও তহবিলের অভাবসহ বিভিন্ন কারণে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আন্দোলন এখন অনেকটাই স্তিমিত হয়ে পড়েছে। বিবিসি।
এই সীমান্ত নিয়ে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বর্তমানে কিছুটা কমে এলেও নীলমপারের বাসিন্দাদের বাড়ি ফেরার সম্ভাবনা এখনো ক্ষীণ।
কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কয়েক দফা লড়াই হয়েছে। বিতর্কিত লাইন অব কন্ট্রোলের মাধ্যমে কাশ্মীর বিভাজনের মধ্য দিয়ে ১৯৪৮ সালের লড়াই শেষ হয়েছিল। তবে ওই এলাকায় শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ২০০৩ সালের যুদ্ধবিরতির পর থেকে কেরান গ্রামটি নীলমের দুই পারে বসবাসরত পরিবারগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তারা নদীর দুই পাড়ে দাঁড়িয়ে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করে। ৬৫ বছর বয়সী সিদ্দিক বাট নদীর ওপাড় থেকে নিজের মেয়ের নাম ধরে ডাকেন। বাবাকে দেখতে পেয়ে মেয়ে সাড়া দেন। তিন সন্তান নিয়ে ওপারে তাঁর সংসার।
আশরাফ জান ও সিদ্দিক বাটের মতো প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে ১৯৯০ সালের দিকে বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল। ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর রাজ্যে তখন বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল। স্থানীয় লোকজন তখন সীমানা পেরিয়ে কাশ্মীরের পাকিস্তানি অংশে গিয়ে আশ্রয় নেয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাড়ি ফেরার আশা থাকলেও তা আর পূরণ হয়নি। পাকিস্তানে এখনো রয়ে যাওয়া এ রকম প্রায় তিন থেকে চার হাজার মানুষ জনবিচ্ছিন্ন জীবন যাপন করছে।
নিরাপত্তাবিশ্লেষক হাসান আসকারি রিজভি বলেন, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলমান কাশ্মীর বিদ্রোহ ভারতীয় শাসনের ওপর কোনো ধরনের প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ হয়েছে। বিদ্রোহের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে ধর্মীয় চরমপন্থীদের হাতে।
পাকিস্তানও এখন কাশ্মীরের ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান পাল্টেছে। তারা ভারতের অভ্যন্তরে সক্রিয় জঙ্গিদের তহবিল সরবরাহ ২০০৬ সাল থেকে বন্ধ করে দেয়। এমনকি পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের জঙ্গিদের সহায়তাও চলতি বছর থেকে বন্ধ করে দিয়েছে। এ ছাড়া স্বাধীন কাশ্মীরের দাবিতে আন্দোলনরত জাতীয়তাবাদীদের মধ্যেও বিভাজন তৈরি হয়েছে।
কাশ্মীরবিশেষজ্ঞ ইরশাদ মেহমুদ বলেন, ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের আন্দোলন এখন বেসামরিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার প্রভৃতির দিকে ঝুঁকেছে। স্থানীয় জনসমর্থন ও তহবিলের অভাবসহ বিভিন্ন কারণে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আন্দোলন এখন অনেকটাই স্তিমিত হয়ে পড়েছে। বিবিসি।
No comments