৩৪ বছর পর আপন ঠিকানায়

১৯৭৬ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত সামরিক শাসনে ছিল আর্জেন্টিনা। ওই সময়ে শত শত শিশু চুরি হয়ে যায়। তাদেরই একজন পাবলো জেভিয়ার গাওনা মিরান্দা। ১৯৭৮ সালে চুরি হন তিনি। তখন এক মাসের শিশু পাবলো। ৩৪ বছর পর সেই শিশু পাবলো আজ তাঁর প্রকৃত পরিচয় খুঁজে পেয়েছেন।


ওই সময়ে যেসব শিশু চুরি হয়ে যায়, তাদের খুঁজে বের করার কাজ করছে একটি সংগঠন। গ্র্যান্ডমাদার্স অব দ্য প্লাজা ডি মেয়ো নামের ওই সংগঠনটি বলেছে, পাবলোকে নিয়ে তাঁরা এ পর্যন্ত হারানো ১০৬টি শিশু খুঁজে পেয়েছেন।
সংগঠনটির প্রধান এস্তেলা ডি কার্লোত্তা দেশটির রাজধানী বুয়েনস এইরেসে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পাবলো (৩৪) এক মাস আগে তাঁদের শরণাপন্ন হন। তিনি তাঁর সত্যিকার পরিচয় জানতে চান। কেননা তিনি জানতেন, তাঁকে দত্তক নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি ২০০৮ সালে তাঁর প্রকৃত পরিচয় নিয়ে সন্দিহান হয়ে ওঠেন। ওই সময় তাঁর দত্তক মা তাঁকে বলেন, তাঁর প্রকৃত মা-বাবা হারিয়ে গেছেন।
১৯৭৮ সালে চুরি হওয়ার এক মাস পরই পাবলোর মা-বাবাকে অপহরণ করে সেনাবাহিনী। এরপর আর তাঁদের দেখা মেলেনি। চুরির পর পাবলোকে এক কর্নেল একটি পরিবারের হাতে তুলে দেন। সেই থেকে পাবলোর প্রকৃত আত্মীয়-স্বজনও তাঁর খোঁজ করে আসছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পাবলোর এক চাচা বলেন, ‘আমি আমার সব ভাইকে বলে আসছি যে আমাদের এক ভাইপো রয়েছে। সেই আমাদের পরিবারের প্রথম সন্তান।’
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৩ সালে ‘ডার্টি ওয়ার’ খ্যাত এই সময়ে ৩০ সহস্রাধিক লোক সেনাবাহিনীর হাতে নিহত বা নিখোঁজ হয়। আটকাদেশ অবস্থায় মায়েদের গর্ভে যেসব সন্তান আসে তাঁদের পুলিশ কিংবা সেনা পরিবারগুলোর কাছে তুলে দেওয়া হয়। সেসব শিশুর অনেকে এখনো জানে না যে তাদের চুরি করা হয়েছে।
কারাগার থেকে সদ্যোজাত শিশুদের চুরির অভিযোগে দুজন সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে গত মাসে অভিযুক্ত করা হয়। এঁরা হলেন জর্জ ভিদেলা ও রোনাল্ডো বিগনন। বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.