আদভানির বক্তব্যে লোকসভায় হট্টগোল অধিবেশন মুলতবি

বিজেপি নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানির এক মন্তব্যের জের ধরে সৃষ্ট হট্টগোলের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার অধিবেশন মুলতবি করা হয়েছে। আদভানি বর্তমান সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা (ইউপিএ) সরকারকে অবৈধ বলায় কংগ্রেস পার্টির সদস্যরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানান।


পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে স্পিকার মীরা কুমার অধিবেশন মুলতবি করতে বাধ্য হন।
গতকাল থেকে লোকসভার বর্ষাকালীন অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে আসামে গত মাসে সংঘটিত জাতিগত দাঙ্গা সম্পর্কে কথা হয়। এ সময় বিজেপি নেতা আদভানি আসামের জাতিগত দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ করেন কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে। অধিবেশনে তিনি জানান, প্রথম ইউপিএ সরকার বৈধ ছিল। তবে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসা ইউপিএ অবৈধ। তাঁর মতে, আসামের ঘটনাকে জাতিগত দাঙ্গা হিসেবে দেখা ঠিক হবে না। আসামের নিরাপত্তা বিঘি্নত করার জন্য সরকারের 'অবৈধ বাংলাদেশিদের' খুঁজে বের করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ ছাড়া দাঙ্গার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনেরও আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে কটাক্ষ করে আদভানি বলেন, 'আপনি বিদেশি দখলদারদের প্রতি সদয়। বিদেশিদের অনুপ্রবেশ ঠেকানো সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এটা কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা।'
এরপরই হৈচৈ শুরু করে দেন কংগ্রেস সদস্যরা। আদভানির এমন মন্তব্যে কংগ্রেসের চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধীকেও বিরক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। কংগ্রেস নেতারা আদভানির মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান। লোকসভার স্পিকার মীরা কুমার তাঁদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় প্রথমে তিনি দুপুর ১২টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করেন। পরে সময়সীমা দুপুর ২টা পর্যন্ত করা হয়।
আদভানি অবশ্য তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, তিনি ২০০৮ সালে পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত আস্থাভোটের কথা বলেছেন; ২০০৯ সালের সাধারণ নির্বাচনের কথা বলেননি।
আদভানির বক্তব্যে এ নিয়ে গত দুই দিনে দুইবার পার্লামেন্ট অধিবেশন মুলতবি হলো। এর আগে গত মঙ্গলবার রাজ্যসভার অধিবেশন মুলতবি করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২০ জুলাই থেকে আসামে ব্যাপক হারে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। এক সপ্তাহের দাঙ্গায় ৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। বাস্তুচ্যুত হয়ে কমপক্ষে চার লাখ মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া

No comments

Powered by Blogger.