ধর্ম- মাহে রমজান জাকাত আদায়ের উত্তম সময় by আবদুস সবুর খান
ইসলাম সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি, সহানুভূতির ধর্ম। পবিত্র রমজানের সিয়াম সাধনার মাধ্যমে ক্ষুধা-তৃষ্ণার কষ্ট সম্যক উপলব্ধির মাধ্যমে ধনী নির্ধনের প্রতি সহানুভূতিশীল হবে, তার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়াবে, নিজের অর্জিত সঞ্চিত সম্পদ থেকে কিছু অংশ স্বেচ্ছায় তাকে দান করবে এবং এর মাধ্যমে ধনী-নির্ধনের মধ্যে একটি চমৎকার
ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হবে, একটি সুন্দর সৌহার্দ্যপূর্ণ সাম্যের সমাজ গড়ে উঠবে—এই লক্ষ্যেই মহান আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল সর্বদাই বান্দাকে দান-সদকার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন, ‘যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধনসম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বীজের মতো, যা থেকে সাতটি শিষ জন্মায়। প্রতিটি শিষে এক শ করে দানা থাকে। আল্লাহ অতি দানশীল, সর্বজ্ঞ।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ২৬১-১৬২) রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা মানবসন্তানকে লক্ষ করে বলেন, ‘তুমি দান করো। তাহলে তোমার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে দান করা হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
এমনি সাধারণ দানের কথা পবিত্র কোরআন ও হাদিসে অসংখ্যবার উল্লেখ করা হয়েছে। এর বাইরেও সচ্ছল সম্পদশালীদের প্রতি তার সম্পদ থেকে কিছু অংশ গরিব-দুঃখীদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়াকে পবিত্র কোরআনে বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়েছে। এই বাধ্যতামূলক দানই হচ্ছে জাকাত। জাকাত ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। অন্যান্য ফরজ (অবশ্যপালনীয়) ইবাদতের মতো জাকাত আদায় করাও ফরজ। জাকাত এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যে, পবিত্র কোরআনে পৃথকভাবে এর উল্লেখ ছাড়াও ৮২ স্থানে সালাতের পাশাপাশি জাকাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
জাকাত-এর শাব্দিক অর্থ পবিত্র, বিশুদ্ধ, বৃদ্ধি, বরকত। জাকাতের মাধ্যমে সম্পদ পবিত্র হয়, বিশুদ্ধ হয়, সম্পদে বরকত হয় এবং প্রবৃদ্ধি বাড়ে। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায়, কোনো প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তি যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয় (অর্থাৎ, সাড়ে সাত তোলা সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা অথবা এর সমপরিমাণ অর্থ কিংবা সোনা, রুপা এবং নগদ অর্থ মিলে যদি এর পরিমাণ সাড়ে সাত তোলা সোনার সমান হয়) এবং এই সম্পদ তার পরিবারের দৈনন্দিন খরচের অতিরিক্ত হয় এবং পূর্ণ এক বছর তার মালিকানায় থাকে, তবে ওই সম্পদের আড়াই শতাংশ নির্দিষ্ট খাতসমূহে (পবিত্র কোরআনে জাকাত ব্যয় করার সুনির্দিষ্ট খাতসমূহ উল্লেখ করা হয়েছে) স্বেচ্ছায় ব্যয় করার নামই হচ্ছে জাকাত। এই শর্তাবলি থেকে প্রতীয়মান হয়, বছরের যেকোনো সময় নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের সম্পদের মেয়াদকাল এক বছর পূর্ণ হবে, তখনই তার ওপর জাকাত আদায় করা ফরজ হবে। সে ক্ষেত্রে মাহে রমজানেই জাকাত আদায় করতে হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে মহান আল্লাহ মাহে রমজানে বান্দার নেক আমলের সওয়াব বহু গুণ বাড়িয়ে দেন এবং এ মাসে রোজাদার মুসলমানরাও অন্যান্য মাসের তুলনায় অধিক পরিমাণে নেক আমলের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে গরিব-দুঃখীদের প্রতি তাঁদের বিশেষ সহানুভূতি সৃষ্টি হয় এবং এ মাসের শেষেই পবিত্র ঈদুল ফিতরে ধনী-নির্ধন নির্বিশেষে সবাই যাতে সমানভাবে ঈদের আনন্দে শরিক হতে পারে, এসব লক্ষ্যেই পবিত্র মাহে রমজানেই বেশির ভাগ সম্পদশালী ব্যক্তি জাকাত আদায় করে থাকেন। এটিই সাধারণ রেওয়াজে পরিণত হয়েছে এবং এটিই জাকাত আদায়ের উত্তম মৌসুম। কারণ, এর মাধ্যমে বার্ষিক হিসাব রাখা সহজ হয়।
সিয়ামের মতো জাকাতও শুধু উম্মতে মোহাম্মদীর ওপরই ফরজ নয়, অন্যান্য নবীর উম্মতদের ওপরও জাকাত ফরজ ছিল। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ হয়েছে, ‘আর আমি ইব্রাহিমকে দান করেছিলাম ইসহাক, আরও দান করেছিলাম ইয়াকুব আর প্রত্যেককেই সৎকর্মপরায়ণ করেছিলাম। আর তাদের করেছিলাম নেতা; তারা আমার নির্দেশ অনুসারে মানুষকে সৎপথ প্রদর্শন করত; তাদের আদেশ করেছিলাম সৎকাজ করতে, নামাজ কায়েম করতে ও জাকাত প্রদান করতে; তারা আমারই উপাসনা করত।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত ৭২-৭৩) ‘সে (ঈসা) বলল, আমি তো আল্লাহর দাস। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন ও আমাকে নবী করেছেন। যেখানেই আমি থাকি না কেন, তিনি আমাকে আশিসভাজন করেছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যত দিন জীবিত থাকি, তত দিন নামাজ ও জাকাত আদায় করতে এবং আমার মায়ের অনুগত থাকতে।’ (সুরা মারিয়াম, আয়াত ৩০-৩১) ‘সে (ইসমাইল) তার পরিজনবর্গকে নামাজ ও জাকাত আদায়ের নির্দেশ দিত; আর সে ছিল তার প্রতিপালকের প্রিয়পাত্র।’ (সুরা মারিয়াম, আয়াত ৫৫)
উপরিউক্ত আয়াতগুলো দ্বারা প্রতীয়মান হয়, শুধু উম্মতে মোহাম্মদীর ওপরই নয়, ইতিপূর্বেও অনেক নবীর উম্মতদের ওপর জাকাত ফরজ ছিল। সাওম ও সিয়ামসহ অন্যান্য ফরজ ইবাদতের মতো জাকাতও একটি ফরজ ইবাদত এবং এতে প্রভূত কল্যাণ নিহিত। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘যারা নামাজ পড়ে, জাকাত দেয় ও পরলোকে দৃঢ় বিশ্বাস করে, তারাই তাদের প্রতিপালকের পথে আছে এবং তারাই সফলকাম।’ (সুরা লুকমান, আয়াত ৪)
রাসুল (সা.) জাকাত আদায়ের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং তিনি নিজে এটি বাস্তবায়ন করে গেছেন। হজরত আবদুল্লাহ বিন আবু আওফা থেকে বর্ণিত এক হাদিসে তিনি বলেন, কোনো পরিবারের লোকেরা যখন রাসুল (সা.)-এর নিকট জাকাত নিয়ে আসত, তখন তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ! তুমি অমুক পরিবারের প্রতি রহমত বর্ষণ করো।’ আবদুল্লাহ বিন আওফা বলেন, ‘একদা আমার পিতা তাঁর নিকট জাকাত নিয়ে এলেন, তখন রাসুল (সা.) বললেন, “হে আল্লাহ! তুমি আবু আওফার পরিবারের প্রতি দয়া করো।’” (বুখারি)
আমাদের যাদের ওপর জাকাত আদায় ফরজ হয়েছে, তারা মাহে রমজানের সিয়াম সাধনার পাশাপাশি জাকাতও আদায় করব, যাতে আমরা আল্লাহ তাআলার পরিপূর্ণ রহমতের অংশীদার হতে পারি। আর এর মাধ্যমে আমাদের গরিব-দুঃখী ভাইবোনদেরও আসন্ন ঈদের আনন্দে সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারি। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন।
ড. আবদুস সবুর খান: সহযোগী অধ্যাপক, ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
masaburk@yahoo.com
এমনি সাধারণ দানের কথা পবিত্র কোরআন ও হাদিসে অসংখ্যবার উল্লেখ করা হয়েছে। এর বাইরেও সচ্ছল সম্পদশালীদের প্রতি তার সম্পদ থেকে কিছু অংশ গরিব-দুঃখীদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়াকে পবিত্র কোরআনে বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়েছে। এই বাধ্যতামূলক দানই হচ্ছে জাকাত। জাকাত ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। অন্যান্য ফরজ (অবশ্যপালনীয়) ইবাদতের মতো জাকাত আদায় করাও ফরজ। জাকাত এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত যে, পবিত্র কোরআনে পৃথকভাবে এর উল্লেখ ছাড়াও ৮২ স্থানে সালাতের পাশাপাশি জাকাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
জাকাত-এর শাব্দিক অর্থ পবিত্র, বিশুদ্ধ, বৃদ্ধি, বরকত। জাকাতের মাধ্যমে সম্পদ পবিত্র হয়, বিশুদ্ধ হয়, সম্পদে বরকত হয় এবং প্রবৃদ্ধি বাড়ে। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায়, কোনো প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তি যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয় (অর্থাৎ, সাড়ে সাত তোলা সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা অথবা এর সমপরিমাণ অর্থ কিংবা সোনা, রুপা এবং নগদ অর্থ মিলে যদি এর পরিমাণ সাড়ে সাত তোলা সোনার সমান হয়) এবং এই সম্পদ তার পরিবারের দৈনন্দিন খরচের অতিরিক্ত হয় এবং পূর্ণ এক বছর তার মালিকানায় থাকে, তবে ওই সম্পদের আড়াই শতাংশ নির্দিষ্ট খাতসমূহে (পবিত্র কোরআনে জাকাত ব্যয় করার সুনির্দিষ্ট খাতসমূহ উল্লেখ করা হয়েছে) স্বেচ্ছায় ব্যয় করার নামই হচ্ছে জাকাত। এই শর্তাবলি থেকে প্রতীয়মান হয়, বছরের যেকোনো সময় নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিকের সম্পদের মেয়াদকাল এক বছর পূর্ণ হবে, তখনই তার ওপর জাকাত আদায় করা ফরজ হবে। সে ক্ষেত্রে মাহে রমজানেই জাকাত আদায় করতে হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে মহান আল্লাহ মাহে রমজানে বান্দার নেক আমলের সওয়াব বহু গুণ বাড়িয়ে দেন এবং এ মাসে রোজাদার মুসলমানরাও অন্যান্য মাসের তুলনায় অধিক পরিমাণে নেক আমলের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে গরিব-দুঃখীদের প্রতি তাঁদের বিশেষ সহানুভূতি সৃষ্টি হয় এবং এ মাসের শেষেই পবিত্র ঈদুল ফিতরে ধনী-নির্ধন নির্বিশেষে সবাই যাতে সমানভাবে ঈদের আনন্দে শরিক হতে পারে, এসব লক্ষ্যেই পবিত্র মাহে রমজানেই বেশির ভাগ সম্পদশালী ব্যক্তি জাকাত আদায় করে থাকেন। এটিই সাধারণ রেওয়াজে পরিণত হয়েছে এবং এটিই জাকাত আদায়ের উত্তম মৌসুম। কারণ, এর মাধ্যমে বার্ষিক হিসাব রাখা সহজ হয়।
সিয়ামের মতো জাকাতও শুধু উম্মতে মোহাম্মদীর ওপরই ফরজ নয়, অন্যান্য নবীর উম্মতদের ওপরও জাকাত ফরজ ছিল। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে উল্লেখ হয়েছে, ‘আর আমি ইব্রাহিমকে দান করেছিলাম ইসহাক, আরও দান করেছিলাম ইয়াকুব আর প্রত্যেককেই সৎকর্মপরায়ণ করেছিলাম। আর তাদের করেছিলাম নেতা; তারা আমার নির্দেশ অনুসারে মানুষকে সৎপথ প্রদর্শন করত; তাদের আদেশ করেছিলাম সৎকাজ করতে, নামাজ কায়েম করতে ও জাকাত প্রদান করতে; তারা আমারই উপাসনা করত।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত ৭২-৭৩) ‘সে (ঈসা) বলল, আমি তো আল্লাহর দাস। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন ও আমাকে নবী করেছেন। যেখানেই আমি থাকি না কেন, তিনি আমাকে আশিসভাজন করেছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যত দিন জীবিত থাকি, তত দিন নামাজ ও জাকাত আদায় করতে এবং আমার মায়ের অনুগত থাকতে।’ (সুরা মারিয়াম, আয়াত ৩০-৩১) ‘সে (ইসমাইল) তার পরিজনবর্গকে নামাজ ও জাকাত আদায়ের নির্দেশ দিত; আর সে ছিল তার প্রতিপালকের প্রিয়পাত্র।’ (সুরা মারিয়াম, আয়াত ৫৫)
উপরিউক্ত আয়াতগুলো দ্বারা প্রতীয়মান হয়, শুধু উম্মতে মোহাম্মদীর ওপরই নয়, ইতিপূর্বেও অনেক নবীর উম্মতদের ওপর জাকাত ফরজ ছিল। সাওম ও সিয়ামসহ অন্যান্য ফরজ ইবাদতের মতো জাকাতও একটি ফরজ ইবাদত এবং এতে প্রভূত কল্যাণ নিহিত। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘যারা নামাজ পড়ে, জাকাত দেয় ও পরলোকে দৃঢ় বিশ্বাস করে, তারাই তাদের প্রতিপালকের পথে আছে এবং তারাই সফলকাম।’ (সুরা লুকমান, আয়াত ৪)
রাসুল (সা.) জাকাত আদায়ের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং তিনি নিজে এটি বাস্তবায়ন করে গেছেন। হজরত আবদুল্লাহ বিন আবু আওফা থেকে বর্ণিত এক হাদিসে তিনি বলেন, কোনো পরিবারের লোকেরা যখন রাসুল (সা.)-এর নিকট জাকাত নিয়ে আসত, তখন তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ! তুমি অমুক পরিবারের প্রতি রহমত বর্ষণ করো।’ আবদুল্লাহ বিন আওফা বলেন, ‘একদা আমার পিতা তাঁর নিকট জাকাত নিয়ে এলেন, তখন রাসুল (সা.) বললেন, “হে আল্লাহ! তুমি আবু আওফার পরিবারের প্রতি দয়া করো।’” (বুখারি)
আমাদের যাদের ওপর জাকাত আদায় ফরজ হয়েছে, তারা মাহে রমজানের সিয়াম সাধনার পাশাপাশি জাকাতও আদায় করব, যাতে আমরা আল্লাহ তাআলার পরিপূর্ণ রহমতের অংশীদার হতে পারি। আর এর মাধ্যমে আমাদের গরিব-দুঃখী ভাইবোনদেরও আসন্ন ঈদের আনন্দে সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারি। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন।
ড. আবদুস সবুর খান: সহযোগী অধ্যাপক, ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
masaburk@yahoo.com
No comments