ভিশনারি আবদুল কালাম-তারুণ্যেই বাংলাদেশের সম্ভাবনা
ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালাম তার দেশের তরুণ প্রজন্মকে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও কর্মযজ্ঞের সম্মিলনের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সামনের কাতারে নিয়ে যাওয়ার অন্যতম প্রেরণাদানকারী। কী করে উন্নয়নকেই রাজনীতির উপজীব্য করা যায়, সে পথের সন্ধানও তিনি দিয়েছেন।
সেজন্যই তিনি বয়সে প্রবীণ হয়ে নতুন প্রজন্মের এতটা প্রিয়। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও তিনি সুন্দর আগামী দিন জিনে আনার স্বপ্ন চারিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এ দেশের উন্নয়নের জন্য 'রাজনীতির জন্য রাজনীতির পরিবর্তে উন্নয়নের লক্ষ্যতাড়িত রাজনীতিই' যে প্রধান উপজীব্য হওয়া উচিত সে কথা স্পষ্ট করে সমকালের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেছেন। শনিবার প্রকাশিত ওই সাক্ষাৎকারে দেখা যায়, তরুণরাই শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবেন বলে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশে দু'দিনের সফরে এসে সিরডাপের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সহযোগিতা সম্প্রসারণের অনেক ক্ষেত্রের মধ্যে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা, পানি ব্যবস্থাপনা ও পাটের ব্যবহার বৃদ্ধি তথা সবুজ অর্থনীতি গড়ে তোলার প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন তিনি। তার এসব বক্তব্য প্রতিবেশী দুটি দেশের উন্নয়ন ও জনগণের সুখ-সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষাতাড়িত। তিনি সবকিছুর মধ্যেই সুস্থ রাজনীতির ধারা প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব অনুধাবন করেন। বস্তুত দেশ ও জাতির উন্নয়ন বহির্ভূত ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থের রাজনীতি যে কী অপরিমেয় ক্ষতি করে তার আলামত তো ভারতের রাষ্ট্রপতি থাকার সুবাদে তিনি প্রত্যক্ষ করে থাকবেন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে স্বার্থ হাসিলের রাজনীতির কুপ্রভাব আমজনতাও হাড়ে হাড়ে টের পান। আবদুল কালাম রাজনীতিকে এহেন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থের সংকীর্ণ গণ্ডি থেকে বের করে দেশ ও জাতির উন্নয়নের হাতিয়ার করতে চান। আর এক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশের তরুণ সমাজের মধ্যেই অমিত সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছেন। স্বপ্নচারী মানুষটি বিশাল হৃদয়ের বলেই হয়তোবা ভিন্ন দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবেশী দেশের উন্নয়ন সম্ভাবনা সম্পর্কে এমন উচ্চ ধারণা পোষণ করতে পারেন। প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা সম্প্রসারণে সুনির্দিষ্টভাবে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা বিজ্ঞানমনস্ক মানুষটির চিন্তা ও মননে স্বচ্ছতার ফল। তার এই ভিশনারি বক্তব্য আমাদের তরুণ প্রজন্মকে সুস্থধারার রাজনীতির প্রতি অধিকহারে আকৃষ্ট করা এবং প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে পরস্পরের সুনির্দিষ্ট লাভজনক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিস্তৃতিতে অবদান রাখবে বলে বিশ্বাস।
No comments