বেগম রোকেয়া স্মারক বক্তৃতা ২০০৯-তিমির বিদার উদার অভু্যদয়ের নায়িকা by আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
(শেষাংশ ) তাঁর কাছে নারী-স্বাধীনতার সংজ্ঞা ছিল, তাঁর ভাষায় "স্বাধীনতা অর্থে পুরুষের ন্যায় উন্নত অবস্থা বুঝিতে হইবে। পুরুষের সমকতা লাভের জন্য আমাদিগকে যাহা করিতে হয় তাহাই করিব। যদি এখন স্বাধীনভাবে জীবিকা অর্জন করিলে স্বাধীনতা লাভ হয় তবে তাহাই করিব। ..
. উপার্জন করিব না কেন? আমাদের কি হাত নাই, না পা নাই, না বুদ্ধি নাই? যে পরিশ্রম আমরা স্বামীর গৃহকার্য্যে ব্যয় করি, সেই পরিশ্রম দ্বারা কি স্বাধীন ব্যবসা করিতে পারিব না?"
এটা ছিল সেকালের নারী-স্বাধীনতার সময়োপযোগী প্রাথমিক ঘোষণাপত্র। তিনি এই ঘোষণার পাশাপাশি পুরুষশাসিত সমাজকে এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে, "আমরা সমাজেরই অর্ধাঙ্গ। আমরা পড়িয়া থাকিলে সমাজ উঠিবে কি রূপে? পুরুষের স্বার্থ ও আমাদের স্বার্থ ভিন্ন নহে_ একই। আমাদের উচিত যে তাহাদের সংসারের এক গুরুতর বোঝা বিশেষ না হইয়া আমরা সহচারী, সহকর্মিনী, সহধর্মিনী ইত্যাদি হইয়া তাহাদের সহায়তা করি। আমরা অকর্মণ্য পুতুল-জীবন বহন করিবার জন্য সৃষ্ট হই নাই একথা নিশ্চিত।" বাংলাদেশের রাজনীতির েেত্র আমরা ল্য করেছি, পূর্ণ স্বাধীনতার আগে আমরা স্বায়ত্তশাসন চেয়েছি। ধাপে ধাপে সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আন্দোলন এগিয়েছে। বঙ্গবন্ধু তাঁর ৭ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণাটি যদি এক বছর আগেও দিতেন, তাহলে ব্যর্থ হতেন। বেগম রোকেয়াও নারী স্বাধীনতার আন্দোলনে নেমে আগে নারীর স্বায়ত্তশাসনাধিকার ও পুরুষের কমকতা চেয়েছেন। নারী স্বাধীনতা সম্পর্কিত তাঁর লেখালেখিও ছিলো কৌশলপূর্ণ। এজন্যে তাঁর কোনো কোনো জীবনীকার তাঁর মধ্যে অসঙ্গতি ও আপোসবাদিতা দেখেছেন। তাঁরা বলেছেন, 'অবরোধবাসিনী' গ্রন্থে রোকেয়া যেভাবে পর্দা প্রথাকে তী্ন ব্যঙ্গে জর্জরিত করেছেন, 'বোরখা' গ্রন্থে সেই পর্দার প েলিখেছেন এবং নিজে পর্দা মেনে চলেছেন। এ ব্যাপারে আমি এই সমালোচকদের সঙ্গে সহমত পোষণ করি না। আগেই বলেছি, রোকেয়া নারী জাগরণের েেত্র একক বিপ্লবী সেজে বাহবা পেতে চাননি; তিনি ল্য অর্জনের জন্য কখনো কৌশলী আপোসবাদী সেজে, প্রথাকে মেনে সেই প্রথা বদলাতে চেয়েছেন। ল্যে পেঁৗছাতে চেয়েছেন। আমার ধারণা তিনি মনে করতেন, ব্যর্থ বিপ্লবের চাইতে সফল সংস্কার তাঁর নারীমুক্তি আন্দোলনকে এগিয়ে দেবে। এ সম্পর্কে রোকেয়া নিজেই লিখেছেন, "পর্দা মানে অবরোধ নয়, কিন্তু আমি যে অনিচ্ছাকৃতভাবে অবরোধবাসিনী হয়েছি তার কারণ অনেক। আমার স্কুলটা আমার প্রাণের চেয়েও প্রিয়। একে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আমি সমাজের অযৌক্তিক নিয়মকানুনগুলোও পালন করছি। আমি গাড়িতে ক্যানভাস করে ইস্কুলের জন্য মেয়ে আনতে যাই, কিন্তু অভিভাবকেরা আমাকে আগেই জিজ্ঞাসা করেন পর্দা পালন হয় কিনা? এতোটুকু ছেলেমেয়ের বেলাতেও এই প্রশ্ন! এখন বুঝুন কী পরিস্থিতির মধ্যে আমি ইস্কুল চালাচ্ছি আর ব্যক্তিগতভাবে আমার অবস্থাটাই বা কী রূপ? ইস্কুলের জন্য আমি সমাজের সব অত্যাচার সহ্য করে চলেছি।"
রোকেয়া অতু্যক্তি করেননি। তার উপর সামাজিক অত্যাচার এতোটাই নিম্নস্তরে গিয়ে পেঁৗছেছিল যে, সে সময় মাসিক মোহাম্মদীর মতো পত্রিকায় আমিনউদ্দীন আহমদ নামে এক লেখক তাঁর 'স্মৃতি অর্ঘ্য' শীর্ষক নিবন্ধে বেগম রোকেয়াকে জঘন্য ভাষায় আক্রমণ করে লিখেছিলেন, "যুবতী বিধবা ইস্কুল স্থাপন করিয়া নিজের রূপ ও যৌবনের বিজ্ঞাপন প্রচার করিতেছেন।" এ ধরনের কদর্য উক্তি ও প্রচারণা ছাড়াও তাঁর উপর শারীরিক হামলা চালানোর চেষ্টা হয়েছিল। বেগম রোকেয়াকে তাই সমাজের এই সঙ্ঘবদ্ধ বিরোধিতার মুখে কখনো দু'পা এগিয়ে এক পা পিছাতে হয়েছে। তিনি প্রথা বদলের ল্যে আপাতত সেই প্রথা মেনে চলেছেন। অকাল বৈধব্য সত্ত্বেও দ্বিতীয়বার বিয়ে করেননি। বেগম সুফিয়া কামালসহ তাঁর অনেক অনুসারী করেছেন। তিনি তাঁর ইস্কুলে বাংলার মাধ্যমে শিাদান করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টা করেও তিনি তা পারেননি। কেন পারেননি সে সম্পর্কে ১৯১৭ সালে 'দি মুসলমান' পত্রিকায় একটি বিরাট জবাব লিখেছিলেন, তাতে বলেছেন, প্রাথমিকভাবে ইস্কুলে উদর্ুকে শিাদানের মাধ্যম করে তিনি ইস্কুলটিকে রা করতে পেরেছেন, নইলে ইস্কুলটি বন্ধ হয়ে যেতো।
রোকেয়া নারীশিা বিস্তার ও নারীজাগরণের ল্যে অনেক উপন্যাস, গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ ও স্যাটায়ার লিখেছেন। সেগুলো প্রচারধমর্ী না হয়ে মানোন্নত সাহিত্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তাঁর সাহিত্যকর্ম ও সমাজ ভাবনার মধ্যে যারা অসঙ্গতি খোঁজেন, তাঁদের মনে রাখা উচিত এসব সেই সময়ের অসঙ্গতি। বাংলার হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে গ্রামের কর্মজীবী নারীর কাছে পর্দাপ্রথা বিলোপের আন্দোলনের তেমন কোনো গুরুত্ব ছিল না। কারণ অর্থনৈতিক কারণে যেখানে তাদের ব্লাউজ, ব্রেসিয়ার, ছায়া ইত্যাদি পরার সুযোগ ছিল না, সেখানে পর্দা পালনের তো প্রশ্ন ওঠে না। জীবন জীবিকার কারণেই তখন তাদের বড় লোকের বাড়িতে ঝি, েেত্র কৃষক স্বামীর জোগালি, ফসল তোলা বা ফসল নিড়ানির কাজে বাইরে বেরুতে হতো। সেেেত্র পুরুষের কাছ থেকে আত্মগোপন করে থাকার সুযোগ তাদের ছিল না। আর মোল্লারাও গরিব নারীদের কাছে পর্দা প্রথার নসিহত বিতরণ করতেন, তারা তা মেনে চলে কিনা তা নিয়ে মাথা ঘামাতেন না। বর্তমান যুগে নারী আন্দোলন আরও বহুমুখী হয়েছে। আমাদের দেশে অবরোধ প্রথার নিগড় থেকে সাধারণ নারী সমাজ অনেকটা মুক্ত হলেও মোল্লাতন্ত্রের ধমর্ীয় অনুশাসনের নিগড় আরও শক্ত হয়েছে। শিালাভের সুযোগ তার জন্য খুলে গেলেও জীবন জীবিকার েেত্র সে এখনও পুরুষের সমকতা অর্জনে অনেক পিছিয়ে রয়েছে এবং পুরুষতন্ত্রের আধিপত্য থেকে এখনও মুক্ত নয়। বাংলাদেশে নারী আন্দোলনের চরিত্র এখন তাই অনেক বদলে গেছে। রোকেয়া নারীদের জন্য সমিতি গড়েছিলেন একটাই 'আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম'। বর্তমানে দেশে নারী সংস্থা ও সমিতি অনেক। কোনোটা রাজনৈতিক, কোনোটা সামাজিক, কোনোটা সাংস্কৃতিক েেত্র নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনরত। অবহেলিত শ্রমজীবী নারীদের দাবিদাওয়া আদায় ও স্বার্থরার জন্যও নানা সংস্থা গড়া উঠেছে। কিন্তু এসব কিছুর শুরুতেই বেগম রোকেয়া যে ছিলেন সকল প্রেরণার সাহসী উৎস সেকথা অস্বীকার করার উপায় নেই। তাঁকে স্মরণ করার মধ্য দিয়ে আজকের পরিবর্তিত নারী আন্দোলনও সামনে এগুবার প্রশস্ত পথ খুঁজে পেতে পারে। লন্ডন ১৫ ডিসেম্বর, ২০০৯, মঙ্গলবার
এটা ছিল সেকালের নারী-স্বাধীনতার সময়োপযোগী প্রাথমিক ঘোষণাপত্র। তিনি এই ঘোষণার পাশাপাশি পুরুষশাসিত সমাজকে এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে, "আমরা সমাজেরই অর্ধাঙ্গ। আমরা পড়িয়া থাকিলে সমাজ উঠিবে কি রূপে? পুরুষের স্বার্থ ও আমাদের স্বার্থ ভিন্ন নহে_ একই। আমাদের উচিত যে তাহাদের সংসারের এক গুরুতর বোঝা বিশেষ না হইয়া আমরা সহচারী, সহকর্মিনী, সহধর্মিনী ইত্যাদি হইয়া তাহাদের সহায়তা করি। আমরা অকর্মণ্য পুতুল-জীবন বহন করিবার জন্য সৃষ্ট হই নাই একথা নিশ্চিত।" বাংলাদেশের রাজনীতির েেত্র আমরা ল্য করেছি, পূর্ণ স্বাধীনতার আগে আমরা স্বায়ত্তশাসন চেয়েছি। ধাপে ধাপে সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আন্দোলন এগিয়েছে। বঙ্গবন্ধু তাঁর ৭ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণাটি যদি এক বছর আগেও দিতেন, তাহলে ব্যর্থ হতেন। বেগম রোকেয়াও নারী স্বাধীনতার আন্দোলনে নেমে আগে নারীর স্বায়ত্তশাসনাধিকার ও পুরুষের কমকতা চেয়েছেন। নারী স্বাধীনতা সম্পর্কিত তাঁর লেখালেখিও ছিলো কৌশলপূর্ণ। এজন্যে তাঁর কোনো কোনো জীবনীকার তাঁর মধ্যে অসঙ্গতি ও আপোসবাদিতা দেখেছেন। তাঁরা বলেছেন, 'অবরোধবাসিনী' গ্রন্থে রোকেয়া যেভাবে পর্দা প্রথাকে তী্ন ব্যঙ্গে জর্জরিত করেছেন, 'বোরখা' গ্রন্থে সেই পর্দার প েলিখেছেন এবং নিজে পর্দা মেনে চলেছেন। এ ব্যাপারে আমি এই সমালোচকদের সঙ্গে সহমত পোষণ করি না। আগেই বলেছি, রোকেয়া নারী জাগরণের েেত্র একক বিপ্লবী সেজে বাহবা পেতে চাননি; তিনি ল্য অর্জনের জন্য কখনো কৌশলী আপোসবাদী সেজে, প্রথাকে মেনে সেই প্রথা বদলাতে চেয়েছেন। ল্যে পেঁৗছাতে চেয়েছেন। আমার ধারণা তিনি মনে করতেন, ব্যর্থ বিপ্লবের চাইতে সফল সংস্কার তাঁর নারীমুক্তি আন্দোলনকে এগিয়ে দেবে। এ সম্পর্কে রোকেয়া নিজেই লিখেছেন, "পর্দা মানে অবরোধ নয়, কিন্তু আমি যে অনিচ্ছাকৃতভাবে অবরোধবাসিনী হয়েছি তার কারণ অনেক। আমার স্কুলটা আমার প্রাণের চেয়েও প্রিয়। একে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আমি সমাজের অযৌক্তিক নিয়মকানুনগুলোও পালন করছি। আমি গাড়িতে ক্যানভাস করে ইস্কুলের জন্য মেয়ে আনতে যাই, কিন্তু অভিভাবকেরা আমাকে আগেই জিজ্ঞাসা করেন পর্দা পালন হয় কিনা? এতোটুকু ছেলেমেয়ের বেলাতেও এই প্রশ্ন! এখন বুঝুন কী পরিস্থিতির মধ্যে আমি ইস্কুল চালাচ্ছি আর ব্যক্তিগতভাবে আমার অবস্থাটাই বা কী রূপ? ইস্কুলের জন্য আমি সমাজের সব অত্যাচার সহ্য করে চলেছি।"
রোকেয়া অতু্যক্তি করেননি। তার উপর সামাজিক অত্যাচার এতোটাই নিম্নস্তরে গিয়ে পেঁৗছেছিল যে, সে সময় মাসিক মোহাম্মদীর মতো পত্রিকায় আমিনউদ্দীন আহমদ নামে এক লেখক তাঁর 'স্মৃতি অর্ঘ্য' শীর্ষক নিবন্ধে বেগম রোকেয়াকে জঘন্য ভাষায় আক্রমণ করে লিখেছিলেন, "যুবতী বিধবা ইস্কুল স্থাপন করিয়া নিজের রূপ ও যৌবনের বিজ্ঞাপন প্রচার করিতেছেন।" এ ধরনের কদর্য উক্তি ও প্রচারণা ছাড়াও তাঁর উপর শারীরিক হামলা চালানোর চেষ্টা হয়েছিল। বেগম রোকেয়াকে তাই সমাজের এই সঙ্ঘবদ্ধ বিরোধিতার মুখে কখনো দু'পা এগিয়ে এক পা পিছাতে হয়েছে। তিনি প্রথা বদলের ল্যে আপাতত সেই প্রথা মেনে চলেছেন। অকাল বৈধব্য সত্ত্বেও দ্বিতীয়বার বিয়ে করেননি। বেগম সুফিয়া কামালসহ তাঁর অনেক অনুসারী করেছেন। তিনি তাঁর ইস্কুলে বাংলার মাধ্যমে শিাদান করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টা করেও তিনি তা পারেননি। কেন পারেননি সে সম্পর্কে ১৯১৭ সালে 'দি মুসলমান' পত্রিকায় একটি বিরাট জবাব লিখেছিলেন, তাতে বলেছেন, প্রাথমিকভাবে ইস্কুলে উদর্ুকে শিাদানের মাধ্যম করে তিনি ইস্কুলটিকে রা করতে পেরেছেন, নইলে ইস্কুলটি বন্ধ হয়ে যেতো।
রোকেয়া নারীশিা বিস্তার ও নারীজাগরণের ল্যে অনেক উপন্যাস, গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ ও স্যাটায়ার লিখেছেন। সেগুলো প্রচারধমর্ী না হয়ে মানোন্নত সাহিত্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তাঁর সাহিত্যকর্ম ও সমাজ ভাবনার মধ্যে যারা অসঙ্গতি খোঁজেন, তাঁদের মনে রাখা উচিত এসব সেই সময়ের অসঙ্গতি। বাংলার হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে গ্রামের কর্মজীবী নারীর কাছে পর্দাপ্রথা বিলোপের আন্দোলনের তেমন কোনো গুরুত্ব ছিল না। কারণ অর্থনৈতিক কারণে যেখানে তাদের ব্লাউজ, ব্রেসিয়ার, ছায়া ইত্যাদি পরার সুযোগ ছিল না, সেখানে পর্দা পালনের তো প্রশ্ন ওঠে না। জীবন জীবিকার কারণেই তখন তাদের বড় লোকের বাড়িতে ঝি, েেত্র কৃষক স্বামীর জোগালি, ফসল তোলা বা ফসল নিড়ানির কাজে বাইরে বেরুতে হতো। সেেেত্র পুরুষের কাছ থেকে আত্মগোপন করে থাকার সুযোগ তাদের ছিল না। আর মোল্লারাও গরিব নারীদের কাছে পর্দা প্রথার নসিহত বিতরণ করতেন, তারা তা মেনে চলে কিনা তা নিয়ে মাথা ঘামাতেন না। বর্তমান যুগে নারী আন্দোলন আরও বহুমুখী হয়েছে। আমাদের দেশে অবরোধ প্রথার নিগড় থেকে সাধারণ নারী সমাজ অনেকটা মুক্ত হলেও মোল্লাতন্ত্রের ধমর্ীয় অনুশাসনের নিগড় আরও শক্ত হয়েছে। শিালাভের সুযোগ তার জন্য খুলে গেলেও জীবন জীবিকার েেত্র সে এখনও পুরুষের সমকতা অর্জনে অনেক পিছিয়ে রয়েছে এবং পুরুষতন্ত্রের আধিপত্য থেকে এখনও মুক্ত নয়। বাংলাদেশে নারী আন্দোলনের চরিত্র এখন তাই অনেক বদলে গেছে। রোকেয়া নারীদের জন্য সমিতি গড়েছিলেন একটাই 'আঞ্জুমানে খাওয়াতিনে ইসলাম'। বর্তমানে দেশে নারী সংস্থা ও সমিতি অনেক। কোনোটা রাজনৈতিক, কোনোটা সামাজিক, কোনোটা সাংস্কৃতিক েেত্র নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনরত। অবহেলিত শ্রমজীবী নারীদের দাবিদাওয়া আদায় ও স্বার্থরার জন্যও নানা সংস্থা গড়া উঠেছে। কিন্তু এসব কিছুর শুরুতেই বেগম রোকেয়া যে ছিলেন সকল প্রেরণার সাহসী উৎস সেকথা অস্বীকার করার উপায় নেই। তাঁকে স্মরণ করার মধ্য দিয়ে আজকের পরিবর্তিত নারী আন্দোলনও সামনে এগুবার প্রশস্ত পথ খুঁজে পেতে পারে। লন্ডন ১৫ ডিসেম্বর, ২০০৯, মঙ্গলবার
No comments