রোজায় বাজার নিয়ন্ত্রণ ॥ আটকে গেল টিসিবি-পণ্য বিক্রি শুরু, তবে অপ্রতুল প্রস্তুতি ॥ বাজার সিন্ডিকেটের দখলেই থাকবে
মিজান চৌধুরী ॥ টিসিবি আবারও আটকে গেল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে। তাদের তৎপরতার মুখে খুব বেশি প্রস্তুতি নিতে পারেনি টিসিবি। বিগত বছরগুলোর ন্যায় এ বছরও অপ্রতুল প্রস্তুতি নিয়ে শেষ পর্যন্ত মাঠে নেমেছে টিসিবি। যা দিয়ে রোজার বাজার নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা না রাখার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মাত্র ১০ হাজার ৮৭৭ মেট্রিক টন চিনি, ৪ হাজার ৩৭২ টন সয়াবিন ও এক হাজার ৩১৯ টন মসুর ডাল ও এক হাজার টন ছোলা নিয়ে শনিবার থেকে টিসিবি বিক্রয় কর্মসূচী শুরু করেছে। পণ্যের মজুদের এ তথ্য সম্প্রতি বাইিজ্যমন্ত্রী জিএম কাদের সংসদে উপস্থাপন করেছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, রোজায় চিনির চাহিদা হচ্ছে ১ লাখ ৭৫ হাজার টন, ভোজ্যতেল ১ লাখ ৭৫ হাজার টন, মসুর ডাল ৫০ হাজার টন ও ছোলা হচ্ছে ২৫ হাজার টন।
চাহিদা ও টিসিবির মজুদ বিশ্লেষণ করলে রোজার ৩০ দিনের মধ্যে ১ থেকে ২ দিনের চাহিদা মেটানোর মতো পণ্য মজুদ রয়েছে টিসিবির হাতে। টিসিবির সূত্রে জানা গেছে, রমজান উপলক্ষে সোমবার থেকে ডিলারের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রয় শুরু করা হবে। ২৯শ ডিলারের মাধ্যমে পণ্য জেলা ও উপজেলা পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া হবে। আর শনিবার থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বিভাগীয় শহরে টিসিবি ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা ও মসুর ডাল বিক্রি শুরু করেছে।
ঢাকায় ২৫ ট্রাক, চট্টগ্রামে ৫ ট্রাক ও বিভাগীয় শহরগুলোতে ২ ট্রাকের মাধ্যমে এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে। রোজার বাকি আরও ১৩ দিন। ফলে ওই পর্যন্ত টিসিবি’র পণ্য থাকবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
টিসিবি’র পণ্য বাজার মূল্য থেকে কম। ফলে সাধারণ মানুষ, নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে টিসিবির ডাল, ছোলা, চিনি ও ভোজ্যতেলের চাহিদা অনেক। প্রতিকেজি চিনি ৫০ টাকা, ছোলা ৬৬ টাকা, মসুর ডাল ৭০ টাকা, প্রতি লিটার ভোজ্যতেল ১২১ টাকা ও লুজ তেল ১১৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। যদিও খুচরা বাজারে চিনি ৫৩ টাকা, ছোলা ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, বোতলজাত সয়াবিনের লিটার ১৩৫ টাকা, লুজ ১২২ টাকা ও নেপালের মসুর ডাল ১১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
টিসিবির পণ্য ক্রয় করে চিনির কেজিতে ৩ টাকা, ছোলাতে ১৪ থেকে ১৯ টাকা, ডালে ৪৫ টাকা ও বোতলজাত সয়াবিনে ১৪ টাকা ও লুজ সয়াবিনে ৭ টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। এই সাশ্রয়ের কারণে টিসিবির পণ্য চাহিদা থাকা সত্ত্বেও অপ্রতুল। ফলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ পুরোটাই প্রাইভেট ব্যবসায়ীদের হাতেই রয়েছে। ইচ্ছে করলেও দাম নিয়ন্ত্রণে টিসিবি রোজার বাজারে কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না।
প্রতিবছর টিসিবি নিয়ে অনেক কথা হয়। সরকারী পর্যায়ে আরও বেশি কথা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রমজানে প্রায় শূন্য হাতেই টিসিবি রয়েছে। যদিও টিসিবির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে আরও ২৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি ক্রয়ের জন্য একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তিন হাজার মেট্রিক টন ডাল কেনার প্রক্রিয়া চলছে। তবে এসব পণ্য রোজার আগে আসবে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
টিসিবিকে শক্তিশালী করতে এ বছর বাজেটে আলাদা কোন অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়নি। যদিও ৩শ’ কোটি টাকার আলাদা একটি থোক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল। বর্তমান অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এক হাজার কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি দেয়া আছে। এ ব্যাপারে টিসিবি’র এক কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংক গ্যারান্টি নিয়ে পণ্য কেনার ক্ষেত্রে খুব বেশি ভূমিকা রাখা যায় না। কারণ গ্যারান্টি থাকায় অন্যান্য ব্যাংক টিসিবিকে পণ্য কেনার ঋণ দিচ্ছে।
এই ঋণের সুদ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো অন্য সাধারণ ঋণের ন্যায় আরোপ করছে। ফলে ১৪ শতাংশ সুদে পণ্য ক্রয় করে কম দামে বিক্রি কঠিন হয়ে যায়। সুদ মুনাফার সঙ্গে যোগ হলে প্রাইভেট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পারা যায় না। এ জন্য ব্যাংক গ্যারান্টির বিকল্প থোক বরাদ্দ থাকলে বেশি সুবিধা পাওয়া যেত। এছাড়া ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের নজর টিসিবি’র ওপর সর্বক্ষণিক রয়েছে। বিশেষ করে রোজায় যাতে খুব ভালভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে সে ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই সিন্ডিকেট অপচেষ্টা শুরু করে। প্রতিবছর এ কাজ করা হয়। এতে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কিছু লোকসান দিয়েও টিসিবিকে পণ্য ক্রয় করতে দেয় না।
জানা গেছে, এ বছর রমজানে টিসিবিকে প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী টিসিবি কর্তৃপক্ষকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, মানি ইজ নো প্রবলেম। ওই নির্দেশের পর ৩ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল ও ২৫ হাজার টন চিনি আমদানির জন্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এক হাজার টন খেজুর ক্রয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়। টিসিবির কার্যক্রম ভ-ুল করতে না পারে এ জন্য বিশেষ কৌশল নেয়া হয়।
তবে টিসিবির উর্ধতন এক কর্মকর্তা জানান, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কমাতে এ বছর বিশেষ কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। চিনি আমদানির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক রিফাইনারি, স্থানীয় রিফাইনারি ও ব্যবসায়ীদের জন্য পৃথক অবস্থান রাখা হয় দরপত্রে। এতে এই প্রথম বিশ্বের সবচেয়ে বড় রিফাইনারি গ্রুপ লন্ডনের ইউ এন্ড এফ ম্যান কোম্পানি দরপত্রে অংশ নিয়েছে।
একইভাবে বিশ্বের বড় কোম্পানি রিবেলসা গ্রুপ তিন হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল সরবরাহ করছে। এ ধরনের শর্ত আরোপের ফলে বিশ্বের অনেক খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠান টিসিবি’র দরপত্রে অংশ নেয়। আগে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একটি চক্র আমদানি প্রক্রিয়া জিম্মি করে রাখত। এছাড়া এ বছর হস্তান্তরযোগ্য এ ধরনের এলসি টিসিবি গ্রহণ করেনি।
চাহিদা ও টিসিবির মজুদ বিশ্লেষণ করলে রোজার ৩০ দিনের মধ্যে ১ থেকে ২ দিনের চাহিদা মেটানোর মতো পণ্য মজুদ রয়েছে টিসিবির হাতে। টিসিবির সূত্রে জানা গেছে, রমজান উপলক্ষে সোমবার থেকে ডিলারের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রয় শুরু করা হবে। ২৯শ ডিলারের মাধ্যমে পণ্য জেলা ও উপজেলা পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া হবে। আর শনিবার থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বিভাগীয় শহরে টিসিবি ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা ও মসুর ডাল বিক্রি শুরু করেছে।
ঢাকায় ২৫ ট্রাক, চট্টগ্রামে ৫ ট্রাক ও বিভাগীয় শহরগুলোতে ২ ট্রাকের মাধ্যমে এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে। রোজার বাকি আরও ১৩ দিন। ফলে ওই পর্যন্ত টিসিবি’র পণ্য থাকবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
টিসিবি’র পণ্য বাজার মূল্য থেকে কম। ফলে সাধারণ মানুষ, নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে টিসিবির ডাল, ছোলা, চিনি ও ভোজ্যতেলের চাহিদা অনেক। প্রতিকেজি চিনি ৫০ টাকা, ছোলা ৬৬ টাকা, মসুর ডাল ৭০ টাকা, প্রতি লিটার ভোজ্যতেল ১২১ টাকা ও লুজ তেল ১১৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। যদিও খুচরা বাজারে চিনি ৫৩ টাকা, ছোলা ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, বোতলজাত সয়াবিনের লিটার ১৩৫ টাকা, লুজ ১২২ টাকা ও নেপালের মসুর ডাল ১১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
টিসিবির পণ্য ক্রয় করে চিনির কেজিতে ৩ টাকা, ছোলাতে ১৪ থেকে ১৯ টাকা, ডালে ৪৫ টাকা ও বোতলজাত সয়াবিনে ১৪ টাকা ও লুজ সয়াবিনে ৭ টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। এই সাশ্রয়ের কারণে টিসিবির পণ্য চাহিদা থাকা সত্ত্বেও অপ্রতুল। ফলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ পুরোটাই প্রাইভেট ব্যবসায়ীদের হাতেই রয়েছে। ইচ্ছে করলেও দাম নিয়ন্ত্রণে টিসিবি রোজার বাজারে কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না।
প্রতিবছর টিসিবি নিয়ে অনেক কথা হয়। সরকারী পর্যায়ে আরও বেশি কথা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রমজানে প্রায় শূন্য হাতেই টিসিবি রয়েছে। যদিও টিসিবির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে আরও ২৫ হাজার মেট্রিক টন চিনি ক্রয়ের জন্য একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তিন হাজার মেট্রিক টন ডাল কেনার প্রক্রিয়া চলছে। তবে এসব পণ্য রোজার আগে আসবে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
টিসিবিকে শক্তিশালী করতে এ বছর বাজেটে আলাদা কোন অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়নি। যদিও ৩শ’ কোটি টাকার আলাদা একটি থোক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল। বর্তমান অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এক হাজার কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি দেয়া আছে। এ ব্যাপারে টিসিবি’র এক কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংক গ্যারান্টি নিয়ে পণ্য কেনার ক্ষেত্রে খুব বেশি ভূমিকা রাখা যায় না। কারণ গ্যারান্টি থাকায় অন্যান্য ব্যাংক টিসিবিকে পণ্য কেনার ঋণ দিচ্ছে।
এই ঋণের সুদ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো অন্য সাধারণ ঋণের ন্যায় আরোপ করছে। ফলে ১৪ শতাংশ সুদে পণ্য ক্রয় করে কম দামে বিক্রি কঠিন হয়ে যায়। সুদ মুনাফার সঙ্গে যোগ হলে প্রাইভেট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পারা যায় না। এ জন্য ব্যাংক গ্যারান্টির বিকল্প থোক বরাদ্দ থাকলে বেশি সুবিধা পাওয়া যেত। এছাড়া ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের নজর টিসিবি’র ওপর সর্বক্ষণিক রয়েছে। বিশেষ করে রোজায় যাতে খুব ভালভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে সে ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই সিন্ডিকেট অপচেষ্টা শুরু করে। প্রতিবছর এ কাজ করা হয়। এতে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কিছু লোকসান দিয়েও টিসিবিকে পণ্য ক্রয় করতে দেয় না।
জানা গেছে, এ বছর রমজানে টিসিবিকে প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী টিসিবি কর্তৃপক্ষকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, মানি ইজ নো প্রবলেম। ওই নির্দেশের পর ৩ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল ও ২৫ হাজার টন চিনি আমদানির জন্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এক হাজার টন খেজুর ক্রয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়। টিসিবির কার্যক্রম ভ-ুল করতে না পারে এ জন্য বিশেষ কৌশল নেয়া হয়।
তবে টিসিবির উর্ধতন এক কর্মকর্তা জানান, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কমাতে এ বছর বিশেষ কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। চিনি আমদানির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক রিফাইনারি, স্থানীয় রিফাইনারি ও ব্যবসায়ীদের জন্য পৃথক অবস্থান রাখা হয় দরপত্রে। এতে এই প্রথম বিশ্বের সবচেয়ে বড় রিফাইনারি গ্রুপ লন্ডনের ইউ এন্ড এফ ম্যান কোম্পানি দরপত্রে অংশ নিয়েছে।
একইভাবে বিশ্বের বড় কোম্পানি রিবেলসা গ্রুপ তিন হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল সরবরাহ করছে। এ ধরনের শর্ত আরোপের ফলে বিশ্বের অনেক খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠান টিসিবি’র দরপত্রে অংশ নেয়। আগে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একটি চক্র আমদানি প্রক্রিয়া জিম্মি করে রাখত। এছাড়া এ বছর হস্তান্তরযোগ্য এ ধরনের এলসি টিসিবি গ্রহণ করেনি।
No comments