ওষুধের মূল্য নির্ধারণের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে-ওষুধের নিয়ন্ত্রণহীন বাজার
গত ছয় মাসে ওষুধের দাম শ্রেণীভেদে ২০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে—এটি যত বড় দুঃসংবাদ, তার চেয়ে বেশি দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, ওষুধের মূল্য নির্ধারণ ও বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের হাত কার্যত নেই। তাহলে আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কী করছে, আর কী করতেই বা আছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর নামের এক নামজাদা কর্তৃপক্ষ?
ওষুধ বাজারের আর দশটা সাধারণ ভোগ্যপণ্যের মতো বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত নয়, যার উৎপাদন ও বিপণন কেবলই মুনাফাকেন্দ্রিক হবে। স্বাস্থ্য ও জীবন রক্ষার জন্য ওষুধ জরুরি। তাই ওষুধের ন্যায্য মূল্য ও সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশে রয়েছে। সেসব দেশে ওষুধ কোম্পানিগুলো নিজেদের ইচ্ছামতো ওষুধের দাম বাড়াতে পারে না। এককভাবে ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতাও তাদের নেই। কিন্তু বাংলাদেশ চলছে উল্টো পথে; এখানে ওষুধ কোম্পানিগুলো কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদির অজুহাত দেখিয়ে দফায় দফায় ওষুধের দাম বাড়াচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত হারে। সরকারের যেন কিছুই করার নেই। এ ব্যাপারে অসহায়ত্ব প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রীকেই। কী যুক্তিতে কোনো ওষুধের দাম ১০০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, এই প্রশ্নও সরকারের পক্ষ থেকে তোলা হয়নি। ওষুধের কাঁচামালের দামসহ উৎপাদন-ব্যয় কি ১০০ শতাংশ বেড়েছে? আর একই ওষুধ দৃষ্টান্তস্বরূপ একটি কোম্পানি সাত টাকায় বিক্রি করে মুনাফা করতে পারলে আরেক কোম্পানি কেন সেটি ১৪ টাকায় বিক্রি করছে? ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ওষুধ কোম্পানিগুলোর সামনে এসব প্রশ্ন কখনো তুলেছে? তুলে থাকলে কি যুক্তিসংগত উত্তর পেয়েছে?
ওষুধ কোম্পানিগুলো তাদের ওষুধের দাম অত্যধিক হারে বাড়িয়েছে অতিরিক্ত মুনাফার লোভে। এর অর্থ জনগণের স্বাস্থ্য ও জীবনকে জিম্মি করে মুনাফা লোটা। ওষুধ প্রস্তুতকারীদের এই গণবিরোধী তৎপরতা রোধ করা জরুরি।
বাংলাদেশ ১৯৮২ সালে যে জাতীয় ওষুধনীতি গ্রহণ করে, তার মূল দর্শন ছিল জনগণের ক্রয়সামর্থ্যের মধ্যে জরুরি ওষুধের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা। একই বছর ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ কার্যকর হলে বিদেশি ওষুধ কোম্পানিগুলোর ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা প্রায় দূর হয়ে যায়; ওষুধপত্রের দাম সহনীয় মাত্রায় নেমে আসে, কারণ, ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা থাকে সরকারের হাতে। কিন্তু ১৯৯৪ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি দাপ্তরিক নির্দেশনায় বলা হয়, অত্যাবশ্যকীয় তালিকাবহির্ভূত সব ওষুধের দাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নিজেই নির্ধারণ করবে। এর ফলে বাজারের সিংহভাগ ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকার হারায়। কারণ, অত্যাবশ্যকীয় তালিকাভুক্ত ওষুধের সংখ্যা মাত্র ১১৭, আর বাজারে ওষুধের সংখ্যা প্রায় ২৩ হাজার।
এখন প্রয়োজন ১৯৯৪ সালের দাপ্তরিক নির্দেশনাটি বাতিল করে সব ধরনের ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের নিজের হাতে ফিরিয়ে নেওয়া। সব ধরনের ওষুধের মূল্য সর্বস্তরের জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রেখে সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। এ দায়িত্ব একান্তই সরকারের।
ওষুধ কোম্পানিগুলো তাদের ওষুধের দাম অত্যধিক হারে বাড়িয়েছে অতিরিক্ত মুনাফার লোভে। এর অর্থ জনগণের স্বাস্থ্য ও জীবনকে জিম্মি করে মুনাফা লোটা। ওষুধ প্রস্তুতকারীদের এই গণবিরোধী তৎপরতা রোধ করা জরুরি।
বাংলাদেশ ১৯৮২ সালে যে জাতীয় ওষুধনীতি গ্রহণ করে, তার মূল দর্শন ছিল জনগণের ক্রয়সামর্থ্যের মধ্যে জরুরি ওষুধের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা। একই বছর ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ কার্যকর হলে বিদেশি ওষুধ কোম্পানিগুলোর ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা প্রায় দূর হয়ে যায়; ওষুধপত্রের দাম সহনীয় মাত্রায় নেমে আসে, কারণ, ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা থাকে সরকারের হাতে। কিন্তু ১৯৯৪ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি দাপ্তরিক নির্দেশনায় বলা হয়, অত্যাবশ্যকীয় তালিকাবহির্ভূত সব ওষুধের দাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নিজেই নির্ধারণ করবে। এর ফলে বাজারের সিংহভাগ ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকার হারায়। কারণ, অত্যাবশ্যকীয় তালিকাভুক্ত ওষুধের সংখ্যা মাত্র ১১৭, আর বাজারে ওষুধের সংখ্যা প্রায় ২৩ হাজার।
এখন প্রয়োজন ১৯৯৪ সালের দাপ্তরিক নির্দেশনাটি বাতিল করে সব ধরনের ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের নিজের হাতে ফিরিয়ে নেওয়া। সব ধরনের ওষুধের মূল্য সর্বস্তরের জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রেখে সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। এ দায়িত্ব একান্তই সরকারের।
No comments