কাবুলে হিলারির ঘোষণা-যুক্তরাষ্ট্রের বড় মিত্র হিসেবে আফগানিস্তানকে স্বীকৃতি

আফগানিস্তানকে ন্যাটো জোটের বাইরে বড় মিত্র বলে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে অনির্ধারিত এক সফরকালে গতকাল শনিবার এ ঘোষণা দেন। আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে হিলারি ক্লিনটন বলেন, এই মৈত্রীর ফলে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত বিষয়ে


যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তান দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নিতে পারবে। এই সম্পর্ক আফগানিস্তানের শক্তিশালী ভবিষ্যতের একটি প্রতীক। যুগসন্ধিক্ষণে এ রকম সম্পর্ক স্থাপনের সুফল উভয় দেশই পাবে। তিনি বলেন, আফগানিস্তানকে পরিত্যাগের কথা যুক্তরাষ্ট্র কল্পনাও করে না। বরং আফগানিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটি টেকসই অংশীদারি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। আফগানিস্তানে নিরাপত্তাব্যবস্থা এখন পর্যন্ত আদর্শ নয়, তবে অবশ্যই আগের চেয়ে স্থিতিশীল। দেশটির নিরাপত্তাবাহিনীর সামর্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে।
জাপানের রাজধানী টোকিওতে একটি সম্মেলনে যাওয়ার পথে কাবুলে সাড়ে তিন ঘণ্টার যাত্রাবিরতি দেন হিলারি। দাতা দেশগুলোর ওই সম্মেলনে আফগানিস্তানের বার্ষিক উন্নয়ন সহায়তার জন্য বড় অঙ্কের বরাদ্দের সিদ্ধান্ত হতে পারে। ৭০টি দেশের অংশগ্রহণে আজ রোববার থেকে শুরু হতে যাওয়া ওই সম্মেলনে আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইও যোগ দেবেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তান নতুন এই স্বীকৃতি অর্জনের ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র আমদানি ও আর্থিক সহযোগিতাসহ বিশেষ কিছু সুবিধা পাবে। যুক্তরাষ্ট্র ২০১৪ সালে আফগানিস্তান থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করলেও দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক সম্পূর্ণ ছিন্ন করবে না। দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়ে ঘোষণাটি হিলারির মাধ্যমে ঘোষিত হলেও সিদ্ধান্তটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাই নিয়েছেন। ওবামা প্রশাসন আফগানিস্তানকে এই প্রথম এ ধরনের স্বীকৃতি দিল। ন্যাটোর বাইরে পাকিস্তান, ইসরায়েল, মিসর, জাপান, জর্ডান, দক্ষিণ কোরিয়া, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একই ধরনের মিত্রতা রয়েছে। পাকিস্তান ২০০৪ সালে ওই স্বীকৃতি অর্জন করেছিল।
আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে ২০১৩ সালের মধ্যভাগে হস্তান্তর করা হবে। এ ব্যাপারে ন্যাটোর নেতারা একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন। তালেবান বিদ্রোহীদের দমনে হামিদ কারজাইয়ের সরকারকে সহায়তার জন্য ন্যাটোর এক লাখ ৩০ হাজার সেনা বর্তমানে আফগানিস্তানে মোতায়েন রয়েছেন। ওই সেনাদের ২০১৪ সালের শেষ নাগাদ পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তানের মধ্যে ১০ বছর মেয়াদি কৌশলগত অংশীদারি চুক্তি ইতিমধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে। গণতান্ত্রিক উন্নয়ন, সুশাসন, বিদেশি অনুদানের সহায়তায় দেশটির নিরাপত্তাব্যবস্থার দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন প্রভৃতি বিষয় ওই চুক্তির অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.