বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ঐতিহাসিক রায়
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা মামলার চূড়ান্ত রায় গত ১৯ নবেম্বর ঘোষিত হয়। এরপর পাঁচ বিচারপতি গত ১৭ ডিসেম্বর সে ঐতিহাসিক রায়ে স্বার করেন। রায়টির পূর্ণ বিবরণ এখানে ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হলোঅতঃপর বজলুল হুদা ফটকের দিকে যায় এবং ফারুক রহমানের জিজ্ঞাসার জবাবে তাকে জানায় যে, "সবাইকে শেষ করে দেয়া হয়েছে।"
তথ্যদাতা তখন বুঝতে পারেন যে পরিবার পরিজন ও বাড়ির অন্যান্য লোকজনসহ রাষ্ট্রপতিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। সে সময় বাসভবনের সামনের রাস্তায় ট্যাঙ্ক চলছিল এবং তাতে কালো পোশাক পড়া সেনাসদস্য ছিল। সকাল ৮টার দিকে কর্নেল জামিলের লাশ সেখানে আনা হয়। তথ্যদাতা আরও দেখতে পান যে খাকি পোশাক পরা মেজর ডালিম বাসায় সেনাবাহিনীর লোকদের সঙ্গে কথা বলছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকালে উক্ত বাসভবনে রাষ্ট্রপতি ও বেগম মুজিব, শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, সুলতানা কামাল, রোজী জামাল, শেখ নাসের ও স্পেশাল ব্রাঞ্চের একজন পুলিশ অফিসারকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। তথ্যদাতা হত্যাকাণ্ডের সময় ও হত্যাকাণ্ডের পরও ফারুক রহমান, মেজর ডালিম, মেজর নূর ও বজলুল হুদাকে রাষ্ট্রপতির বাসভবনে দেখেছিলেন। ঘটনার পরপরই তথ্যদাতা তৎকালীন লালবাগ থানায় এফআইআর দায়ের করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। তারপর থেকে প্রাণের ভয়ে তিনি এর আগ পর্যন্ত কোন এফআইআর দায়ের করেননি। দীর্ঘ সময় পর অবশেষে ১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর তারিখে তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘটনাবলীর ব্যাপারে ধানমণ্ডি থানায় এফআইআর দায়ের করেন। এরপর পুলিশ তদন্তের ভার গ্রহণ করে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে, বর্ণনাক্রমিক তালিকাসহ স্কেচ ম্যাপ তৈরি করে, আলামত সংগ্রহ করে, সাীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ও ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ অনুচ্ছেদের অধীনে তাদের জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করে। অভিযুক্ত কতিপয় ব্যক্তিকে ধরার পর তারা উপযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে তাদের হাজির করতে বললে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তাদের অপরাধ স্বীকারোক্তি রেকর্ড করার জন্য যথাযোগ্য ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হাজির করে এবং পরিশেষে বর্তমান আপীলকারীরাসহ আসামী ২০ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২/১২০খ/৩২৪/ ৩০৭/২০১/৩৮০/ ১৪৯/৩৪/১০৯ ধারায় চার্জশীট দাখিল করে। অভিযুক্ত যে ১৯ ব্যক্তির বিচার করা হয়েছে তাদের মধ্যে ১৪ জন পলাতক রয়েছে। হাইকোর্ট বিভাগের বিজ্ঞ বিচারকরা ল করেছেন যে তাদের গ্রেফতারিপরোয়ানা যথাযথভাবে জারি করা হয়েছিল এবং পুলিশ চেষ্টা চালিয়েও তাদের গ্রেফতার করতে না পারায় দণ্ডবিধির বিধান অনুযায়ী তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছিল। (ক্রমশ)
No comments