জার্মানিতে ইসলাম by জহির উদ্দিন বাবর
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের পর এখন জার্মানি ইসলামের সবচেয়ে উর্বর ভূমি। দেশটিতে ইসলামের দ্রুত প্রসার ঘটছে। মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে। জার্মানির ৮ কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ৪০ লাখ মুসলমান। তাদের বেশিরভাগই তুরস্ক থেকে আগত।
বর্তমানে বিভিন্ন শহরে ২১ লাখ তুর্কি বংশোদ্ভূত মুসলমান বসবাস করেন। জার্মান বংশোদ্ভূত মুসলমানের সংখ্যা প্রায় এক লাখ। বার্লিন, কোলন, ফ্রাঙ্কফুর্ট, মিউনিখ, আচেন এবং মুলহেইমে মুসলমানের অবস্থান ৪ থেকে ৫ শতাংশ। জার্মান টেলিভিশনের হিসাব অনুযায়ী, ২০০৬ সাল থেকে দেশটিতে প্রতি বছর চার হাজার জার্মান নাগরিক ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হচ্ছে।
তুরস্কের ওসমানী খিলাফতের সোনালি যুগে জার্মানিতে ইসলাম আসে। মুবালি্লগ, মুজাহিদ, ব্যবসায়ী ও ধর্মপ্রচারকদের মাধ্যমে জার্মানির বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলাম বিকশিত হতে থাকে। বৈরী পরিবেশে যাত্রা শুরু হলেও ধীরে ধীরে মুসলমানরা নিজেদের অবস্থান গড়ে নিতে সক্ষম হন। খ্রিস্টান অধ্যুষিত জার্মানিতে মসজিদ, পাঠাগার ও ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় মুসলমান ধর্মপ্রচারক ও সমাজহিতৈষীদের রয়েছে অসামান্য অবদান। বহু ধর্মপ্রাণ মুসলমানের প্রাণান্ত প্রয়াসে পুরো জার্মানিতে দুই হাজার মসজিদ গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে ৪০০ হচ্ছে বিভিন্ন বৃহৎ আকারের শপিংমল অথবা বাণিজ্যিক কেন্দ্রে প্রার্থনা কক্ষ।
সংখ্যায় দ্রুতগতিতে বাড়লেও মুসলমানরা এখনও জার্মানিতে অনগ্রসর শ্রেণী হিসেবে রয়ে গেছেন। বেকারের সংখ্যা মুসলমানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকেও তারা বঞ্চিত। সাধারণ জার্মানদের তুলনায় মুসলমানদের মধ্যে বেকারত্বের হার দ্বিগুণ। ৪৭ শতাংশ মুসলিম ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক পর্যায়ের লেখাপড়া শেষ করতে পারে। মাত্র ৫ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ পান। অর্থনৈতিক দৈন্যদশার কারণেই মূলত তারা শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রসর হতে পারছেন না। তবে মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টারে আরবি ভাষা, কোরআন, হাদিস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি শিক্ষাদানের সুব্যবস্থা রয়েছে। জার্মানিতে সাধারণত দুপুরে স্কুল ছুটি হয়ে যায় এবং প্রতিদিন বিকেলে ধর্মীয় বিষয়াদির ক্লাস শুরু হয়।
প্রতিকূল ও বৈরী পরিস্থিতি সত্ত্বেও জার্মানিতে অবস্থানরত মুসলমানরা শরিয়তের বিধি অনুসরণে অত্যন্ত কঠোর। তারা ইসলামী সংস্কৃতি প্রতিপালনে কোনো আপস করতে রাজি নন। কারণ তারা মনে করেন, শরিয়তই একজন মুসলমানের অস্তিত্বের ভিত্তি। শরিয়তের ওপর অটল থেকেই টিকে থাকতে হবে। এ দৃঢ় মনোবৃত্তির কারণে জার্মানির ভূখণ্ডে ক্রমেই ইসলাম বিস্তৃতি লাভ করছে। এমনকি জার্মানির মানহাইম শহরে মুসলমানদের জন্য প্রথম সুদমুক্ত ব্যাংক চালু হয়েছে। মুসলমানরা সাধারণত ওই ব্যাংকে লেনদেনের চেষ্টা করেন। এতেই প্রমাণিত হয়, তারা ধর্ম-কর্ম পালনে কতটুকু আন্তরিক।
পশ্চিমা বিশ্বে ইসলামকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা চলছে নানাভাবে। তা সত্ত্বেও ইসলামের শাশ্বত জ্যোতির বিকিরণ কিন্তু থেমে নেই। ইউরোপসহ পুরো বিশ্বেই ইসলাম গ্রহণের হার বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে অবসাদগ্রস্ত যুবক এবং নারীদের মধ্যে ইসলাম গ্রহণের হার বেশি। ইসলামকেই তারা শেষ আশ্রয় হিসেবে গণ্য করছে। এভাবে শত প্রতিকূলতা সামলে মুসলমানরা নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে পারলে একদিন ইসলাম ও মুসলমান বিশ্বজয় করতে সক্ষম হবে।
zahirbabor@yahoo.com
তুরস্কের ওসমানী খিলাফতের সোনালি যুগে জার্মানিতে ইসলাম আসে। মুবালি্লগ, মুজাহিদ, ব্যবসায়ী ও ধর্মপ্রচারকদের মাধ্যমে জার্মানির বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলাম বিকশিত হতে থাকে। বৈরী পরিবেশে যাত্রা শুরু হলেও ধীরে ধীরে মুসলমানরা নিজেদের অবস্থান গড়ে নিতে সক্ষম হন। খ্রিস্টান অধ্যুষিত জার্মানিতে মসজিদ, পাঠাগার ও ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় মুসলমান ধর্মপ্রচারক ও সমাজহিতৈষীদের রয়েছে অসামান্য অবদান। বহু ধর্মপ্রাণ মুসলমানের প্রাণান্ত প্রয়াসে পুরো জার্মানিতে দুই হাজার মসজিদ গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে ৪০০ হচ্ছে বিভিন্ন বৃহৎ আকারের শপিংমল অথবা বাণিজ্যিক কেন্দ্রে প্রার্থনা কক্ষ।
সংখ্যায় দ্রুতগতিতে বাড়লেও মুসলমানরা এখনও জার্মানিতে অনগ্রসর শ্রেণী হিসেবে রয়ে গেছেন। বেকারের সংখ্যা মুসলমানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকেও তারা বঞ্চিত। সাধারণ জার্মানদের তুলনায় মুসলমানদের মধ্যে বেকারত্বের হার দ্বিগুণ। ৪৭ শতাংশ মুসলিম ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক পর্যায়ের লেখাপড়া শেষ করতে পারে। মাত্র ৫ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ পান। অর্থনৈতিক দৈন্যদশার কারণেই মূলত তারা শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রসর হতে পারছেন না। তবে মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টারে আরবি ভাষা, কোরআন, হাদিস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি শিক্ষাদানের সুব্যবস্থা রয়েছে। জার্মানিতে সাধারণত দুপুরে স্কুল ছুটি হয়ে যায় এবং প্রতিদিন বিকেলে ধর্মীয় বিষয়াদির ক্লাস শুরু হয়।
প্রতিকূল ও বৈরী পরিস্থিতি সত্ত্বেও জার্মানিতে অবস্থানরত মুসলমানরা শরিয়তের বিধি অনুসরণে অত্যন্ত কঠোর। তারা ইসলামী সংস্কৃতি প্রতিপালনে কোনো আপস করতে রাজি নন। কারণ তারা মনে করেন, শরিয়তই একজন মুসলমানের অস্তিত্বের ভিত্তি। শরিয়তের ওপর অটল থেকেই টিকে থাকতে হবে। এ দৃঢ় মনোবৃত্তির কারণে জার্মানির ভূখণ্ডে ক্রমেই ইসলাম বিস্তৃতি লাভ করছে। এমনকি জার্মানির মানহাইম শহরে মুসলমানদের জন্য প্রথম সুদমুক্ত ব্যাংক চালু হয়েছে। মুসলমানরা সাধারণত ওই ব্যাংকে লেনদেনের চেষ্টা করেন। এতেই প্রমাণিত হয়, তারা ধর্ম-কর্ম পালনে কতটুকু আন্তরিক।
পশ্চিমা বিশ্বে ইসলামকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা চলছে নানাভাবে। তা সত্ত্বেও ইসলামের শাশ্বত জ্যোতির বিকিরণ কিন্তু থেমে নেই। ইউরোপসহ পুরো বিশ্বেই ইসলাম গ্রহণের হার বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে অবসাদগ্রস্ত যুবক এবং নারীদের মধ্যে ইসলাম গ্রহণের হার বেশি। ইসলামকেই তারা শেষ আশ্রয় হিসেবে গণ্য করছে। এভাবে শত প্রতিকূলতা সামলে মুসলমানরা নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে পারলে একদিন ইসলাম ও মুসলমান বিশ্বজয় করতে সক্ষম হবে।
zahirbabor@yahoo.com
No comments