ক্যামেরার পেছনের মুখ by তারিক রহমান সৌরভ
প্রয়াত বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার, চিত্রগ্রাহক এম আবদুস সামাদের ৭৫তম জন্মদিন ৮ জুলাই। মায়ের নাম মরহুমা হানুফা খাতুন। রয়েল ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে ১৯৬১ সালে সিনেমাটোগ্রাফিতে কৃতিত্বের সঙ্গে স্বর্ণপদকসহ তিনি স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬২ সালে বিবিসি টেলিভিশনে চিত্রগ্রাহক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু হয়।
ক্যারিয়ারের শুরুতেই তিনি 'রেকুইম' নামে একটি পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ফিল্ম তৈরি করেন। পরবর্তী সময় হলিউডের স্বনামধন্য চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সানি্নধ্যে আসেন আবদুস সামাদ। শিক্ষানবিশ চিত্রগ্রাহক হিসেবে তিনি কাজ করেন হলিউডের 'গানস্ অব নাভারনস্', 'দ্যা ব্রিজ অন দ্যা রিভার কাওয়াই', 'থারটি নাইন স্টেপস'সহ বেশ কিছু স্মরণীয় ছবিতে। ১৯৬৩ সালে আবদুস সামাদ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে আসেন। ১৯৬৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আলোড়ন সৃষ্টিকারী লোকগাথাভিত্তিক ছবি সালাউদ্দিন পরিচালিত 'রূপবান' ছবিতে তার অসাধারণ চিত্রগ্রহণ ব্যাপক সাড়া জাগায়। সেই থেকে প্রায় দুই দশক বাংলা চলচ্চিত্রে মূলত তার ধ্রুপদ ক্যামেরার কাজই তাকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে যায়। প্রায় ৫০টির মতো ছবিতে তিনি চিত্রগ্রহণের কাজ করেছেন। আবদুস সামাদের চলচ্চিত্রায়িত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হচ্ছে_ রূপবান, উলঝান, ভাইয়া, বন্ধন, ঈশা খাঁ, আবির্ভাব, ওরা ১১ জন, সংগ্রাম, দুরন্ত-দুর্বার, খান আতার নবাব সিরাজদ্দৌলা (১৯৬৭) এই ছবিতে চিত্রগ্রহণ ছাড়াও লর্ড ক্লাইভের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন আবদুস সামাদ। ১৯৭৭ ও ১৯৭৯ সালের নিজের কাহিনী ও চিত্রনাট্যে 'সূর্য গ্রহণ' ও 'সূর্য সংগ্রাম' ছবি দুটি পরিচালনা করেন। বক্তব্য উপস্থাপনা ও কাহিনীর অভিনবত্বে ছবি দুটি সে সময়ে ব্যাপক আলোচিত ও প্রশংসিত হয়। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ছাড়াও 'সূর্য সংগ্রাম' ছবিটি মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়। ১৯৮৬ সালে আবদুস সামাদ পরিচালিত পারস্যের অমর প্রেমকাহিনীভিত্তিক ছবি 'শিরি ফরহাদ' মুক্তি পায়। ১৯৮৭ সালে 'ধাক্কা' নামে একটি ছবির কাজ শুরু করলেও তা শেষ করতে পারেননি। এফডিসির ল্যাব থেকে 'ধাক্কা' ছবির নেগেটিভ রহস্যজনকভাবে হারিয়ে যায়। নব্বইর দশকের গোড়ায় চলচ্চিত্র নির্মাণ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন আবদুস সামাদ, প্রতিষ্ঠা করেন ফিল্ম ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ। যার উদ্দেশ্য ছিল চলচ্চিত্রের জটিল কারিগরি ও তাত্তি্বক দিকগুলো সহজভাবে চলতি প্রজন্মকে হাতে-কলমে শিখিয়ে সার্বিক চলচ্চিত্র মনস্কতা তৈরি করা।
চলচ্চিত্রে শিক্ষিত যুগের সর্বশেষ প্রতিনিধি তার সৃজনশীল কর্মের গুণে, তার অসামান্য প্রতিভার কারণে যেন সবসময় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকেন সে লক্ষ্যে বাঙালিসমগ্র জাদুঘর একটি উদ্যোগ নিয়েছে। প্রয়াত আবদুস সামাদের কর্ম ও জীবনভিত্তিক 'প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে' নামে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের কাজ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত যে পরিমাণ লেখা সংগৃহীত হয়েছে তা নিতান্তই অপ্রতুল। তার বিভিন্ন সময়ের সহকর্মী, চলচ্চিত্র শিল্পী, তার শুভানুধ্যায়ী ও তার ইনস্টিটিউটের ছাত্রছাত্রীদের সনির্বন্ধ অনুরোধ করছি, ২৩৫/২ এলিফেন্ট রোডের বাঙালিসমগ্র জাদুঘরে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে লেখা দেওয়ার জন্য। প্রায় চার দশকের বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ এই সৎ চলচ্চিত্র কর্মীর কর্মময় জীবন দুই মলাটে বেঁধে তার কর্ম, অর্জন, সাফল্য ও অভিজ্ঞতাকে যদি বর্তমান প্রজন্মকে সঠিকভাবে অবহিত করা যায়, তবে অনেক ক্ষেত্রে তাদের অনুকরণীয় হতে পারে তাহলেই বাঙালিসমগ্র জাদুঘরের উদ্যোগ সফল হবে। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এটিও যথার্থ উপায়।
চলচ্চিত্রে শিক্ষিত যুগের সর্বশেষ প্রতিনিধি তার সৃজনশীল কর্মের গুণে, তার অসামান্য প্রতিভার কারণে যেন সবসময় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকেন সে লক্ষ্যে বাঙালিসমগ্র জাদুঘর একটি উদ্যোগ নিয়েছে। প্রয়াত আবদুস সামাদের কর্ম ও জীবনভিত্তিক 'প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে' নামে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের কাজ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত যে পরিমাণ লেখা সংগৃহীত হয়েছে তা নিতান্তই অপ্রতুল। তার বিভিন্ন সময়ের সহকর্মী, চলচ্চিত্র শিল্পী, তার শুভানুধ্যায়ী ও তার ইনস্টিটিউটের ছাত্রছাত্রীদের সনির্বন্ধ অনুরোধ করছি, ২৩৫/২ এলিফেন্ট রোডের বাঙালিসমগ্র জাদুঘরে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে লেখা দেওয়ার জন্য। প্রায় চার দশকের বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ এই সৎ চলচ্চিত্র কর্মীর কর্মময় জীবন দুই মলাটে বেঁধে তার কর্ম, অর্জন, সাফল্য ও অভিজ্ঞতাকে যদি বর্তমান প্রজন্মকে সঠিকভাবে অবহিত করা যায়, তবে অনেক ক্ষেত্রে তাদের অনুকরণীয় হতে পারে তাহলেই বাঙালিসমগ্র জাদুঘরের উদ্যোগ সফল হবে। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এটিও যথার্থ উপায়।
No comments