প্রতিপক্ষঃ মার্কিন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ওবামা by এবনে গোলাম সামাদ
মুদ্রা মানুষের পণ্য বিনিময়ের সুবিধা করেছে। কিন্তু আবার সৃষ্টি করেছে অসুবিধাও। মুদ্রা সম্পদ নয়, কিন্তু যেহেতু মুদ্রার মাধ্যমে কেনাবেচা হয় তাই মুদ্রাকে অনেক সময় মনে হয় সম্পদ। আর সেটা সৃষ্টি করে বিশেষ বিভ্রান্তি। অর্থনীতিতে সঙ্কট সৃষ্টির একটা কারণ হলো মুদ্রাকে সম্পদ হিসেবে গণ্য করা।
সম্পদের তুলনায় যদি বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বেড়ে যায় তবে বাড়ে জিনিসের দাম। আর অনেক সময় তা চলে যেতে চায় বহু মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। কারণ মুদ্রা সরবরাহ বাড়লে তা সবার হাতে সমানুপাতে গিয়ে পৌঁছায় না। আর একই সময়ে গিয়েও পৌঁছে না। পৌঁছানোর সময় কমবেশি হয়। ফলে বহু মানুষকে ক্রয়ক্ষমতার অভাবে পেতে হয় কষ্ট। জিনিসের দাম বাড়ে, বহু মানুষ তা কিনতে পারে না। এক সময় যারা ছিল মোটামুটি সচ্ছল, ক্রয়ক্ষমতার অভাবে তারা হয়ে পড়ে গরিব। মুদ্রার সরবরাহ বাড়লে তার মূল্য কমে যায়। ফলে কমে যায় মানুষের সঞ্চয়ের মূল্য। মুদ্রার পরিমাণ বাড়ার জন্য বহু মানুষের সারা জীবনের সঞ্চয় নষ্ট হয়ে যায়। তাই তারা ক্রয়ক্ষমতার অভাবে পায় আরও কষ্ট। মুদ্রা সরবরাহ বাড়াকে সাধারণভাবে আমরা বলি মুদ্রাস্ফীতি (Currency Inflation) । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সৃষ্টি হয়েছিল বাণিজ্য মন্দা। বাণিজ্য মন্দা কেন হয় সে সম্পর্কে এখনও অর্থনীতিবিদরা ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেননি। তবে অনেকেই মনে করেন, অর্থনৈতিক মন্দার একটা কারণ হলো অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অতি উত্পাদন, অর্থাত্—যা উত্পাদন হয় তা বিক্রি হতে পারে না; জমে থাকে বাজারে। ওই জিনিসের উত্পাদন তখন বন্ধ করতে হয়। এক জিনিসের উত্পাদন বন্ধ করলে তার প্রভাব গিয়ে পড়ে অন্য জিনিসেরও কেনাবেচার ওপর। ঘনীভূত হয়ে ওঠে মন্দার সমস্যা। আর এক কথায় উত্পাদিত দ্রব্য বিনিমিয় হতে না পারার জন্য বাজার অচল হয়ে পড়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি তৈরি করে বিক্রি করা হলো একটা লাভজনক ব্যবসা। এই বাড়ি তৈরি করার জন্য নির্মাণ সংস্থাগুলো ব্যাংক থেকে নিয়েছিল প্রচুর ঋণ। বাড়ি নির্মিত হয় এমন সংখ্যায় যে, তা বিক্রি হওয়ার জন্য অভাব ঘটে ক্রেতার। বাড়ি বিক্রি করতে না পারার জন্য শোধ হতে পারে না ব্যাংক ঋণ। ফলে বহু ব্যাংক হতে চায় দেউলিয়া। মার্কিন সরকারকে এগিয়ে আসতে হয় ব্যাংক রক্ষার জন্য। সরকার থেকে তাদের অর্থ প্রদান করা হয় দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে তাদের রক্ষা করার জন্য। সাধারণভাবে এই ঋণকে বলা হয় ঞঅজচ (Troubled Asset Relief Program) । অর্থাত্ মার্কিন সরকার বাধ্য হয় গঠন করতে বিশেষ মুদ্রা ভাণ্ডার, যা থেকে ব্যাংক বাঁচার জন্য প্রদান করা হবে অর্থ। এবারের বাণিজ্য মন্দায় ব্যাংকের পরই সবচেয়ে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় পড়ে মোটর গাড়ি শিল্প। মোটর গাড়ি শিল্পকে বাঁচানোর জন্য মার্কিন সরকারকে ঞঅজচ থেকে দিতে হয়েছে অর্থ। এভাবে অর্থ সরবরাহ করার ফলে সৃষ্টি হতে পারছে মুদ্রাস্ফীতির সমস্যা। যেটাকে রোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে বাজার থেকে মুদ্রা সরবরাহ কমানোর। মার্কিন সরকার ঞঅজচ থেকে এ পর্যন্ত সরবরাহ করেছে ৭০০ বিলিয়ন ডলার (এক বিলিয়ন = একশ’ কোটি)। প্রয়োজন হচ্ছে এই পরিমাণ ডলারকে বাজার থেকে সরিয়ে নেয়ার। ব্যাংকগুলো এরই মধ্যে দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে বেঁচে গেছে। ওবামা সরকার চাচ্ছে ব্যাংকগুলোর ওপর বিশেষ করারোপ করে বাজার থেকে বাড়তি মুদ্রা সরিয়ে নিতে। এই কর আরোপিত হতে যাচ্ছে কেবল বড় বড় ব্যাংকগুলোরই ওপর, যাদের সম্পদের পরিমাণ ৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশী। কিন্তু অনেক অর্থনীতিবিদ বলছেন, এরকম করারোপ আবার সৃষ্টি করতে পারে বাণিজ্য মন্দারই সমস্যা। মার্কিন ব্যাংক ব্যবস্থায় ব্যাংকের নির্বাহীরা পান বিপুল বোনাস। ওবামা চাচ্ছেন এই বোনাস ব্যবস্থা খর্ব করতে। যেটা বদলে দিতে চাচ্ছে সনাতন মার্কিন ব্যাংক ব্যবস্থাকে। ফলে ওবামার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রিপাবলিকান পার্টির পক্ষ থেকে তোলা হচ্ছে সমালোচনা। কিন্তু যেহেতু সিনেটে এখন ডেমোক্র্যাটরা সংখ্যায় যথেষ্ট বেশি, তাই ওবামার করারোপের নীতি হতে পারবে আইনে পরিণত। ওবামা তাই ভাবিত নন। তবে অর্থনীতির সঙ্কট এর ফলে যে কেটে যেতে চলেছে তা মনে করার কারণ নেই। অর্থনৈতিক সঙ্কটের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেকার হয়ে পড়েছে প্রায় ২০ লাখ লোক। এদের দিতে হচ্ছে বেকার ভাতা, যা প্রদান করতে প্রয়োজন হচ্ছে অনেক মুদ্রার। মুদ্রা সরবরাহ কমানো তাই এখনও একটা সমস্যা হয়েই থাকছে। ধনতান্ত্রিক অর্থনীতির একটা সমস্যা হলো অতি উত্পাদন। অতি উত্পাদন জন্ম দিচ্ছে বাণিজ্য মন্দার (Trade cycle) । প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে তাই চাহিদা পরিকল্পনার (Demand Planning) । কিন্তু সেটা মুক্তবাজার অর্থনীতিতে করতে পারা সম্ভব নয়। তাই দেখা দিচ্ছে পরিকল্পনামূলক অর্থনীতি গ্রহণের প্রয়োজন। মার্কিন অর্থনীতিকে নিদেনপক্ষে হতে হবে সরকারি নিয়ন্ত্রণযুক্ত মিশ্র অর্থনীতি (Mixed Economy with control) । কিন্তু ওবামা কি এরকম অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সনাতন অর্থনীতির কাঠামো বজায় রেখে বাণিজ্য মন্দার সমস্যাকে রোধ করা যাবে না। মার্কিন অর্থনীতির থাকবে উত্থান ও পতন। এবারের অর্থনৈতিক মন্দা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হতে পারত ১৯৩০-এর মহামন্দার মতোই ভয়াবহ। কিন্তু সেটা হতে পারেনি যথাসময়ে ঞঅজচ গঠন করতে পারার জন্য। ঞঅজচ গঠন অবশ্য ওবামা করেননি, এটা করে গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ওয়াকার বুশ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির সঙ্গে সারা বিশ্বের অর্থনীতি জড়িত হয়ে পড়েছে। এর বিশেষ কারণ হলো, আন্তর্জাতিক বাজারে কেনাবেচার মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছ মার্কিন ডলার। মার্কিন ডলারের ক্রয়ক্ষমতা কমানোর অর্থ হলো অন্য দেশেরও ক্রয়ক্ষমতা কমা। তারও অর্থনীতিতে সঙ্কট সৃষ্টি হওয়া। আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি প্রধানত তৈরি পোশাক রফতানি করে এবং বিদেশে জনশক্তি পাঠিয়ে। আমরা বিদেশ থেকে যা অর্জন করছি তা সঞ্চিত থাকছে প্রধানত মার্কিন ডলারে। মার্কিন ডলারের ক্রয়ক্ষমতা কমা হচ্ছে আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ। আমাদের চেষ্টা হওয়া উচিত ডলারের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে ইউরোর ওপর নির্ভরতা বাড়ানো। কারণ মুদ্রা হিসেবে ইউরো হয়ে উঠেছে অনেক স্থিতিশীল। অর্থাত্ তার ক্ষমতা কমা-বাড়া থাকছে সীমার মধ্যে। আমরা অর্থনীতিবিদ নই। আমরা যা বলছি তা সাধারণ বিবেচনা থেকে। এ বিষয়ে অবশ্যই ভাবতে হবে আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারকদের। আমাদের দেশে বিশ্ব বাণিজ্য মন্দার প্রভাব এখনও এসে পৌঁছায়নি। কিন্তু পৌঁছতে যে পারে না তা নয়। আমরা তৈরি পোশাক বিক্রি করি প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। ডলারের দাম কমা মানে কার্যত আমাদের তৈরি পোশাকের দাম কমা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেনে মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল। মধ্যপ্রাচ্যের তেলের প্রধান বাজার হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন ডলারের দাম কমার একটা অর্থ হলো সে দেশে তেলের দাম বাড়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তেল বিক্রি কমলে মধ্যপ্রাচ্য পড়বে তেল বিক্রির সঙ্কটে। আর আমাদের দেশ থেকে এর জন্য মধ্যপ্রাচ্যে কমে যেতে পারে শ্রমশক্তি গ্রহণের প্রয়োজন। এর ফলে আমরাও হতে পারি ক্ষতিগ্রস্ত। এসব কথা ভেবেই ঠিক করতে হবে আমাদের অর্থনীতির নীতি কী হওয়া উচিত তার রূপরেখা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সারা বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত হয় মার্কিন ডলারের প্রাধান্য, যেটা এখন নিঃশেষ হওয়ারই পথে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেই বলছে, সে বিশ্ব অর্থনীতির কথা না ভেবে ভাববে নিজের অর্থনীতির কথা। সে চাচ্ছে না সারা বিশ্বে ডলারের আধিপত্য। আমরা কিছুদিন আগে শুনছিলাম বিশ্বজুড়ে এক অর্থনীতি গড়ার কথা। কিন্তু এখন প্রতিটি দেশ আবার জোর দিতে শুরু করেছে নিজের অভ্যন্তরীণ বাজারের ওপর। বৈদেশিক বাণিজ্যের চেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্য। আমাদেরও অভ্যন্তরীণ বাজারের (Domestic Market) ওপর দিতে হবে অধিক গুরুত্ব। আমাদের যেসব জিনিসের প্রয়োজন, তা উত্পাদন করতে হবে আমাদের নিজেদেরই। আমাদের অভাব মোচন হবে আমাদের লক্ষ্য। আর সেটা করতে হবে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দ্রব্য উত্পাদন করে। আন্তর্জাতিক শ্রম বিভাজন থাকছে। বিন্তু সেটা আর থাকছে না আগের মতো হয়ে। আমরা যে জিনিস সস্তায় উত্পাদন করে বিদেশে বেশি দামে বিক্রি করতে পারব, সেটা উত্পাদন করব রফতানি বাণিজ্যের জন্য। আবার যা আমরা সস্তায় বিদেশ থেকে কিনতে পারব সেটা কিনব বিদেশের কাছ থেকে। কিন্তু তাই বলে আমাদের অর্থনীতি হতে পারবে না বিদেশনির্ভর। আমরা দেখছি দরিদ্র দেশে নয়, ধনী দেশেই সৃষ্টি হচ্ছে অর্থনৈতিক সঙ্কট। আমরা তাই ভাবতে পারি না কেবল ধনী দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করে নিজেদের অর্থনীতির নিশ্চয়তা বাড়ানোর কথা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির সঙ্গে সারা বিশ্বের অর্থনীতি জড়িত হয়ে পড়েছে। এর বিশেষ কারণ হলো, আন্তর্জাতিক বাজারে কেনাবেচার মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছ মার্কিন ডলার। মার্কিন ডলারের ক্রয়ক্ষমতা কমানোর অর্থ হলো অন্য দেশেরও ক্রয়ক্ষমতা কমা। তারও অর্থনীতিতে সঙ্কট সৃষ্টি হওয়া। আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি প্রধানত তৈরি পোশাক রফতানি করে এবং বিদেশে জনশক্তি পাঠিয়ে। আমরা বিদেশ থেকে যা অর্জন করছি তা সঞ্চিত থাকছে প্রধানত মার্কিন ডলারে। মার্কিন ডলারের ক্রয়ক্ষমতা কমা হচ্ছে আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ। আমাদের চেষ্টা হওয়া উচিত ডলারের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে ইউরোর ওপর নির্ভরতা বাড়ানো। কারণ মুদ্রা হিসেবে ইউরো হয়ে উঠেছে অনেক স্থিতিশীল। অর্থাত্ তার ক্ষমতা কমা-বাড়া থাকছে সীমার মধ্যে। আমরা অর্থনীতিবিদ নই। আমরা যা বলছি তা সাধারণ বিবেচনা থেকে। এ বিষয়ে অবশ্যই ভাবতে হবে আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারকদের। আমাদের দেশে বিশ্ব বাণিজ্য মন্দার প্রভাব এখনও এসে পৌঁছায়নি। কিন্তু পৌঁছতে যে পারে না তা নয়। আমরা তৈরি পোশাক বিক্রি করি প্রধানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে। ডলারের দাম কমা মানে কার্যত আমাদের তৈরি পোশাকের দাম কমা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেনে মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল। মধ্যপ্রাচ্যের তেলের প্রধান বাজার হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন ডলারের দাম কমার একটা অর্থ হলো সে দেশে তেলের দাম বাড়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তেল বিক্রি কমলে মধ্যপ্রাচ্য পড়বে তেল বিক্রির সঙ্কটে। আর আমাদের দেশ থেকে এর জন্য মধ্যপ্রাচ্যে কমে যেতে পারে শ্রমশক্তি গ্রহণের প্রয়োজন। এর ফলে আমরাও হতে পারি ক্ষতিগ্রস্ত। এসব কথা ভেবেই ঠিক করতে হবে আমাদের অর্থনীতির নীতি কী হওয়া উচিত তার রূপরেখা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সারা বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত হয় মার্কিন ডলারের প্রাধান্য, যেটা এখন নিঃশেষ হওয়ারই পথে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেই বলছে, সে বিশ্ব অর্থনীতির কথা না ভেবে ভাববে নিজের অর্থনীতির কথা। সে চাচ্ছে না সারা বিশ্বে ডলারের আধিপত্য। আমরা কিছুদিন আগে শুনছিলাম বিশ্বজুড়ে এক অর্থনীতি গড়ার কথা। কিন্তু এখন প্রতিটি দেশ আবার জোর দিতে শুরু করেছে নিজের অভ্যন্তরীণ বাজারের ওপর। বৈদেশিক বাণিজ্যের চেয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্য। আমাদেরও অভ্যন্তরীণ বাজারের (Domestic Market) ওপর দিতে হবে অধিক গুরুত্ব। আমাদের যেসব জিনিসের প্রয়োজন, তা উত্পাদন করতে হবে আমাদের নিজেদেরই। আমাদের অভাব মোচন হবে আমাদের লক্ষ্য। আর সেটা করতে হবে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দ্রব্য উত্পাদন করে। আন্তর্জাতিক শ্রম বিভাজন থাকছে। বিন্তু সেটা আর থাকছে না আগের মতো হয়ে। আমরা যে জিনিস সস্তায় উত্পাদন করে বিদেশে বেশি দামে বিক্রি করতে পারব, সেটা উত্পাদন করব রফতানি বাণিজ্যের জন্য। আবার যা আমরা সস্তায় বিদেশ থেকে কিনতে পারব সেটা কিনব বিদেশের কাছ থেকে। কিন্তু তাই বলে আমাদের অর্থনীতি হতে পারবে না বিদেশনির্ভর। আমরা দেখছি দরিদ্র দেশে নয়, ধনী দেশেই সৃষ্টি হচ্ছে অর্থনৈতিক সঙ্কট। আমরা তাই ভাবতে পারি না কেবল ধনী দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য করে নিজেদের অর্থনীতির নিশ্চয়তা বাড়ানোর কথা।
No comments