ডাকাতরা বলে ২৪ লাখ জিএম বলেন ২ লাখ by ভূঁইয়া নজরুল
ইউসুফ আলী মৃধা পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) হিসেবে পদোন্নতি পান গত বছরের জানুয়ারিতে। আর ওই বছরের ১৮ মে চট্টগ্রামে তাঁর বাংলোয় ডাকাতি হয়। জিএমের পক্ষ থেকে থানায় মামলাও করা হয়। সেই এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ডাকাতরা তাঁর বাংলো থেকে অন্য মালামালের সঙ্গে নগদ দুই লাখ টাকা লুট করে নিয়ে
গেছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, কদিন বাদে ডাকাতরা ধরা পড়ার পর স্বীকারোক্তি দেয় যে তারা নগদ ২৪ লাখ টাকা লুট করেছে। এ ঘটনায় কারো আর বুঝতে বাকি থাকে না যে ওগুলো অবৈধ পথে আয় করা টাকা বলেই জিএম টাকার প্রকৃত পরিমাণ গোপন করে গেছেন।
জানা গেছে, এই ইউসুফ আলী মৃধা মাদারীপুরের লোক। এর আগে রেলের প্রধান প্রকৌশলী থাকাকালেই তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। রেলের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের ৬৮ ক্যাটাগরির সাত হাজার ২৭৫ পদে লোক নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্য করার সুবিধার জন্যই সিনিয়রদের ডিঙিয়ে ইউসুফ আলী মৃধাকে জিএম করা হয়। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় তাঁর ঘুষ বাণিজ্য। এর প্রথম নমুনা হিসেবে ধরে পড়ে গত বছর ১৮ মে চট্টগ্রামের লালখান বাজার এলাকায় তাঁর বাংলায় ডাকাতির ঘটনা। পাঁচ সদস্যের ডাকাতদল বাংলো থেকে নগদ ২৪ লাখ টাকা নিয়ে গেলেও পূর্বাঞ্চলীয় রেলের তৎকালীন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম লিয়াকত আলী ইউসুফ আলী মৃধার পক্ষে বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশের কাছে ধরা পড়া দুই ডাকাত ২৪ লাখ টাকা লুটের কথা স্বীকার করলেও এজাহারে দুই লাখ টাকা লেখা থাকায় পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তারা পড়েন বিপাকে। বর্তমানে মামলাটি চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তাধীন রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ওই ডাকাতি মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা মো. নেজাম উদ্দিন গতকাল বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, এজাহার ও ডাকাতদের স্বীকারোক্তির সঙ্গে টাকার অঙ্কের মিল পাওয়া যায়নি। সে কথাও ওই মামলায় নথিভুক্ত করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, 'ওই মামলায় গত জুন মাসে গ্রেপ্তার হয় মোহাম্মদ মানিক (২২) ও আবুল হোসেন (২৭) নামের দুই ডাকাত। স্বীকারোক্তিতে তারা নগদ ২৪ লাখ টাকা লুট করার কথা জানায়। কিন্তু মামলার এজাহারে দুই লাখের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, রেলওয়ের জিএম এসব টাকা প্রদর্শন করতে চাননি বলে তা গোপন করেছেন।'
এ বিষয়ে সিএমপি গোয়েন্দা শাখার সহকারী কমিশনার (উত্তর) এস এম তানভির আরাফাত বলেন, 'ওই মামলায় ইতিমধ্যে আসামিদের তালিকা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। তবে রেলওয়ে কর্মকর্তারা সহযোগিতা না করায় মামলাটি দীর্ঘায়িত হচ্ছে।'
এদিকে অসহযোগিতার কথা অস্বীকার করে মামলার বাদী ও বর্তমানে রেলওয়ের লাকসাম-চিনকি আস্তানা ডাবল লাইন প্রকল্পের পরিচালক এস এম লিয়াকত আলী গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'পুলিশ যখনই সহযোগিতা চেয়েছে, আমরা তা করেছি। আর ডাকাতরা ২৪ লাখ টাকা বললেও তাদের কথা তো বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না। টাকা ছিল দুই লাখ।'
জিএমের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ : পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের জিএম ইউসুফ আলী মৃধার অপসারণ ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে চট্টগ্রামে। পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের সদর দপ্তর সিআরবিতে গতকাল বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এর আগে সকালে পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানা, ডিজেলশপ ও লোকোশেডেও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এ সময় তাঁরা জিএমের অপসারণ ও নিয়োগপ্রক্রিয়া বাতিলের দাবি জানান।
নগদ ৭০ লাখ টাকাসহ রেলমন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক, পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ড্যান্ট এনামুল বিজিবি সদস্যদের হাতে ধরা পড়ায় আজ শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিয়েছে রেলওয়ে সংগ্রাম পরিষদ।
জিএমের অপসারণের দবিতে রেলওয়ে শ্রমিক পরিষদের ব্যানারে রেল শ্রমিকরা গতকাল সকাল ৬টা থেকে ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত পাহাড়তলী রেলওয়ে ওয়ার্কশপে, ৭টা থেকে ৭টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ডিজেলশপে এবং ৮টা থেকে ৮টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত লোকোশেডে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের সদর দপ্তর সিআরবিতে সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সমন্বয়কারী এস কে বারী খোকন বলেন, 'আমরা দুর্নীতিবাজ জিএমের অপসারণ ও সুষ্ঠু বিচার চাই। দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগের এই প্রক্রিয়াকে বাতিল করে নতুন করে নিয়োগের মাধ্যমে রেলওয়ের সুনাম ফিরিয়ে আনতে হবে।'
এই বিক্ষোভের আগে রেলওয়ে শ্রমিক লীগ জিএমের অফিসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সমাবেশে কেন্দ্রীয় রেলওয়ে শ্রমিক লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'আমরা রেলপোষ্যদের নিয়োগের জন্য তদবির করেছি, কিন্তু ঘুষ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত নই। ঘুষ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত সঠিক অপরাধীদের খুঁজে বের করতে হবে এবং তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।'
জানা গেছে, এই ইউসুফ আলী মৃধা মাদারীপুরের লোক। এর আগে রেলের প্রধান প্রকৌশলী থাকাকালেই তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। রেলের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের ৬৮ ক্যাটাগরির সাত হাজার ২৭৫ পদে লোক নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্য করার সুবিধার জন্যই সিনিয়রদের ডিঙিয়ে ইউসুফ আলী মৃধাকে জিএম করা হয়। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় তাঁর ঘুষ বাণিজ্য। এর প্রথম নমুনা হিসেবে ধরে পড়ে গত বছর ১৮ মে চট্টগ্রামের লালখান বাজার এলাকায় তাঁর বাংলায় ডাকাতির ঘটনা। পাঁচ সদস্যের ডাকাতদল বাংলো থেকে নগদ ২৪ লাখ টাকা নিয়ে গেলেও পূর্বাঞ্চলীয় রেলের তৎকালীন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এস এম লিয়াকত আলী ইউসুফ আলী মৃধার পক্ষে বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশের কাছে ধরা পড়া দুই ডাকাত ২৪ লাখ টাকা লুটের কথা স্বীকার করলেও এজাহারে দুই লাখ টাকা লেখা থাকায় পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তারা পড়েন বিপাকে। বর্তমানে মামলাটি চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তাধীন রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ওই ডাকাতি মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা মো. নেজাম উদ্দিন গতকাল বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, এজাহার ও ডাকাতদের স্বীকারোক্তির সঙ্গে টাকার অঙ্কের মিল পাওয়া যায়নি। সে কথাও ওই মামলায় নথিভুক্ত করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, 'ওই মামলায় গত জুন মাসে গ্রেপ্তার হয় মোহাম্মদ মানিক (২২) ও আবুল হোসেন (২৭) নামের দুই ডাকাত। স্বীকারোক্তিতে তারা নগদ ২৪ লাখ টাকা লুট করার কথা জানায়। কিন্তু মামলার এজাহারে দুই লাখের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, রেলওয়ের জিএম এসব টাকা প্রদর্শন করতে চাননি বলে তা গোপন করেছেন।'
এ বিষয়ে সিএমপি গোয়েন্দা শাখার সহকারী কমিশনার (উত্তর) এস এম তানভির আরাফাত বলেন, 'ওই মামলায় ইতিমধ্যে আসামিদের তালিকা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। তবে রেলওয়ে কর্মকর্তারা সহযোগিতা না করায় মামলাটি দীর্ঘায়িত হচ্ছে।'
এদিকে অসহযোগিতার কথা অস্বীকার করে মামলার বাদী ও বর্তমানে রেলওয়ের লাকসাম-চিনকি আস্তানা ডাবল লাইন প্রকল্পের পরিচালক এস এম লিয়াকত আলী গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'পুলিশ যখনই সহযোগিতা চেয়েছে, আমরা তা করেছি। আর ডাকাতরা ২৪ লাখ টাকা বললেও তাদের কথা তো বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না। টাকা ছিল দুই লাখ।'
জিএমের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ : পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের জিএম ইউসুফ আলী মৃধার অপসারণ ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে চট্টগ্রামে। পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের সদর দপ্তর সিআরবিতে গতকাল বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এর আগে সকালে পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানা, ডিজেলশপ ও লোকোশেডেও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। এ সময় তাঁরা জিএমের অপসারণ ও নিয়োগপ্রক্রিয়া বাতিলের দাবি জানান।
নগদ ৭০ লাখ টাকাসহ রেলমন্ত্রীর এপিএস ওমর ফারুক, পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের জিএম ইউসুফ আলী মৃধা, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ড্যান্ট এনামুল বিজিবি সদস্যদের হাতে ধরা পড়ায় আজ শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিয়েছে রেলওয়ে সংগ্রাম পরিষদ।
জিএমের অপসারণের দবিতে রেলওয়ে শ্রমিক পরিষদের ব্যানারে রেল শ্রমিকরা গতকাল সকাল ৬টা থেকে ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত পাহাড়তলী রেলওয়ে ওয়ার্কশপে, ৭টা থেকে ৭টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ডিজেলশপে এবং ৮টা থেকে ৮টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত লোকোশেডে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের সদর দপ্তর সিআরবিতে সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সমন্বয়কারী এস কে বারী খোকন বলেন, 'আমরা দুর্নীতিবাজ জিএমের অপসারণ ও সুষ্ঠু বিচার চাই। দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগের এই প্রক্রিয়াকে বাতিল করে নতুন করে নিয়োগের মাধ্যমে রেলওয়ের সুনাম ফিরিয়ে আনতে হবে।'
এই বিক্ষোভের আগে রেলওয়ে শ্রমিক লীগ জিএমের অফিসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। সমাবেশে কেন্দ্রীয় রেলওয়ে শ্রমিক লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'আমরা রেলপোষ্যদের নিয়োগের জন্য তদবির করেছি, কিন্তু ঘুষ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত নই। ঘুষ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত সঠিক অপরাধীদের খুঁজে বের করতে হবে এবং তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।'
No comments