পবিত্র কোরআনের আলো-মুনাফিকরা যা মনের ভেতর গোপন করে রাখে আল্লাহ তা জানেন
১৬৫. আওয়া লাম্মা আসা-বাতকুম মুসীবাতুন্ ক্বাদ আসাবতুম মিছলাইহা ক্বুলতুম আন্না হা-যা; ক্বুল হুয়া মিন ই'নদি আনফুছিকুম; ইন্নাল্লা-হা আ'লা কুলি্ল শাইয়িন ক্বাদীর। ১৬৬. ওয়ামা আসা-বাকুম ইয়াওমাল তাক্বাল্ জামআ'-নি ফাবিইয্নিল্লাহি ওয়া লিইয়া'লামাল মু'মিনীন।
১৬৭. ওয়া লিইয়া'লামাল্লাযীনা না-ফাক্বূ; ওয়া ক্বীলা লাহুম তাআ'-লাও ক্বা-তিলূ ফী ছাবীলিল্লাহি আউইদ্ফাঊ'-; ক্বা-লূ লাও না'লামু কি্বতা-লাল্ লাত্তাবা'না-কুম; হুম লিলকুফরি ইয়াওমায়িযিন আক্বরাবু মিনহুম লিলঈমা-নি; ইয়াক্বুলূনা বিআফওয়া-হিহিম্ মা-লাইছা ফী ক্বুলূবিহিম; ওয়াল্লাহু আ'লামু বিমা ইয়াকতুমূন।
[সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৬৫-১৬৭]
অনুবাদ
১৬৫. আর যখন তোমাদের ওপর বিপদ বা পরাজয় এল_যদিও এর আগে তোমাদের দ্বিগুণ বিজয় এসেছিল, তখন তোমরা বলতে লাগলে, এটা কিভাবে এল? (হে নবী!) আপনি বলে দিন, এটা তোমাদের কারণেই এসেছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছুই পারেন।
১৬৬. আর যেদিন তোমরা উভয় দল পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিলে, সেদিন তোমরা পরাজয়ের মুখে পড়েছিলে_সেটাও আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ীই হয়েছিল। আল্লাহতায়ালা জেনে নিতে চান, কারা প্রকৃত ইমানদার।
১৬৭. আর তিনি সেসব লোককে জেনে নিতে চান, যারা মুনাফিকি করছে। এদের যখন বলা হলো, এসো, আল্লাহর পথে যুদ্ধ করো; অথবা অন্তত শত্রু প্রতিরোধ করো_তারা বলল, যদি আমরা জানতাম, সত্যিই নিয়মতান্ত্রিক যুদ্ধ হবে, তবে আমরা তোমাদের অনুসরণ করতাম। এরা সেদিন ইমানের চেয়ে বরং কুফরেরই অধিক কাছাকাছি ছিল। এরা মুখে এমন সব কথা বলে, যা তাদের অন্তরে নেই। আল্লাহ জানেন ওরা যা গোপন করছে।
ব্যাখ্যা
এই আয়াতগুলোও ওহুদের যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতেই নাজিল হয়েছে। ১৬৫ নম্বর আয়াতে যে বিপদ বা পরাজয়ের কথা বলা হয়েছে, সেটা ওহুদের যুদ্ধের পরাজয়ের কথাই বলা হয়েছে। ওহুদের যুদ্ধে মুসলমানদের পক্ষে ৭০ জন সাহাবি শহীদ হয়েছিলেন। এর আগে বদরের যুদ্ধে মুশরিকদের পক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছিল এবং ৭০ জন বন্দি হয়েছিল। এই আয়াতগুলোতে বলা হচ্ছে যে তখনকার পরাজয়ের দ্বিগুণ জয় তোমাদের হয়েছিল। কিন্তু তখন যে পরাজয় হয়েছে, এর জন্য দায়ী তোমাদের ক্রিয়াকলাপই। আল্লাহ তায়ালা প্রকৃত মুমিনদের ইমান পরীক্ষা করে দেখে নিতে চান। যাঁদের ইমান মজবুত তাঁরা এই পরাজয়ে হতাশ হননি।
১৬৭ নম্বর আয়াতে মুনাফিকদের প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। মুনাফিকরা সেই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে এবং তাদের আসল চেহারা বেরিয়ে পড়েছে। ওহুদের যুদ্ধে আবদুল্লাহ ইবনে উবাইর নেতৃত্বে ৩০০ মুনাফিক যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। এ আয়াতে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের বলেছিলেন, তোমরা সত্য ও ন্যায়ের পথে যুদ্ধে এসো, অন্তত শত্রু প্রতিরোধে তোমরা এসো। তারা জবাব দিয়েছিল, এই যুদ্ধ যদি নিয়মতান্ত্রিক যুদ্ধ হতো, তবে আমরা তোমাদের সঙ্গেই থাকতাম। তাদের মতে, এটা নিয়মতান্ত্রিক যুদ্ধ ছিল না। কারণ এই যুদ্ধে শত্রুসৈন্য ছিল মুসলমানদের চেয়ে তিন-চারগুণ বেশি। আর তাদের সাজসরঞ্জামও ছিল উন্নতমানের। এমন অবস্থায় যুদ্ধ করার মানে ছিল তাদের মতে ধ্বংসের সম্মুখীন হওয়া। তারা এই যুদ্ধকে নিয়মতান্ত্রিক যুদ্ধ বলতে রাজি হয়নি। এই মুনাফিকরা প্রথম থেকেই মুমিন ছিল না। তারা মুসলমানদের সামনে মুসলমান পরিচয় দিয়ে বুলি আওড়াত মাত্র। তারা আসলে কুফর ও ইমানের মাঝামাঝি থাকতে চাইত। সেই যুদ্ধের সময় কার্যক্ষেত্রে তারা ইমানের কাছ থেকে সরে যায় এবং কুফরের কাছাকাছি হয়ে যায়। তারা যুদ্ধ নিয়ে বিতর্ক করছিল, কিন্তু নিয়মিত যুদ্ধ হলেও তারা সেই যুদ্ধে এগিয়ে আসত না। কারণ তারা ছিল মৃত্যুর ভয়ে ভীত।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
[সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৬৫-১৬৭]
অনুবাদ
১৬৫. আর যখন তোমাদের ওপর বিপদ বা পরাজয় এল_যদিও এর আগে তোমাদের দ্বিগুণ বিজয় এসেছিল, তখন তোমরা বলতে লাগলে, এটা কিভাবে এল? (হে নবী!) আপনি বলে দিন, এটা তোমাদের কারণেই এসেছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছুই পারেন।
১৬৬. আর যেদিন তোমরা উভয় দল পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিলে, সেদিন তোমরা পরাজয়ের মুখে পড়েছিলে_সেটাও আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ীই হয়েছিল। আল্লাহতায়ালা জেনে নিতে চান, কারা প্রকৃত ইমানদার।
১৬৭. আর তিনি সেসব লোককে জেনে নিতে চান, যারা মুনাফিকি করছে। এদের যখন বলা হলো, এসো, আল্লাহর পথে যুদ্ধ করো; অথবা অন্তত শত্রু প্রতিরোধ করো_তারা বলল, যদি আমরা জানতাম, সত্যিই নিয়মতান্ত্রিক যুদ্ধ হবে, তবে আমরা তোমাদের অনুসরণ করতাম। এরা সেদিন ইমানের চেয়ে বরং কুফরেরই অধিক কাছাকাছি ছিল। এরা মুখে এমন সব কথা বলে, যা তাদের অন্তরে নেই। আল্লাহ জানেন ওরা যা গোপন করছে।
ব্যাখ্যা
এই আয়াতগুলোও ওহুদের যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতেই নাজিল হয়েছে। ১৬৫ নম্বর আয়াতে যে বিপদ বা পরাজয়ের কথা বলা হয়েছে, সেটা ওহুদের যুদ্ধের পরাজয়ের কথাই বলা হয়েছে। ওহুদের যুদ্ধে মুসলমানদের পক্ষে ৭০ জন সাহাবি শহীদ হয়েছিলেন। এর আগে বদরের যুদ্ধে মুশরিকদের পক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছিল এবং ৭০ জন বন্দি হয়েছিল। এই আয়াতগুলোতে বলা হচ্ছে যে তখনকার পরাজয়ের দ্বিগুণ জয় তোমাদের হয়েছিল। কিন্তু তখন যে পরাজয় হয়েছে, এর জন্য দায়ী তোমাদের ক্রিয়াকলাপই। আল্লাহ তায়ালা প্রকৃত মুমিনদের ইমান পরীক্ষা করে দেখে নিতে চান। যাঁদের ইমান মজবুত তাঁরা এই পরাজয়ে হতাশ হননি।
১৬৭ নম্বর আয়াতে মুনাফিকদের প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। মুনাফিকরা সেই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে এবং তাদের আসল চেহারা বেরিয়ে পড়েছে। ওহুদের যুদ্ধে আবদুল্লাহ ইবনে উবাইর নেতৃত্বে ৩০০ মুনাফিক যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। এ আয়াতে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের বলেছিলেন, তোমরা সত্য ও ন্যায়ের পথে যুদ্ধে এসো, অন্তত শত্রু প্রতিরোধে তোমরা এসো। তারা জবাব দিয়েছিল, এই যুদ্ধ যদি নিয়মতান্ত্রিক যুদ্ধ হতো, তবে আমরা তোমাদের সঙ্গেই থাকতাম। তাদের মতে, এটা নিয়মতান্ত্রিক যুদ্ধ ছিল না। কারণ এই যুদ্ধে শত্রুসৈন্য ছিল মুসলমানদের চেয়ে তিন-চারগুণ বেশি। আর তাদের সাজসরঞ্জামও ছিল উন্নতমানের। এমন অবস্থায় যুদ্ধ করার মানে ছিল তাদের মতে ধ্বংসের সম্মুখীন হওয়া। তারা এই যুদ্ধকে নিয়মতান্ত্রিক যুদ্ধ বলতে রাজি হয়নি। এই মুনাফিকরা প্রথম থেকেই মুমিন ছিল না। তারা মুসলমানদের সামনে মুসলমান পরিচয় দিয়ে বুলি আওড়াত মাত্র। তারা আসলে কুফর ও ইমানের মাঝামাঝি থাকতে চাইত। সেই যুদ্ধের সময় কার্যক্ষেত্রে তারা ইমানের কাছ থেকে সরে যায় এবং কুফরের কাছাকাছি হয়ে যায়। তারা যুদ্ধ নিয়ে বিতর্ক করছিল, কিন্তু নিয়মিত যুদ্ধ হলেও তারা সেই যুদ্ধে এগিয়ে আসত না। কারণ তারা ছিল মৃত্যুর ভয়ে ভীত।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments