ভূমিকম্পের আশঙ্কা এবং আমাদের প্রস্তুতি by ধরিত্রী সরকার সবুজ

গত ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকা তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল। দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁওসহ উত্তরাঞ্চলে তীব্রতা ছিল বেশি। টাঙ্গাইল, ঝিনাইদহ, যশোরেও ঘরবাড়িতে অবস্থানরত মানুষ হঠাৎ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। ভূমিকম্পের সময় ঢাকার বেশির ভাগ বহুতল ভবন কেঁপে ওঠে।


অনেক এলাকায় পুকুর এবং নদীর পানিতে কম্পনের ফলে ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। রাজধানীর উঁচু ভবনগুলোর মানুষ আতঙ্কে ভবন থেকে খোলা রাস্তায় নেমে আসে। রাজধানীর দশ-বারো তলা ভবনগুলোতে অবস্থানরত মানুষ ভবনগুলোকে রীতিমতো দুলতে দেখেছে এবং মৃত্যু ভয়কেও মিনিট দুয়েকের মতো আঁচ করতে পেরেছে। ভূমিকম্পটি সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয়েছে ভারতের সিকিম রাজ্যের রাজধানী গ্যাংটক ও পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি শহরে।
রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার এই ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল গ্যাংটক থেকে ৬৮ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এবং ঢাকা থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে। যুক্তবাষ্ট্রের ভূতাত্তি্বক জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানায়, ১ মিনিট ২১ সেকেন্ড স্থায়িত্বের এ ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ভূগর্ভের সাড়ে ১৩ কিলোমিটার গভীরে। ইউএসজিএসের মতে, ঢাকায় ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল চার মাত্রার বেশি। আবহাওয়া বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ৬২ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ সংলগ্ন এলাকায় এটিই সবচেয়ে তীব্র মাত্রার ভূমিকম্প।
প্রতিবার ভূমিকম্পের পর ঢাকাবাসী কিছুটা আঁচ করতে পারে যে আমরা বড় একটা ঝুঁকির মধ্যে আছি। নিম্নমাত্রার ভূমিকম্পে আমরা যতটা ভীত হয়েছি, তাতে বড় ধরনের ভূমিকম্প সৃষ্টি হলে ঢাকায় বিপর্যয়ের পরিমাণ কতটা হবে, তা নিয়ে অনেকেই আতঙ্কিত হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুতি নগণ্য, জনসচেতনতাও প্রায় নেই। এ কথা সত্য, বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় রয়েছে এবং যেকোনো সময় বড় ধরনের ভূমিকম্পে বাংলাদেশের কোন অঞ্চল বিধ্বস্ত হতে পারে। আমরা যদি এখন থেকে সতর্কতা অবলম্বন না করি বা সুউচ্চ ভবন সঠিক কারিগরি নিয়ম মেনে নির্মাণ না করি, তাহলে যেকোনো দিন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে সব সময়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, সাধারণত রিখটার স্কেলে ৫ থেকে ৫.৯৯ মাত্রার ভূমিকম্পকে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প বলা হয়। ৬ থেকে ৬.৯৯ মাত্রাকে তীব্র, ৭ থেকে ৭.৯৯ মাত্রাকে ভয়াবহ এবং এর ওপরের মাত্রাকে অতি ভয়াবহ ভূমিকম্প বলা হয়। সে হিসাবে ঢাকা মহানগরীতে একটি বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটানোর জন্য মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পই যথেষ্ট। কারণ রাজধানীতে জলাভূমি ও নিম্নাঞ্চল ভরাট করে যেভাবে সুউচ্চ ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, তাতে ভূমিকম্পের বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রতিদিনই বাড়ছে। ভূমিকম্পের মাত্রা যতই হোক না কেন, উৎপত্তিস্থল থেকে দূরত্ব ও মাটির গঠনের ওপর এর তীব্রতার পার্থক্য হয়। শক্ত মাটির এলাকায় ভূমিকম্পের তীব্রতা কম হয় আর নিচু ও জলাশয় ভরাট করে গড়ে ওঠা এলাকায় তীব্রতা বেশি হয়। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ভূমিকম্পে জলাভূমি ভরাট করে গড়ে তোলা আবাসিক এলাকা মোহাম্মদপুরের নিম্নাঞ্চল, মিরপুরের পল্লবীর কিছু এলাকা, রামপুরা, বাড্ডা ও উত্তরার কিছু এলাকার পঞ্চম তলার চেয়ে বেশি উঁচু ভবনে ভূমিকম্পের তীব্রতা অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বেশি হয়েছে।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয়েছিল ১৮৯৭ সালে। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও আসাম এলাকায় সংঘটিত এ ভূমিকম্পের রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৮.১। সে ভূমিকম্পে ময়মনসিংহ, রংপুর, ঢাকাসহ অনেক এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। ঢাকায় সে সময়কার ইটের তৈরি প্রায় সব ভবনই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেন, এ ধরনের বড় ভূমিকম্প ১০০ থেকে ১৩০ বছরে একই এলাকায় আবার আঘাত হানতে পারে। সে হিসাবে, নিকট ভবিষ্যতে ঢাকায় একটি বিপর্যকর ভূমিকম্পের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
অতীতে সংঘটিত ভূমিকম্পগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায়, ১৮৯৭ সালের ৮.১ মাত্রার ভূমিকম্পটি ঘটেছিল ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুরসহ দেশের অনেক অঞ্চলে, যার উৎপত্তি হয়েছিল সিলেটের ডাউকি ফল্ট থেকে। ১৯১৮ সালে সিলেটের শাহজিবাজার ফল্ট সিস্টেম থেকে ৭.৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়ে আঘাত হেনেছিল শাহজিবাজারসহ সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আরো কিছু ঝুঁকিপ্রবণ ভূমিকম্প উৎপত্তি এলাকা বা ফল্ট সিস্টেম সম্পর্কে আমরা অবগত আছি। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে দেখা গেছে, দেশের ছয়টি এলাকায় মাটির নিচে বড় ধরনের ফাটল বা চ্যুতি রয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকার ডাউকি নদীর পাশে সিলেট ও মেঘালয় এলাকার মাটির নিচের ফাটলটি সবচেয়ে বড়। টাঙ্গাইলের মধুপুর এলাকায় একটি ফাটল বা ফল্ট সিস্টেম রয়েছে, যার কারণে ঢাকা বা তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ফল্ট সিস্টেম, টেকনাফ ফল্ট সিস্টেম, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ফল্ট সিস্টেম এবং রাজশাহীর তানোর ফল্ট সিস্টেম থেকে যেকোনো সময় মাঝারি বা বড় আকারের ভূমিকম্প উৎপত্তি হওয়ার ঝুঁকি থাকেই। উৎপত্তিস্থলের কাছাকাছি ক্ষতির আশঙ্কা সব সময় বেশি হলেও সেটি কত দূর ছড়াবে, তা কম্পনের তীব্রতা এবং মাটির গঠনের ওপর নির্ভর করবে।
বাংলাদেশের অবস্থান একটি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় হওয়ায় আমরা সব সময় সে ঝুঁকির মধ্যেই আছি। তবে গ্রামীণ এলাকায় বহুতল ভবনসহ অন্যান্য অবকাঠামো কম হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কিছুটা কম। কিন্তু ঢাকাসহ বড় বড় শহরগুলোতে ক্ষতির আশঙ্কা খুবই বেশি। ঢাকাতে অসংখ্য বিল্ডিং তৈরি হয়েছে কোনো ধরনের ভূমিকম্প প্রতিরোধক ডিজাইন ছাড়াই। অথচ একটি ভবনকে ভূমিকম্প প্রতিরোধী করে নির্মাণ করতে নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি পায় মাত্র ২-৩ শতাংশ। অধিকসংখ্যক মানুষের বসবাসের জায়গা তৈরি করতে গিয়ে খাল, বিল, নালাসহ নিচু ভূমি ভরাট করা মাটিকে কোনোরকম জমাট বাঁধার সময় না দিয়ে যেসব ইমারত নির্মাণ করা হচ্ছে সেগুলো ভূমিকম্পের আঘাতে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা খুবই বেশি। দুর্বল ভিত্তি ভূমির মধ্য দিয়ে ভূমিকম্পের তীব্রতা পরিবাহিত হয় খুব তাড়াতাড়ি। মাত্রাতিরিক্ত নগরায়ণ প্রবণতার কারণে অনেক নিচু জমিতে বহুতল ভবন নির্মিত হচ্ছে সঠিক পাইলিং ছাড়াই, যা ভূমিকম্পের ঝুঁকির মধ্যে থাকবে সব সময়। ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ সরকারের ইমারত নির্মাণ বিধিমালা বা বিল্ডিং কোড তৈরি হয়েছে, যা অনুসরণ করে ইমারত নির্মাণ হওয়ার কথা। কিন্তু ঢাকা শহরের নির্মাণে অনেক ক্ষেত্রেই যে তা মানা হয়নি, তা অনেক কর্তৃপক্ষেরই জানা। ফলে এসব বিল্ডিং ভূমিকম্পে ধসে অজস্র মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা থাকছেই।
ভূমিকম্প আঘাত হানলে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসের মতো অত্যাবশ্যকীয় সেবাদানের ব্যবস্থা বিধ্বস্ত হয়, গ্যাস ও বিদ্যুতের লাইন থেকে অনেক ক্ষেত্রেই আগুন ধরে, যা অনেক ক্ষতির কারণ হয়। পানি ও পয়োলাইনগুলো বিধ্বস্ত হয়ে অপরিষ্কার পানির আগ্রাসনে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির সৃষ্টি হয়। কিন্তু এ ধরনের হুমকির মুখে আমাদের প্রস্তুতি কী? বলতে গেলে তেমন কিছুই নেই। মনে রাখা দরকার, যেকোনো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেই দুর্যোগ-পরবর্তী ব্যবস্থাপনার চেয়ে দুর্যোগপূর্ব প্রস্তুতি অনেক বেশি কার্যকর। তবে মনে রাখা দরকার, অন্যান্য দুর্যোগের মতো ভূমিকম্পের পূর্বাভাস আগে পাওয়ার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। জানা যেতে পারে, মাত্র কয়েক সেকেন্ড বা মিনিট আগে। সে কারণে ভূমিকম্প ঝুঁকির প্রাক-প্রস্তুতিও নিতে হয় অনেক আগে থেকেই।
আমাদের প্রধান ঝুঁকি হলো ঢাকা নগরী। মানুষ বাড়ছে হু হু করে। ঢাকা শহরে এমন অনেক অঞ্চল রয়েছে যেখানে অনেক বহুতল ভবন রয়েছে। কিন্তু সেখানে একটি অ্যাম্বুলেন্স ঢোকার ব্যবস্থাও নেই। জলাভূমি, খাল, নদীনালা, ডোবা ভরাট করে বাড়িঘর বানানো হয়েছে। হাউজিং কম্পানিগুলো কোনোরকমে নিচু ভূমি ভরাট করে প্লট বিক্রি করছে বা বহুতল ভবন তৈরি করে ফেলছে। মাটিকে ঠিকমতো গাঁথুনি দেওয়া হচ্ছে না, ঠিকমতো পাইলিংও করা হচ্ছে না। নরম মাটির মধ্য দিয়ে ভূকম্পনের অগ্রসর হওয়ার তীব্রতা অনেক বেশি। বিল্ডিং কোড মেনে ভূমিকম্প প্রতিরোধী করে তৈরি করা না হলে ঢাকার ভবনগুলো ভূমিকম্প ঝুঁকির মধ্যে ডুবে থাকবে সব সময়।
ঢাকা ও অন্যান্য শহরে জরাজীর্ণ ও পুরনো বাড়ির সংখ্যা অনেক হওয়ায় এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নীতিমালা মেনে না চলায় বড় ধরনের ভূমিকম্পে ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ সাধিত হতে পারে। উদ্ধার কাজের মেশিন ও যন্ত্রপাতির তেমন মজুদ নেই। অনেক হাসপাতাল এবং ক্লিনিক ভবন ঝুঁকিপূর্ণ। ভূমিকম্প হলে কী করতে হবে, সে বিষয়ে জনসচেতনতাও নেই। কিন্তু ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির মোকাবিলায় সচেতনতা একটি বড় বিষয়। বলা যায়, একটি বড় ধরনের ভূমিকম্প মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিতে গেলে আমাদের প্রায় শুরু থেকে শুরু করতে হবে।
সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির (সিডিএমপি) এক গবেষণা জরিপে বলা হয়েছে, রাজধানী ঢাকায় ভূমিকম্প ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা প্রায় ৭৮ হাজার। এর মধ্যে সরকারি ভবন প্রায় পাঁচ হাজার। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকারি ভবনগুলো রেট্রোফিটিংয়ের মাধ্যমে ভূমিকম্প প্রতিরোধী করে গড়ে তোলা দরকার। কোনো একটি ভবনকে রেট্রোফিটিং করতে গেলে বাড়তি খরচ হবে মূল ভবন নির্মাণ খরচের প্রায় দশ শতাংশ। সরকার এ বিষয়ে একটু ব্যাপক উদ্যোগ নিলে একসময় বেসরকারি উদ্যোক্তারাও সচেতন হবেন বলে আশা করা যায়।
ভূমিকম্প হলে প্রতিবারই দেখা যাচ্ছে আতঙ্কিত মানুষ উঁচু ভবন থেকে হুড়োহুড়ি করে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামার চেষ্টা করছে, এমনকি কেউ কেউ দরজা দিয়ে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করছে, যা করা মোটেই উচিত নয়। ভূমিকম্পের সময় সিঁড়ি, লিফট ব্যবহার না করাই ভালো। অফিস বা ঘরের মধ্যে থাকলে ওপর থেকে খুলে পড়তে পারে এমন সব জিনিস এবং কাঁচের দেয়াল বা জানালা থেকে দূরে অবস্থান নিতে হবে। বাসার মধ্যে মজবুত খাট বা টেবিলের নিচে আশ্রয় নিতে হবে। বাসা বা অফিসের বিদ্যুৎ, গ্যাস ইত্যাদির সংযোগ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বন্ধ করে দিতে হবে। রাস্তায় থাকলে গাছ, বৈদ্যুতিক খুঁটি বা ভেঙে পড়তে পারে এমন স্থাপনা থেকে দূরে যতটা সম্ভব খোলা জায়গায় দাঁড়াতে হবে। গাড়িতে চলন্ত অবস্থায় থাকলে সেতু, আন্ডারপাস বা ওভারব্রিজ এড়িয়ে খোলা জায়গায় নিতে হবে। ভূমিকম্পের সময় কী করতে হবে এবং কী করা যাবে না তা মানুষকে জানাতে হবে। বাংলাদেশে এখন গণমাধ্যমের সংখ্যা বেড়েছে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংখ্যা বেড়েছে। মিডিয়ার মাধ্যমে অন্যান্য সামাজিক কার্যক্রম বা দুর্যোগ পরিস্থিতির মতো দেশের মানুষকে ভূমিকম্প সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। মানুষের মধ্যে এতটুকু চিন্তা ঢুকাতে হবে যে তার সারা জীবনের সঞ্চয়ে গড়ে তোলা বাড়ি এবং জীবন এক মুহূর্তের একটি ভূমিকম্পে নষ্ট হয়ে যেতে পারে সামান্য নিয়ম না জানা, কার্পণ্য এবং অসচেতনতার ফলে।
ভূমিকম্প সহনশীল ভবন নির্মাণ করলে সে ভবনে বসে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু থাকে না। তবে ভূমিকম্প ঝুঁকির কথা চিন্তা না করে দেশে যে শত-সহস্র বিল্ডিং নির্মিত হয়েছে, সেগুলোর ঝুঁকি মারাত্মক। সে কারণে ভূমিকম্পের সময়ে জীবন রক্ষার জন্য অর্থাৎ নিজেকে বাঁচানোর জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে সাধারণ মানুষকে জানানো বা তাদের সচেতন করে তোলা খুবই জরুরি। সরকার এবং গণমাধ্যমগুলো জনগণকে সচেতন করার সে দায়িত্বটুকু কাঁধে নিলে মানুষ অনেক উপকৃত হবে।
লেখক : প্রকৌশলী, বিজ্ঞান ও পরিবেশ বিষয়ের লেখক

No comments

Powered by Blogger.