পবিত্র কোরআনের আলো-অতীতে যারা সুপথে পরিচালিত হয়েছে, তাদের অনুসরণ করার নির্দেশ
৮৭. ওয়া মিন্ আবায়িহিম ওয়া যুর্রিয়্যাতিহিম্ ওয়া ইখওয়ানিহিম; ওয়াজতাবাইনাহুম ওয়া হাদাইনাহুম ইলা- সিরাতি্বম্ মুছতাক্বীম। ৮৮. যালিকা হুদাল্লাহি ইয়াহ্দী বিহী মাঁইয়্যাশাউ মিন্ ই'বাদিহী; ওয়ালাও আশ্রাকূ লাহাবিত্বা আ'নহুম্ মা কানূ ইয়া'লামূন।
৮৯. উলায়িকাল্লাযীনা আতাইনা হুমুল কিতাবা ওয়ালহুকমা ওয়ান্নুবুওয়্যাহ; ফাঁই-ইয়্যাকফুর্ বিহা হা-উলা-য়ি ফাক্বাদ ওয়াক্কালনা বিহা ক্বাওমাল্লাইছূ বিহা বিলকাফিরীন।
৯০. উলা-য়িকাল্লাযীনা হাদাল্লাহু ফাবি হুদা-হুমুক্বতাদিহ্; ক্বুল্ লা- আছআলুকুম্ আ'লাইহি আজরান; ইন হুওয়া ইল্লা যিকরা- লিলআ'লামীন। [সুরা : আল আনয়াম, আয়াত : ৮৭-৯০]
অনুবাদ : ৮৭. এদের পূর্বপুরুষ, এদের বংশধর এবং এদের ভাই-বন্ধুদেরও আমি পুরস্কৃত করেছিলাম। এদের সবাইকে আমি বাছাই করে নিয়েছিলাম এবং এদের সবাইকে সরল পথে পরিচালিত করেছিলাম।
৮৮. এ হচ্ছে আল্লাহতায়ালার হেদায়েত, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে চান তাকেই হেদায়েত দান করেন। তারা যদি শিরক করত, তাহলে তাদের যাবতীয় কর্ম অবশ্যই নিষ্ফল হয়ে যেত।
৮৯. তারা ছিল সেই সব লোক, যাদের আমি কিতাব, প্রজ্ঞা ও নবুয়ত দান করেছি। তারা যদি তাতে অবাধ্য হতো (তাহলে তা পারত)। আমি তো এমন এক জাতির ওপর দায়িত্ব অর্পণ করেছি, যারা কখনো অবাধ্য হয়নি।
৯০. তারা হচ্ছে সেই সব মানুষ, যাদের আল্লাহতায়ালা সুপথে পরিচালিত করেছেন। অতএব, আপনিও তাদের সেই সুপথের অনুসরণ করুন। আপনি বলুন, আমি এর জন্য আপনাদের কাছ থেকে কোনো পারিশ্রমিক চাই না। আর এটা তো বিশ্ববাসীর জন্য একটি উপদেশ মাত্র।
ব্যাখ্যা : আগের সংখ্যায় বর্ণিত আয়াতগুলোতে যেসব সম্মানিত পয়গম্বরের কথা বলা হয়েছে, তাঁদের গুণাবলি ও জীবনধারাসহ তাঁদের পূর্বপুরুষ ও উত্তরপুরুষদের জীবনধারার গৌরবগাথা বর্ণনা করা হয়েছে এই আয়াতগুলোতে। তাঁরা ছিলেন সুপথপ্রাপ্ত মানুষ। আল্লাহর নির্দেশিত সরল পথে তাঁরা জীবন পরিচালনা করেছিলেন। তাঁরা নানা বিপদ-বিপর্যয়ের মধ্যেও আল্লাহর নির্দেশিত পথ থেকে বিচ্যুত হননি। জাগতিক লোভ-লালসা ও প্ররোচনার মধ্যেও তাঁরা শিরক ও বিভ্রান্তির পথে ধাবিত হননি। তাঁরা যদি বিভ্রান্তির পথে পরিচালিত হতেন, তাহলে তাঁরাও অভিশপ্তদের দলে শামিল হয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু তাঁদের অঙ্গীকারের দৃঢ়তা, চরিত্র-মাধুর্য এবং দায়িত্বনিষ্ঠতা এমন ছিল যে নিজেদের গুণেই তাঁরা সত্য ও ন্যায় থেকে বিচ্যুৎ হননি; আল্লাহর অবাধ্য হননি।
৮১ নম্বর আয়াতে অতীতের নবীদের গুণাবলি বর্ণনা করতে ভবিষ্যতের সুদিনের আভাসও দেওয়া হয়েছে। অতীতের পয়গম্বরদের আল্লাহতায়ালা কিতাব, প্রজ্ঞা ও নবুয়ত দান করেছিলেন। বর্তমান নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কেও এগুলো পূর্ণ মাত্রায় দান করা হয়েছে। অতীতের নবীরা এবং তাঁদের অনুসারী সম্প্রদায় কখনো অবাধ্য হননি, বরং অঙ্গীকারে দৃঢ় ছিলেন। অনুরূপভাবে বর্তমান নবীর আমলেও যদি মক্কার কুরাইশরা বা দুনিয়ার অন্যান্য মানুষ আল্লাহর দ্বীনকে অস্বীকার করে, তাঁর প্রতি অবাধ্য হয়, তবু রাসুলের অনুসারী এমন লোক পৃথিবীতে থাকবেন, যাঁরা কখনোই অবাধ্য হবেন না। তাঁরা চিরকাল সত্য ও ন্যায়কে ধরে রাখবেন; সত্য, ন্যায় ও আল্লাহর দ্বীনের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবেন। ৯০ নম্বর আয়াতে অতীতের নবী-রাসুলদের গুণাবলি ও জীবনধারার প্রতি লক্ষ করার জন্য ইঙ্গিত করা হয়েছে। রাসুলকেও এসব গুণাবলির প্রতি লক্ষ রাখার তাগিদ দেওয়া হয়েছে এবং আখেরি নবীর উম্মতকেও তাঁদের চরিত্র ও জীবনধারা থেকে শিক্ষা গ্রহণের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। সেই সব নবীর মধ্যে পৃথকভাবে যে গুণাবলি ও চরিত্র-মাধুর্য ছিল, সেগুলো আখেরি রাসুলের জীবনে একত্র করার এবং উম্মতদের তা অনুশীলনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর রাসুলকে বলা হয়েছে কাফেরদের উদ্দেশে এ কথা বলতে, 'তোমাদের সুপথ দেখানোর বিনিময়ে আমি কোনো পারিশ্রমিক চাই না।' এই কোরআন বিশ্ববাসীর জন্য উপদেশ।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৯০. উলা-য়িকাল্লাযীনা হাদাল্লাহু ফাবি হুদা-হুমুক্বতাদিহ্; ক্বুল্ লা- আছআলুকুম্ আ'লাইহি আজরান; ইন হুওয়া ইল্লা যিকরা- লিলআ'লামীন। [সুরা : আল আনয়াম, আয়াত : ৮৭-৯০]
অনুবাদ : ৮৭. এদের পূর্বপুরুষ, এদের বংশধর এবং এদের ভাই-বন্ধুদেরও আমি পুরস্কৃত করেছিলাম। এদের সবাইকে আমি বাছাই করে নিয়েছিলাম এবং এদের সবাইকে সরল পথে পরিচালিত করেছিলাম।
৮৮. এ হচ্ছে আল্লাহতায়ালার হেদায়েত, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে চান তাকেই হেদায়েত দান করেন। তারা যদি শিরক করত, তাহলে তাদের যাবতীয় কর্ম অবশ্যই নিষ্ফল হয়ে যেত।
৮৯. তারা ছিল সেই সব লোক, যাদের আমি কিতাব, প্রজ্ঞা ও নবুয়ত দান করেছি। তারা যদি তাতে অবাধ্য হতো (তাহলে তা পারত)। আমি তো এমন এক জাতির ওপর দায়িত্ব অর্পণ করেছি, যারা কখনো অবাধ্য হয়নি।
৯০. তারা হচ্ছে সেই সব মানুষ, যাদের আল্লাহতায়ালা সুপথে পরিচালিত করেছেন। অতএব, আপনিও তাদের সেই সুপথের অনুসরণ করুন। আপনি বলুন, আমি এর জন্য আপনাদের কাছ থেকে কোনো পারিশ্রমিক চাই না। আর এটা তো বিশ্ববাসীর জন্য একটি উপদেশ মাত্র।
ব্যাখ্যা : আগের সংখ্যায় বর্ণিত আয়াতগুলোতে যেসব সম্মানিত পয়গম্বরের কথা বলা হয়েছে, তাঁদের গুণাবলি ও জীবনধারাসহ তাঁদের পূর্বপুরুষ ও উত্তরপুরুষদের জীবনধারার গৌরবগাথা বর্ণনা করা হয়েছে এই আয়াতগুলোতে। তাঁরা ছিলেন সুপথপ্রাপ্ত মানুষ। আল্লাহর নির্দেশিত সরল পথে তাঁরা জীবন পরিচালনা করেছিলেন। তাঁরা নানা বিপদ-বিপর্যয়ের মধ্যেও আল্লাহর নির্দেশিত পথ থেকে বিচ্যুত হননি। জাগতিক লোভ-লালসা ও প্ররোচনার মধ্যেও তাঁরা শিরক ও বিভ্রান্তির পথে ধাবিত হননি। তাঁরা যদি বিভ্রান্তির পথে পরিচালিত হতেন, তাহলে তাঁরাও অভিশপ্তদের দলে শামিল হয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু তাঁদের অঙ্গীকারের দৃঢ়তা, চরিত্র-মাধুর্য এবং দায়িত্বনিষ্ঠতা এমন ছিল যে নিজেদের গুণেই তাঁরা সত্য ও ন্যায় থেকে বিচ্যুৎ হননি; আল্লাহর অবাধ্য হননি।
৮১ নম্বর আয়াতে অতীতের নবীদের গুণাবলি বর্ণনা করতে ভবিষ্যতের সুদিনের আভাসও দেওয়া হয়েছে। অতীতের পয়গম্বরদের আল্লাহতায়ালা কিতাব, প্রজ্ঞা ও নবুয়ত দান করেছিলেন। বর্তমান নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কেও এগুলো পূর্ণ মাত্রায় দান করা হয়েছে। অতীতের নবীরা এবং তাঁদের অনুসারী সম্প্রদায় কখনো অবাধ্য হননি, বরং অঙ্গীকারে দৃঢ় ছিলেন। অনুরূপভাবে বর্তমান নবীর আমলেও যদি মক্কার কুরাইশরা বা দুনিয়ার অন্যান্য মানুষ আল্লাহর দ্বীনকে অস্বীকার করে, তাঁর প্রতি অবাধ্য হয়, তবু রাসুলের অনুসারী এমন লোক পৃথিবীতে থাকবেন, যাঁরা কখনোই অবাধ্য হবেন না। তাঁরা চিরকাল সত্য ও ন্যায়কে ধরে রাখবেন; সত্য, ন্যায় ও আল্লাহর দ্বীনের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকবেন। ৯০ নম্বর আয়াতে অতীতের নবী-রাসুলদের গুণাবলি ও জীবনধারার প্রতি লক্ষ করার জন্য ইঙ্গিত করা হয়েছে। রাসুলকেও এসব গুণাবলির প্রতি লক্ষ রাখার তাগিদ দেওয়া হয়েছে এবং আখেরি নবীর উম্মতকেও তাঁদের চরিত্র ও জীবনধারা থেকে শিক্ষা গ্রহণের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। সেই সব নবীর মধ্যে পৃথকভাবে যে গুণাবলি ও চরিত্র-মাধুর্য ছিল, সেগুলো আখেরি রাসুলের জীবনে একত্র করার এবং উম্মতদের তা অনুশীলনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর রাসুলকে বলা হয়েছে কাফেরদের উদ্দেশে এ কথা বলতে, 'তোমাদের সুপথ দেখানোর বিনিময়ে আমি কোনো পারিশ্রমিক চাই না।' এই কোরআন বিশ্ববাসীর জন্য উপদেশ।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments