সাতজন মুসল্লির মৃত্যু-বিশ্ব ইজতেমায় জুমার নামাজে লাখো মুসল্লি by রফিকুল ইসলাম ও মাসুদ রানা
তীব্র শীত উপেক্ষা করে গতকাল শুক্রবার ভোর থেকেই বিশ্ব ইজতেমায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে হাজার হাজার মুসল্লি জড়ো হন। শুকনো খাবার, পানি, বিছানাসহ বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে মুসল্লিরা সারিবদ্ধভাবে ছুটতে থাকেন ময়দানের দিকে। জুমার নামাজের আগেই ময়দান পরিণত হয় জনসমুদ্রে। জুমার নামাজে অংশ নেন লাখো মুসল্লি।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার থেকে গতকাল শুক্রবার ভোর পর্যন্ত হূদেরাগ ও বার্ধক্যজনিত কারণে সাতজন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে দেশ-বিদেশের লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে গতকাল বাদ ফজর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী ইজতেমার প্রথম পর্ব আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। ফজরের নামাজের পর পাকিস্তানের হাজি আবদুল ওয়াহাবের বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ মহাসম্মিলন।
প্রতিটি জেলার জন্য পৃথক এলাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। পানি, বিদ্যুৎ, চিকিৎসাসহ সব ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা।
রোববার দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এবারের ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হবে। প্রথম পর্বে ৩২ জেলার মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন। ২০ জানুয়ারি শুরু হবে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা।
জুমার নামাজ: দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মুসল্লি ইজতেমা মাঠের জুমার জামাতে যোগ দেন। ইজতেমা মাঠের আশপাশের মসজিদগুলোতে জুমার নামাজ পড়ানো হলেও মাঠে সমবেত মুসল্লিদের সঙ্গে নামাজ আদায়ের চেষ্টা ছিল সবারই।
জুমার নামাজের আগে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেকেই নামাজ আদায়ের জন্য মূল মাঠে পৌঁছাতে পারেননি। অনেকেই রাস্তার ওপরে, বাসের ছাদে, নৌকায় এমনকি বাড়ির ছাদেও নামাজ পড়েন। খবরের কাগজ, পলিথিন, চাটাই বিছিয়ে যে যেভাবে পেরেছেন নামাজে বসেছেন।
ভোগান্তি থাকলেও অভিযোগ নেই: জুমার নামাজের আগে অনেক কষ্টে তুরাগতীরে লাকড়ি দিয়ে দুপুরের রান্না করছিলেন যশোর থেকে আসা মো. সাইফুল আলম। রান্নায় অনেক সমস্যা হলেও সে কষ্ট ভুলে গেছেন তিনি। ইজতেমায় আসাটাকেই অনেক সওয়াবের মনে করেন তিনি।
তবে ইজতেমা মাঠ ঘুরে নানা অনিয়মের চিত্র চোখে পড়ে। পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করা হলেও অজুর জন্য অনেকেই পানি সরবরাহের স্থানে যেতে পারেননি। সে কারণে অজুর জন্য জগ, মগ কিংবা বদনায় করে পানি বিক্রি করতে দেখা গেছে।
আল্লাহর সন্তুষ্টি: প্রথমবারের মতো বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিয়ে নোয়াখালীর সেনবাগের মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য আজ শুক্রবার সকালে এখানে এসেছি।’ ১০০ জনের একটি দলের সঙ্গে ১১ বারের মতো ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের আবু হোসেন। তিনি জানালেন, ‘মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য বয়ান শুনে নিজেদের চরিত্র ঠিক করার সুযোগ পাচ্ছি। এ শিক্ষা নিজের জীবনে কাজে লাগালেই সমাজের পরিবর্তন ঘটতে পারে।’
যানজট ও ভাসমান দোকান: অন্যান্য বারের মতো এবারও ইজতেমা মাঠের আশপাশে শুক্রবার থেকেই যানজট শুরু হয়েছে। দুপুর থেকে জুমার নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত টঙ্গী-গাজীপুরের রাস্তায় দুই দিকের সব গাড়িই থেমে থাকতে দেখা যায়।
রাস্তার পাশে বসেছে বহু দোকান। শীতের কাপড়, ইসলামি বইপত্র, টুপি, তসবিহ, খাদ্যসামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা বসে মাঠের আশপাশে।
বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্যসেবা: ইজতেমা মাঠে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে সরকারি-বেসরকারিভাবে প্রায় ৫০টি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। টঙ্গী হাসপাতালে কার্ডিয়াক, বার্ন, অ্যাজমা, ট্রমাসহ বিভিন্ন ইউনিট খোলা হয়েছে। হাসপাতালে রোগী স্থানান্তরে রয়েছে সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স, অগ্নিনির্বাপণে রয়েছে দমকল বাহিনী।
বয়ানের অনুবাদ: বিশ্ব ইজতেমায় বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের তাবলিগ মারকাজের ১৫-২০ জন শুরা সদস্য ও বুজুর্গ বয়ান পেশ করবেন। মূল বয়ান উর্দুতে হলেও বাংলা, ইংরেজি, আরবি, তামিল, মালয়, তুর্কি ও ফার্সি ভাষায় তাৎক্ষণিক অনুবাদ হচ্ছে।
সাতজন মুসল্লির মৃত্যু: ইজতেমায় হূদেরাগে ও বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে সাতজন মুসল্লি মারা গেছেন। তাঁরা হলেন: নরসিংদীর রায়পুরার বালুয়াকান্দি গ্রামের আবদুল জলিল (৫৫), সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার মামুদ গ্রামের হাবিবুর রহমান (৬৫), চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার কাগরিয়া গ্রামের নজীব উল্লাহ (৬০), ফেনীর মো. মোস্তফা (৬২), মাদারীপুরের রতন সরকার (৫৫), হবিগঞ্জের আবদুল গফুর খান (৫৫) ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের বাহমাদ্দি গ্রামের আলিম উদ্দিন সরকার (৬০)।
বিদেশি মুসল্লি: ইজতেমার প্রথম দিনে মিসর, ওমান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনাই, কানাডা, কম্বোডিয়া, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, ইরান, জাপান, মাদাগাস্কার, মালি, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া, পানামা, সেনেগাল, দক্ষিণ আফ্রিকা, তানজানিয়া, ত্রিনিদাদ, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জিম্বাবুয়ে, বেলজিয়াম, ইয়েমেন, পাকিস্তান, বাহরাইন, ইরিত্রিয়া, জর্ডান, মৌরিতানিয়া, ভারত, সুদান, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় ১৬ হাজার মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। তাঁদের জন্য তিনটি তাঁবু খাটানো হয়েছে। সেখানে তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
প্রতিটি জেলার জন্য পৃথক এলাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। পানি, বিদ্যুৎ, চিকিৎসাসহ সব ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা।
রোববার দুপুরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এবারের ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হবে। প্রথম পর্বে ৩২ জেলার মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন। ২০ জানুয়ারি শুরু হবে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। ২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা।
জুমার নামাজ: দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মুসল্লি ইজতেমা মাঠের জুমার জামাতে যোগ দেন। ইজতেমা মাঠের আশপাশের মসজিদগুলোতে জুমার নামাজ পড়ানো হলেও মাঠে সমবেত মুসল্লিদের সঙ্গে নামাজ আদায়ের চেষ্টা ছিল সবারই।
জুমার নামাজের আগে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেকেই নামাজ আদায়ের জন্য মূল মাঠে পৌঁছাতে পারেননি। অনেকেই রাস্তার ওপরে, বাসের ছাদে, নৌকায় এমনকি বাড়ির ছাদেও নামাজ পড়েন। খবরের কাগজ, পলিথিন, চাটাই বিছিয়ে যে যেভাবে পেরেছেন নামাজে বসেছেন।
ভোগান্তি থাকলেও অভিযোগ নেই: জুমার নামাজের আগে অনেক কষ্টে তুরাগতীরে লাকড়ি দিয়ে দুপুরের রান্না করছিলেন যশোর থেকে আসা মো. সাইফুল আলম। রান্নায় অনেক সমস্যা হলেও সে কষ্ট ভুলে গেছেন তিনি। ইজতেমায় আসাটাকেই অনেক সওয়াবের মনে করেন তিনি।
তবে ইজতেমা মাঠ ঘুরে নানা অনিয়মের চিত্র চোখে পড়ে। পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা করা হলেও অজুর জন্য অনেকেই পানি সরবরাহের স্থানে যেতে পারেননি। সে কারণে অজুর জন্য জগ, মগ কিংবা বদনায় করে পানি বিক্রি করতে দেখা গেছে।
আল্লাহর সন্তুষ্টি: প্রথমবারের মতো বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিয়ে নোয়াখালীর সেনবাগের মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য আজ শুক্রবার সকালে এখানে এসেছি।’ ১০০ জনের একটি দলের সঙ্গে ১১ বারের মতো ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের আবু হোসেন। তিনি জানালেন, ‘মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের জন্য বয়ান শুনে নিজেদের চরিত্র ঠিক করার সুযোগ পাচ্ছি। এ শিক্ষা নিজের জীবনে কাজে লাগালেই সমাজের পরিবর্তন ঘটতে পারে।’
যানজট ও ভাসমান দোকান: অন্যান্য বারের মতো এবারও ইজতেমা মাঠের আশপাশে শুক্রবার থেকেই যানজট শুরু হয়েছে। দুপুর থেকে জুমার নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত টঙ্গী-গাজীপুরের রাস্তায় দুই দিকের সব গাড়িই থেমে থাকতে দেখা যায়।
রাস্তার পাশে বসেছে বহু দোকান। শীতের কাপড়, ইসলামি বইপত্র, টুপি, তসবিহ, খাদ্যসামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা বসে মাঠের আশপাশে।
বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্যসেবা: ইজতেমা মাঠে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে সরকারি-বেসরকারিভাবে প্রায় ৫০টি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। টঙ্গী হাসপাতালে কার্ডিয়াক, বার্ন, অ্যাজমা, ট্রমাসহ বিভিন্ন ইউনিট খোলা হয়েছে। হাসপাতালে রোগী স্থানান্তরে রয়েছে সার্বক্ষণিক অ্যাম্বুলেন্স, অগ্নিনির্বাপণে রয়েছে দমকল বাহিনী।
বয়ানের অনুবাদ: বিশ্ব ইজতেমায় বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের তাবলিগ মারকাজের ১৫-২০ জন শুরা সদস্য ও বুজুর্গ বয়ান পেশ করবেন। মূল বয়ান উর্দুতে হলেও বাংলা, ইংরেজি, আরবি, তামিল, মালয়, তুর্কি ও ফার্সি ভাষায় তাৎক্ষণিক অনুবাদ হচ্ছে।
সাতজন মুসল্লির মৃত্যু: ইজতেমায় হূদেরাগে ও বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে সাতজন মুসল্লি মারা গেছেন। তাঁরা হলেন: নরসিংদীর রায়পুরার বালুয়াকান্দি গ্রামের আবদুল জলিল (৫৫), সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার মামুদ গ্রামের হাবিবুর রহমান (৬৫), চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার কাগরিয়া গ্রামের নজীব উল্লাহ (৬০), ফেনীর মো. মোস্তফা (৬২), মাদারীপুরের রতন সরকার (৫৫), হবিগঞ্জের আবদুল গফুর খান (৫৫) ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের বাহমাদ্দি গ্রামের আলিম উদ্দিন সরকার (৬০)।
বিদেশি মুসল্লি: ইজতেমার প্রথম দিনে মিসর, ওমান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনাই, কানাডা, কম্বোডিয়া, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, ইরান, জাপান, মাদাগাস্কার, মালি, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া, পানামা, সেনেগাল, দক্ষিণ আফ্রিকা, তানজানিয়া, ত্রিনিদাদ, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জিম্বাবুয়ে, বেলজিয়াম, ইয়েমেন, পাকিস্তান, বাহরাইন, ইরিত্রিয়া, জর্ডান, মৌরিতানিয়া, ভারত, সুদান, দুবাইসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় ১৬ হাজার মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। তাঁদের জন্য তিনটি তাঁবু খাটানো হয়েছে। সেখানে তাঁদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
No comments