মূল রচনা-‘ছিলেন মাটির কাছের মানুষ’ by মাহবুবুর রহমান
স্যামসন এইচ চৌধুরীর সঙ্গে আমার পরিচয় আশির দশক থেকে। এফবিসিসিআই, ঢাকা চেম্বার ও মেট্রো চেম্বারের মতো বাণিজ্য সংগঠনগুলো ঘিরে কাজের মাধ্যমেই আমরা পরস্পর কাছে আসি, যা পরে তাঁর অপার স্নেহের কারণে পারিবারিক পর্যায়ে বিস্তৃত হয়েছে। স্যামসন ভাইয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক সরাসরি কোনো ব্যবসায়িক তথা স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে জড়িত ছিল না।
তবে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে সরকারের সঙ্গে নীতিনির্ধারণী কর্মকাণ্ডে বিভিন্ন বিষয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। অবশ্য এর আগে ষাটের দশক থেকেই আমি তাঁকে দূর থেকে চিনতাম। ব্যবসা-বাণিজ্যের শুরু থেকেই তিনি সততা, নিষ্ঠা ও স্বচ্ছতা মূলমন্ত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন, যা আজীবন লালন করেছেন।
আমি আর স্যামসন ভাই অনেক দেশ ভ্রমণ করেছি। তেমনি একবার চীনে সম্মেলন শেষে আমরা হংকং গিয়েছিলাম। সেখানে এক বড় শপিং মলে আমরা ঘুরতে যাই। একটি ব্র্যান্ডের জুতা স্যামসন ভাইয়ের খুব পছন্দ হয়। তিনি তা কেনেন এবং আমাকে ও কাসেম ভাইকে জুতা কিনতে বাধ্য করেন! তিনি খুব ভালো ছবি তুলতেন। সংগ্রহ করতেন ভালো ক্যামেরা ও ঘড়ি।
বউদির প্রতি স্যামসন ভাইয়ের অনুরাগ ও ভালোবাসা অতুলনীয়। তাঁদের ৫০তম বিবাহবার্ষিকীতে ঢাকা ক্লাবে তিনি এক চমৎকার আয়োজন করেছিলেন। তাঁর ৭৫তম জন্মদিনে আমরা সবাই স্কয়ার সেন্টারে তাঁর জন্মোৎসব করেছিলাম। ফরিদা পারভীন তাঁর গানে সবাইকে আনন্দ দিয়েছিলেন। স্যামসন চৌধুরী ছিলেন একজন অত্যন্ত দূরদর্শী শিল্পোদ্যোক্তা। তাঁর প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি জিনিস তিনি নিজে দেখতেন এবং ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির উৎকর্ষ চিন্তা করে পরিকল্পনা করতেন। কালিয়াকৈরে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের সুবিশাল কারখানা প্রাঙ্গণ যেন তাঁর সেই দূরদৃষ্টিরই প্রতিফলন ঘটিয়েছে। তিনি বিশ্বাস করতেন বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনায়।
No comments