আমার সমাজ আমার বিবেক by মেহেরুন নেছা রুমা
সাম্প্রতিক সময়ে অপরাধপ্রবণতা যে কোন স্থানে এসে উপনীত হয়েছে তা ভাবতে গেলে কেবল অবাকই হতে হয়। কিন্তু কোনো কূল-কিনারা পাওয়া যায় না। ক্ষমতার কাছে আইন আজ কুক্ষিগত। আকাশ সংস্কৃতি আর প্রযুক্তির কল্যাণে সভ্যতা এগিয়ে যেমন আকাশ ছুঁয়েছে, ঠিক তেমনি আবার ভূমিতে লুটিত হয়েছে। প্রযুক্তি আমাদের দিয়েছে অনেক, আবার অনেক কিছু কেড়েও নিয়েছে। অপরাধের ধরন গেছে পাল্টে। পত্রিকার পাতা খুললেই অপরাধের বিভিন্ন ধরন চোখে পড়ে।
এমন খবর আর পড়তে চাই না। কিন্তু আমি না চাইলেই কী হবে, আমার চাওয়া না চাওয়ায় কি বন্ধ হয়ে যাবে সভ্য সমাজের সব অসভ্য কর্মকাণ্ড? বহুকাল আগেই আমরা সভ্য হয়েছি। কিন্তু আমরা কি আদিম যুগের বর্বরতাকে পিছু ছাড়াতে পেরেছি? পরশ্রীকাতরতা আর আক্রমণাত্মক মনোভাবে সমাজ আজ জর্জরিত। সমাজ অবক্ষয়ের সব দ্বার যেন কোনো এক জাদুকর খুলে দিয়েছে নিঃশব্দে। তাই তো অসামঞ্জস্য আর অসংলগ্ন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে পিতা-মাতা খুন করছে সন্তানকে, সন্তান পিতা-মাতাকে, ভাই ভাইকে, বন্ধু বন্ধুকে। সুখের হাতছানি দিয়ে প্রেমিক ঘর থেকে বের করে নিচ্ছে প্রেমিকাকে।
অতঃপর অপহরণ, লাঞ্ছনা, খুন কিংবা পাচারকারীর হাতে সমর্পণ। খুব বেশি দূর যেতে হবে না। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দেশের কয়েকটি ঘটনা আমাদের মনকে স্তব্ধ করে দেয় কিছুক্ষণের জন্য। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রহস্যজনকভাবে খুন হয়েছিল শিশু রিয়া। প্রাথমিকভাবে এই খুনের উদ্দেশ্য এবং কারণ সম্পর্কে কিছু বোঝা না গেলেও পরে যা উদ্ঘাটন করা হয় তা হলো, মায়ের পরকীয়ার কারণেই নৃশংসতার শিকার হতে হয়েছিল ছোট্ট রিয়াকে। রাজধানীর খিলগাঁওয়ের পূর্ব গোড়ানের একটি চায়ের দোকান থেকে উদ্ধার করা হয় ভাইবোন বিজয় আর সাদিয়াকে। দাম্পত্য কলহের জের ধরে কুঁড়িতেই ঝরে পড়তে হলো দুই শিশুকে। মা বলছে বাবা খুন করেছে, বাবা বলছে মা। আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি! কী দোষ ছিল রিয়ার, কী দোষ করেছিল বিজয়-সাদিয়া? কে দেবে এই জবাব? কোথায় যাচ্ছে আমাদের সমাজ, কোথায় যাচ্ছে সংস্কৃতি? প্রায়ই দেখা যায় পথের ধারে, হাসপাতালের বারান্দায়, ডাস্টবিনে ফেলে রেখে যায় কোনো নবজাতককে। বুঝতে কারও বাকি থাকে না যে, এই শিশুটি দুনিয়াতে যে নিয়ে এসেছিল সে-ই ফেলে দিয়ে গেছে। সন্তানকে যদি আবর্জনার স্তূপেই ফেলে যাওয়া তো তাকে কেন দুনিয়াতে নিয়ে আসা?
আমরা এর উত্তরণ চাই। আর কতকাল শুনব এই খুন-খারাবির গল্প? আর কত অবুঝ শিশুকে সাজা পেতে হবে, যে অপরাধ সে করেইনি? অপরাধ হলো সমাজের ভাইরাস। আমরা প্রযুক্তিকে চাই আশীর্বাদরূপে, অভিশাপরূপে নয়। প্রযুক্তির বদৌলতে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির শোভন সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত, অশোভন সম্পর্ক নয়।
য় যাত্রাবাড়ী, ঢাকা
অতঃপর অপহরণ, লাঞ্ছনা, খুন কিংবা পাচারকারীর হাতে সমর্পণ। খুব বেশি দূর যেতে হবে না। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দেশের কয়েকটি ঘটনা আমাদের মনকে স্তব্ধ করে দেয় কিছুক্ষণের জন্য। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রহস্যজনকভাবে খুন হয়েছিল শিশু রিয়া। প্রাথমিকভাবে এই খুনের উদ্দেশ্য এবং কারণ সম্পর্কে কিছু বোঝা না গেলেও পরে যা উদ্ঘাটন করা হয় তা হলো, মায়ের পরকীয়ার কারণেই নৃশংসতার শিকার হতে হয়েছিল ছোট্ট রিয়াকে। রাজধানীর খিলগাঁওয়ের পূর্ব গোড়ানের একটি চায়ের দোকান থেকে উদ্ধার করা হয় ভাইবোন বিজয় আর সাদিয়াকে। দাম্পত্য কলহের জের ধরে কুঁড়িতেই ঝরে পড়তে হলো দুই শিশুকে। মা বলছে বাবা খুন করেছে, বাবা বলছে মা। আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি! কী দোষ ছিল রিয়ার, কী দোষ করেছিল বিজয়-সাদিয়া? কে দেবে এই জবাব? কোথায় যাচ্ছে আমাদের সমাজ, কোথায় যাচ্ছে সংস্কৃতি? প্রায়ই দেখা যায় পথের ধারে, হাসপাতালের বারান্দায়, ডাস্টবিনে ফেলে রেখে যায় কোনো নবজাতককে। বুঝতে কারও বাকি থাকে না যে, এই শিশুটি দুনিয়াতে যে নিয়ে এসেছিল সে-ই ফেলে দিয়ে গেছে। সন্তানকে যদি আবর্জনার স্তূপেই ফেলে যাওয়া তো তাকে কেন দুনিয়াতে নিয়ে আসা?
আমরা এর উত্তরণ চাই। আর কতকাল শুনব এই খুন-খারাবির গল্প? আর কত অবুঝ শিশুকে সাজা পেতে হবে, যে অপরাধ সে করেইনি? অপরাধ হলো সমাজের ভাইরাস। আমরা প্রযুক্তিকে চাই আশীর্বাদরূপে, অভিশাপরূপে নয়। প্রযুক্তির বদৌলতে ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির শোভন সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত, অশোভন সম্পর্ক নয়।
য় যাত্রাবাড়ী, ঢাকা
No comments