শুরুতেই হোঁচট খেল মেট্রোরেল-বিমানবাহিনী তাদের আপত্তি প্রত্যাহার করুক
কয়েক বছর আগেই বলা হতো রাজধানী ঢাকার জনসংখ্যা সোয়া কোটি। তা ছাড়া নানা কাজে প্রতিদিন আরো বহু লোক ঢাকায় প্রবেশ করে। ফলে প্রতিদিনই ঢাকা কার্যত প্রায় দেড়-দুই কোটি লোকের আবাস ও চলাচলের জনপদে পরিণত হয়। এর অবশ্যম্ভাবী ফল হিসেবে যানজটে নাকাল হতে হচ্ছে ঢাকাবাসীকে। কখনো কখনো ১৫ মিনিটের পথ অতিক্রম করতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়।
এভাবে এক কোটি মানুষের যদি দৈনিক দুই ঘণ্টা করে পথে সময় নষ্ট হয়, তাহলে প্রতিদিন দুই কোটি শ্রমঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। এক বছরে এই ক্ষতির পরিমাণ কত তা নিয়ে অতীতে অনেক হিসাব-নিকাশ করা হয়েছে, সেটি আর নতুন করে নাই-বা বললাম। সবচেয়ে মর্মান্তিক হচ্ছে, প্রতিদিন বহু মুমূূর্ষু রোগী রাস্তায়ই মৃত্যুবরণ করছে। যানজটের কারণে তাকে হাসপাতাল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে ঢাকায় একটি মেট্রোরেল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। অনেক আলাপ-আলোচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পল্লবী-মিরপুর হয়ে বিজয় সরণি ও ফার্মগেটের ওপর দিয়ে রেলপথটি নির্মাণের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছিল। জাপান সেই প্রকল্পে অর্থ জোগাতেও সম্মত হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর আপত্তির মুখে তা আজ ভেস্তে যেতে বসেছে। জাতীয় সংসদের পাশ দিয়ে বিকল্প যে পথের কথা চিন্তা করা হচ্ছে, তা নিয়েও অনেক সংশয় রয়েছে। লুই কানের নকশা অনুযায়ী তৈরি সংসদ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তদুপরি এটা চূড়ান্ত করতে করতে জাইকার আগামী বাজেটও ধরা যাবে কি না, তাতে সন্দেহ আছে। সে ক্ষেত্রে নতুন করে ব্যয় নির্ধারণ করতে হবে এবং ব্যয় বেড়ে গেলে জাইকা তাতে আবার সম্মত হবে কি না_সে ব্যাপারেও সংশয় আছে। যেখানে কোটি কোটি মানুষের প্রতিদিনের জীবন-মরণ সমস্যা বিদ্যমান, সেখানে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এমন অনড় অবস্থান, অনেকের মনেই নানা রকম প্রশ্ন হয়ে দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া মেট্রোরেলের প্রকল্পটি বাতিল বা ব্যর্থ হলে জাতি কিন্তু তার দায়ভার বিমানবাহিনীর ওপরই চাপাবে। সেটি সম্ভবত এই বাহিনীর জন্য খুব একটা সুখকর হবে না।
পৃথিবীর ব্যাপক জনবসতিপূর্ণ শহরগুলোতে মেট্রোরেলই এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় পথ। ক্রমবর্ধমান যানবাহন ও যানজটের পরিপ্রেক্ষিতে এই গণপরিবহনটির কোনো বিকল্পও নেই। বর্তমানে বিশ্বের ১৭২টি শহরে মেট্রোরেল রয়েছে এবং আরো ৩৪টি শহরে শিগগির মেট্রোরেল সংযুক্ত হতে যাচ্ছে। আমাদের ঢাকা মহানগরী বিশ্বে বসবাসযোগ্যতাহীন শহরের তালিকায় দ্বিতীয়। যানজটও তার একটি প্রধান কারণ। কাজেই শহরে একটি নয়, একাধিক মেট্রোরেল পথ থাকা প্রয়োজন। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশেই তা রয়েছে। কিন্তু আমাদের এখানে প্রথম উদ্যোগটি নিয়েই যে শোচনীয় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আমরা চরমভাবে হতাশাগ্রস্ত। বিমানবাহিনী যেসব যুক্তিতে বিজয় সরণি দিয়ে মেট্রোরেল নেওয়ার বিরোধিতা করছে, বহু বিশেষজ্ঞ তার সঙ্গে একমত নন। এমনকি বিমানবাহিনীরও সাবেক অনেক বৈমানিক সদস্য এই আপত্তির কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না। বিমানবাহিনী কৌশলগত যেসব কারণের কথা বলেছে, তার সঙ্গেও দ্বিমত করেছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। ঢাকায় বিমানবাহিনীর দুটি বিমান ঘাঁটি রয়েছে, একটি পুরনো তেজগাঁও বিমানবন্দর, অন্যটি কুর্মিটোলায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসংলগ্ন বাশার ঘাঁটি। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের মতে, ঢাকার মতো একটি জনবহুল শহরে তেজগাঁওয়ের বিমানবন্দরটি বর্তমানে ভূমি ব্যবস্থাপনার সঙ্গেও সংগতিপূর্ণ নয়। তদুপরি যুদ্ধকালে শত্রুপক্ষের প্রধান লক্ষ্য থাকবে আমাদের বিমান ঘাঁটির ওপর। তারা বোমা ফেলে এটিকে ধ্বংস করতে চাইবে। সে ক্ষেত্রে বেসামরিক লোকজন হতাহত হওয়ার সংখ্যাও অনেক বেড়ে যাবে। কাজেই তাঁরা মনে করেন, এখানে বিমান ঘাঁটি থাকাটাই এখন আর যৌক্তিক নয়। যাহোক, সেসব বিতর্কে না গিয়েও আমরা বলতে চাই, ঢাকা এবং ঢাকার মানুষকে বাঁচানোর জন্যই আমাদের একটি মেট্রোরেল চাই। যে পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছিল, তাকেই কাজে লাগিয়ে দ্রুত এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ উপকৃত হবে।
পৃথিবীর ব্যাপক জনবসতিপূর্ণ শহরগুলোতে মেট্রোরেলই এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় পথ। ক্রমবর্ধমান যানবাহন ও যানজটের পরিপ্রেক্ষিতে এই গণপরিবহনটির কোনো বিকল্পও নেই। বর্তমানে বিশ্বের ১৭২টি শহরে মেট্রোরেল রয়েছে এবং আরো ৩৪টি শহরে শিগগির মেট্রোরেল সংযুক্ত হতে যাচ্ছে। আমাদের ঢাকা মহানগরী বিশ্বে বসবাসযোগ্যতাহীন শহরের তালিকায় দ্বিতীয়। যানজটও তার একটি প্রধান কারণ। কাজেই শহরে একটি নয়, একাধিক মেট্রোরেল পথ থাকা প্রয়োজন। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশেই তা রয়েছে। কিন্তু আমাদের এখানে প্রথম উদ্যোগটি নিয়েই যে শোচনীয় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আমরা চরমভাবে হতাশাগ্রস্ত। বিমানবাহিনী যেসব যুক্তিতে বিজয় সরণি দিয়ে মেট্রোরেল নেওয়ার বিরোধিতা করছে, বহু বিশেষজ্ঞ তার সঙ্গে একমত নন। এমনকি বিমানবাহিনীরও সাবেক অনেক বৈমানিক সদস্য এই আপত্তির কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না। বিমানবাহিনী কৌশলগত যেসব কারণের কথা বলেছে, তার সঙ্গেও দ্বিমত করেছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। ঢাকায় বিমানবাহিনীর দুটি বিমান ঘাঁটি রয়েছে, একটি পুরনো তেজগাঁও বিমানবন্দর, অন্যটি কুর্মিটোলায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসংলগ্ন বাশার ঘাঁটি। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের মতে, ঢাকার মতো একটি জনবহুল শহরে তেজগাঁওয়ের বিমানবন্দরটি বর্তমানে ভূমি ব্যবস্থাপনার সঙ্গেও সংগতিপূর্ণ নয়। তদুপরি যুদ্ধকালে শত্রুপক্ষের প্রধান লক্ষ্য থাকবে আমাদের বিমান ঘাঁটির ওপর। তারা বোমা ফেলে এটিকে ধ্বংস করতে চাইবে। সে ক্ষেত্রে বেসামরিক লোকজন হতাহত হওয়ার সংখ্যাও অনেক বেড়ে যাবে। কাজেই তাঁরা মনে করেন, এখানে বিমান ঘাঁটি থাকাটাই এখন আর যৌক্তিক নয়। যাহোক, সেসব বিতর্কে না গিয়েও আমরা বলতে চাই, ঢাকা এবং ঢাকার মানুষকে বাঁচানোর জন্যই আমাদের একটি মেট্রোরেল চাই। যে পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছিল, তাকেই কাজে লাগিয়ে দ্রুত এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হলে প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ উপকৃত হবে।
No comments