পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে যুক্তরাষ্ট্র-মিয়ানমারে সাধারণ ক্ষমা পেলেন ৬৫১ রাজবন্দী
মিয়ানমারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খিন নিউন্তসহ ৬৫১ জন রাজবন্দীকে ক্ষমা করেছে সরকার। এটি বর্তমান সরকারের সংস্কার কর্মসূচির অংশ। গতকাল শুক্রবার তাঁদের কেউ কেউ মুক্তি পেয়েছেন। এ তালিকায় সাংবাদিক, বিরোধী রাজনীতিক, সাবেক ছাত্রনেতা এবং জাতিগত সংখ্যালঘু নেতারাও আছেন। দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) এ ঘটনাকে সরকারের শুভ উদ্যোগ বলে স্বাগত জানিয়েছে।
ক্ষমা পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকায় ’৮৮ জেনারেশন স্টুডেন্টসের সদস্যরাও রয়েছেন। সংগঠনটি ১৯৮৮ সালের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলে। তবে তাদের সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। আন্দোলনে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়।
সরকারের একজন কর্মকর্তা গতকাল জানান, প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন সর্বশেষ সাধারণ ক্ষমার আওতায় ৬৫১ জন বন্দীকে ক্ষমা করেছেন। এর আওতায় গতকাল মুক্তি পেয়েছেন মিয়ানমারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খিন নিউন্ত। তিনি ২০০৪ সালে পদচ্যুত হওয়ার পর থেকে গৃহবন্দী ছিলেন। খিন সাংবাদিকদের বলেন, তিনি সরকার ও বিরোধীদলীয় নেতা সু চির মধ্যে অনুষ্ঠিত সংলাপকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নেতাদের মিয়ানমার সফর করার ইতিবাচক বিষয় এটি।’
‘দ্য ডেমোক্রেটিক ভয়েস অব বার্মা’ নামে মিয়ানমারের নির্বাসিত একটি মিডিয়া গ্রুপ গতকাল জানিয়েছে, সরকারের এই সাধারণ ক্ষমার আওতায় বেশ কয়েকজন সাংবাদিককেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত অক্টোবরে ২০০ জন রাজবন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়। ২০১০ সালের নভেম্বরে বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে বর্তমানের নামমাত্র বেসামরিক সরকার। এর পর থেকে চোখে পড়ার মতো বেশ কিছু সংস্কারও করা হয়।
এদিকে মিয়ানমারের এ পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজবন্দীদের মুক্তির বিষয়টিই মূল দাবি ছিল পশ্চিমা দেশগুলোর। প্রেসিডেন্ট ওবামা এ পদক্ষেপকে ‘তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেন, সেনা-সমর্থিত সরকারের সংস্কার কর্মসূচির পুরস্কারস্বরূপ মিয়ানমারের সঙ্গে তারা পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে। খুব শিগগির দেশটিতে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ-প্রক্রিয়া শুরু করবে যুক্তরাষ্ট্র। এএফপি, রয়টার্স, বিবিসি।
No comments