মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয়ের চেতনায় আলোকপাত by জাফরিন গুলশান
শিল্পকর্মকে কখনোই খুব সরল বস্তু হিসেবে গণ্য করা উচিত নয়। বরং এটি হলো কতগুলো মিথস্ক্রিয়া, যার সুস্পষ্ট সংবৃত্তি ঘটে দর্শক ও শিল্পকর্মের মধ্যে। এই মিথস্ক্রিয়া স্বভাবতই জটিল। কারণ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দর্শক ও শিল্পকর্মের মধ্যে এই প্রক্রিয়ারও পরিবর্তন ঘটে। শিল্প-ঐতিহাসিকেরা শিল্পকর্মকে কালের বা সময়ের দলিল এবং তথ্য-উৎস হিসেবে চিহ্নিত করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের দলিল হিসেবে চিত্রকলা আন্দোলনের গুরুত্ব রাজনৈতিক জীবনে ঘটে যাওয়া হাতে লেখা প্রমাণপত্রের মতোই। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪০ বছর উদ্যাপনে বেঙ্গল গ্যালারি অব ফাইন আর্টস ৪০ জন প্রবীণ ও নবীন চিত্রশিল্পীকে এক কর্মশালায় একত্র করে চিত্রকর্ম করিয়ে ‘সৃজনে ও সংগ্রামে চল্লিশ’ শিরোনামে এক প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
এই প্রদর্শনীর মৌলিক অবস্থান হলো মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনা, চেতনায় বিদ্যমান শক্তি সাহসের অদম্য সংগ্রামী বাঙালির মনস্তত্ত্ব। শিল্পীরা আবেগতাড়িত ও ইতিহাস চেতনায় নিমগ্ন স্বপ্নে বিভোর। ৪০ জন শিল্পীর শিল্পকর্মের বিষয় একই, কিন্তু স্বকীয়তাও বিদ্যমান। ব্যাপারটি যেন অনেকটা একেকজন মানুষের হাতের লেখা একেক রকম তো হবে—এটাই স্বাভাবিক। আবার প্রজন্ম প্রভেদে, প্রবীণ অগ্রজ শিল্পীদের ক্যানভাসে এক ধরনের সাদৃশ্য বিদ্যমান, অনেক বেশি স্বতঃস্ফূর্ত রেখা; বাংলাদেশের লোকজ মোটিফের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ অবয়ব, রং ব্যবহারেও তা-ই। যেমন শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী, শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার প্রমুখ। আবার কিছুটা ব্যতিক্রম শিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর, শিল্পী সৈয়দ আবু তাহের। তাঁরা বিমূর্ত অভিব্যক্তিবাদী। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, বিবিধ টেক্সচার, কোলাজ ব্যবহারে লাল, সবুজ, কালো কিংবা সাদা-ধূসরে শিল্পীরা নিজ মনোজগতের আঙ্গিকগত কাঠামোর বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রজন্মের কাছে গল্প হয়ে ঘুরতে থাকা এক দৃশ্যকল্প ও বাস্তবতা। যে প্রজন্মের শিল্পীরা দেখেছেন কিংবা অনেকে অংশগ্রহণ করেছেন মুক্তিযুদ্ধে, তাঁদের শিল্পকর্মের আখ্যা বেশ জোরালো নবীন শিল্পীদের চেয়ে। মধ্যবর্তী প্রজন্মের শিল্পীদের বক্তব্যে আবার আরও বেশি দেশীয় ও আন্তর্জাতিকতার মিশ্রণ, নিরীক্ষাপ্রবণ। উদাহরণে বলা যায়, রফিকুন্নবী, কালিদাস কর্মকার, আবুল বারাক আলভী ও মাহমুদুল হক, হামিদুজ্জামান খান, শাহাবুদ্দীন প্রমুখের নাম। শিল্পীদের নারী-পুরুষে বিভক্তি বেশ তর্কপ্রধান বিষয় হলেও একটি প্রদর্শনীতে নারী শিল্পীদের অংশগ্রহণ পুরুষতান্ত্রিক সামাজিক কাঠামোতে নারীর অবস্থান সহজেই নির্ণেয়। চল্লিশের দশকের কোনো নারী চিত্রশিল্পীকে পাই না আমরা। অনেক পরের সময়ের সংগ্রামী নারী শিল্পীদের মধ্যে ফরিদা জামান, নাজলী লায়লা মনসুর, নাসরিন বেগম, কনকচাঁপা প্রমুখ। নারী শিল্পীদের শিল্পকর্মে দেশ ও নারীর সামাজিক বাস্তবতার অগ্রগণ্য ভূমিকা উঠে এসেছে প্রতীকী উপস্থাপনে। পুরো প্রদর্শনী যেন মধ্যবিত্ত রোমান্টিকসিজমে আক্রান্ত এক বাংলাদেশের চিত্র।
প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী অন্য শিল্পীরা হলেন সমরজিৎ রায় চৌধুরী, হাশেম খান, মনিরুল ইসলাম, আবদুস শাকুর শাহ, বীরেন সোম, শহীদ কবির, গিয়াসউদ্দিন, মনসুর উল করিম, অলোকেশ ঘোষ, চন্দ্র শেখর দে, কে এম এ কাইয়ুম, নাসিম আহমেদ নাদভী, মোহাম্মদ ইউনুস, রণজিৎ দাস, ঢালী আল মামুন, শেখ আফজাল, দিলারা বেগম জলি, ওয়াকিলুর রহমান, আহমেদ নাজির, রাফি হক, মোহাম্মদ ইকবাল, মাহবুবুর রহমান, তৈয়বা বেগম, শাহজাহান আহমেদ, আনিসুজ্জামান, আশরাফুল হাসান ও বিশ্বজিৎ গোস্বামী। প্রদর্শনীটি ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত চলেছে।
এই প্রদর্শনীর মৌলিক অবস্থান হলো মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনা, চেতনায় বিদ্যমান শক্তি সাহসের অদম্য সংগ্রামী বাঙালির মনস্তত্ত্ব। শিল্পীরা আবেগতাড়িত ও ইতিহাস চেতনায় নিমগ্ন স্বপ্নে বিভোর। ৪০ জন শিল্পীর শিল্পকর্মের বিষয় একই, কিন্তু স্বকীয়তাও বিদ্যমান। ব্যাপারটি যেন অনেকটা একেকজন মানুষের হাতের লেখা একেক রকম তো হবে—এটাই স্বাভাবিক। আবার প্রজন্ম প্রভেদে, প্রবীণ অগ্রজ শিল্পীদের ক্যানভাসে এক ধরনের সাদৃশ্য বিদ্যমান, অনেক বেশি স্বতঃস্ফূর্ত রেখা; বাংলাদেশের লোকজ মোটিফের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ অবয়ব, রং ব্যবহারেও তা-ই। যেমন শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী, শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার প্রমুখ। আবার কিছুটা ব্যতিক্রম শিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর, শিল্পী সৈয়দ আবু তাহের। তাঁরা বিমূর্ত অভিব্যক্তিবাদী। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, বিবিধ টেক্সচার, কোলাজ ব্যবহারে লাল, সবুজ, কালো কিংবা সাদা-ধূসরে শিল্পীরা নিজ মনোজগতের আঙ্গিকগত কাঠামোর বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রজন্মের কাছে গল্প হয়ে ঘুরতে থাকা এক দৃশ্যকল্প ও বাস্তবতা। যে প্রজন্মের শিল্পীরা দেখেছেন কিংবা অনেকে অংশগ্রহণ করেছেন মুক্তিযুদ্ধে, তাঁদের শিল্পকর্মের আখ্যা বেশ জোরালো নবীন শিল্পীদের চেয়ে। মধ্যবর্তী প্রজন্মের শিল্পীদের বক্তব্যে আবার আরও বেশি দেশীয় ও আন্তর্জাতিকতার মিশ্রণ, নিরীক্ষাপ্রবণ। উদাহরণে বলা যায়, রফিকুন্নবী, কালিদাস কর্মকার, আবুল বারাক আলভী ও মাহমুদুল হক, হামিদুজ্জামান খান, শাহাবুদ্দীন প্রমুখের নাম। শিল্পীদের নারী-পুরুষে বিভক্তি বেশ তর্কপ্রধান বিষয় হলেও একটি প্রদর্শনীতে নারী শিল্পীদের অংশগ্রহণ পুরুষতান্ত্রিক সামাজিক কাঠামোতে নারীর অবস্থান সহজেই নির্ণেয়। চল্লিশের দশকের কোনো নারী চিত্রশিল্পীকে পাই না আমরা। অনেক পরের সময়ের সংগ্রামী নারী শিল্পীদের মধ্যে ফরিদা জামান, নাজলী লায়লা মনসুর, নাসরিন বেগম, কনকচাঁপা প্রমুখ। নারী শিল্পীদের শিল্পকর্মে দেশ ও নারীর সামাজিক বাস্তবতার অগ্রগণ্য ভূমিকা উঠে এসেছে প্রতীকী উপস্থাপনে। পুরো প্রদর্শনী যেন মধ্যবিত্ত রোমান্টিকসিজমে আক্রান্ত এক বাংলাদেশের চিত্র।
প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী অন্য শিল্পীরা হলেন সমরজিৎ রায় চৌধুরী, হাশেম খান, মনিরুল ইসলাম, আবদুস শাকুর শাহ, বীরেন সোম, শহীদ কবির, গিয়াসউদ্দিন, মনসুর উল করিম, অলোকেশ ঘোষ, চন্দ্র শেখর দে, কে এম এ কাইয়ুম, নাসিম আহমেদ নাদভী, মোহাম্মদ ইউনুস, রণজিৎ দাস, ঢালী আল মামুন, শেখ আফজাল, দিলারা বেগম জলি, ওয়াকিলুর রহমান, আহমেদ নাজির, রাফি হক, মোহাম্মদ ইকবাল, মাহবুবুর রহমান, তৈয়বা বেগম, শাহজাহান আহমেদ, আনিসুজ্জামান, আশরাফুল হাসান ও বিশ্বজিৎ গোস্বামী। প্রদর্শনীটি ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত চলেছে।
No comments