চিকিৎসাসেবার বেহাল দশাঃ পরিবর্তনের কি আশা নেই?
শিশুরা অসহায় হলেও অবহেলিত থাকার কথা নয়; কিন্তু এদেশের বেশিরভাগ শিশু অবহেলিতই শুধু নয়, উপেক্ষিতও বটে। সম্প্রতি বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) চট্টগ্রাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তাদের মুখে জানা গেল, দেশে প্রতি ২ লাখ ১০ হাজার শিশুর জন্য একজন চিকিত্সক রয়েছেন।
শিশুদের উপেক্ষা করার এর চেয়ে বড় উদাহরণ আর কী হতে পারে! সেই চিকিত্সকদের অবস্থানও নগরকেন্দ্রিক হওয়ায় বিশাল গ্রামাঞ্চলের চিকিত্সাসেবা কেমন, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ অবস্থার প্রধান শিকার স্বভাবতই শিশুরা। ফলে এখন শিশুমৃত্যুর হার দাঁড়িয়েছে প্রতি হাজারে ৫০-এরও বেশি। প্রতিবছর শিশুদের রুবেলা ভাইরাসজনিত রোগের চিকিত্সায় ব্যয় হয় ৫ হাজার কোটি টাকা। অথচ মাত্র ৩৫ কোটি টাকা খরচ করে সারাদেশে শিশুদের রুবেলা ভ্যাকসিন দেয়া হলে পরিস্থিতি পাল্টে যেত। স্বাস্থ্যখাতে বছরে ৪ হাজার কোটি টাকাও বেঁচে যেত। এই উদাহরণ থেকে দেশের স্বাস্থ্যসেবার বেহাল দশাই পরিষ্কার হয়ে ওঠে।
এ নিয়ে হরহামেশাই পত্র-পত্রিকায় খবর দেখা যায়। শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত ঢাকা শিশু হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার রোগী আসে চিকিত্সার জন্য। জরুরি বিভাগে দুই চিকিত্সকের সার্বক্ষণিক উপস্থিতির কথা থাকলেও বাস্তবে একজনের বেশি কখনই দেখা যায় না। রাজধানীতে অবস্থিত এই সরকারি হাসপাতালেই শুধু এমন অবস্থা, তা নয়। এই নগরীতে বেসরকারি পর্যায়ে ছোট-বড় মিলিয়ে চার শতাধিক আধুনিক হাসপাতাল ও ক্লিনিক গড়ে উঠলেও অধিকাংশেরই জরুরি বিভাগ (ইমার্জেন্সি) নেই। ফলে জরুরি প্রয়োজনে সবার একমাত্র ভরসা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগ। সেখানকার অব্যবস্থার কথা কারও কাছেই গোপন কিছু নয়। এ অবস্থাতেই গত সেপ্টেম্বর মাসে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারি হাসপাতালে ইউজার ফি চালু করা হয়েছে। ফলে সরকারি হাসপাতালে আসা সাধারণ রোগীদের চিকিত্সা খরচ এক লাফে প্রায় চারগুণ বেড়ে গেছে। অথচ প্রথম শ্রেণীর কেবিন ভাড়া বাড়েনি। সরকারি হাসপাতালে রোগীদের খরচ বাড়লেও চিকিত্সাসেবার মান বৃদ্ধির কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলা যাবে না। প্রয়োজনের তুলনায় চিকিত্সক, সহকারীসহ সবকিছুতেই বিশাল ঘাটতি পূরণের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। প্রাপ্ত তথ্যমতে, সারাদেশে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রগুলোতে জনবল সঙ্কটই এখনও প্রধান সমস্যা। পাঁচ হাজার ২২৫টি চিকিত্সকের পদ শূন্য। আর স্বাস্থ্যকর্মীর শূন্য পদের সংখ্যা ১৭ হাজার ৮৩২। মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীর এই ঘাটতি কী ভয়াবহ দুর্ভোগের জন্ম দিয়েছে, সেটা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। ৬ হাজার মানুষের জন্য একজন স্বাস্থ্য সহকারী থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে ক্ষেত্রবিশেষে একজন স্বাস্থ্য সহকারীর অধীনে রয়েছে ৩০ হাজার থেকে দেড়-দু’লাখেরও বেশি মানুষ। নেই প্রয়োজনমত প্রাথমিক চিকিত্সার যন্ত্রপাতি, ওষুধপত্র। ন্যূনতম অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায় না। দেশব্যাপী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর অবস্থাও তথৈবচ।
দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এমন দশা মানুষকে বিদেশমুখী করেছে। অর্থবিত্তের মালিকরা সামান্য প্রয়োজনেই ছুটে যান বিদেশের হাসপাতালগুলোতে। এভাবে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার, বছরে ১০ লাখেরও বেশি রোগী চিকিত্সার জন্য বিদেশ যাচ্ছেন বলে এক হিসাবে জানা গেছে। তবে সামর্থ্য নেই এমন মানুষ যাদের মুখে অহরহ দিন বদলের ঘোষণা শোনেন, সেই ক্ষমতাসীনরাও দেশের চিকিত্সা ব্যবস্থায় আস্থা না রেখে বিদেশেই ছুটে যান। কিছু দিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাথরুমে পড়ে গিয়ে কোমরে ব্যথা পেলে ভর্তি হন হাড়ভাঙার আধুনিক চিকিত্সা কেন্দ্র ট্রমা সেন্টারে। কিন্তু পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিত্সার জন্য তাকে চলে যেতে হয় সিঙ্গাপুরে। এ থেকেও বোঝা যায়, দেশের সার্বিক চিকিত্সা ব্যবস্থা কীরকম! তাহলে বাস্তবে দিন বদলের কী হবে, সেটা অনুমান করা কঠিন নয়।
এ নিয়ে হরহামেশাই পত্র-পত্রিকায় খবর দেখা যায়। শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত ঢাকা শিশু হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার রোগী আসে চিকিত্সার জন্য। জরুরি বিভাগে দুই চিকিত্সকের সার্বক্ষণিক উপস্থিতির কথা থাকলেও বাস্তবে একজনের বেশি কখনই দেখা যায় না। রাজধানীতে অবস্থিত এই সরকারি হাসপাতালেই শুধু এমন অবস্থা, তা নয়। এই নগরীতে বেসরকারি পর্যায়ে ছোট-বড় মিলিয়ে চার শতাধিক আধুনিক হাসপাতাল ও ক্লিনিক গড়ে উঠলেও অধিকাংশেরই জরুরি বিভাগ (ইমার্জেন্সি) নেই। ফলে জরুরি প্রয়োজনে সবার একমাত্র ভরসা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগ। সেখানকার অব্যবস্থার কথা কারও কাছেই গোপন কিছু নয়। এ অবস্থাতেই গত সেপ্টেম্বর মাসে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারি হাসপাতালে ইউজার ফি চালু করা হয়েছে। ফলে সরকারি হাসপাতালে আসা সাধারণ রোগীদের চিকিত্সা খরচ এক লাফে প্রায় চারগুণ বেড়ে গেছে। অথচ প্রথম শ্রেণীর কেবিন ভাড়া বাড়েনি। সরকারি হাসপাতালে রোগীদের খরচ বাড়লেও চিকিত্সাসেবার মান বৃদ্ধির কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলা যাবে না। প্রয়োজনের তুলনায় চিকিত্সক, সহকারীসহ সবকিছুতেই বিশাল ঘাটতি পূরণের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। প্রাপ্ত তথ্যমতে, সারাদেশে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রগুলোতে জনবল সঙ্কটই এখনও প্রধান সমস্যা। পাঁচ হাজার ২২৫টি চিকিত্সকের পদ শূন্য। আর স্বাস্থ্যকর্মীর শূন্য পদের সংখ্যা ১৭ হাজার ৮৩২। মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীর এই ঘাটতি কী ভয়াবহ দুর্ভোগের জন্ম দিয়েছে, সেটা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। ৬ হাজার মানুষের জন্য একজন স্বাস্থ্য সহকারী থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে ক্ষেত্রবিশেষে একজন স্বাস্থ্য সহকারীর অধীনে রয়েছে ৩০ হাজার থেকে দেড়-দু’লাখেরও বেশি মানুষ। নেই প্রয়োজনমত প্রাথমিক চিকিত্সার যন্ত্রপাতি, ওষুধপত্র। ন্যূনতম অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায় না। দেশব্যাপী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর অবস্থাও তথৈবচ।
দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এমন দশা মানুষকে বিদেশমুখী করেছে। অর্থবিত্তের মালিকরা সামান্য প্রয়োজনেই ছুটে যান বিদেশের হাসপাতালগুলোতে। এভাবে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার, বছরে ১০ লাখেরও বেশি রোগী চিকিত্সার জন্য বিদেশ যাচ্ছেন বলে এক হিসাবে জানা গেছে। তবে সামর্থ্য নেই এমন মানুষ যাদের মুখে অহরহ দিন বদলের ঘোষণা শোনেন, সেই ক্ষমতাসীনরাও দেশের চিকিত্সা ব্যবস্থায় আস্থা না রেখে বিদেশেই ছুটে যান। কিছু দিন আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাথরুমে পড়ে গিয়ে কোমরে ব্যথা পেলে ভর্তি হন হাড়ভাঙার আধুনিক চিকিত্সা কেন্দ্র ট্রমা সেন্টারে। কিন্তু পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিত্সার জন্য তাকে চলে যেতে হয় সিঙ্গাপুরে। এ থেকেও বোঝা যায়, দেশের সার্বিক চিকিত্সা ব্যবস্থা কীরকম! তাহলে বাস্তবে দিন বদলের কী হবে, সেটা অনুমান করা কঠিন নয়।
No comments