সাদাকালো-পরিবেশ দিবসের স্লোগান হোক প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থান by আহমদ রফিক

বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০১১ পার হয়ে গেল পত্রপত্রিকায় কিছু লেখালেখি ও অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশে, অর্থাৎ ঢাকায় পরিবেশ বাঁচাও সংগঠনের তৎপরতা মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে। কিন্তু পরিবেশ সংরক্ষণ দূরে থাক, পরিবেশ দূষণ ও পরিবেশ বিনাশই নিত্যদিনের কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।


রাজধানী-নগর থেকে শহর পেরিয়ে দূর গ্রাম পর্যন্ত পরিবেশ বিনাশের শিকার। বিত্তবান বা প্রভাবশালী মানুষের অত্যাচারে অরণ্য প্রকৃতি বিলুপ্তির পথে আর প্রাণদায়ী জলাশয় ক্রমে নিজেই প্রাণ হারিয়ে বসতভিটা বা ক্ষেতখামারে পরিণত হচ্ছে। এরা সব মানুষের যুক্তিহীন লালসার শিকার।
কয়েক দিন আগে অচেনা এক তরুণ লেখক-সাংবাদিক মুঠোফোনে 'নদীর কান্না' বিষয়ক একটি লেখা পুনমুর্দ্রণের অনুরোধ জানান। জবাবে বলি, 'লেখা একবার প্রকাশিত হলে তা পাঠকসাধারণের সম্পত্তি হয়ে দাঁড়ায়, তাই প্রকাশের জন্য অনুমতির প্রয়োজন পড়ে না।' কিন্তু কী হবে নদীর কান্নার কথা ছেপে? নদী দূষণ ও নদী ভরাট নিয়ে লেখা তো কম হচ্ছে না। নামিদামি লেখক অনেকে জোরালো ভাষায় লিখছেন, সুফল মিলছে কই?
এই তো আমাদের নাকের ডগায়, প্রশাসনের চোখের সামনে বুড়িগঙ্গার তীরাঞ্চল বেদখল হচ্ছে, বসতবাটি-দোকানপাট গড়ে উঠছে জলস্রোত ভরাট করে। একবার ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তা অমান্য করে আবার দখলবাজদের রাজত্ব চলছে। অজ্ঞাত কারণে পরে আর তাদের উচ্ছেদের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, আইনসংগত শাস্তি তো দূরের কথা। একসময় বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা দখল নিয়ে লিখেছিলাম, তাতে কিছুই হয়নি। শীতলক্ষ্যা দখল নিয়ে তখন একাধিক জনপ্রিয় দৈনিকে সংবাদ-প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল। কিন্তু ফলাফল শূন্য।
বুড়িগঙ্গা-শীতলক্ষ্যাসহ ছোটবড় একাধিক নদী যেভাবে বেদখল হচ্ছে, তাতে কিছুকাল পর সাইনবোর্ডে লিখে জানান দিতে হবে, 'এখানে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা নামের নদী ছিল।' মৃত নদী অর্থাৎ মানুষের অত্যাচারে মৃত নদীর স্মৃতি রক্ষা করবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, যেমনটা করা হয় প্রয়াত নামি মানুষ বা বিলুপ্ত অথবা ভগ্ন স্থাপত্যের ক্ষেত্রে। পাহাড়পুর দেখতে গিয়ে বেশ কয়েক মাস আগে চোখে পড়েছিল রাস্তার পাশে চষাজমির একধারে সাইনবোর্ড_'এখানে করতোয়া নদী'। পথ চলতে একটি নয়, দুটো সাইনবোর্ড চোখে পড়ে অদৃশ্য করতোয়ার স্মৃতিরক্ষার নামফলক হিসেবে। হাস্যকর ঘটনা বটে। পাকিস্তান আমলে সোনারগাঁয় জঙ্গলঘেরা ছাদভাঙা হোসেন শাহ মসজিদের সামনে কাঁঠালগাছের মোটা ডালে দেখেছিলাম প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের নীল প্লেট 'রক্ষিত কীর্তি'। সেটা ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ের কথা।
নদীমাতৃক দেশ বাংলা, জলধারাই তার প্রাণ। সেই জলস্রোত যতটা প্রাকৃতিক ও রাজনৈতিক কারণে চর পড়ে ব্যাহত হচ্ছে, কয়েক দশক ধরে চলছে মানুষের অবাধ, অবৈধ ভূমি তৈরির ব্যবসা-বাণিজ্য। নদীর পরিসর ক্রমে ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হচ্ছে। ছোটখাটো নদী ভরাট করে বাস্তুভিটা বা কৃষিজমিতে পরিণত করার কাজ মহাসমারোহে চলছে। পরিবেশবাদীদের প্রতিবাদ হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে। সত্যি বলতে কি, নদীর মানচিত্র নিয়ে একটা বৈজ্ঞানিক জরিপ চালানো হলে প্রমাণ মিলবে কী ভয়ংকর সর্বনাশা খেলায় মেতে উঠেছি আমরা। দেশটা মরুভূমি করে ছাড়ব, কিন্তু আফসোস, এর বদলে তেলসম্পদ মিলবে না।
নদী দখল প্রকৃতপক্ষে পরিবেশের ওপর বড় আগ্রাসন। এর গুরুত্ব ভেবে দেখছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসন। এ ছাড়া চলছে নদীর তথা জলপ্রবাহের ওপর ভিন্নমাত্রিক অত্যাচার, অর্থাৎ বর্জ্যদূষণ। বহুদিন ধরে আলোচনা চলেছে ট্যানারি ও অন্যান্য শিল্পবর্জ্য দূষণের কারণে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, বালু প্রভৃতি নদীর মরণদশা নিয়ে। সিদ্ধান্ত হয়েছিল, রায়েরবাজারের ট্যানারি কারখানা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার। কিন্তু নানা কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি।
বর্জ্যদূষণের কারণে নদীর পানি ক্রমে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে উঠছে, স্বচ্ছ-শুভ্র জলরাশির প্রেতায়িত চেহারা চোখে না দেখলে এর গুরুত্ব বোঝা যাবে না। নদীর তীরে গাছগাছালির মেলা ক্রমেই স্বপ্নের পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। তা ছাড়া নগর বা শহরপ্রান্তিক নদীতে পয়োবর্জ্য ছাড়াও দিনের পর দিন আবর্জনা ফেলে নদীর পানি দূষিত করা হচ্ছে। এসব অনাচার দেখার কেউ নেই, কিছু বলার কেউ নেই, পুরসভা নামেই হাজির।
শুধু নদীই নয়, দেশের খাল-বিল, জলাশয় ভরাট করার যে সমারোহ চলছে, তা অবিশ্বাস্য। এর কারণ জমির দাম নদীর চেয়ে অনেক অনেক গুণ বেশি। নদী এই সীমাহীন লোভের শিকার। বছর কয়েক আগে গুলশান লেক ভরাট করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল, দৈনিক পত্রিকায় লেখালেখি হয়েছিল বিস্তর; জনৈক পূর্ত প্রতিমন্ত্রী অকুস্থল পরিদর্শনেও গিয়েছিলেন। কিন্তু লেকের প্রাণ বাঁচানো যায়নি। প্রতিমন্ত্রীর চেয়ে মন্ত্রী মহোদয়ের ক্ষমতা অনেক বেশি। তাই অনায়াসে গুলশান লেকের বিরাট বুকজুড়ে তৈরি হয়েছে আলিশান বহুতল ভবন। এখন গুলশানের অবশিষ্ট লেকে চলছে পয়োবর্জ্য নিঃসরণ। লেকে দূষণের কাজ ভালোভাবেই চলছে। মাশাল্লাহ, বছর কয়েক পর দূষণের অজুহাতে নগরীর স্বাস্থ্যরক্ষার আদি ও অকৃত্রিম উপায়ে বাকি লেকটুকুরও মৃত্যু ঘটবে। সেখানে মাথা তুলে দাঁড়াবে সুদর্শন বহুতল ভবন। কে প্রতিবাদ করবে?
আশ্বস্ত হয়েছিলাম নদীর প্রাণ বাঁচাতে উচ্চ আদালতের ভূমিকা দেখে। নদী জবরদখল, অবৈধ স্থাপনা রোধ, এমনকি বুগিড়ঙ্গায় আবর্জনা ফেলা বন্ধে উচ্চ আদালতের রায় সত্ত্বেও নির্বিচারে চলছে অনাচার ও দস্যুবৃত্তি। আমরা প্রয়োজনে আদালতে বিচারপ্রার্থী হই কিন্তু স্বার্থবিরোধী রায় বা সিদ্ধান্ত মান্য করার প্রয়োজন বোধ করি না। এমনকি প্রশাসনও প্রায়ই আদালতের নির্দেশের কোনো তোয়াক্কা করে না। তাহলে দেশ কি এভাবেই চলবে? পলিথিন ব্যবহার নিয়েও আমরা দেখেছি নাগরিকদের নৈরাজ্যিক মনোভাব। নিয়মকানুন, রীতিনীতির ধার ধারি না আমরা। তাই ভাবনা, নদীমাতৃক দেশের নদী-জলাশয় কি আমরা বাঁচিয়ে রাখতে পারব?
এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের স্লোগান, 'আপনার সেবায় প্রকৃতি ও বন'। সুন্দরবন থেকে সুদূর আমাজন আজ বনদস্যুদের দৃর্বৃত্তায়নের শিকার। বিদেশের কথা আপাতত থাক, নিজ দেশের সমস্যাই এখন পর্বতপ্রমাণ। প্রায়ই দেখা যায় দেশের প্রধান দৈনিকগুলোতে প্রতিবেদন_উজাড় হয়ে যাচ্ছে সুন্দরবনের বৃক্ষসম্পদ। তেমনি খবর পার্বত্য চট্টগ্রামের বনসম্পদ নিয়ে। এমনকি কঙ্বাজারের বৃক্ষনিধন নিয়েও খবর প্রকাশিত হয়েছে। পড়েছি রাস্তার ধারে ঝাঁকড়ামাথা 'রেইনট্রি' নামীয় মহাবৃক্ষের মহানিধন যজ্ঞ। সরকারি সম্পদ, কে তার রক্ষার দায় নেয়?
এদিকে নাগরিক সচেতনতার অভাবও রয়েছে। নাগরিক হিসেবে যা কিছু দায় আমাদের ওপর বর্তায় তা আমরা পালন করি না। 'জাতীয় সম্পদ' কথাটা আমরা একেবারেই আমলে নিই না। ছোট্ট উদাহরণ_রাস্তার জলকল দিয়ে বিরাম পানি ঝরছে, বন্ধ করার দায় বোধ করি না। রান্নাঘরে গ্যাসের চুলা রান্না শেষে অনেকেই বন্ধ করার প্রয়োজন বোধ করি না। শুনেছি এমন পরিবারও আছে, যেখানে বর্ষাকালে গ্যাসের আগুনে কাপড় শুকানোর কাজ চলে। সর্বক্ষণ জ্বলছে গ্যাসের চুলা_নিভাতে বড় কষ্ট।
এসব ছোটখাটো বিষয়, প্রাসঙ্গিক কিন্তু গুরুত্বহীন নয়। এর চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বনলক্ষ্মী ভূমিলক্ষ্মী_তাদের প্রতিই আমাদের কোনো মায়া-মমতা নেই। তাই নির্বিচারে বন কেটে বসত বা অর্থের লোভে অরণ্য ধ্বংস করতে আমাদের প্রবল উৎসাহ। অথচ এর ক্ষতিকর দিক, প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্টের দিক নিয়ে আমরা ভাবিত নই। নিজের পায়ে কুড়াল মারতেও আমাদের বাধে না। রবীন্দ্রনাথ একদা এই বিশেষ চরিত্রের বাঙালিদের ধিক্কার দিয়েছিলেন।
আর গ্রামোন্নয়ন ও পল্লী পুনর্গঠন কর্মে অরণ্য ও ভূমি রক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করে লিখেছিলেন : 'ভূমিলক্ষ্মীকে রক্ষা করতে বনলক্ষ্মীর সাহায্য চাই।' রোমান্টিক কবি হয়েও বুঝেছিলেন, প্রকৃতির দান ভূমি, অরণ্য, নদনদী, বৃষ্টি সবই মানব কল্যাণে ব্যবহারের জন্য। মানুষ না বুঝে সেসব নষ্ট করে। মানবকল্যাণে তাই তাঁর ভাষায় 'প্রকৃতির দান ও মানুষের জ্ঞান দুটোই সহযোগী রূপে চাই।' প্রকৃতির দান শ্যামল অরণ্যভূমি ধ্বংসের তিনি ঘোর বিরোধী। যুক্তিবাদী মানুষ মাত্রেই একই কথা বলবেন। কারণ এতে শুধু প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয় না; এর ফলে ঘটছে ভূমিধস, সেই সঙ্গে নদীর সংকোচন, জলধারা হ্রাস। সুন্দরবনের ওপর আঘাতের ফলে উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের ভয়াবহতা বেড়েছে। ইউএনডিপির প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশে বনভূমির আয়তন প্রতিবছর উদ্বেগজনক হারে কমছে। স্বাধীনতাপূর্ব সময়ে বাংলাদেশের বনভূমি ছিল আয়তনে মোট ভূখণ্ডের ২০ শতাংশ।
যে হারে এই অরণ্য-আয়তন কমছে, তাতে অতি দ্রুতই দেশটি সর্বনাশের দরজায় পেঁৗছে যাবে। ইউএনডিপির মতো সংস্থার সতর্কবাণী আমাদের বোধের দরজায় পেঁৗছাচ্ছে না। কিন্তু জাতীয় স্বার্থে, রাষ্ট্রিক ভূখণ্ডের স্বার্থে আমাদের এ বিষয়ে সচেতন হওয়া এবং ব্যবস্থা নেওয়া আশু জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারপক্ষে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার, মধুপুর বনাঞ্চল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট থেকে সুন্দরবনসহ দেশের ছোটবড় বনভূমি রক্ষার জন্য। এ বিষয়ে সরকারকে নির্মম হতে হবে।
সেই সঙ্গে নদী-জলাশয়সহ হাওর অঞ্চল রক্ষাও সমান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের হাতেই মানুষের সর্বনাশ ঘটানোর অর্বাচীনতা বন্ধ করতে সরকার, যে দলেরই হোক না, জাতীয় স্বার্থরক্ষায় দৃঢ়সংকল্প হবে, সংকল্প কাজে পরিণত করবে_এটাই দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের দাবি। এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এ বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করে তোলা, বনায়নে উৎসাহিত করে তোলা এবং বনায়নের যে একটি ইতিবাচক অর্থকরী দিক আছে, প্রচারের মাধ্যমে তা বুঝিয়ে বলা।
আরো একটি দিকে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। দেশের ইটখোলাগুলোতে জ্বালানি হিসেবে যে পরিমাণ গাছপালা-কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে, তা একসময় বনভূমি উজাড় করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এ জন্যই জরুরি ভিত্তিতে এ বিষয়ে দৃঢ় সরকারি হস্তক্ষেপ দরকার। দরকার নব্যপ্রযুক্তিতে ইটখোলা স্থাপনে সরকারের কঠিন অবস্থান। দেশের বনভূমি রক্ষায় এটুকু দৃঢ়তা সরকারকে দেখাতেই হবে। এর অন্য একটি দিক হচ্ছে ইটখোলার চিমনি থেকে কার্বন নিঃসরণ কমে আসবে।
জাতিসংঘ নিয়মিতভাবে জলবায়ু সম্মেলন করে যাচ্ছে, বাংলাদেশও তাতে যোগ দিচ্ছে। অনেক কার্বন নিঃসরণ ঘটিয়ে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে আগত দেশগুলো সম্মেলনে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত প্রস্তাব নিজ দেশে কতটা বাস্তবায়িত করছে তা দেখার বিষয়, সমালোচনারও বিষয়। আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে হোক, না দিয়ে হোক বাংলাদেশ তার সুস্থ অস্তিত্ব রক্ষার জন্য দেশের নদী-জলাশয় এবং তার নিবিড় সৌন্দর্যের অরণ্যভূমি রক্ষায় দায়বদ্ধতার প্রকাশ ঘটাবে এটাই আমাদের দাবি। এ ক্ষেত্রে ব্যক্তি বা দলের স্বার্থ জাতীয় স্বার্থের চেয়ে বড় করে দেখলে চলবে না।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস বিচারে পরিবেশদূষণ তো অনেক রকম_শব্দদূষণ, বায়ুদূষণ থেকে হরেক রকমের দূষণ। কিন্তু বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বিচারে আপাতত নদী-জলাশয় ও বনভূমি সংরক্ষণের বিষয়টি বহুবিধ দূষণের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ। শুধু সরকারই নয়, দেশের নাগরিক মাত্রেরই দায়িত্ব রয়েছে উলি্লখিত বিষয় দুটোর ক্ষেত্রে সচেতনতার পরিচয় রাখা। সেই সঙ্গে জনসচেতনতা গড়ে তোলার জন্য কিছু না কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ।
মনে রাখা দরকার, মানবসভ্যতার অস্তিত্ব নির্ভর করছে প্রকৃতির সঙ্গে পরস্পরনির্ভর সহাবস্থানের ওপর। প্রকৃতিকে আঘাত করার অর্থ হবে, ধীরেসুস্থে বিনাশের দিকে এগিয়ে যাওয়া। সমুদ্রের তলদেশে নিয়মিত আণবিক বিস্ফোরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর মজাটা তো বেশ ভালোই টের পাচ্ছি সমুদ্রতলে ভূকম্প ও সুনামির মতো নানা ভয়াবহতায়। উদাহরণ নানামাত্রিক। তা সত্ত্বেও কি আমরা সতর্ক হব না_স্বেচ্ছাচার বন্ধ করব না?
লেখক : ভাষাসংগ্রামী, কবি,
প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্র গবেষক

No comments

Powered by Blogger.