কাজ শুরুর আগেই পদ্মা সেতুর নির্মাণব্যয় দ্বিগুণঃ শেষ পর্যন্ত আর কতগুণ বাড়বে
দেশের বৃহত্তম সেতু হিসেবে পদ্মা সেতু নির্মাণের সর্বশেষ ব্যয় ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। শুরুতে ধরা ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ১৪০ কোটি ডলার নির্মাণ ব্যয় এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ২৪০ কোটি মার্কিন ডলার। অর্থাত্ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
মাওয়া থেকে জাজিরা পর্যন্ত চার লেনবিশিষ্ট পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ২৩ দশমিক ৬ মিটার। দ্বিতল এই সেতুর ওপরে সড়কপথ আর নিচ দিয়ে যাবে রেলপথ। নদীর ওপারে রেললাইন একদিকে ফরিদপুর-রাজবাড়ী-যশোর হয়ে বেনাপোল, অন্যদিকে কালকিনি-বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। গত অক্টোবরে যোগাযোগমন্ত্রী পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ধরা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। হঠাত্ করে সেটা প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাওয়া নিয়ে কানাঘুষা উঠতেই পারে। এই ডিজিটাল ব্যয়বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় নিশ্চয় কাউকে দোষ দেয়া যাবে না।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সুপারিশ মেনে ২০০৪ সালে মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে স্থিরকৃত পদ্মা সেতু নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ধরা হয়েছিল ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। পরে তা ১ দশমিক ৮ বিলিয়নে বৃদ্ধি পেলেও বর্তমান সরকারের আমলে তা বেড়ে ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার করা হয়েছিল। কিন্তু এ নিয়ে নানান কথা শোনা যেতে থাকে। শেষ পর্যন্ত যোগাযোগমন্ত্রীর বিদেশ থাকাকালেই পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের তদারকি কাজের দায়িত্ব দেয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি সংক্রান্ত উপদেষ্টাকে। তাকে প্রধান করে এজন্য গঠিত আট সদস্যের কমিটিতে যোগাযোগমন্ত্রীকে রাখা হয়নি। এসবই খোদ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করা হয়েছে বলে জানা যায়। এখন অর্থমন্ত্রীর সর্বশেষ ঘোষণা তারই ধারাবাহিকতা কিনা আমরা জানি না।
পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক ভূমিকাই হবে প্রধান। তারা দেবে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ১২০ কোটি মার্কিন ডলার। এছাড়া এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ৫৫০ মিলিয়ন, জাইকা ৩শ’ মিলিয়ন, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক ১২০ মিলিয়ন, আবুধাবি ডেভেলপমেন্ট গ্রুপ ৩১ মিলিয়ন ডলার দেবে। বাদবাকি ১৪০ মিলিয়ন ডলার দেবে বাংলাদেশ সরকার। স্থানীয়ভাবে শেয়ার বাজারে বন্ড ছেড়ে বা অন্য কোনোভাবে এ অর্থ সংগ্রহ করার কথা বলা হয়েছে।
এর আগে শোনা গিয়েছিল ভারতকে করিডোর বা ট্রানজিট না দিলে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করবে না। এ বিষয়ে এখন সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাওয়ায় ধরে নেয়া যায়, সেই অলিখিত শর্ত পূরণ করা হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হলে বাংলাদেশের মোট দেশজ উত্পাদনে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ২ শতাংশ বাড়বে—এটা সরকারিভাবে বলা হয়েছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন গতিশীল হওয়ার আশা থেকেই এমনটি ধারণা করা হয়েছে সন্দেহ নেই। এক দশকেরও আগে যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের সময়ও এ ধরনের আশা ব্যক্ত করা হয়েছিল। দীর্ঘ এত বছর পরও উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতিতে সেতুটি কী গতিসঞ্চার করেছে তা নিয়ে এখন কাউকে তেমন মুখ খুলতে দেখা যায় না। সে অঞ্চলের শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে চোখে পড়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, সেটা কেউ বলতে পারবে না। যাতায়াত সুবিধা ও পণ্য চলাচল বৃদ্ধি পাওয়া ছাড়া উত্পাদনমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধিতে বঙ্গবন্ধু সেতুর প্রভাব দেখা না গেলেও জ্বালানি সঙ্কটসহ অন্যান্য কারণে অসংখ্য শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ উত্পাদন মার খাওয়ার বিষয়টি সর্বজনবিদিত। উত্তরাঞ্চলের আমজনতা এখনও নিজেদের উপেক্ষা, বঞ্চনা ও পশ্চাত্পদতার শিকার বলেই মনে করেন। বঙ্গবন্ধু সেতু এত বছর পরও এক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়নি। এখন নির্মিতব্য পদ্মাসেতু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য ভিন্ন কিছু করতে পারবে কিনা, সেটা নির্ভর করবে এই সেতুকে কাজে লাগিয়ে উত্পাদনমুখী কর্মকাণ্ডের প্রসার ঘটানোর ওপর। তা করা না গেলে অবস্থা দাঁড়াবে ‘যাহা লাউ তাহাই কদু’র মতো।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সুপারিশ মেনে ২০০৪ সালে মাওয়া-জাজিরা পয়েন্টে স্থিরকৃত পদ্মা সেতু নির্মাণে সম্ভাব্য ব্যয় বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ধরা হয়েছিল ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। পরে তা ১ দশমিক ৮ বিলিয়নে বৃদ্ধি পেলেও বর্তমান সরকারের আমলে তা বেড়ে ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার করা হয়েছিল। কিন্তু এ নিয়ে নানান কথা শোনা যেতে থাকে। শেষ পর্যন্ত যোগাযোগমন্ত্রীর বিদেশ থাকাকালেই পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের তদারকি কাজের দায়িত্ব দেয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি সংক্রান্ত উপদেষ্টাকে। তাকে প্রধান করে এজন্য গঠিত আট সদস্যের কমিটিতে যোগাযোগমন্ত্রীকে রাখা হয়নি। এসবই খোদ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করা হয়েছে বলে জানা যায়। এখন অর্থমন্ত্রীর সর্বশেষ ঘোষণা তারই ধারাবাহিকতা কিনা আমরা জানি না।
পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক ভূমিকাই হবে প্রধান। তারা দেবে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ১২০ কোটি মার্কিন ডলার। এছাড়া এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ৫৫০ মিলিয়ন, জাইকা ৩শ’ মিলিয়ন, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক ১২০ মিলিয়ন, আবুধাবি ডেভেলপমেন্ট গ্রুপ ৩১ মিলিয়ন ডলার দেবে। বাদবাকি ১৪০ মিলিয়ন ডলার দেবে বাংলাদেশ সরকার। স্থানীয়ভাবে শেয়ার বাজারে বন্ড ছেড়ে বা অন্য কোনোভাবে এ অর্থ সংগ্রহ করার কথা বলা হয়েছে।
এর আগে শোনা গিয়েছিল ভারতকে করিডোর বা ট্রানজিট না দিলে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করবে না। এ বিষয়ে এখন সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাওয়ায় ধরে নেয়া যায়, সেই অলিখিত শর্ত পূরণ করা হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হলে বাংলাদেশের মোট দেশজ উত্পাদনে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ২ শতাংশ বাড়বে—এটা সরকারিভাবে বলা হয়েছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন গতিশীল হওয়ার আশা থেকেই এমনটি ধারণা করা হয়েছে সন্দেহ নেই। এক দশকেরও আগে যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের সময়ও এ ধরনের আশা ব্যক্ত করা হয়েছিল। দীর্ঘ এত বছর পরও উত্তরাঞ্চলের অর্থনীতিতে সেতুটি কী গতিসঞ্চার করেছে তা নিয়ে এখন কাউকে তেমন মুখ খুলতে দেখা যায় না। সে অঞ্চলের শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে চোখে পড়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, সেটা কেউ বলতে পারবে না। যাতায়াত সুবিধা ও পণ্য চলাচল বৃদ্ধি পাওয়া ছাড়া উত্পাদনমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধিতে বঙ্গবন্ধু সেতুর প্রভাব দেখা না গেলেও জ্বালানি সঙ্কটসহ অন্যান্য কারণে অসংখ্য শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়াসহ উত্পাদন মার খাওয়ার বিষয়টি সর্বজনবিদিত। উত্তরাঞ্চলের আমজনতা এখনও নিজেদের উপেক্ষা, বঞ্চনা ও পশ্চাত্পদতার শিকার বলেই মনে করেন। বঙ্গবন্ধু সেতু এত বছর পরও এক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়নি। এখন নির্মিতব্য পদ্মাসেতু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য ভিন্ন কিছু করতে পারবে কিনা, সেটা নির্ভর করবে এই সেতুকে কাজে লাগিয়ে উত্পাদনমুখী কর্মকাণ্ডের প্রসার ঘটানোর ওপর। তা করা না গেলে অবস্থা দাঁড়াবে ‘যাহা লাউ তাহাই কদু’র মতো।
No comments