মানুষের ডিম ও তার ভবিষ্যৎ by তাওহিদ মিলটন
রিগ্যান ভাই আমাদের কলিগ। বিয়ের পর থেকেই নতুন বউয়ের সঙ্গে একটা মুহূর্তও যুক্তিতর্ক ছাড়া কাটাতে পারেননি তিনি। পারবেন কী করে, তাঁর বউ কলেজে বহুবার বিতর্ক প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ বক্তা হয়েছিলেন। কখনো কখনো এমনও হয়েছে যে রিগ্যান ভাই প্রায়ই তর্কে হারিয়ে ফেলেছেন, ঠিক তখনই দেখা গেছে, ভাবি বলে বসলেন, ‘তোমরা ছেলেরা সন্তানের জন্য কী এমন কষ্ট করো!
একজন মা ১০ মাস পেটে সন্তান ধরে যে কষ্ট করেন, তোমরা তো সারা জীবনেও সন্তানের জন্য এর সিকি ভাগের এক ভাগও কষ্ট করো না।’ রিগ্যান ভাই কট। মায়ের ব্যাপারে তাঁর অনুভূতি বেশ নরম। সে-ও একজন মায়ের সন্তান। এ নিয়ে কোনো যুক্তি দিতে গেলে বিষয়টা বুমেরাংয়ের মতো তাঁর ঘাড়েই আসবে। এটা রিগ্যান ভাই চান না। ফলে আপাতত যুদ্ধবিরতি। এভাবেই বেচারার দাম্পত্য জীবনের সুখের দিনগুলো কাটছিল!
সেদিন সকালে অফিসে এসে রিগ্যান ভাই একটা বোমা ফাটালেন।
‘আচ্ছা, মানুষ যদি ডিম পাড়ত তাহলে কেমন হতো!’
আমার তো মাথায় হাত! নিজেকে আমি এত চিন্তাশীল ভাবি অথচ এই সামান্য ভাবনাটা ভাবতে পারলাম না! আমি তো লাফিয়ে বলে উঠলাম, ‘কেমন হতো জানি না, তবে আপনার ভাবনাটা চমৎকার। সালভাদর দালির ভাবনার মতো।’
তিনিও হাতে মওকা পেয়ে বললেন, ‘ক্রিয়েটিভ কাজ করতে হলে একটু এই রকম ভাবতে হয়।’
ইউসুফ ভাই মুচকি হেসে বললেন, ‘রিগ্যান ভাই, এতে কিন্তু আপনার ঝামেলা আরও বাড়বে।’
‘কেন? বাড়বে কেন?’ রিগ্যান ভাইয়ের এমন চমৎকার ভাবনার ত্রুটি বের করা তাঁর পছন্দ হয়নি।
‘তার আগে আপনি বলেন তো আপনি কী ভেবে এ কথা বলেছেন?’
‘একটা জিনিস দেখেন, ডিম পাড়লে কী হতো? মেয়েদের বাচ্চা পেটে নিয়ে এত দিন কষ্ট করতে হতো না। চাকরি করতে পারত, কাজকর্মও করতে পারত। অফিসে মাতৃত্বকালীন ছুটি বলে কোনো বিষয় থাকত না।’
‘তাতে আপনার কী লাভ হতো?’
‘আরে, আমার আবার কী লাভ! আমি এমনি বললাম বিষয়টা। একবার ভেবে দেখতে তো দোষের কিছু নাই।’
‘রিগ্যান ভাই, তাতে আপনার যে কত বড় ক্ষতি হতো, সেটা কিন্তু আপনি ভাবতে পারেন নাই। তখন সেই ডিমে কাকে তা দিতে হতো—আপনি কি একবারও ভেবেছেন?’
‘কাকে তা দিতে হতো? যে ডিম পাড়বে সে-ই তো তা দেবে!’ রিগ্যান ভাই যেন হঠাৎ শূন্যে ভেসে উঠলেন।
‘জি না! এখনো চিনেন নাই, তখন কিন্তু আপনাকেই তা দিতে হতো সেই ডিমে! বিয়ের পর যেমন বউয়ের সব কথাই শুনতে হয় স্বামীকে, একইভাবে ডিমেও তা দিতে হতো। আপনাকেই তখন ডিমে তা দেওয়ার জন্য অফিস থেকে ১০ মাসের ছুটি নিতে হতো! ১০ মাস আপনি বসে বসে ডিমে তা দিচ্ছেন—এটা একবার ভাবুন তো!’
আলোচনা ঘুরে গেল অন্য দিকে। একটা মানুষ ডিমে তা দিচ্ছে, সেটা দেখতে কেমন লাগবে—এই সব। একজন বলল, ‘থিংকার স্কাল্পচারটার মতো লাগবে দেখতে, শুধু নিচে একটা ডিম।’
আরেকজন বলল, ‘ইয়া বড় এক ডিমের ওপর বসে আছেন রিগ্যান ভাই, এই ছবিটা ভাবতেই তো ভালো লাগছে।’
আরেকজন আলোচনায় পরে জয়েন করে প্রথমে পুরোটা বিস্তারিত শুনল। এরপর বলল, ‘এটা কোনো ব্যাপার! তা দেওয়ার জন্য লোক ভাড়া করব।’
‘আরে বাহ! তাই তো! এতে তাহলে বিশাল বড় একটা কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হতো! এভাবে তো ভেবে দেখা হয়নি!’ মাসুম ভাই এতক্ষণ পর মুখ খুললেন।
‘তখন একেকজন ভুয়া সার্টিফিকেট বানিয়ে আনবে—ডিমে তা দেওয়ার সফল ১০ বছর! ১০ বছরে একটা ডিমও ভাঙেনি।’
এভাবেই আরও কিছুক্ষণ চলল মানুষের ডিম নিয়ে আলোচনা আর হাসাহাসি। এরপর যথারীতি অফিসে যা হয়—একটু পরে যে যার কাজে ডুবে গেল। ভুলে গেল সকালে কী যুগান্তকারী বিষয় নিয়ে সবাই উত্তেজিত ছিল। এভাবেই প্রতিদিন কত যুগান্তকারী আইডিয়া আড্ডার ছলে হারিয়ে যায়।
সেদিন সকালে অফিসে এসে রিগ্যান ভাই একটা বোমা ফাটালেন।
‘আচ্ছা, মানুষ যদি ডিম পাড়ত তাহলে কেমন হতো!’
আমার তো মাথায় হাত! নিজেকে আমি এত চিন্তাশীল ভাবি অথচ এই সামান্য ভাবনাটা ভাবতে পারলাম না! আমি তো লাফিয়ে বলে উঠলাম, ‘কেমন হতো জানি না, তবে আপনার ভাবনাটা চমৎকার। সালভাদর দালির ভাবনার মতো।’
তিনিও হাতে মওকা পেয়ে বললেন, ‘ক্রিয়েটিভ কাজ করতে হলে একটু এই রকম ভাবতে হয়।’
ইউসুফ ভাই মুচকি হেসে বললেন, ‘রিগ্যান ভাই, এতে কিন্তু আপনার ঝামেলা আরও বাড়বে।’
‘কেন? বাড়বে কেন?’ রিগ্যান ভাইয়ের এমন চমৎকার ভাবনার ত্রুটি বের করা তাঁর পছন্দ হয়নি।
‘তার আগে আপনি বলেন তো আপনি কী ভেবে এ কথা বলেছেন?’
‘একটা জিনিস দেখেন, ডিম পাড়লে কী হতো? মেয়েদের বাচ্চা পেটে নিয়ে এত দিন কষ্ট করতে হতো না। চাকরি করতে পারত, কাজকর্মও করতে পারত। অফিসে মাতৃত্বকালীন ছুটি বলে কোনো বিষয় থাকত না।’
‘তাতে আপনার কী লাভ হতো?’
‘আরে, আমার আবার কী লাভ! আমি এমনি বললাম বিষয়টা। একবার ভেবে দেখতে তো দোষের কিছু নাই।’
‘রিগ্যান ভাই, তাতে আপনার যে কত বড় ক্ষতি হতো, সেটা কিন্তু আপনি ভাবতে পারেন নাই। তখন সেই ডিমে কাকে তা দিতে হতো—আপনি কি একবারও ভেবেছেন?’
‘কাকে তা দিতে হতো? যে ডিম পাড়বে সে-ই তো তা দেবে!’ রিগ্যান ভাই যেন হঠাৎ শূন্যে ভেসে উঠলেন।
‘জি না! এখনো চিনেন নাই, তখন কিন্তু আপনাকেই তা দিতে হতো সেই ডিমে! বিয়ের পর যেমন বউয়ের সব কথাই শুনতে হয় স্বামীকে, একইভাবে ডিমেও তা দিতে হতো। আপনাকেই তখন ডিমে তা দেওয়ার জন্য অফিস থেকে ১০ মাসের ছুটি নিতে হতো! ১০ মাস আপনি বসে বসে ডিমে তা দিচ্ছেন—এটা একবার ভাবুন তো!’
আলোচনা ঘুরে গেল অন্য দিকে। একটা মানুষ ডিমে তা দিচ্ছে, সেটা দেখতে কেমন লাগবে—এই সব। একজন বলল, ‘থিংকার স্কাল্পচারটার মতো লাগবে দেখতে, শুধু নিচে একটা ডিম।’
আরেকজন বলল, ‘ইয়া বড় এক ডিমের ওপর বসে আছেন রিগ্যান ভাই, এই ছবিটা ভাবতেই তো ভালো লাগছে।’
আরেকজন আলোচনায় পরে জয়েন করে প্রথমে পুরোটা বিস্তারিত শুনল। এরপর বলল, ‘এটা কোনো ব্যাপার! তা দেওয়ার জন্য লোক ভাড়া করব।’
‘আরে বাহ! তাই তো! এতে তাহলে বিশাল বড় একটা কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হতো! এভাবে তো ভেবে দেখা হয়নি!’ মাসুম ভাই এতক্ষণ পর মুখ খুললেন।
‘তখন একেকজন ভুয়া সার্টিফিকেট বানিয়ে আনবে—ডিমে তা দেওয়ার সফল ১০ বছর! ১০ বছরে একটা ডিমও ভাঙেনি।’
এভাবেই আরও কিছুক্ষণ চলল মানুষের ডিম নিয়ে আলোচনা আর হাসাহাসি। এরপর যথারীতি অফিসে যা হয়—একটু পরে যে যার কাজে ডুবে গেল। ভুলে গেল সকালে কী যুগান্তকারী বিষয় নিয়ে সবাই উত্তেজিত ছিল। এভাবেই প্রতিদিন কত যুগান্তকারী আইডিয়া আড্ডার ছলে হারিয়ে যায়।
No comments