নাটোরে অপহরণ-প্রতিমন্ত্রী যদি না থাকতেন!
সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত সাবেক সাংসদ ও আওয়ামী লীগ নেতা মমতাজ উদ্দিনের ভাগ্নে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রশিদ ৫ সঙ্গীকে নিয়ে লালপুর থানা থেকে নাটোর শহরে আসছিলেন মামলার কাজে। পথিমধ্যে তিনটি মোটরসাইকেল তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসের গতিরোধ করে। মোটরসাইকেল আরোহী ৯ সন্ত্রাসী মাইক্রোবাস ও আরোহীদের অপহরণ করে নিয়ে যায় আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন যুবলীগ অফিসের সামনে, হেমাঙ্গিনী ব্রিজ এলাকায়।
দাবি করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ। অপহরণকারীরাও আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন যুবলীগের কর্মী। খবর পেয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার অপহরণকারীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। পুলিশ অপহৃতদের উদ্ধার করে, অপহরণকারী সন্দেহে একজনকে গ্রেফতারও করে। খবরটি ছোট হলেও বিশেষ মনোযোগ দাবি করে। যারা অপহৃত হয়েছেন তারা আওয়ামী লীগ নেতার কাজের সঙ্গে জড়িত। যারা অপহরণ করেছেন তারা আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের কর্মী। যিনি অপহরণকারীদের গ্রেফতারের তাগিদ দিয়েছেন তিনি আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রতিমন্ত্রী। প্রতিমন্ত্রীর উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের মতো ন্যক্কারজনক অপরাধ তার হস্তক্ষেপে ঘটতে পারেনি, এ জন্য তিনি সকলের ধন্যবাদ পাবেন। কিন্তু তিনি যদি প্রতিমন্ত্রী না হতেন তবে কি পুলিশ তার কথায় তৎপর হতো? জেলা শহরগুলোতে অপরাধ ঠেকাতে মন্ত্রীরা কি তৎপর? সবচেয়ে বড় কথা, সব জেলাতেই কি মন্ত্রী আছেন? ঘটনার বিবরণে স্পষ্ট যে, অপহৃতদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতার যোগাযোগ ছিল বলেই মন্ত্রী বিষয়টি জেনে পদক্ষেপ নিতে পেরেছেন। কিন্তু যদি অপহৃতরা সাধারণ মানুষ হতো বা কোনো সাধারণ ব্যক্তির জন্য কাজ করত তবে কি মন্ত্রী তৎপর হতেন? যেখানে আওয়ামী লীগ নেতার সহযোগীদের একই দলের অপহরণকারীদের হাত থেকে ছাড়াতে প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশ লাগে, সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কী হাল? সন্ত্রাসীদের দাপটে সাধারণ মানুষ ভালো আছে তো?
No comments