জাতীয় সংসদের বাজেট বৃক্ততা ॥ অশালীন বক্তব্য প্রসঙ্গে by ড. মোঃ ফরহাদ হোসেন
গত ১৩ জুন ২০১৩ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে
বাজেট বিষয়ের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে বিরোধীদলীয় সাংসদ সৈয়দা আসিফা আশরাফী
কয়েকটি বিষয়ের ওপর আলোকপাত করেছেন, যার অনেক কিছুই জাতি পূর্ব থেকে অবহিত
নয়।
মাননীয় সাংসদ তাঁর বক্তৃতায় যা যা বলেছেন তা শিহরণ
জাগানো এবং বিস্ময়করও। তিনি কোথা থেকে এই তথ্যগুলো পেলেন তা তদন্তের
মাধ্যমে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন অত্যাবশ্যক। জাতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে
যত দ্রুত সম্ভব এ ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছে।
মাননীয় সাংসদের বক্তব্যের মাঝে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পুত্র (জয়) ও কন্যাকে
(পুতুল) জড়িয়ে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে আমার মনে হয় আরও অধিক
বস্তুনিষ্ঠ ও সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন ছিল। যদি জয় কিংবা পুতুল প্রকৃতপক্ষেই
কোন ধরনের আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত থেকে থাকে তবে তারাও আইনের উর্ধে নয়।
কিন্তু যদি তাদের ওই জাতীয় আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থেকে থাকে
তা হলে তাদের বিরুদ্ধে ওই জাতীয় অভিযোগ উঠানোর পূর্বে একবার ভেবে দেখা
প্রয়োজন ছিল। কারণ জয় ও পুতুলের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ পুরো জাতির
মান-সম্মানের সঙ্গে জড়িত।
ড. ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনা তাঁদের পুত্র-কন্যা, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র, জয় ও পুতুলকে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছিলেন এবং আমি যতদূর জানি তারা বিদেশে সুশিক্ষিত হয়েছেন ও স্বোপার্জনে সক্ষম; এমনকি আমেরিকায় সৎভাবে অর্থ উপার্জনেও সক্ষম, যা দিয়ে আমেরিকান নিয়মে সেখানে ডাউন পেমেন্ট দিয়ে কিস্তিতে বাড়ি ক্রয় করা তাদের পক্ষে খুব একটা কঠিন ব্যাপার নয়; এ জন্য তাদের বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচারের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। তাছাড়া তারা বিদেশে গিয়েছেন উচ্চ শিক্ষার জন্য, দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করার জন্য নয়। সজিব ওয়াজেদ জয় যদি বাংলাদেশের অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ আমেরিকায় পাচার করে ওই সব বাড়ি ক্রয় করে থাকতেন তা হলে বিএনপি সরকার জয়ের কিংবা পুতুলের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামালা করতে পারত; কারণ, বর্ণিত সময় ২০০৪, ২০০৫ সালে তো বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। যেমনটি হয়েছে তারেক রহমান ও কোকোর বিরুদ্ধে। কিন্তু তাঁরা তা করেননি। কেন? এটা জাতির কাছে একটা বিরাট প্রশ্ন। ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে কাজ করার সুবাদে তাঁর অত্যন্ত স্নেহভাজন হিসেবে ও ড. ওয়াজেদ মিয়ার ও শেখ হাসিনার শিক্ষানুরাগ এবং সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করার অভিপ্রায় সম্বন্ধে অবহিত থাকার দরুন এবং যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছর ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কাজ করার সুবাদে সেখানকার বাড়ি ক্রয় সংক্রান্ত বিষয় আমি কিঞ্চিৎ অবহিত। এ বিষয়ে অবশ্য সাংসদ আবদুর রহমান তাঁর বক্তব্যে কিছু আলোকপাত করেছেন।
আমি জানিনা মাননীয় সাংসদ পাপিয়া অন্যের অপকর্ম ঢাকার জন্য এই কাল্পনিক তথ্য তুলে ধরেছেন কিনা। কেননা তার বক্তব্যে এই অভিযোগের পেছনে কোন তথ্য তিনি উপস্থাপন করতে পারেননি। অনেকটা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের মতো। বরং তার পরবর্তী অলোচক আবদুর রহমান এমপি বিভিন্ন পত্রিকার কার্টিংয়ের তথ্য থেকে আপনার আগামীদিনের রাজনৈতিক আদর্শ তারেক রহমানের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেছেন। যা দেশবাসীও জানেন।
বরং আপনারা বিরোধীদলীয় সাংসদরা গত সাড়ে চার বছর জাতীয় সংসদ অধিবেশনে অনুপস্থিত থেকে আপনাদের সে দায়িত্ব সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করে জাতিকে ভীষণভাবে ঠকিয়েছেন। জাতি যথা সময়ে আপনাদেরও এ অবজ্ঞাজনিত অপরাধের সমীচীন জবাব দিয়ে দেবে জনগণ। জনগণ ভোটের মাধ্যমে সাংসদদের কাছে যে আমানত রেখেছিল আপনারা তার খেয়ানত করেছেন। সংসদীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্র পরিচালনার সোল এজেন্সি দেয়া হয় জনগণের ভোটে নির্বাচিত (দলমত নির্বিশেষে সকল) মাননীয় সংসদ সদস্যদেরকে।
অতএব, মাননীয় সাংসদরা যদি বছরের পর বছর জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার কথা সংসদে না বলেন এবং যদি কেউ অনিয়ম করে তার সে অনিয়ম/ দুর্নীতি অপকর্মের কথা জনগণের সম্মুখে তুলে না ধরেন, শুধু বেতনভাতা ও সাংসদে হিসেবে পাজেরো গাড়ি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাওয়ার জন্য সদস্য পদ টিকিয়ে রাখার জন্য বহুদিন পরে সংসদে হাজিরা দেয়ার জন্য উপস্থিত হন, তা হলে তাদেরও দেশের জনগণ ওই সকল অনিয়ম/ অপকর্ম/ দুর্নীতির দায় থেকে মুক্তি দেবে না। আপনারাও ওই সব অনিয়ম/ অপকর্ম অপশাসন/ দুর্নীতির সমান ভাগীদার হবেন। এ কথাগুলো বর্তমান ও ভবিষ্যত সাংসদের অবশ্যই স্মরণ রাখা অত্যাবশ্যক।
লেখক : অধ্যাপক, পরিসংখ্যান বিভাগ ও
ভূতপূর্ব, পো- উপাচার্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
ড. ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনা তাঁদের পুত্র-কন্যা, বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র, জয় ও পুতুলকে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছিলেন এবং আমি যতদূর জানি তারা বিদেশে সুশিক্ষিত হয়েছেন ও স্বোপার্জনে সক্ষম; এমনকি আমেরিকায় সৎভাবে অর্থ উপার্জনেও সক্ষম, যা দিয়ে আমেরিকান নিয়মে সেখানে ডাউন পেমেন্ট দিয়ে কিস্তিতে বাড়ি ক্রয় করা তাদের পক্ষে খুব একটা কঠিন ব্যাপার নয়; এ জন্য তাদের বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচারের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না। তাছাড়া তারা বিদেশে গিয়েছেন উচ্চ শিক্ষার জন্য, দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করার জন্য নয়। সজিব ওয়াজেদ জয় যদি বাংলাদেশের অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ আমেরিকায় পাচার করে ওই সব বাড়ি ক্রয় করে থাকতেন তা হলে বিএনপি সরকার জয়ের কিংবা পুতুলের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামালা করতে পারত; কারণ, বর্ণিত সময় ২০০৪, ২০০৫ সালে তো বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। যেমনটি হয়েছে তারেক রহমান ও কোকোর বিরুদ্ধে। কিন্তু তাঁরা তা করেননি। কেন? এটা জাতির কাছে একটা বিরাট প্রশ্ন। ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে কাজ করার সুবাদে তাঁর অত্যন্ত স্নেহভাজন হিসেবে ও ড. ওয়াজেদ মিয়ার ও শেখ হাসিনার শিক্ষানুরাগ এবং সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করার অভিপ্রায় সম্বন্ধে অবহিত থাকার দরুন এবং যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছর ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কাজ করার সুবাদে সেখানকার বাড়ি ক্রয় সংক্রান্ত বিষয় আমি কিঞ্চিৎ অবহিত। এ বিষয়ে অবশ্য সাংসদ আবদুর রহমান তাঁর বক্তব্যে কিছু আলোকপাত করেছেন।
আমি জানিনা মাননীয় সাংসদ পাপিয়া অন্যের অপকর্ম ঢাকার জন্য এই কাল্পনিক তথ্য তুলে ধরেছেন কিনা। কেননা তার বক্তব্যে এই অভিযোগের পেছনে কোন তথ্য তিনি উপস্থাপন করতে পারেননি। অনেকটা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের মতো। বরং তার পরবর্তী অলোচক আবদুর রহমান এমপি বিভিন্ন পত্রিকার কার্টিংয়ের তথ্য থেকে আপনার আগামীদিনের রাজনৈতিক আদর্শ তারেক রহমানের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেছেন। যা দেশবাসীও জানেন।
বরং আপনারা বিরোধীদলীয় সাংসদরা গত সাড়ে চার বছর জাতীয় সংসদ অধিবেশনে অনুপস্থিত থেকে আপনাদের সে দায়িত্ব সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করে জাতিকে ভীষণভাবে ঠকিয়েছেন। জাতি যথা সময়ে আপনাদেরও এ অবজ্ঞাজনিত অপরাধের সমীচীন জবাব দিয়ে দেবে জনগণ। জনগণ ভোটের মাধ্যমে সাংসদদের কাছে যে আমানত রেখেছিল আপনারা তার খেয়ানত করেছেন। সংসদীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্র পরিচালনার সোল এজেন্সি দেয়া হয় জনগণের ভোটে নির্বাচিত (দলমত নির্বিশেষে সকল) মাননীয় সংসদ সদস্যদেরকে।
অতএব, মাননীয় সাংসদরা যদি বছরের পর বছর জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার কথা সংসদে না বলেন এবং যদি কেউ অনিয়ম করে তার সে অনিয়ম/ দুর্নীতি অপকর্মের কথা জনগণের সম্মুখে তুলে না ধরেন, শুধু বেতনভাতা ও সাংসদে হিসেবে পাজেরো গাড়ি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাওয়ার জন্য সদস্য পদ টিকিয়ে রাখার জন্য বহুদিন পরে সংসদে হাজিরা দেয়ার জন্য উপস্থিত হন, তা হলে তাদেরও দেশের জনগণ ওই সকল অনিয়ম/ অপকর্ম/ দুর্নীতির দায় থেকে মুক্তি দেবে না। আপনারাও ওই সব অনিয়ম/ অপকর্ম অপশাসন/ দুর্নীতির সমান ভাগীদার হবেন। এ কথাগুলো বর্তমান ও ভবিষ্যত সাংসদের অবশ্যই স্মরণ রাখা অত্যাবশ্যক।
লেখক : অধ্যাপক, পরিসংখ্যান বিভাগ ও
ভূতপূর্ব, পো- উপাচার্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
No comments