প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের পদায়ন by রফিকুল ইসলাম আধার

২৬ হাজার বেসরকারি-রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের আওতায় নিয়ে সরকার তার শিক্ষাবান্ধব নীতিকেই প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু সরকারের অনেকদিন পদায়ন প্রক্রিয়া ঝুলে থাকায় বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য প্যানেলে থাকা ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা এক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।
বেসরকারি ও রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটির কর্তৃত্ব বাতিলক্রমে বর্তমান সরকারের মেয়াদেই জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা হয়। ওই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর বেসরকারি ও রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ৪২ হাজার প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। ওই সব প্রার্থীর ফল ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং তাদের পর্যায়ক্রমে নিয়োগের জন্য প্যানেলভুক্ত করা হয়। ওই প্যানেলভুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্য থেকে ইতিপূর্বে (বেসরকারি-রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ ঘোষণার পূর্ব পর্যন্ত) প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়ে যান অবশিষ্ট ২৬ হাজার প্রার্থী। অন্যদিকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ হাজার বেসরকারি-রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়ে লক্ষাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকার জীবনমান উন্নয়নের নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। কিন্তু দীর্ঘ এক বছর পরও প্যানেলে থাকা ওই সব শিক্ষক-শিক্ষিকার পদায়ন না হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় মাঠ পর্যায়ে অসন্তোষ রয়েই গেছে। এ অবস্থায় প্যানেলে থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি তাদের পরিবারের লক্ষাধিক সদস্য চরম হতাশায় ভুগছেন। মূলত ২৬ হাজার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের ওই ঘোষণার পর থেকেই ঝুলে গেছে প্যানেলভুক্ত ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়োগ-পদায়ন প্রক্রিয়া। প্যানেলে থাকা ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জানিয়েছেন, ১৭ জানুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে নিয়োগ না পাওয়া প্যানেল শিক্ষকদের বিষয়টি উল্লেখ না থাকায় এবং প্যানেল বাতিলের আশঙ্কায় হতাশায় পড়েন তারা। এরপর প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনসহ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
সরকার যে ক্ষেত্রে ২৬ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের মাধ্যমে লক্ষাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকার জীবনমানের চাকা ঘুরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষাক্ষেত্রে পরিবর্তনের চেষ্টা চালাচ্ছে, সেক্ষেত্রে বেসরকারি-রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য প্যানেলে থাকা অবশিষ্ট শিক্ষকদের পদায়নে আন্তরিকতার অভাব কেন? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
য় রফিকুল ইসলাম আধার :শেরপুর
press.adhar@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.