অপপ্রচার কাম্য নয়
জীবনের কোন ক্ষেত্রেই অপপ্রচার বা
মিথ্যাচার কাম্য নয়- হোক তা পারিবারিক, সামাজিক, দৈশিক বা আন্তর্জাতিক। কোন
কথা, বর্ণনা বা বিবৃতিকে বিকৃত বা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে নেতিবাচক উদ্দেশ্যে
ব্যবহার করার মাধ্যমে হৈ চৈ ফেলে দেয়া কিংবা অনর্থের ঘটনা নতুন নয়।
বিশেষ করে রাজনীতির ক্ষেত্রে অসত্য, বিকৃত তথ্য কিংবা অপপ্রচার যে কতটা
ক্ষতিকর হতে পারে তা কিছুদিন থেকেই দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র
করে। হালে সংসদে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্য নিয়ে বিরোধী মহলে তুমুল
বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিতর্ক সৃষ্টিকারী সেই বক্তব্য অবলীলায় ব্যাখ্যাত
হয়েছে নানাভাবে। কেউ বলেছেন : প্রধানমন্ত্রী নাকি বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক
চাইলে দেশে নির্বাচনই হবে না। আবার এক নেতা বলেছেন, নির্বাচন হবে না বলাও
রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। এমনিভাবে কয়েক দিন জোর বিতর্ক আর শোরগোল চলার পর
বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বিষয়টি খোলাসা করেন। পয়েন্ট অব
অর্ডার ও ব্যক্তিগত কৈফিয়তে তিনি মন্তব্য করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে এর
আগে সংসদে দেয়া তাঁর বক্তব্যকে ‘বিকৃত’ করে উপস্থাপন করা হয়েছে। তিনি
বলেন, ‘সংসদে আমার বক্তব্য ছিল- আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসলে দেশে আর
নির্বাচন নাও হতে পারে।...অথচ আমার সেই বক্তব্য বিকৃত করে প্রকাশ করা হলোÑ
তত্ত্বাবধায়ক চাইলে নির্বাচনই হবে না।’
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর এই কৈফিয়ত একদিকে যেমন নিজেকে স্বচ্ছভাবে জনগণের সামনে উপস্থাপন এবং তাঁর বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তির ধূম্রজাল অপনোদনের প্রয়াস, অন্যদিকে তা আমাদের মানসিকতা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির দৈনের প্রতি আলোকসম্পাতও। কারও কোন বক্তব্য গভীরভাবে অনুধাবন না করে বিতর্ক সৃষ্টির জন্যই লুফে নেয়া দায়িত্বশীলতার পরিচায়ক হতে পারে না; বিশেষ করে সচেতন রাজনৈতিক মহলের কাছ থেকে এমনটি কেউ আশা করে না। কিন্তু আমাদের দেশে তেমনটি মাঝে মাঝেই হতে দেখা যায়। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর আগের বক্তব্য যাঁরা শুনেছেন তাঁরা জানেন, সেখানে এমন কোন কথাই ছিল না- যার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক চাইলে নির্বাচন হতে না দেয়ার ইঙ্গিত আছে। অথচ এ নিয়ে ক’দিন ধরে কী তুমুল কা-ই না হচ্ছে! অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক নয়, গণতান্ত্রিক সরকারই জনগণের প্রকৃত জিম্মাদার এবং জনগণের কাছেই তারা দায়বদ্ধ- এই সত্যটি অনুধাবনের জন্যই প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন বলে রাজনীতি বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে। তাঁর বক্তব্য এবং বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থানকে নিরপেক্ষভাবে বিশ্লেষণ করলে প্রতীয়মান হয়, এ বিষয়টি কোন ব্যক্তি বা দলবিশেষের নয়, এটি গণতন্ত্রের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়; সেই সঙ্গে রাজনীতিকদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার বিষয়টিও এর সঙ্গে জড়িত। কারণ বিগত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রাজনীতি যেভাবে দলিত হয়েছে, নিগৃহীত হয়েছেন রাজনীতিবিদরা তার তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলে যাওয়া তাঁদের কারও পক্ষে সহজ নয়। তিন মাসের তত্ত্বাবধায়ক সরকার তখন দু’বছর স্থায়ী হয়েছিল। আবারও অনির্বাচিত সেই ব্যবস্থা বহাল হলে কত দিন স্থায়ী থাকবে কিংবা তারা নির্বাচনের পথে আদৌ হাঁটবে কি-না সে বিষয়ে সংশয় থাকা অসম্ভব নয়। এই প্রেক্ষাপটে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসলে দেশে আর নির্বাচন নাও হতে পারে’ প্রধানমন্ত্রীর এ আশঙ্কাকে যেমন উড়িয়ে দেয়া যায় না, তেমনি এর ভুল ব্যাখ্যা করে বিতর্ক সৃষ্টিরও কোন অবকাশ আছে বলে মনে হয় না।
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর এই কৈফিয়ত একদিকে যেমন নিজেকে স্বচ্ছভাবে জনগণের সামনে উপস্থাপন এবং তাঁর বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তির ধূম্রজাল অপনোদনের প্রয়াস, অন্যদিকে তা আমাদের মানসিকতা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির দৈনের প্রতি আলোকসম্পাতও। কারও কোন বক্তব্য গভীরভাবে অনুধাবন না করে বিতর্ক সৃষ্টির জন্যই লুফে নেয়া দায়িত্বশীলতার পরিচায়ক হতে পারে না; বিশেষ করে সচেতন রাজনৈতিক মহলের কাছ থেকে এমনটি কেউ আশা করে না। কিন্তু আমাদের দেশে তেমনটি মাঝে মাঝেই হতে দেখা যায়। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর আগের বক্তব্য যাঁরা শুনেছেন তাঁরা জানেন, সেখানে এমন কোন কথাই ছিল না- যার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক চাইলে নির্বাচন হতে না দেয়ার ইঙ্গিত আছে। অথচ এ নিয়ে ক’দিন ধরে কী তুমুল কা-ই না হচ্ছে! অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক নয়, গণতান্ত্রিক সরকারই জনগণের প্রকৃত জিম্মাদার এবং জনগণের কাছেই তারা দায়বদ্ধ- এই সত্যটি অনুধাবনের জন্যই প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন বলে রাজনীতি বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে। তাঁর বক্তব্য এবং বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থানকে নিরপেক্ষভাবে বিশ্লেষণ করলে প্রতীয়মান হয়, এ বিষয়টি কোন ব্যক্তি বা দলবিশেষের নয়, এটি গণতন্ত্রের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার বিষয়; সেই সঙ্গে রাজনীতিকদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষার বিষয়টিও এর সঙ্গে জড়িত। কারণ বিগত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রাজনীতি যেভাবে দলিত হয়েছে, নিগৃহীত হয়েছেন রাজনীতিবিদরা তার তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলে যাওয়া তাঁদের কারও পক্ষে সহজ নয়। তিন মাসের তত্ত্বাবধায়ক সরকার তখন দু’বছর স্থায়ী হয়েছিল। আবারও অনির্বাচিত সেই ব্যবস্থা বহাল হলে কত দিন স্থায়ী থাকবে কিংবা তারা নির্বাচনের পথে আদৌ হাঁটবে কি-না সে বিষয়ে সংশয় থাকা অসম্ভব নয়। এই প্রেক্ষাপটে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসলে দেশে আর নির্বাচন নাও হতে পারে’ প্রধানমন্ত্রীর এ আশঙ্কাকে যেমন উড়িয়ে দেয়া যায় না, তেমনি এর ভুল ব্যাখ্যা করে বিতর্ক সৃষ্টিরও কোন অবকাশ আছে বলে মনে হয় না।
No comments