চরাচর-একাত্তরে বাজিতপুরে গণহত্যা by গাজী এনায়েতুর রহমান
বিজয়ের মাস এলে বাজিতপুরবাসীর মন আঁতকে ওঠে। যদিও বিজয় খুবই আনন্দের; কিন্তু এর সঙ্গে দুঃখ, কষ্ট, বেদনাও জড়িত আছে। যাঁরা স্বজন হারানোর বেদনায় কাতর তাঁরা চান স্বজনের স্মৃতি ধরে রাখতে। স্বজন হারানোদের দীর্ঘ নিঃশ্বাস বাজিতপুরের বাতাস আজও ভারী করে।
যে বীররা স্বাধীনতার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন তাঁদের স্মরণে দীর্ঘ ৪০ বছরেও বাজিতপুরে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ হয়নি। মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্ন থেকে বিজয় পর্যন্ত বাজিতপুরে কয়েক শ নিরীহ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধা রক্তদান করেছেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসে বাজিতপুর কোনো অংশেই পিছিয়ে ছিল না। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদাররা যখন ঢাকায় নির্বিচারে গণহত্যা চালায়, তখন ঢাকার জগন্নাথ হলে পাকিস্তানি সেনাদের নৃশংসতায় শহীদ হন বাজিতপুরের বসন্তপুর গ্রামের মো. হেলাল, বদরুদ্দোজা বাচ্চু ও মো. মাহতাব। একাত্তরের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা হলে বাজিতপুরের অকুতোভয় বীর সন্তানরা ঘরে বসে থাকেননি। তাঁরা প্রতিরোধ লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু করেন। সে সময় বেঙ্গল রেজিমেন্টের হাবিলদার (নাম অজানা), পুলিশের একজন অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক, অধ্যাপক ইয়াকুব মিয়া ও শিক্ষক খোরশেদ আলী শাহদের (আনার মাস্টার) উদ্যোগে বাজিতপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এলাকার শত শত তরুণ যুবককে নিয়ে ট্রেনিং শুরু হয়। স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালীন ৪ মে বাজিতপুর থানার বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা নির্বিচারে লুটপাট, জ্বালাও-পোড়াও, ধ্বংসযজ্ঞ এবং নির্বিচারে গুলি করে গণহত্যা চালায়। ওই দিন কয়েক শ নিরীহ মানুষকে চোখ বেঁধে ট্রাকভর্তি করে নিয়ে যায় অন্য স্থানে। তাঁদের কোথায় হত্যা করা হয়েছে, তা-ও কারো জানা নেই। যেসব গ্রাম ও এলাকায় গণহত্যা, লুটপাট, নির্যাতন ও নারকীয় তাণ্ডব চলে সে এলাকাগুলো হলো_নিতারকান্দি, আলিয়াবাদ, বসাকপাড়া, পৈলনপুর, চন্দ্রগ্রাম, ভাগলপুর, সরারচর, বসন্তপুর, মথুরাপুর, শোভারামপুর, দিঘীরপাড়, আছানপুর, বোয়ালিশিবপুরসহ আরো কয়েকটি এলাকায়। বাজিতপুরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের কারো এখন কোনো খবর কেউ রাখছেন না। তাঁদের অনেকের পরিবারই মানবেতর জীবন যাপন করছে। বাজিতপুরে স্বাধীনতা সংগ্রামে যাঁরা শহীদ হয়েছেন তাঁদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি। বাজিতপুর ডাকবাংলোর মাঠে একটি স্মৃতিসৌধ স্থাপনের কাজ শুরু হলেও দীর্ঘ দুই যুগ ধরে অসম্পূর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। বাজিতপুরে বীর শহীদ ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মরণে এ স্মৃতিসৌধটি কবে নির্মিত হবে, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে বাজিতপুর বাজারের চৌরাস্তায় কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদ কর্তৃক স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের উদ্দেশ্যে একটি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, শিগগির এ স্মৃতিস্তম্ভটির কাজ শুরু করা হবে। পাশাপাশি অসমাপ্ত স্মৃতিস্তম্ভের কাজ সম্পন্ন করার আশ্বাস দায়িত্বশীলরা দিলেও কাজটি সম্পন্ন না হওয়ায় স্ববিরোধিতার চিত্রই পুষ্ট হচ্ছে, যা কারো কাম্য নয়।
গাজী এনায়েতুর রহমান
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসে বাজিতপুর কোনো অংশেই পিছিয়ে ছিল না। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদাররা যখন ঢাকায় নির্বিচারে গণহত্যা চালায়, তখন ঢাকার জগন্নাথ হলে পাকিস্তানি সেনাদের নৃশংসতায় শহীদ হন বাজিতপুরের বসন্তপুর গ্রামের মো. হেলাল, বদরুদ্দোজা বাচ্চু ও মো. মাহতাব। একাত্তরের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা হলে বাজিতপুরের অকুতোভয় বীর সন্তানরা ঘরে বসে থাকেননি। তাঁরা প্রতিরোধ লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু করেন। সে সময় বেঙ্গল রেজিমেন্টের হাবিলদার (নাম অজানা), পুলিশের একজন অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক, অধ্যাপক ইয়াকুব মিয়া ও শিক্ষক খোরশেদ আলী শাহদের (আনার মাস্টার) উদ্যোগে বাজিতপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এলাকার শত শত তরুণ যুবককে নিয়ে ট্রেনিং শুরু হয়। স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালীন ৪ মে বাজিতপুর থানার বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা নির্বিচারে লুটপাট, জ্বালাও-পোড়াও, ধ্বংসযজ্ঞ এবং নির্বিচারে গুলি করে গণহত্যা চালায়। ওই দিন কয়েক শ নিরীহ মানুষকে চোখ বেঁধে ট্রাকভর্তি করে নিয়ে যায় অন্য স্থানে। তাঁদের কোথায় হত্যা করা হয়েছে, তা-ও কারো জানা নেই। যেসব গ্রাম ও এলাকায় গণহত্যা, লুটপাট, নির্যাতন ও নারকীয় তাণ্ডব চলে সে এলাকাগুলো হলো_নিতারকান্দি, আলিয়াবাদ, বসাকপাড়া, পৈলনপুর, চন্দ্রগ্রাম, ভাগলপুর, সরারচর, বসন্তপুর, মথুরাপুর, শোভারামপুর, দিঘীরপাড়, আছানপুর, বোয়ালিশিবপুরসহ আরো কয়েকটি এলাকায়। বাজিতপুরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের কারো এখন কোনো খবর কেউ রাখছেন না। তাঁদের অনেকের পরিবারই মানবেতর জীবন যাপন করছে। বাজিতপুরে স্বাধীনতা সংগ্রামে যাঁরা শহীদ হয়েছেন তাঁদের স্মরণে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি। বাজিতপুর ডাকবাংলোর মাঠে একটি স্মৃতিসৌধ স্থাপনের কাজ শুরু হলেও দীর্ঘ দুই যুগ ধরে অসম্পূর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। বাজিতপুরে বীর শহীদ ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মরণে এ স্মৃতিসৌধটি কবে নির্মিত হবে, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে বাজিতপুর বাজারের চৌরাস্তায় কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদ কর্তৃক স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের উদ্দেশ্যে একটি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, শিগগির এ স্মৃতিস্তম্ভটির কাজ শুরু করা হবে। পাশাপাশি অসমাপ্ত স্মৃতিস্তম্ভের কাজ সম্পন্ন করার আশ্বাস দায়িত্বশীলরা দিলেও কাজটি সম্পন্ন না হওয়ায় স্ববিরোধিতার চিত্রই পুষ্ট হচ্ছে, যা কারো কাম্য নয়।
গাজী এনায়েতুর রহমান
No comments