বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন-ইতিহাসের নির্দেশনা বাস্তবায়িত হয়নি আজও
পূর্ণ স্বাধীনতা লাভের পরও একাত্তরের বিজয় দিবসে বাঙালির শূন্যতা ছিল আরেকটি। স্বজন হারানো মানুষের প্রিয় নেতা, যিনি গোটা স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যাঁর নির্দেশিত পথে গোটা জাতি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, সেই শেখ মুজিব তখনো পাকিস্তানের কারাগারে।
নিখোঁজ স্বজনের কাতারে তিনিও রইলেন সাড়ে সাত কোটি মানুষের হৃদয়ে। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হলো, যখন আমাদের নেতা ফিরে এলেন বাংলায়। যে স্থানে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়ে আগের বছর ৭ মার্চ তিনি বাঙালিকে অস্ত্রহাতে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেখানেই আবার তিনি মিলিত হলেন লাখো মানুষের সঙ্গে। কৃতজ্ঞতা জানালেন জনতা-মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতাকারী সব দেশ ও শক্তিকে। কিন্তু সেই জ্বালাময়ী বক্তৃতা কান্নায় ঢেকে গেল অল্প সময়ের মধ্যে। লাখ লাখ মানুষ সেদিন বাংলার প্রাণপ্রিয় মানুষটিকে চোখ মুছতে দেখল। কিন্তু সেবারও তিনি মনে করিয়ে দিলেন, এ জাতি দমে যেতে জানে না। কবিগুরুর সেই উক্তি- 'সাত কোটি বাঙালিকে মানুষ করোনি'র জবাব দিলেন মঞ্চে দাঁড়িয়ে। বলে দিলেন, বাংলার মানুষ কবির সেই উক্তিকেও বিজয়ের মাধ্যমে ভুল প্রমাণ করতে পেরেছে। বাঙালির কৃতিত্ব, বাঙালির বীরত্ব সেই গৌরব অর্জনে সহায়তা করেছে।
১০ জানুয়ারি বাঙালির কাছে আবেদন জানালেন, ৩০ লাখ মানুষের প্রাণ বিসর্জনের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা সুসংহত করতে হলে দেশ গড়ার কাজে প্রত্যেককে নিয়োজিত হতে হবে। স্বাধীনতার লক্ষ্য যে মানুষের পরিপূর্ণ মুক্তি, সেই কথাও তিনি স্মরণ করিয়ে দিলেন। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে গর্বিত জাতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ঘোষণা মানুষকে উজ্জীবিত করে তুলল। পুড়ে যাওয়া ভিটা আর সর্বস্ব হারানো মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি করলেন তিনি পরবর্তীকালেও। আমরণ সেই উদ্দীপনাকে কাজে লাগিয়ে দেশ গড়ায় নিজের অবদান রেখে গেছেন তিনি।
সেই নির্দেশনা ও পথ ধরে বাংলাদেশ আজকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছে। ধ্বংসস্তূপের বাংলাদেশ আজকে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো ক্ষেত্র তৈরি করেছে। পরাক্রমশালী দেশগুলোও যেখানে অর্থনৈতিক ধস ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বহু দেশকে পেছনে ফেলে দিতে সক্ষম হয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান কয়েক গুণ বেড়ে এখন ঈর্ষণীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, খাদ্য, গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টিতে যুগান্তকারী সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু তার পরও বঙ্গবন্ধু উল্লিখিত অনেক জরুরি উন্নয়নই আমাদের অর্জন করা সম্ভব হয়নি। দারিদ্র্য আমাদের বড় সমস্যা হয়ে রয়ে গেছে। ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ফারাক কিছুটা কমিয়ে আনতে পারলেও সমাজে বিত্তের দাপট বিদ্যমান। আছে দুর্নীতি আর হানাহানির মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, এমনকি বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতাবিরোধী একাত্তরের শত্রুবাহিনীর দোসরদের বিচার শুরু করতেও আমাদের ৪০টি বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আজ বিতর্কিত করার ঘৃণ্য প্রয়াস চলছে। গণতন্ত্র থাকলেও গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। তেমনি পরিবেশে আমরা ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারির সেই দিকনির্দেশনার কথা স্মরণ করতে পারি। সেই নির্দেশনাকে পাথেয় করে আমরা মানুষের পরিপূর্ণ মুক্তি নিশ্চিত করতে পারি। আর তাহলেই নেতার প্রতি প্রকৃত সম্মান ও একাত্তরে ৩০ লাখ শহীদের আত্মা শান্তি পাবে।
১০ জানুয়ারি বাঙালির কাছে আবেদন জানালেন, ৩০ লাখ মানুষের প্রাণ বিসর্জনের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা সুসংহত করতে হলে দেশ গড়ার কাজে প্রত্যেককে নিয়োজিত হতে হবে। স্বাধীনতার লক্ষ্য যে মানুষের পরিপূর্ণ মুক্তি, সেই কথাও তিনি স্মরণ করিয়ে দিলেন। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে গর্বিত জাতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ঘোষণা মানুষকে উজ্জীবিত করে তুলল। পুড়ে যাওয়া ভিটা আর সর্বস্ব হারানো মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি করলেন তিনি পরবর্তীকালেও। আমরণ সেই উদ্দীপনাকে কাজে লাগিয়ে দেশ গড়ায় নিজের অবদান রেখে গেছেন তিনি।
সেই নির্দেশনা ও পথ ধরে বাংলাদেশ আজকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছে। ধ্বংসস্তূপের বাংলাদেশ আজকে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো ক্ষেত্র তৈরি করেছে। পরাক্রমশালী দেশগুলোও যেখানে অর্থনৈতিক ধস ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে বহু দেশকে পেছনে ফেলে দিতে সক্ষম হয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান কয়েক গুণ বেড়ে এখন ঈর্ষণীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, খাদ্য, গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টিতে যুগান্তকারী সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু তার পরও বঙ্গবন্ধু উল্লিখিত অনেক জরুরি উন্নয়নই আমাদের অর্জন করা সম্ভব হয়নি। দারিদ্র্য আমাদের বড় সমস্যা হয়ে রয়ে গেছে। ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ফারাক কিছুটা কমিয়ে আনতে পারলেও সমাজে বিত্তের দাপট বিদ্যমান। আছে দুর্নীতি আর হানাহানির মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, এমনকি বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতাবিরোধী একাত্তরের শত্রুবাহিনীর দোসরদের বিচার শুরু করতেও আমাদের ৪০টি বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আজ বিতর্কিত করার ঘৃণ্য প্রয়াস চলছে। গণতন্ত্র থাকলেও গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। তেমনি পরিবেশে আমরা ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারির সেই দিকনির্দেশনার কথা স্মরণ করতে পারি। সেই নির্দেশনাকে পাথেয় করে আমরা মানুষের পরিপূর্ণ মুক্তি নিশ্চিত করতে পারি। আর তাহলেই নেতার প্রতি প্রকৃত সম্মান ও একাত্তরে ৩০ লাখ শহীদের আত্মা শান্তি পাবে।
No comments