সাম্প্র্রদায়িকতার বিষবৃক্ষকে উপড়ে ফেলুন by মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী
কক্সবাজারের রামু, উখিয়ায় বৌদ্ধবিহার ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর নৃশংস, বর্বরোচিত হামলা ও নাশকতার ঘটনায় দেশবাসী স্তম্ভিত। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পেতেই হবে। বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ তার
অসাম্প্র্রদায়িক চেতনা এবং সাম্প্র্রদায়িক সম্প্র্রীতির নিবিড় বন্ধনের কারণে সারাবিশ্বে অনুকরণীয় উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে। এই ঘৃণ্য ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নস্যাতের নোংরা ষড়যন্ত্র। জামায়াত-বিএনপি জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশ যে জঙ্গি রাষ্ট্রের কলঙ্ক মাথায় নিয়েছিল, তা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা মুছে দিয়ে বাংলাদেশকে সৌভ্রাতৃত্বের দেশ হিসেবে বিশ্বসভায় উপস্থাপন করেছেন। বাংলাদেশের এই সাফল্য যাদের গাত্রদাহের কারণ, তারাই এ ঘটনার জন্য দায়ী। রামুর ঘটনা ২০০১ সালের অক্টোবরে বিএনপি-জামায়াতের দেশব্যাপী সংখ্যালঘুদের ওপর তাণ্ডবেরই হুবহু সংস্করণ। যারা ইসলামের নামে এসব নাশকতা করেছে, তারা ইসলামেরও বড় শত্রু। হজরত মোহাম্মদ (সা.) হচ্ছেন বিশ্বনবী। সবার নবী। কেবল মুসলমানদের জন্য তিনি পৃথিবীতে প্রেরিত হননি। বরং মানবকুলের জন্য প্রেরিত হয়েছিলেন। কোরআনুল কারিমের সুরা সা'বার একটি আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, 'ওমা আরসালনা ইল্লা কাফাতা লিনাসে বাসিরান ওয়া নাজিরা।' অর্থ :'হে রাসূল, আমি আপনাকে গোটা মানব জাতির ভীতি প্রদর্শনকারী ও সুসংবাদ দানকারী হিসেবে পাঠিয়েছি।' আর তিনি তাঁর জীবদ্দশাতেই তা প্রমাণ করেছেন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করে মদিনা রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে। মদিনা ছিল 'কসমোপলিটান টাউন' বা বিভিন্ন ধর্ম, জাতির বাসস্থান। তিনি সেখানে গড়ে তুললেন বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ ও শান্তির রাষ্ট্র, যা আগে ছিল শতধাবিভক্ত ও যুদ্ধবিধ্বস্ত। মদিনার সব ধর্ম, বর্ণ, জাতির লোকদের ডাকলেন শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে। বললেন, 'এসো, আমরা লিখিত একটা সংবিধান তৈরি করি, যা হবে শান্তি ও সম্প্র্র্রীতির মূল প্রতীক।' সবাই একমত হলেন। মদিনা সনদ লেখা শুরু হলো। এতে ৪৭টি ধারা ছিল। যেমন_ মদিনা সনদে স্বাক্ষর দানকারী ইহুদি, খ্রিস্টান, পৌত্তলিক ও মুসলমান সম্প্র্র্রদায় সমান নাগরিক অধিকার ভোগ করবে এবং সবাই মিলে একটি সাধারণ জাতি গঠন করবে। মদিনা রাষ্ট্রে পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় থাকবে। মুসলমান ও অমুসলমান সম্প্র্রদায় বিনা দ্বিধায় নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। কেউ কারও ধর্ম পালনে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। মদিনা সনদে আরও উল্লেখ ছিল_ স্বাক্ষরকারী সম্প্র্রদায়ের কোনো ব্যক্তি অপরাধ করলে তা ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। এর জন্য পুরো সম্প্র্রদায়কে দোষী করা যাবে না। এ ছাড়া প্রিয় নবী (সা.) বিদায় হজের ভাষণে বলেছেন, 'সাবধান! তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না।' রাসূল (সা.) বলেছেন, 'মুসলমানদের অন্যায়ভাবে কষ্ট দিলে একটি কবিরা গুনাহ্ আর অমুসলিমকে কষ্ট দিলে দুটি কবিরা গুনাহ্। একটি হচ্ছে তাকে মানুষ হিসেবে কষ্ট দেওয়ার কারণে, আরেকটি গুনাহ্ ইসলামকে তার সামনে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করাতে।'
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেন (সূরা আন'আম, আয়াত-১০৮)_ ওলা তাসাবুল লাজিনা যাদউনা মিনদুলিল্লাহে ফায়াসুবুল্লাহা আদওয়ান বেগাইরে এলমিন। অর্থ :তোমরা (অন্য ধর্মাবলম্বীদের) দেব-দেবী, যাদের তারা উপাসনা করে, তাদের গালি দিও না। তাহলে তারা শত্রুতাবশত ও অজান্তে আল্লাহকে গালি দেবে। উক্ত আয়াতে দেব-দেবীকে গালি দিতে নিষেধ করা হয়েছে; ভাঙা তো দূরের কথা। তাহলে ইসলাম অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি কত সহনশীল! (সূরা বাক্বারা, আয়াত-২৫৬) লা ইকরাহা ফি দিন। অর্থ : ধর্ম নিয়ে করো না জোরজবরদস্তি বা বাড়াবাড়ি নয়।
নবীজি (সা.) ইচ্ছা থাকা সত্ত্ব্বেও নিজের আপন চাচা আবু তালেবকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করাতে পারেননি। পবিত্র কোরআনে আছে (সূরা অলেক্বাছাছ, আয়াত-৫৬), ইন্নাকা লা তাহদি মান আহবত্তা ওলা কিন্নালাহা য়াহদি মাই এশাউ। অর্থ :হে নবী, আপনি যাকে ভালোবাসেন তাকে হিদায়াত দিতে পারবেন না। বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন তাকে হিদায়াত দান করেন।
বিএনপি-জামায়াত সাম্প্র্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টি করে ধর্মীয় সম্প্র্র্রীতি বিনষ্ট করতে তৎপর। এ দেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নিশ্চয়ই তাদের মনের ভেতর একটি গভীর বেদনা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। আমি তাদের বলতে চাই, তারা যেন হতাশাগ্রস্ত না হন। রামুর সেই ভয়ঙ্কর রাতেও এমন কিছু মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই উন্মত্ত ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। এ দেশে এ রকম অসংখ্য মানুষ আছে। তারাই এ দেশের শক্তি। এ দেশের মানুষ সাম্প্র্র্রদায়িক নয়। এই অসাম্প্র্রদায়িক বাংলা ও বাঙালির শেষ নির্ভরযোগ্য ঠিকানা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মুক্তিযুদ্ধে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান যেভাবে পাশাপাশি যুদ্ধ করে বুকের রক্ত দিয়ে দেশটাকে স্বাধীন করেছে, ঠিক সেভাবে আবার সবাই মিলে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে এ দেশ থেকে চিরদিনের জন্য সাম্প্র্র্রদায়িকতার বিষবৃক্ষকে উপড়ে ফেলতে হবে।
মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী :চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেন (সূরা আন'আম, আয়াত-১০৮)_ ওলা তাসাবুল লাজিনা যাদউনা মিনদুলিল্লাহে ফায়াসুবুল্লাহা আদওয়ান বেগাইরে এলমিন। অর্থ :তোমরা (অন্য ধর্মাবলম্বীদের) দেব-দেবী, যাদের তারা উপাসনা করে, তাদের গালি দিও না। তাহলে তারা শত্রুতাবশত ও অজান্তে আল্লাহকে গালি দেবে। উক্ত আয়াতে দেব-দেবীকে গালি দিতে নিষেধ করা হয়েছে; ভাঙা তো দূরের কথা। তাহলে ইসলাম অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি কত সহনশীল! (সূরা বাক্বারা, আয়াত-২৫৬) লা ইকরাহা ফি দিন। অর্থ : ধর্ম নিয়ে করো না জোরজবরদস্তি বা বাড়াবাড়ি নয়।
নবীজি (সা.) ইচ্ছা থাকা সত্ত্ব্বেও নিজের আপন চাচা আবু তালেবকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করাতে পারেননি। পবিত্র কোরআনে আছে (সূরা অলেক্বাছাছ, আয়াত-৫৬), ইন্নাকা লা তাহদি মান আহবত্তা ওলা কিন্নালাহা য়াহদি মাই এশাউ। অর্থ :হে নবী, আপনি যাকে ভালোবাসেন তাকে হিদায়াত দিতে পারবেন না। বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন তাকে হিদায়াত দান করেন।
বিএনপি-জামায়াত সাম্প্র্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টি করে ধর্মীয় সম্প্র্র্রীতি বিনষ্ট করতে তৎপর। এ দেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নিশ্চয়ই তাদের মনের ভেতর একটি গভীর বেদনা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। আমি তাদের বলতে চাই, তারা যেন হতাশাগ্রস্ত না হন। রামুর সেই ভয়ঙ্কর রাতেও এমন কিছু মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই উন্মত্ত ধর্মান্ধদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। এ দেশে এ রকম অসংখ্য মানুষ আছে। তারাই এ দেশের শক্তি। এ দেশের মানুষ সাম্প্র্র্রদায়িক নয়। এই অসাম্প্র্রদায়িক বাংলা ও বাঙালির শেষ নির্ভরযোগ্য ঠিকানা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মুক্তিযুদ্ধে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান যেভাবে পাশাপাশি যুদ্ধ করে বুকের রক্ত দিয়ে দেশটাকে স্বাধীন করেছে, ঠিক সেভাবে আবার সবাই মিলে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে এ দেশ থেকে চিরদিনের জন্য সাম্প্র্র্রদায়িকতার বিষবৃক্ষকে উপড়ে ফেলতে হবে।
মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী :চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ
No comments