বরিশালের চামড়া ব্যবসা-ঢাকার বাইরেও শৃঙ্খলা চাই

পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়া বাজারজাতকরণ নিয়ে সামগ্রিক যে অব্যবস্থাপনা প্রতিবছর চোখে পড়ে, বরিশালের ট্যানারি ব্যবসায়ীদের পুঁজি সংকট তা থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। শুক্রবার সমকালের লোকালয় পাতায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যাচ্ছে, ঢাকার আড়তদারদের কাছে দেড় কোটি টাকা বকেয়া থাকার কারণে


বরিশালের ব্যবসায়ীরা এবার চাহিদা অনুযায়ী চামড়া কিনতে পারবেন না বলে শঙ্কায় আছেন। আবার বড় চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছে স্থানীয় দালালের আনাগোনাও চামড়ার বাজারে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির ইঙ্গিত দিচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ভরসা হতে পারত ব্যাংক ঋণ। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত ছাড়া অন্য ব্যাংকগুলোর এ ব্যাপারে আগ্রহ নেই বললেই চলে। বলাবাহুল্য, সেই ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রেও রাজধানীর ব্যবসায়ীরা প্রাধান্য পেয়ে থাকেন। যে কারণে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ ও বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে ঢাকার বাইরের সংকট কাটছেই না। মফস্বলের ব্যবসায়িক বিশৃঙ্খলা রাজধানীতেও ধাক্কা দেয়। আমরা চাইব, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ নীতিনির্ধারকরা ঢাকার বাইরেও নজর দিক। সিংহভাগ চামড়া যে মফস্বল এলাকা থেকেই আসে, সেটা ভুলে যাওয়া চলবে না। রাজধানীর বাইরের জেলা ও বিভাগীয় শহরগুলো চামড়া পাচারকারীদেরও প্রধান টার্গেট। সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি অপেক্ষাকৃত শিথিল থাকে। সেই সুযোগে জেলা শহর থেকেই সীমান্তপথে কাঁচা চামড়া পাচার হয়। এবারও বরিশালে স্থানীয় দালালরা তৎপর বলে সমকালের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রকৃত ব্যবসায়ীরা। এ ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়ানো উচিত। কেবল বৈধ ব্যবসায়ীরাই যাতে চামড়া কিনতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে প্রশাসনকেই। বরিশালের মতো বিভাগীয় কিংবা জেলা সদর থেকে আসা চামড়া ব্যবসায়ীরা যাতে ঢাকার আড়তগুলোতে পাওনা ঠিকমতো বুঝে পান, বকেয়া প্রাপ্য পান, সে ব্যাপারেও শৃঙ্খলা কি প্রতিষ্ঠা করা যায় না? অতীতে দেখা গেছে, ঢাকায় চামড়া সংগ্রহ ও কেনাবেচায় যতটা সুশৃঙ্খলা, ঢাকার বাইরে যেন ততটাই বিশৃঙ্খলা। এর পুনরাবৃত্তি আমরা দেখতে চাই না। এতে করে সরকার যেমন রাজস্ব হারায়, তেমনি বিপাকে পড়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং চামড়াজাত পণ্যশিল্প। সেটা ঢাকা, বরিশাল কিংবা দেশের অন্য কোনো শহর_ কারও জন্যই কল্যাণকর হতে পারে না।
 

No comments

Powered by Blogger.