অন্য রকম ঈদ- বড়াই
বছর কয়েক আগের ঘটনা। কোরবানির ঈদে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছি। ঈদের পর স্থানীয় নির্বাচন। সে উপলক্ষে চারদিকে নির্বাচনী আমেজ। মিছিল-মিটিং হচ্ছে। প্রার্থীরা তাঁদের সমর্থকদের নিয়ে ‘শো-ডাউন’ করছেন।
গ্রামগঞ্জের নির্বাচনগুলোতে একটা উৎসব উৎসব ভাব থাকে। চায়ের দোকানগুলোতে প্রার্থীরা তাঁদের সমর্থকদের জন্য ফ্রি চা-বিস্কুটের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। লোকজন মহা উৎসাহে বিস্কুট-চা খাচ্ছে। এ রকম একটা দোকানে বসে আমিও মাগনা চা খাচ্ছি।
এবারের নির্বাচনে গ্রামের দুই প্রভাবশালী পরিবার থেকে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে—মণ্ডল পরিবার ও খান পরিবার। এই দুই পরিবারের রেষারেষি সুদীর্ঘ দিনের এবং এটা সর্বজনবিদিত।
চায়ের দোকানে লোকজন বলাবলি করছে, মণ্ডল পরিবার নাকি বিশাল আকৃতির এক গরু কিনেছে। গরু নাকি দেখার মতো! কিছুক্ষণ পরই অবশ্য গরুর দেখা মিলল। মণ্ডলের কর্মী বাহিনী গরুর গলায় ফুলের মালা পরিয়ে গ্রামময় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এত বড় গরুর দাম জিজ্ঞেস না করলে ক্রেতার মান থাকে না। অবশ্য জিজ্ঞেস করতেও হলো না। চিৎকার করে একজন বলছে—মণ্ডলবাড়ির গরু। এক লাখ ২০ হাজার টাকা দাম। হাটের সবচেয়ে বড় গরু। গরু ইস্যুতে খান পরিবার এখন কী করে, সেটাই দেখার বিষয়। সে জন্য অবশ্য বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো। তারাও বিশাল এক গরু নিয়ে গ্রামে ফিরল। গ্রামের দুই প্রভাবশালী পরিবার কোরবানির গরুকেই বেছে নিয়েছে তাদের প্রতিপত্তি দেখানোর জন্য। চায়ের দোকানগুলোতে তুমুল আলোচনা। কার গরু বড়—খানদের নাকি মণ্ডলদের। এত আলোচনার পরও লোকজন কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারল না।
পরদিন সকালের ঘটনা। হইচই, হট্টগোল শুনে বাইরে বেরিয়ে এলাম। একটা উট আনা হয়েছে গ্রামে। উট ঘিরে বাচ্চা, নারী, পুরুষের ভিড়। কিছুক্ষণের মধ্যে তিন-চার গ্রামের লোক এসে ছোটখাটো একটা মেলা বসে গেল। জানা গেল, রহিমউদ্দিনের সৌদিপ্রবাসী ছেলে আসগর তিন লাখ টাকা দিয়ে ঢাকার গাবতলী হাট থেকে এই উট কিনেছে।
উট দেখে মণ্ডল ও খান পরিবারের সমর্থকদের মুখ চুন হয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত এক কৃষকের ছেলের কাছে তাদের নেতারা হেরে গেল, বড়ই লজ্জার বিষয়।
গ্রামের মানুষ খুবই মজা পেল এই ঘটনায়। তারপর একটা ছড়া সারা গ্রামের মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ল—
‘মণ্ডল আর খান
চাষার ছেলে কাইড়া নিছে ইজ্জত আর মান!’
গিয়াস উদ্দিন আনসারী
রাজশাহী।
এবারের নির্বাচনে গ্রামের দুই প্রভাবশালী পরিবার থেকে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে—মণ্ডল পরিবার ও খান পরিবার। এই দুই পরিবারের রেষারেষি সুদীর্ঘ দিনের এবং এটা সর্বজনবিদিত।
চায়ের দোকানে লোকজন বলাবলি করছে, মণ্ডল পরিবার নাকি বিশাল আকৃতির এক গরু কিনেছে। গরু নাকি দেখার মতো! কিছুক্ষণ পরই অবশ্য গরুর দেখা মিলল। মণ্ডলের কর্মী বাহিনী গরুর গলায় ফুলের মালা পরিয়ে গ্রামময় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এত বড় গরুর দাম জিজ্ঞেস না করলে ক্রেতার মান থাকে না। অবশ্য জিজ্ঞেস করতেও হলো না। চিৎকার করে একজন বলছে—মণ্ডলবাড়ির গরু। এক লাখ ২০ হাজার টাকা দাম। হাটের সবচেয়ে বড় গরু। গরু ইস্যুতে খান পরিবার এখন কী করে, সেটাই দেখার বিষয়। সে জন্য অবশ্য বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো। তারাও বিশাল এক গরু নিয়ে গ্রামে ফিরল। গ্রামের দুই প্রভাবশালী পরিবার কোরবানির গরুকেই বেছে নিয়েছে তাদের প্রতিপত্তি দেখানোর জন্য। চায়ের দোকানগুলোতে তুমুল আলোচনা। কার গরু বড়—খানদের নাকি মণ্ডলদের। এত আলোচনার পরও লোকজন কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারল না।
পরদিন সকালের ঘটনা। হইচই, হট্টগোল শুনে বাইরে বেরিয়ে এলাম। একটা উট আনা হয়েছে গ্রামে। উট ঘিরে বাচ্চা, নারী, পুরুষের ভিড়। কিছুক্ষণের মধ্যে তিন-চার গ্রামের লোক এসে ছোটখাটো একটা মেলা বসে গেল। জানা গেল, রহিমউদ্দিনের সৌদিপ্রবাসী ছেলে আসগর তিন লাখ টাকা দিয়ে ঢাকার গাবতলী হাট থেকে এই উট কিনেছে।
উট দেখে মণ্ডল ও খান পরিবারের সমর্থকদের মুখ চুন হয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত এক কৃষকের ছেলের কাছে তাদের নেতারা হেরে গেল, বড়ই লজ্জার বিষয়।
গ্রামের মানুষ খুবই মজা পেল এই ঘটনায়। তারপর একটা ছড়া সারা গ্রামের মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ল—
‘মণ্ডল আর খান
চাষার ছেলে কাইড়া নিছে ইজ্জত আর মান!’
গিয়াস উদ্দিন আনসারী
রাজশাহী।
No comments