যানজট নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ- নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে বগুড়া শহরে দিনে চলছে বাস by আনোয়ার পারভেজ

যানজট নিয়ন্ত্রণে দিনের বেলা বগুড়া শহরের ভেতর দিয়ে বাস, ট্রাকসহ সব ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও শহরের ব্যস্ত সাতমাথা এলাকা হয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে বগুড়া-শেরপুর-ধুনট পথের বাস। এতে শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের উদ্যোগ কার্যত ভেস্তে যাচ্ছে।


বগুড়ার পুলিশ সুপার মোজামেঞ্চল হক জানান, বগুড়া শহরের যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যানজট নিরসনে কারও কোনো রকম সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। শহরের ভেতর দিয়ে বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত কেউ মানছে না।
বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপ সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া-শেরপুর-ধুনট পথে ‘করতোয়া গেটলক সার্ভিস’ নামের ৩৬টি বাস প্রতিদিন চলাচল করে। পুলিশ বলছে, জেলার অভ্যন্তরীণ পথে বাস চলাচলের জন্য শহরের স্টেশন এলাকার হাড্ডিপট্টিতে আন্ত থানা বাস টার্মিনাল থাকলেও করতোয়া গেটলক সার্ভিসের বাসগুলো টার্মিনালে না গিয়ে শহরের সাতমাথাসংলগ্ন স্টেশন রোডে দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে। বাসগুলো সাতমাথাসংলগ্ন সাতানী হাউসের পাশে শেরপুর রোডে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে। শহরের ব্যস্ত দুটি সড়কে এভাবে যাত্রী ওঠানামা করায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, সাতমাথাসংলগ্ন নওয়াববাড়ি রোডে দিনের বেলা একটি কাভার্ড ভ্যান ঢুকে পড়ায় চালকের সঙ্গে বচসা চলছে ট্রাফিক পুলিশের। একটু দূরেই সাতানী হাউসের সামনে একটি বাস যাত্রীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে। আরেকটি বাস স্টেশন রোড হয়ে সাতমাথা এসকে ভবনের সামনে থেমে আছে। জানতে চাইলে করতোয়া গেটলক সার্ভিসের চালক বেলাল হোসেন জানান, মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত মোতাবেকই গাড়ি চালানো হচ্ছে এবং সাতমাথা চত্বরে যাত্রী তোলা হচ্ছে।
কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য রেজাউল করিম জানান, সকাল আটটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শহরের ভেতর দিয়ে সব ধরনের যান চলাচলই নিষিদ্ধ। বাসচালকেরা সে নিষেধাজ্ঞা মানছেন না। ট্রাকচালক আলী আজম বলেন, ‘দিনের বেলা বাস চলাচল করতে পারলে ট্রাক চালানো যাবে না কেন?’ বগুড়া ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট নাহিদ হোসেন জানান, ট্রাফিক পুলিশের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এভাবে বাস না চালানোর জন্য ১৭ অক্টোবর বাসমালিকদের চিঠি দিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। তার পরও চালানো হচ্ছে। দু-এক দিনের মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ দিনের বেলা চলাচলকারী সব ধরনের যানবাহনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক সাগর কুমার রায় দাবি করেন, শহরের যানজটের জন্য কোনোক্রমেই করতোয়া গেটলক বাস দায়ী নয়। কারণ, এসব বাস শহরের স্টেশন সড়কের একটি পেট্রলপাম্পে অপেক্ষা করে। ১৫ মিনিট পর পর একটি করে বাস শেরপুর রোডের সাতানী হাউসের সামনে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সাতমাথা চত্বরে সব সময়ই এক থেকে দেড় শ অটোরিকশা দাঁড়িয়ে থাকে। এগুলোই যানজটের কারণ।

No comments

Powered by Blogger.