চলমান সংকটের নেপথ্যে by রেয়াজুল ইসলাম রাজু
বাংলাদেশের রাজনীতি একটি অস্থির সময় পার করছে। রাজনীতির মাঠের এই অস্থিরতা সমাজের সর্বত্রই বিরাজমান। ফলে সমাজের সামগ্রিক অবস্থা অনেকটাই ঘোলাটে। দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির।
এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির ব্যাখ্যা, বিশেল্গষণ, গবেষণা, সমালোচনা ও উত্তরণের বিষয়ে জ্ঞানী-গুণী, পণ্ডিত, তাত্তি্বক, গবেষক, চিন্তক ও বিশেল্গষকরা হরহামেশাই ভাবছেন ও এ থেকে মুক্তির জন্য নানা সুপারিশও প্রদান করছেন। কিন্তু এসব সুপারিশের সুফল কি জনগণ ভোগ করতে পারছে? বাস্তবতা হলো, চলমান সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে সমস্যাগুলোর মূলে যেতে হবে। বিষয়টি কষ্টসাধ্য হলেও এর কোনো বিকল্প নেই। কারণ ঘটনার মূল কারণ ও পরিধি চিহ্নিত করতে পারলেই এসবের সমাধান সম্ভব।
যেমন দুর্নীতিকে যদি সব সমস্যার মূল বলে চিহ্নিত করা হয় তাহলেও এটা ঠিক হবে না। কারণ দুর্নীতি হলো অনেকগুলো সমস্যার ফলাফল মাত্র। কাজেই দুর্নীতির মূল কারণ খুঁজতে হবে। সংকটের শিকড় সন্ধান না করে শুধু ফলাফল নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে জনগণ এর কোনো সুফল পাচ্ছে না। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আপতিত কোনো সমস্যা বা চলমান ঘটনা নিয়ে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণ থেকে দূরে থাকার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। ঘটনার শুরুতেই নিরপেক্ষতা হারিয়ে কারণ অনুসন্ধান ও অতি রাজনীতিকরণের ফলেই মূলত কোনো সমস্যার যথার্থ কারণ উদ্ঘাটিত হয় না। ফলে রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হয়। বলা চলে, এভাবেই দিন দিন পরিস্থিতির অবনতি হয়ে জাতীয় সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের অনেকেই ইতিহাসের দিকে তাকায় না; ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না। অথচ এই শিক্ষাটা ছিল অতি জরুরি। সমাজের মানুষ আজ পাপাচারে লিপ্ত, অন্ধকারে নিমজ্জিত। অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিরই নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটছে। নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের এই নৈতিক অবক্ষয় জাতির জন্য অশনিসংকেতই বটে। এমতাবস্থায় এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের পথও জানা নেই। কিন্তু জনগণকে হতাশ হলে চলবে না; রাস্তা বের করে নিতেই হবে।
অতীতের রাজনীতিবিদদের নৈতিক অনুপ্রেরণায় ছিল দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগ। সেই সময়কার রাজনীতিকদের জীবনধর্মী শিক্ষা গ্রহণ আজ জরুরি হয়ে পড়েছে। মাস্টারদা সূর্য সেন, প্রীতিলতা, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, সোহরাওয়ার্দী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মওলানা ভাসানী, মণি সিংহ প্রমুখ ব্যক্তিত্বের রাজনৈতিক আদর্শ ও মূল্যবোধগুলোর ধারণ, সংরক্ষণ ও লালন-পালন করতে হবে। এটা বুঝতে হবে যে, নৈতিকতার ভিত মজবুত হলেই এসব নেতিবাচক মূল্যবোধ, দৃষ্টিভঙ্গি, অভ্যাস, আচরণ ও বিশ্বাস দূরীভূত হবে। বাংলাদেশের এই হতাশাজনক পরিস্থিতির মূলে রয়েছে নৈতিক অধঃপতন। এই অধঃপতন থেকে মুক্তির জন্য নৈতিকতা বিষয়ক শিক্ষা, প্রশিক্ষণের পাঠক্রম ও কারিকুলাম তৈরি করে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক পেশাজীবীদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষণ-প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি সকল ধর্মের মূলনীতি সংবলিত ধর্মনৈতিক শিক্ষাব্যবস্থারও প্রচলন করতে হবে। তবেই একটি সুস্থ সমাজের পথে বাংলাদেশ অগ্রসর হতে পারবে।
সুস্থ সমাজের প্রয়োজনে দরকার সুস্থ রাজনীতি। সুস্থ রাজনীতির জন্য দরকার সুস্থ রাজনীতিক। সুস্থ রাজনীতিকের জন্য প্রয়োজন নৈতিকতা সংবলিত আদর্শ ও মূল্যবোধ অর্থাৎ নৈতিকতাসম্পন্ন রাজনীতিবিদরাই সুস্থ সমাজ-রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারেন। এছাড়া আর অন্য কোনো উপায় নেই। কারণ, রাজনীতিবিদরাই একটি জাতির নেতৃত্ব দেন। সে কারণেই রাজনীতিবিদদেরই প্রথমে নৈতিক গুণে গুণান্বিত হতে হবে।
য়কলেজ শিক্ষক, দিনাজপুর
যেমন দুর্নীতিকে যদি সব সমস্যার মূল বলে চিহ্নিত করা হয় তাহলেও এটা ঠিক হবে না। কারণ দুর্নীতি হলো অনেকগুলো সমস্যার ফলাফল মাত্র। কাজেই দুর্নীতির মূল কারণ খুঁজতে হবে। সংকটের শিকড় সন্ধান না করে শুধু ফলাফল নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে জনগণ এর কোনো সুফল পাচ্ছে না। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আপতিত কোনো সমস্যা বা চলমান ঘটনা নিয়ে সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ এবং নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণ থেকে দূরে থাকার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। ঘটনার শুরুতেই নিরপেক্ষতা হারিয়ে কারণ অনুসন্ধান ও অতি রাজনীতিকরণের ফলেই মূলত কোনো সমস্যার যথার্থ কারণ উদ্ঘাটিত হয় না। ফলে রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হয়। বলা চলে, এভাবেই দিন দিন পরিস্থিতির অবনতি হয়ে জাতীয় সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের অনেকেই ইতিহাসের দিকে তাকায় না; ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না। অথচ এই শিক্ষাটা ছিল অতি জরুরি। সমাজের মানুষ আজ পাপাচারে লিপ্ত, অন্ধকারে নিমজ্জিত। অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিরই নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটছে। নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের এই নৈতিক অবক্ষয় জাতির জন্য অশনিসংকেতই বটে। এমতাবস্থায় এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের পথও জানা নেই। কিন্তু জনগণকে হতাশ হলে চলবে না; রাস্তা বের করে নিতেই হবে।
অতীতের রাজনীতিবিদদের নৈতিক অনুপ্রেরণায় ছিল দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগ। সেই সময়কার রাজনীতিকদের জীবনধর্মী শিক্ষা গ্রহণ আজ জরুরি হয়ে পড়েছে। মাস্টারদা সূর্য সেন, প্রীতিলতা, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, সোহরাওয়ার্দী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মওলানা ভাসানী, মণি সিংহ প্রমুখ ব্যক্তিত্বের রাজনৈতিক আদর্শ ও মূল্যবোধগুলোর ধারণ, সংরক্ষণ ও লালন-পালন করতে হবে। এটা বুঝতে হবে যে, নৈতিকতার ভিত মজবুত হলেই এসব নেতিবাচক মূল্যবোধ, দৃষ্টিভঙ্গি, অভ্যাস, আচরণ ও বিশ্বাস দূরীভূত হবে। বাংলাদেশের এই হতাশাজনক পরিস্থিতির মূলে রয়েছে নৈতিক অধঃপতন। এই অধঃপতন থেকে মুক্তির জন্য নৈতিকতা বিষয়ক শিক্ষা, প্রশিক্ষণের পাঠক্রম ও কারিকুলাম তৈরি করে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক পেশাজীবীদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষণ-প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি সকল ধর্মের মূলনীতি সংবলিত ধর্মনৈতিক শিক্ষাব্যবস্থারও প্রচলন করতে হবে। তবেই একটি সুস্থ সমাজের পথে বাংলাদেশ অগ্রসর হতে পারবে।
সুস্থ সমাজের প্রয়োজনে দরকার সুস্থ রাজনীতি। সুস্থ রাজনীতির জন্য দরকার সুস্থ রাজনীতিক। সুস্থ রাজনীতিকের জন্য প্রয়োজন নৈতিকতা সংবলিত আদর্শ ও মূল্যবোধ অর্থাৎ নৈতিকতাসম্পন্ন রাজনীতিবিদরাই সুস্থ সমাজ-রাষ্ট্র নির্মাণ করতে পারেন। এছাড়া আর অন্য কোনো উপায় নেই। কারণ, রাজনীতিবিদরাই একটি জাতির নেতৃত্ব দেন। সে কারণেই রাজনীতিবিদদেরই প্রথমে নৈতিক গুণে গুণান্বিত হতে হবে।
য়কলেজ শিক্ষক, দিনাজপুর
No comments