যা নিয়ে আছি- প্রশ্ন আছে, উত্তর নেই

একসঙ্গে অনেক বই পড়ি এখন পড়ছি ওরহান পামুকের একটি উপন্যাস। পড়ছি জাপানের লেখক মুরাকামির একটা উপন্যাসও। আমি বিচ্ছিন্নভাবেই বই পড়ি। এ কারণে একসঙ্গে অনেক বই পড়া হয়।


ইতিহাস, দর্শন, কবিতা, গল্প, উপন্যাস সব একসঙ্গে পড়ি। প্রিয় লেখক অনেকেই: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আলবেয়ার কামু, সার্ত্রে, জীবনানন্দ দাশ, টলস্টয় থেকে শুরু করে শহীদুল জহির, নাসরীন জাহান, শাহাদুজ্জামান, হরিশংকর জলদাস প্রমুখ। আমার লেখালেখির নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। মন খারাপ হলে কবিতা লিখি। আমি মনে করি, কবিতা হলো নিজের সঙ্গে নিজের কথা বলা।

আমার হিয়ার মাঝে
রবীন্দ্রনাথের গান ও পুরোনো দিনের গান বেশি শোনা হয়। বিটোফেন, মোৎসার্ট থেকে শুরু করে উচ্চাঙ্গসংগীত—সবই আমার ভালো লাগে। কাজের সময় গান শুনি না। তখন পিনপতন নীরবতাই কাম্য। তবে কবিতা লেখা ছাড়া অন্যান্য লেখালেখির সময় গান শুনি। প্রিয় গানের কলি, ‘আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে দেখতে তোমায় পাইনি।’ প্রিয় শিল্পী অনেকেই। এ মুহূর্তে শুধু মনে পড়ছে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, মিতা হক, মহিউজ্জামান চৌধুরী ও লাইসা আহমেদের নাম।

সবুজের টোনের সমাহার
ভ্রমণ আমার অসম্ভব প্রিয়। দক্ষিণ আমেরিকা বাদে পৃথিবীর প্রায় সব দেশ আমি ঘুরেছি। প্রিয় স্থান ভুটান, আয়ারল্যান্ড, মরিশাস, নেপাল, বালি। এসব জায়গা ঘোরার সময় দেশের কথা মনে পড়লে তুলনামূলক চিত্রটি ভাবলে মন খারাপ হয়ে যায়। বাংলাদেশ ঘুরতেও আমার ভালো লাগে। কারণ, সমতলের জনপদে এ রকম সৌন্দর্য আর কোথাও দেখা যায় না। এক সবুজের কত রকম টোন আছে, তা বাংলাদেশ ভ্রমণে দেখা মেলে।

‘মাটির ময়না’ ও ‘রানওয়ে’
চলচ্চিত্র মাধ্যমটার প্রতি আমার বিশেষ পক্ষপাত রয়েছে। একসময় একটা চিত্রনাট্যও লিখেছিলাম। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সম্প্রতি হওয়া শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সব কটি চলচ্চিত্র দেখেছি। প্রিয় চলচ্চিত্র অনেক। ভালো লেগেছে তারেক মাসুদের মাটির ময়না, রানওয়ে প্রভৃতি। আমাদের তরুণেরা চলচ্চিত্রে অনেক ভালো করছে। প্রিয় চলচ্চিত্রকার আইজেনস্টাইন, লুই বুনুয়েল, সত্যজিৎ রায়, আলমগীর কবির, জহির রায়হান, তারেক মাসুদ, তানভীর মোকাম্মেল প্রমুখ।

‘নিমজ্জন’ ও ‘বিনোদিনী’
চিত্রপ্রদর্শনী প্রায় নিয়মিত দেখি। লেখালেখির জন্যও দেখার একটা তাগিদ অনুভব করি। প্রিয় শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী, রফিকুন নবী, হাশেম খান প্রমুখ। অনেক দিন মঞ্চনাটক দেখা হয়নি। সর্বশেষ দেখেছি নিমজ্জন ও বিনোদিনী। বেশ ভালো লেগেছে।

অর্থহীন জীবন
আমি নিরাশাবাদী মানুষ। সবকিছু মিলে মনে হয় অর্থহীন জীবন। কেন আসছি, কেন যাচ্ছি—কিছুই বুঝি না। এই যদি হয় নিয়তি, তা হলে স্বপ্ন দেখে লাভ কী? প্রায়ই মনে হয়, অর্থহীন এক জীবন, যার উত্তর নেই, শুধু প্রশ্ন আছে।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ: কাজল রশীদ

(রবিউল হুসাইন কবি। অন্য পরিচয় স্থপতি। কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস, নাটক, অমনিবাস প্রভৃতি মিলিয়ে প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ১২। ২০০৯ সালে কবিতার জন্য পেয়েছেন বাংলা একাডেমী পুরস্কার।)

No comments

Powered by Blogger.