কাঠের দরজার বিকল্প
কাঠের দরজার বিকল্প হিসেবে বর্তমানে বিভিন্ন ডিজাইনের কাঁচের তৈরি বা শুধু প্লাস্টিকের তৈরি দরজার ব্যবহার বেশি মানান সই। সঙ্গে ক্রেতা সাধারণের আগ্রহের দিকটাও বাড়ছে এই দরজাগুলোর দিকে। ঘরে ঢুকেই যদি চোখে পড়ে বিভিন্ন ডিজাইনের দরজা, তবে খুব সহজেই হয়তো সারা দিনের ব্যস্ততা কাটিয়ে ঘরে ফেরার পর নেমে আসা
ক্লান্তি-অবসাদ দূর হয়ে যাবে। নান্দনিকতায় ভরে যাবে মন! দোলা দিতে থাকবে নতুন কারুকাজখচিত দরজাগুলো মনের আয়নায়। অনেক দেরিতে হলেও বর্তমানে আমরা আধুনিকতার ছোঁয়ায় জীবনযাপন করতে পারছি। বেরিয়ে এসেছি পুরাতনের রূপ-নকশার আনন্দ থেকে। যার বহিঃপ্রকাশ আমাদের নিত্যদিনের সব প্রয়োজনীয় সামগ্রীর উত্তরোত্তর পরিবর্তনে। তাইতো নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে এ প্রজন্মের রুচিশীল মানুষ প্রতিনিয়ত খুঁজে বেড়ায় বিভিন্ন ধরনের আসবাব। যার মধ্যে অন্যতম হলো ঘরের দরজা। ঘরের রংয়ের সঙ্গে বা ঘরের নকশার সঙ্গে কি ধরনের দরজা ব্যবহার করলে, ফুটে উঠবে আধুনিক সৌন্দর্য, তা নিয়ে থাকে হরহামেশাই চিন্তা-ভাবনা। আর এই সমস্ত রুচিপ্রিয় মানুষের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন কোম্পানী ভিন্ন ধরনের অত্যন্ত আকর্ষণীয় দরজা বাজারে এনেছে। যা আপনি আপনার পছন্দে কিংবা সোনামণিদের পছন্দদের কথা চিন্তা করে সহজেই সংগ্রহ করতে পারেন। কাঠের তৈরি দরজাগুলো ব্যাপক চাহিদা থাকলেও কালক্রমে তার ব্যবহার অত্যন্ত স্তিমিত। কারণ ক্রেতা সবসময়েই ব্যতিক্রমী কিছু আশা করে আর এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাঠের দরজার বিকল্প হিসেবে, গ্লাস ডোর, প্লাস্টিক ডোর তৈরি করছেন। যা আপনার ফ্ল্যাটের বসার ঘর, শোবার ঘর, খাবার ঘর, এমনকি গোসলখানাতে ব্যবহার করতে পারবেন। প্রত্যেকটি ঘরের জন্য আলাদাভাবে নির্মিত এই দরজাগুলো ব্যবহার করলে, মনের স্বাচ্ছন্দ্য, আভিজাত্য, আনন্দ পরিস্ফুট হবে। বাজারে এখন কাঠের বিকল্প হিসেবে যে সব দরজা পাওয়া যায় তার মধ্যে গ্লাস ডোর একটি। এটি সাধারণত চীন থেকে আমদানি করা হয়। শুধু এই দেশেই নয়, সারা বিশ্বে এই দরজার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বলে জানা যায়। দরজাটি কাঁচের তৈরি এবং এর চারপাশে প্লাস্টিক দ্বারা বাঁধানো। কাঁচের ওপর বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন করা থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল নকশী ফুলের কাজ। ফুলগুলো বাড়তি কাজ সমৃদ্ধ করার জন্য একটু ঢেউ তোলা। যা আপনার পছন্দের ঢেউয়ের সঙ্গে খুব সহজেই মানাবে। বেশ কয়েকটি রংয়ের সমন্বয় থাকার কারণে ঘরের সঙ্গে মিল রেখে যে কোন একটি সংগ্রহ করতে পারেন। কাঁচের তৈরি এই চীনা দরজার বাইরে এ দেশীয় হরেক রকমের দরজা আপনি হাতের নাগালেই পাবেন। দেশের আরাম প্রিয়, আধুনিক মানুষের কথা চিন্তা করে, আরএফএল পিভিসি, ইউনাইটেড পিভিসি, স্বপন পিভিসি ও আজিজ পিভিসি বাজারে এনেছে এই দরজা। যা বিভিন্ন কোয়ালিটির ওপর বেশি নজর দেয়ার ভিত্তিতে বাজারে সরবরাহ করা হয়। যে সব কোয়ালিটিকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয় এর মধ্যে সলিড, হলো অত্যন্ত মানানসই। হলো দরজার ভিতর দিক দিয়ে সম্পূর্ণ ফাঁপা হওয়ার কারণে একটু হালকা ধরনের হয়। এই দরজাটি সংগ্রহ করলে আপনাকে একটি ডিজাইনেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। তবে সলিড দরজাটিতে একটু বাড়তি সুবিধা পাওয়া যাবে। অনেক সময় প্লেন ধরনেরটা আবার আলাদা সৌন্দর্য বাড়াবেÑযা আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে, ড্রাইনিং বা ড্রয়িং রুমে বসে মজার গল্পকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলবে সলিড দরজার বাড়তি কারুকাজের জন্য। দেশীয় প্যাটার্নের এই প্লাস্টিক দরজাগুলো সাধারণত ৮-১০টি ডিজাইনের হয়। এই প্রসঙ্গে শাকিল এন্টারপ্রাইজের বিক্রয় প্রতিনিধি শামীম বলেন, আমাদের দেশে এখন কাঠের বিকল্প হিসেবে যে দরজাগুলো তৈরি হচ্ছে তার মধ্যে আরএফএল ও পিভিসি কোম্পানির দরজাগুলো মানসম্মত এবং মজবুত প্লাস্টিকের এই দরজাগুলো বাজারে আনার শুরুর দিকে যে মানসমৃদ্ধ করা হতো সেটা ছিল সম্পূর্ণ কোম্পানির নিজস্ব মননে তৈরি। কিন্তু বর্তমানে ক্রেতা সাধারণের কাছে পণ্যের মান যাচাইবাছাইয়ের ভিত্তিতে বাজারজাত করা হয়। যাতে পছন্দপ্রিয় মানুষ তাদের প্রয়োজন মেটাতে সঠিক মানের আস্থাশীল জিনিসটি ব্যবহার করতে পারে। তিনি আরও বলেন, আজিজ পিভিসিও বিভিন্ন স্টাইলের নানান ডিজাইনসমৃদ্ধ মজবুত দরজা বাজারে আনছে। ১০টি ডিজাইনের এই দরজা বিভিন্ন ঘরের জন্য আলাদাভাবে তৈরি হয়, এমনকি ছোট বড় সব সাইজের পাওয়া যায়। আপনার ঘর সাজানোর অন্য সব আসবাবের সঙ্গে এই দরজাগুলোও ভিন্ন মাত্রা স্থাপন করবেÑ বললেন শামীম। আধুনিক কাঁচামাল দ্বারা তৈরি এই দরজাগুলো পাওয়া যাবে পান্থপথ ট্রাফিক সিগন্যালের পাশের দোকানগুলোয়। এছাড়া মিরপুর ১-১০ ও ফকিরাপুল থেকেও সংগ্রহ করতে পারেন। দরদামÑভিন্ন সাইজের ভিত্তিতে দরজাগুলোর দাম আলাদাভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। আরএফএলের দরজা ২,৬০০ থেকে ৪২,০০ টাকা, স্বপন দরজার দাম নির্ধারিত হয়েছে ২,০০০ থেকে ৫,৫০০ টাকা পর্যন্ত। ইউনাইটেড পিভিসির দাম পড়বে যথাক্রমে ২৬,০০-৪২,০০ টাকা আজিজ পিভিসির দাম পড়বে ৬,৬০০-১০,০০০ টাকা এবং চীনা তৈরি কাঁচের ডোরগুলোর জন্য আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে-যথাক্রমে ৫,৫০০-৬,০০০ টাকা পর্যন্ত।
No comments