সিরাজগঞ্জে শ্রমিক লীগ নেতাকে কুপিয়ে রগ কেটে হত্যা- বালু উত্তোলন নিয়ে সংঘর্ষ

যমুনার বালু উত্তোলন নিয়ে সিরাজগঞ্জে এক শ্রমিকনেতার লাশ পড়েছে। সরকারী দলের শ্রমিকনেতা সাবেক পৌর কমিশনার ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরকে কুপিয়ে রগ কেটে হত্যা করা হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন।


এ নিয়ে রবিবার সিরাজগঞ্জ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, মোটর শ্রমিকেরা বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড়ে সড়ক অবরোধ করে। এতে মহাসড়কে ঢাকা ও উত্তরবঙ্গমুখী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় ও উভয় পাশে যানবাহন আটকা পড়ে। পরে পুলিশী হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর প্রাকৃতিক সম্পদ বালু উত্তোলন নিয়ে নাসির গ্রুপ ও সাত্তার গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলে আসছিল। রোজার আগে নাসিরের ওপর হামলা করে তাকে গুরুতর আহত করা হয়েছিল। সেই মামলায় সাত্তার ১নং আসামি হলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। উল্টো সে তার বাহিনী নিয়ে যমুনা নদীর চরাঞ্চলে বালু উত্তোলন করে অবাধে ব্যবসা করে আসছিল। বালু মহাল নিয়ন্ত্রণে নেবার জন্য একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায় এক সময়ের দু’বন্ধু এবং পৌরসভার নির্বাচিত কাউন্সিলার আব্দুস সাত্তার ও নাসির উদ্দিন নাসির। রবিবার এক বন্ধু সাত্তারের বাহিনীর লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে অপর বন্ধু নাসিরের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে কুপিয়ে রগ কেটে খুন করা হয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, যমুনা নদীর বালু মহালের দখল নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত সাবেক পৌর কাউন্সিলর আব্দুস সাত্তারের সঙ্গে শ্রমিকলীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর নাসির উদ্দিনের বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে এর আগেও একাধিকার উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এরই জের ধরে রবিবার সকালে নাসির লোকজন নিয়ে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ ও ভুয়াপুর থানা সীমান্তবর্তী যমুনা নদীর কালিপুর চরে পৌঁছলে সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা আব্দুস ছাত্তার বাহিনীর লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় কয়েক রাউন্ড ফাকা গুলি করা হয় বলে আহতদের সূত্রে জানা গেছে। এই হামলায় উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। এদের মধ্যে নাসির উদ্দিনকে কুপিয়ে ও পায়ের রগ কেটে খুন করা হয়। এ ঘটনায় পুরো শহরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সংঘর্ষে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা নাসির উদ্দিনের আহত হবার ঘটনা জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ মোটর শ্রমিকের সদস্যরা বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের মুলিবাড়িতে মহাসড়ক অবরোধ করে। প্রায় ১ঘন্টা পর অবরোধ প্রত্যাহার করে নিলেও অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলা সকল রুটের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। অপরদিকে গুরুতর আহত টিক্কা, ইমরান ও সাগরকে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে নেয়া হলে সেখান থেকে তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। টুটুল, ফারুক, মিলনকে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় চরের সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতাই পড়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি যমুনা নদীর বালু বিক্রি করে সাত্তার এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। যে কারণে টাকা দিয়ে সে সব কিছু ম্যানেজ করে।

No comments

Powered by Blogger.